Skip to main content

এক্সট্রা ম‍্যারিটাল(দ্বিতীয় পর্ব)

#এক্সট্রা_ম‍্যারিটাল
(দ্বিতীয় পর্ব)
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

কেমন যেন ঘোরের মধ‍্যে কেটেছে মিতার কয়েকটা দিন ,অফিসে জানিয়েছে শরীর খারাপ। ভালো করে মেয়ের দিকে তাকিয়ে দেখতে পারেনি লজ্জায়। সন্তানের কাছে ছোট হয়ে যাবার চেয়ে বড় লজ্জা বোধহয় কিছুই নেই। পূজার ও আর খুব একটা কথা বলতে ইচ্ছে করেনি মায়ের সাথে অভিমানে, দুঃখে। এরমাঝে দিদুনও একদিন এসেছিলো আর এসেছিলো ওর এক জেঠিমা,মায়ের খুব বন্ধু। বাবাই চলে যাবার পর মাঝে মাঝেই আসে ওদের বাড়ীতে। জেঠিমাও উইডো, দিদিভাই এর বিয়ে হয়ে গেছে তবে খুব আধুনিকা। মিঠুআন্টি পূজাকে বলে, "তোর মা খুব একা হয়ে যাবেরে"। ..."তোমরা তো আছো,মায়ের অফিস আর বন্ধু বান্ধব নিয়ে ঠিক কেটে যাবে।"
   ...".সত‍্যি মিতা কি অবস্থা করেছিস নিজের!অফিস যাচ্ছিসনা কেন? কারো মেয়ে কি বাইরে যায়না? এই তো তোদের দাদাও চলে গেলেন আর মিঠির বিয়ে হয়ে গেলো। আমি আছিনা? হ‍্যাঁ জানি পূজা তোর বিয়ের আটবছর পর হয়েছে অনেক সাধ‍্য সাধনা করে ,তাই বলে ওকে ছাড়বি না? আর তোর ভাবনা কি? তোর ভাই তো ওখানেই থাকে। ও আগলে রাখবে পূজাকে।" দুচোখে জল ভরে আসে মিতার। কি বলবে ও মিঠুদিকে।
       এয়ারপোর্টে ইন করার আগে জড়িয়ে ধরে মিতা পূজাকে, "ভালো থাকিস সোনামা"। ট্রলিতে লাগেজের আড়ালে মুখ ঢেকে পূজা বলে.."তুমিও"। পরেরদিন ও অফিস যেতে ইচ্ছে করেনা মিতার, ভাই এর কাছে সব খোঁজ খবর পায় পূজার ,ও এসে এয়ারপোর্ট থেকে পূজাকে নিয়ে গেছে। পূজার সাথেও একটু কথা হয়।
  বেশ কয়েকদিন বাদে আবার রাজীবের সাথে দেখা। কিন্তু একি চেহারা হয়েছে মিতার! অবাক হয়ে যায় রাজীব। সেই হাসিখুশি মুখটা খুব মিস করে। " আরে একটু মুশকান দেখে দিনটা ভালো করার জন‍্য সকাল সকাল এত তকলিফ করি। এই যে ম‍্যাডাম ,বেটি তো ভালো আছে। তাহলে কি প্রবলেম?" মেয়ের সাথে দূরত্বের কারণটা কেন যেন রাজীবকে বলতে ইচ্ছে করেনা মিতার।
    পূজা চলে যাবার পর বেশ অনেকগুলো দিন কেটে গেছে। স্বাধীন মা আর মেয়ে দুজনেই দুজনকে খুব মিস করে। মিতা মুখে বলে, পূজা বলেনা। আজকাল আর ভালোমন্দ রান্নাও করতে ইচ্ছে করেনা। এই কয়দিন একাই যাচ্ছে মিতা, রাজীবের ছেলের বিয়ে তাই বেশ কিছুদিন ব‍্যাস্ত। রাজীবের বউ নাকি খুব অসুস্থ অনেকদিন ধরেই, তাই বউয়ের কাছ থেকে নাকি তেমন কিছুই পায়না ও। ওদের ফ‍্যামেলিতে এত ছোট বয়সে বিয়ে হয় যে বউগুলো কমবয়সে শাশুমা হয়ে বুড়িয়ে যায়। মিতা একটু কঠিন হয়ে বলেই ফেলে,"তাই বোধহয় আমার পেছনে পরে আছো।"...."এমন বোলোনা ডিয়ার তোমার এই হাসমুখটা যে কত পজেটিভ তুমি বুঝবেনা।"
       পূজা চলে যাবার পর খুব বেশি করে রাজীবকে জড়িয়ে ধরেছে মিতা। অফিসের সময়টুকু ছাড়া সবসময় ইচ্ছে করে রাজীবের সাথে কথা বলতে। কিন্তু মিতার আশ্চর্য লাগে ওর নির্ভরতা বাড়ার সাথে সাথে রাজীব যেন পিছোতে থাকে। আজকাল অনেক সময় মিতা ফোন করলেও রাজীব কেটে দেয়। আবার ট্রাই করতে গিয়ে দেখে সুইচড অফ্। মিতার যখন অস্থির লাগে তখন দেখে ছোট এস এম এস...." সরি বিজি"। এমন আজকাল প্রায় হয় রাগে ফেটে পরলে মিতা উত্তর পায়," বাচ্ছা মেয়ে হয়ে গেলে নাকি? পাশে ছেলে থাকে কি করবো?"
