Skip to main content

Posts

দরিয়াপুর শিল্পগ্ৰাম

কলকাতা থেকে ছোট্ট ওয়ান ডে ট্রিপে দৌড়ে গিয়ে ছুট্টে ফিরে আসা যায় এবং দেখে নেওয়া যায় একসাথে অনেকগুলো জায়গা। তো আমরাও ছুট লাগালাম,কী ভাবছেন দুই পায়ে? আরে না না...নিজেদের বাহনে। প্রথমেই শক্তিগড়ে নেমে সকালে পেট নামক ইঞ্জিনে দিলাম কিছুটা পেট্রোল..এই যাঃ সেই পেট্রোল নয় তবে কিছু জ্বালানি মানে দানা আর পানি..সেটা অবশ‍্যই গরম কচুরি আর মিষ্টি। কী ভাবছেন? চরম আনহেলদি,হুঁ সত‍্যিই কিন্তু বেড়াতে এসে নিয়মের বাঁধ ভাঙতেই ইচ্ছে করে। সবাই কচুরি খাবে আর মুই খাবুনি? তা হয় নাকি?   সুতরাং আবার পথ চলা শুরু,পথে পড়লো বর্ধমানের একশো আট শিবমন্দির। দেখা বলে আর নামলাম না। সেদিনের সফরে আমাদের প্রথম গন্তব‍্য ছিল দরিয়াপুর ডোকরা শিল্পগ্ৰাম সুতরাং বর্ধমান পেরিয়ে সাহায্য নিলাম গুগলমামার উনিই বক বক করে ডাইনে যাও,বাঁয়ে যাও বলে আমাদের পৌঁছে দিলেন দরিয়াপুরে। জায়গাটা আউশগ্ৰাম এক ব্লকে এবং পূর্ব বর্ধমানে। একদম রাস্তার ওপরেই সুন্দর ডোকরার গেট করা। দেখেই মন ভালো হয়ে গেল আমাদের। ঢুকে একটা বড় মাঠ মত তার বাম দিকে উনুন রয়েছে,যেগুলোকে ভাটি বলে। ওখানে পোড়ানো হয় ডোকরার জিনিসগুলো। তারপর এগিয়ে গেলাম সামনের দিকে। খুব সুন্দর সুন্দর ডোকরার...
Recent posts

জলটুঙ্গী

কে বলে বরেরা বৌদের জন‍্য ভাবে না? কী বলছেন? একটুও ভাবে না.. আরে ভাবে,ভাবে তাদের ভাবনা হোক বা দুর্ভাবনা হোক সবই বৌদের ঘিরে। তবে হ‍্যাঁ রাজামশাইরা বৌদের কথা রাজাদের মত করেই ভাবে। আর আমার আপনার ঘরের কর্তামশাইরা বৌদের কথা তাদের মত করেই ভাবে।   আজ বলি এক রাজার বৌকে খুশি করার জন‍্য ভাবনার গল্প। হ‍্যাঁ এমন গল্প অনেক আছে,তবুও আজ বলি আমাদের কাছাকাছি থাকতেন এমন এক রাজার গল্প। এই গল্প প্রায় তিনশো বছরের পুরোনো।   বর্ধমানে ছিলেন এক রাজা,নাম তাঁর কীর্তি চাঁদ। তিনি ১৭০২ থেকে ১৭৪০ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তো রাজা থাকবেন আর রানী থাকবেন না তা হয় নাকি? রাজা বিয়ে করে আনলেন এক পাঞ্জাবী সুন্দরী কন‍্যেকে। নাম তার রাজরাজেশ্বরী। নামেও যেমন তিনি অপরূপা রাজ মহিষী তেমনি সুন্দর তার রূপ। চাঁদনী রাণী যখন ঝিলের জল মুঠোয় তুলতেন তখন সেই মুঠোতে ধরা পড়ত স্বয়ং চাঁদ।   তো এমন সুন্দরী রানী উদাস থাকলে কোন স্বামীর ভালো লাগে? রাজা অনেক আদর করে জানতে পারলেন রানীর এখানে থাকতে ইচ্ছে করছে না। এখানে কিছুই নাকি তার বাপের বাড়ির মত নয়। অন‍্য স্বামী হলে হয়ত জ্ঞান দিয়ে দিতেন,মানিয়ে নিতে শেখো। তোমার মন যদি এতেই খারা...

