Skip to main content

Posts

Showing posts from January, 2025

কুম্ভমেলা

বহুদিন আগেই সংসার ছেড়েছিলেন বিহারীনাথ তারপর থেকে অমলা একা ছেলেকে মানুষ করেছেন কষ্ট করে কিন্তু অমলার মাথাটা একটু গন্ডগোল তখন থেকেই। বহু খুঁজে বিহারীকে কেউ পায়নি। অমলাকেও সিঁদুর মোছানো যায়নি। মাঝেমধ্যেই দরজায় বাড়ি পরলে অমলা বলতেন খাড়াও আসতেছি। কিন্তু কেউই আসত না,সেই অমলা হঠাৎই হারিয়ে গেলেন কুম্ভমেলা এসে অনেক খুঁজেও তাকে পাওয়া গেল না। ছেলে একটু খোঁজ করলেও ছেলের বৌ হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো যে পাগলটা বিদায় হয়েছে। সত‍্যিই কী হারিয়ে গেল অমলা? নাকি মারা গেল?
সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতেই হাতের ফোনটা দেখে শোভন। হ‍্যাঁ এই ফ্ল্যাটটাই তো মনে হচ্ছে। তবে একবার ফোন করে নেবে ভাবলো। কিন্তু দরজায় দাঁড়িয়ে ফোন করার আগেই ভেতর থেকে নতুন গুড়ের গন্ধ ভেসে আসে শোভনের নাকে। একবার নাক উঁচু করে গন্ধ নেয় তারপরে আনমনা হয়ে যায় হঠাৎই। মনটা হারিয়ে যায় ছেলেবেলায়..পৌষপার্বণ এলেই মাকে ব‍্যস্ত করে তুলত,' মা আমাদের কবে পিঠে করবে গো? আমি কিন্তু তিনদিন ধরে পিঠে খাবো। ভাত খাব না তখন মোটেই। মা হেসে বলত,' আরে হবে তো,তোর বাবা হাট থেকে নতুন খেজুর পাটালি আর নারকেল আনলে। আমি চাল পাটায় বেটে গুড়ো করে পিঠে বানিয়ে দেব।’   হাসিতে মুখটা ভরে যেত মায়ের কথা শুনে। তারপর আবদারের সুরে বলত,' মা দুধ দিয়ে জ্বাল দিয়ে বেশ ক্ষীর ক্ষীর করে পিঠেগুলো করবে তো? ঐ যে গতবার করেছিলে ক্ষীরপিঠা। মায়ের মুখটা একটু মলিন হলেও হাসি ফুটিয়ে বলত,' আমরা যে গরীব মানুষ বাবা অত দুধ কোথায় পাবো? আচ্ছা তোর বাবাকে বলব গয়লার থেকে একটু বেশি দুধ আনতে। তোকে ক্ষীর পিঠা করে দেব তখন।' -' আমি শুধু খাব কেন তোমরা খাবে না?' -' খাবো তো,সবাই খাবো।'   একটু বড় হয়ে শোভন বুঝেছিল অভাবের সংসারে ছেলের মন রক্ষার্থে...