      আজকাল বড্ড খিটখিটে হয়ে গেছে মিতা, কাজেও ভুল করে। অনেকদিন বাদে মিঠুদি মিতাকে নিয়ে আইনক্স এ একটা মুভি দেখতে এসেছে। সেখানেও মিতা মন দিতে পারেনা, বার বার এস এম এস দেখছে। কি যেন ভাবছে? হাসিখুশি মিতার এই পরিবর্তন অনেকদিন ধরেই দেখছে মিঠু। "কি যে হলো?"
      "এই চলনা ,আজ রাতে ডিনার করে ফিরি"। ...."না গো মিঠুদি আজ থাক, রাতে এমনিতেই বিশেষ কিছু খাইনা আমি"।...."উহু সেটি হচ্ছেনা আজ আমার ফ্রিজ ফাঁকা আজ খেয়েই যাবো, আর তুইও খাবি।"
       রেষ্টুরেন্টের এক কোণে মুখোমুখি বসে ওরা। মিঠু গল্প করতে করতে বলে,"জানিস ফেসবুকটা মহা মজার যায়গা, আমার হাঁটুর বয়সী ছেলেগুলো আমাকে প্রেম নিবেদন করতে চায় যখন বলি আমি শাশুড়ি হয়ে গেছি, হা হা হা সত‍্যি বাবা....। তোর কি ব‍্যাপার রে আচ্ছা তুই কেন ফেসবুক হোয়াটস আ্যপ করছিস না, এখনও এস এম এস এ পড়ে আছিস?" ....."আমার একটা নতুন ফোন কিনতে হবে গো"। কথার ফাঁকে একটু একটু করে মিঠু মিতার সবটাই জেনে নেয়। কিছুটা পূজার কাছে শুনেছিল।
  শুধু একটা কথাই বলে মিতাকে ,"পৃথিবী অনেক এগিয়েছে মিতা, নিজের জন‍্য বাঁচতে শেখ। আমাদের একা একাই ভালো থাকতে শিখতে হবে। কারো ওপর নির্ভরশীলতা বাড়াসনা কষ্ট পাবি। সেটা তোর মেয়েই হোক বা বয়ফ্রেন্ডই হোক।"....."এমন কথা বোলনা মিঠুদি রাজীবকে ছাড়া আমি বাঁচবোনা। ও আমায় খুব ভালোবাসে।"....."কিন্তু ওর তো ফ‍্যামিলি আছে ও তোকে ব‍্যাবহার করছেনা তো? আচ্ছা থাক, এই আমি তোর জন‍্য অনলাইনে একটা ফোনের অর্ডার দেবো। দ‍্যাখতো তোর কোনটা পছন্দ? আয় আমরা একটা সেল্ফি তুলি এক্ষুণি মিঠি আর পূজাকে পাঠিয়ে দেবো। আর তোর ভাইকেও। ওরা খুব খুশি হবে।" পূজার কথায় চোখটা ছলছল করে ওঠে মিতার।
.....পরদিন রাজীবকে নতুন ফোনের কথা বলতেই বলে,"ওহ্ ডিয়ার আমি তো তোমার বার্থডেতেই ভেবেছিলাম তোমায় একটা ট‍্যাব প্রেজেন্ট করবো। ছেলের শাদি নিয়ে যা হুজ্জতি গেলো। কতদিন তোমাকে ভালো করে দেখিনা।"
    হাসে মিতা,"ভাবছি ফোনটা এলে হোয়াটস আ্যপ আর ফেসবুকে আ্যকাউন্ট খুলবো, মেয়ের সাথে কথা বলতে সুবিধা হবে।"......"বাঃ গুড আমিও পাবো তোমাকে সবসময়, ভালো ছবিও পাবো ,সেল্ফি। ছুটির দিনেও তোমায় দেখবো বাড়ি বসে। তবে ফেসবুক করোনা ডিয়ার,ওটা আচ্ছা যায়গা না। বহুত উল্টাপাল্টা হয়, এইবয়সে আমার সুন্দরী গার্লফ্রেন্ডকে কেউ হাইজ‍্যাক করলে আমি যাব কোথায়।"