পুর্ণেন্দু পত্রী স্মৃতি শিল্প গ্ৰাম

বর্ষায় মন উড়ু উড়ু তাই উঠল বাই চলো করি ঘুরু ঘুরু। কিন্তু কোথায় যাই? হাতে মাত্র একটা পুরো দিন,নো থাকাথাকি। ভাবি চলো ভাবি,এই ভাবতে ভাবতেই ঠিক হল বেশি দূরে নয় যাব কাছাকাছি। দূরে গেলে যাতায়াতেই কেটে যায় অনেকটা সময়,সুতরাং সংক্ষিপ্ত হয় থাকার সময়টা।      পুর্ণেন্দু পত্রী স্মৃতি শিল্পগ্ৰামের কথা ফেসবুকে পড়েছি। তাই ঠিক হল সেখানেই যাবো,কারণ কলকাতা থেকে মাত্র ঘন্টা দুয়েকের মধ‍্যেই পৌঁছে যাওয়া যায় সেখানে।     আমরা গাড়ি করে গেছিলাম,আপনারা চাইলে ট্রেনে করে উলুবেড়িয়া স্টেশনে নেমে সেখান থেকে টোটো বা বাসে করে মোহিনী মোড়,তারপর মোহিনী মোড় থেকে ধান্ধালিয়া পুর্ণেন্দু পত্রী শিল্পগ্ৰামে পৌঁছে যেতে পারেন।    ভগবানের কাছে হাত পেতে মন খুলে চাইলাম হে ভগবান বৃষ্টি দিও,আহা মরসুমের প্রথম বর্ষা সুখ মাখতে মাখতে যাবো। ভগবান ভক্তের মনোবাঞ্ছা পূরণ করলেন,সক্বাল সক্কাল বৃষ্টি এলো। বৃষ্টি মাথায় করেই,মনে খুশি নিয়ে বেরোলাম সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ। গাড়ি চললো এগিয়ে,আমরা দলে পাঁচ। আমাদের আগেরদিন পর্যন্ত প্ল‍্যান ছিল আমরা পটচিত্র গ্ৰামে যাবো,কিন্তু হঠাৎই ওদিকে বন‍্যা থাকতে পারে ভেবে মত ঘুরেছে রাতে। ...
চাকরির বদলি নিয়ে এক নির্জন জায়গাতে গেছেন একজন। জায়গাটা নির্জন তাই বৌকে নিয়ে যেতে পারেননি। তারপর বদলি হয়েছেন বিজয় নগরে। এখানকার মিউজিয়াম দেখাশোনার দায়িত্ব তার ওপরে।     এবার ঠিক করেছেন কুসুমকে নিয়ে আসবেন এখানে। মায়ের কাছে শুনেছেন কুসুম খুব মন মরা। কুসুমকে বিজয়নগরে আনার পরই সে প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠল। জায়গাটা তার ভীষণ পছন্দের। তার বায়নাতে ছুটি পেলেই সুরজ সিংকে ঘুরিয়ে দেখাতে হয় জায়গাটা।    কিন্তু পূর্ণিমার রাতে ঘটলো অদ্ভুত ঘটনা। কুসুমকে পাওয়া যায় না। বিজয়নগরের শুকনো চান ঘরে কলকলিয়ে ঢোকে জল। আর সেই জলে ভাসে কুসুম।     অবাক হয় সুরজ ওর সাথে কে? কেয়ারটেকার ছেলেটাকে দেখে মাথা গরম হয়ে যায়। খুন করে ফেলতে ইচ্ছে করে।

বেড়ানো

স্বাধীনতা তোমাকে রাখবো আগলে, শপথ হোক সবার আজকের দিনে। আনতে স্বাধীনতা যাঁরা দিয়েছিলেন প্রাণ, প্রণাম জানাই আজ তাঁদের চরণে। মাথা উঁচু করে থাক জাতীয় পতাকা, কাশ্মীর থেকে কন‍্যাকুমারীতে। ভালো থাক দেশের প্রতি নাগরিক, সবার অধিকার আছে বাঁচার পৃথিবীতে। সবুজ কলাপাতায় ধোঁয়া ওঠা গরম কচুরী সাথে মুখে ছ‍্যাঁকা লাগা ঝাল মিষ্টি ছোলার ডালে আঙুল ডুবিয়ে যত্নে কচুরী টুকরো করে ছিঁড়ে মুখে পুরে যে বাঙালী আহ্ বলে না সে বাঙালী নয়।    তখন মনে হয় এই তো জীবন....  হরেক খাওয়াদাওয়া আর ভোজনরসিক বাঙালী এই নিয়ে কত গল্প আছে। আর এই খাদ‍্যরসিক বাঙালীর তালিকা বড় দীর্ঘ তার মধ‍্যে যেমন নামীদামী কবি সাহিত্যিক আছেন তেমন আছেন রাজা রামমোহন রায় আর স্বামী বিবেকানন্দের মত মানুষও।    উত্তর কলকাতার আনাচে কানাচে এখনও ভাসে সকাল হলেই তেমন গন্ধ। অবশ‍্য পিছিয়ে নেই দক্ষিণও,সকাল হলেই শ্রীহরির হালুয়া কচুরীর গন্ধ মাতায় সাধারণ মানুষকে। বাস কন্ডাক্টর বাস থামিয়ে ছুটে গিয়ে কিনে আনে প‍্যাকেট তাকে যে কচুরীরা টানে।    যেমন এই দোকান টানে আমাকে। এই দোকানের সাথে জড়িয়ে আছে অনেক নষ্টালজিয়া আর কলকাতা চেনার গল্প। আর মুখে লেগ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...

বিপাশা কথা

জীবনের কোন সময় আপনি কেমনভাবে উপভোগ করছেন সেটাই বোধহয় সবচেয়ে বড় কথা। বাড়ির ডেক্সটপ কেনার পর ছেলের উদ‍্যোগে প্রথমে অরকুট আর তারপর ফেসবুকে এলেও আমার কাছে মোবাইল ফোন এবং ডিজিটাল ক‍্যামেরা কোন কিছু না থাকাতে ফটো তেমন দেওয়া হত না। তাছাড়া তখন সময় কোথায়? দুই ছেলেমেয়ে,চাকরি,সংসার নিয়ে দারুণ ব‍্যস্ততা চলছে। হয়ত বা সারাদিনে ঐ একবার স্কুল যাবার সময় আয়নাতে মুখ দেখে যেতাম। খাবার দাবার কোন কিছুতেই বাছাবাছি ছিল না। সব কাজ সেরে বাড়িতে যা রান্না হত খিদের পেটে তাই গপাগপ গিলতাম। বাচ্চা হবার আগে বা পরের যাত্রাপথ তো ছিল আরও শোচনীয়। আমার শাশুড়িমা ছিলেন না,সুতরাং বাচ্চা হবার আগের যত্ন করার মত তেমন কেউ ছিল না। মা দূরে থাকতেন তাছাড়া তিনিও চাকরিরতা। আমরা মা,মেয়ে দুজনেই যেহেতু চাকরি করতাম তাই কারোরই একটানা কারও কাছে এসে থাকা সম্ভব ছিল না। ছেলের সময় যখন নার্সিং হোমে ভর্তি হতে গেলাম আমার মনে আছে আমি রাত্রি প্রায় নটা নাগাদ বাড়ি থেকে না খেয়ে ভর্তি হলাম সেখানে। নার্সিংহোমে তখন খাবার প্রায় শেষ,তবুও পরের দিন আমার সিজার হবে তাই খাওয়া হবে না জেনে ওরা একটু ঠান্ডা ডাল ভাত এনে দেয় এবং কথাও শুনতে হয় তার জন‍্য। মা অনুরোধ করেও ...