    মিতার নতুন ফোনটা এসে গেছে, রাজীব ও এখন কলকাতায় নেই। ওর মিসেস এর হার্টের অপারেশন হবে খুব অসুস্থ তাই চেন্নাই গেছে। মিতাকে ফোন করতে বারণ করে গেছে বলেছে প্রতিদিন রাতে ফোন করবে,করছেও তাই।
  মিঠুদি কাল রাতে এসেছে। মিঠুদির সাথেই বেড়িয়ে মিতা মোবাইল স্টোর থেকে আ্যপগুলো ডাউনলোড করে নিয়ে এলো। প্রথম ভিডিও কলটা আজ মেয়েকেই করবে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে সোনামাকে। পূজা বাইরে গিয়ে অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে হয়ত দেওয়ালীতে আসবে মামার সাথে। কথা বলে মা মেয়ে দুজনেই খুশি, বাইরে গিয়ে অনেক পাল্টে গেছে মেয়েটা খুব ম‍্যাচিওরড হয়ে গেছে কয়েক মাসে। এর একটু বাদে রাজীব ফোন করে খবর নেয় মিতার। মিতা জানতে চায় ওর মিসেস এর কথা, রাজীব জানায় সব টেষ্ট হয়ে গেছে কাল  অপারেশন হবে। কাল হয়ত ফোন করতে পারবেনা কেমন থাকে পরদিন জানাবে। ফোন রেখে মিঠুদির চোখে চোখ পড়ে, মিঠুদি হাসে কিছু বলেনা...."শোন মিতা তোর হোয়াটস আ্যপটা চালু করে দিলাম। ফেসবুকটা কাল দেবোরে আজ ঘুম পাচ্ছে। কাল তো তোর ছুটি।"
    বেশ লাগছে মিতার, উজান চলে যাবার পর রাজীবকে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে গিয়ে রাজীবের পছন্দগুলোকেই গুরুত্ব দিয়েছে। এর মধ‍্যেই ভাই অনেকগুলো ছবি পাঠালো বেশ লাগলো দেখতে। এই যাহ রাজীবকে নতুন নম্বরটা দেওয়া হলোনা। যা তাড়া করছিলো,যেন ফোন রাখতে পারলেই বাঁচে। আরে এই তো রাজীবের হোয়াটস আ্যপ, বাহ প্রোফাইল পিকচারটা বেশ কায়দা করে তুলেছে।
    পরদিন সকালে মিঠুদি ফেসবুক আ্যকাউন্ট টা খুলে দিলো।...."তুমি কি স্মার্ট গো"...."আরে তুইও হয়ে যাবি নাড়া ঘাটা করতে করতে। আমাকে তো মিঠিটার জন‍্য শিখতে হলো।" মিঠুদির কাছে বেশ কিছুটা শিখে গেলো, ভালোই লাগছে বেশ আত্মীয় স্বজন বন্ধুবান্ধব সব এক যায়গায়। মনটাও একটু অন‍্যরকম লাগছে রাজীব ছাড়াও কত কি আছে...হেসে ফেললো মিতা। ...."দাঁড়া তোর রাজীব আছে নাকি ফেসবুকে দেখি, পুরো নামটা বলতো? দ‍্যাখ তো এটা কি?"....."কই হ‍্যাঁ এটাই তো, দেখি দেখি। চমকে ওঠে মিতা, রাজীব ফ‍্যামিলির সাথে সুইজারল‍্যান্ডে ঘুরে বেড়াচ্ছে , দশ মিনিট আগে পোষ্ট করা ছবি।" এক এক করে দেখে মিতা, ওরা পুরো ফ‍্যামিলি নিয়ে ইউরোপ ট্রিপে গেছে। কত ছবি নানা পোজে। মিঠুদির কথায় চমক ভাঙে মিতার এটা কি ওনার মিসেস? এই তো বেশ নাদুশনুদুশ কোমড়ে বেল্ট। তুই দেখিসনি ছবিতে কখনও?" গলা দিয়ে আওয়াজ বেরোয়না মিতার । ওর চোখদুটো তখন আটকে আছে ছবিগুলোতে। আজ যেন মনে হচ্ছে রাজীব একটা সুখী স্বার্থপর মানুষ যার সবসুখের মধ‍্যে মিতা উপরি পাওনা, টাইমপাশ। উজানের চলে যাওয়ার সুযোগে প্রায় গিলে ফেলতে এসেছিলো মিতাকে একটু একটু করে। কি করেছে মিতা! একটা লোভী স্বার্থপর মানুষের জন‍্য নিজেকে একমাত্র অবলম্বন সন্তানের কাছ থেকে দূরে রেখেছে।

  চোখের সামনে ওলটপালট হয়ে যায় মিতার পৃথিবীটা। মানুষ চিনতে এতটাই ভুল হলো তার। একটা মিথ‍্যেবাদী লোককে এতদিন অবলম্বন ভেবে ও নির্ভর করেছিলো। মেরুদন্ডহীন মিথ‍্যেবাদী একটা ছিঃ ছিঃ। মিঠুদি মিতার গায়ে হাত বুলিয়ে কাছে টেনে নেয় অবসাদে ডুবে যায় মিতা। সত‍্যি কথা বলে বেড়াতে গেলে কি হতো?
        রাজীব ফিরে এসেছে গতকাল, আজ সকালে আসবে ফোন করেছিলো। নতুন ড্রাইভার রেখেছে মিতা, তবে আজ ও রাজীবের প্রতীক্ষায়। গাড়িতে উঠে বসতেই মিতাকে জড়িয়ে ধরে ওর ঠোঁটে ঠোঁট রাখতে চায় রাজীব। একটা গিফ্ট এর প‍্যাকেট বাড়িয়ে দেয় ওর দিকে," খুব দামী একটা ইম্পোর্টেড সানগ্লাস এনেছি তোমার জন‍্য। আরও কিছু আছে"। এক ঝটকায় মুখটা সরিয়ে নেয় মিতা ,ওর ফেসবুক আ্যকাউন্ট টা খোলাই ছিলো,সুইজারল‍্যান্ডের ছবিগুলো দেখিয়ে রাজীবকে বলে ,"চশমা ছাড়াই এখন আমি বেশ দেখি রাজীব। মিথ‍্যেবাদী , মেরুদন্ডহীন, বন্ধুর ছদ্মবেশে শয়তান। দুনৌকায় পা দিয়ে আর কখনো থেকোনা। বৌ এর হার্ট অপারেশন এর অজুহাতটা কি খুব জরুরী ছিলো? নিছক বন্ধুত্বের ফাঁদে পা দিয়ে যারা খাদে পড়ে সব হারায় আমি বোধহয় তেমনই অন্ধ ছিলাম। তবে আজ আমার চোখ খুলে গেছে। চোখ না খুললে সারাজীবন তোমার মিস্ট্রেস হয়েই হয়ত থাকতাম আমি। শুধু নষ্ট হত আমার সংসারটা। রাজীববাবুকে কোন কথা বলতে না দিয়ে গাড়ী থেকে নেমে পড়ে মিতা।
       একটা বাসকে হাত দেখিয়ে উঠে পড়ে মিতা আজ সে অনেক মুক্ত। সকালটা খুব সুন্দর লাগে মিতার ,ভুলে যেতে চায় মাঝের কয়েকটা মাস।
       এই দেওয়ালিতে খুশির আলোতে মেতে উঠলো পূজা আর মিতা। মা আর মেয়ের মাঝখানে অবিশ্বাসের দেওয়ালটা ধুয়ে মুছে একাকার হয়ে গেছে। তবে সবটাই হয়তো মিঠুদির জন‍্য।

   

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...