#ডোন্ট_টাচ্_মি#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#
"হেএএএ...ডোন্ট টাচ্ মি".... ঝিলমের হাতের এক ঝটকায় চমকে ওঠে রাণা। এ কেমন ধারা মেয়ে রে বাবা। বিয়ের পর দিন থেকেই বরকে পেটাচ্ছে। সাঙ্ঘাতিক তো। যদিও ও শুনেছিলো ওর বৌ ভীষণ ডানপিটে, ছেলেদের মত বাইক চালায়,ড্রাইভ করে,ক্যারাটের ব্ল্যাকবেল্ট। তবুও এ আবার কি! আরেকটু হলেই খাটের থেকে হয়ত ছিটকেই ফেলতো রাণাকে। কি জোর গায়ে!
...."সরি সরি, নেভার মাইন্ড আসলে ব্যাপারটা রিফ্লেক্সে হয়ে গেছে। ক্যারাটে শেখার ফলে অনেকসময় রিফ্লেক্সে এমন হয়ে যায়। প্লিজ ডোন্ট মাইন্ড।"
যদিও ওদের সম্বন্ধের বিয়ে তেমনভাবে ডেট করার সুযোগও হয়নি। আর হবেই বা কি করে? রাণা কর্মসূত্রে শিলিগুড়িতে, মা বাবা থাকেন কলকাতায় আর ঝিলমদের বাড়ী লক্ষৌতে। হঠাৎই বিয়েটা ঠিক হয়ে গেলো।
অনেকদিন ধরেই মা ঘ্যান ঘ্যান করছিলো, মায়ের খুব পছন্দ মায়ের ছোটবেলার বন্ধুর মেয়ে। যদিও মলিমাসির সাথে মায়ের অনেকদিন যোগাযোগ ছিলোনা। তারপর যা হয় এখনকার দিনে ,পুরনো বন্ধু মিলে গেলো ফেসবুকে।
ব্যাস আর কি,মায়ের শুরু হয়েছে বন্ধুপ্রীতি, সারাক্ষণ ফেসবুক হোয়াটসআ্যপ আর ফোনে গপ্প। আর মায়ের এখন কাজই বা কি? পি এইচ ডি করে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরীটা পেয়ে গেলো রাণা চলে যেতে হলো শিলিগুড়িতে, ওখানেই প্রফেসার্স কোয়াটার্সে থাকে। আর গতবছর দিদির বিয়ে হয়ে গেছে। তাই মা এখন একদম নিশ্চিন্ত।
কাজের মধ্যে দিনের মধ্যে দু তিন বার ছেলে মেয়েকে ফোন করা। নাহলে বাবার সাথে ঝগড়া করা। যদিও বাবা বলে ওটা আমাদের বুড়ো বয়সের প্রেম। আর আজকাল নেশা হয়েছে ইন্টারনেটের। সত্যি দিনকাল কত পাল্টে গেছে।
মলিমাসির খোঁজ পেয়ে মা যেন হাতে স্বর্গ পেয়েছে। এইতো কিছুদিন আগেই মা বাবা ঘুরে এলো লক্ষৌ থেকে। এসেই মায়ের মনখারাপ শুরু হয়েছে। "ইশ মলিটার কি চেহারা হয়েছে যদিও ডাক্তার বলেছে ক্যানসারের প্রথম স্টেজ তবুও। এত চাপা আমাকে এতদিন কিছুই বলেনি। শুধু বলেছিলো একবার আয় না,কতদিন দেখিনি খুব দেখতে ইচ্ছে করে। অথচ একসময় আমার সব দুষ্টুমির সাথী ছিলো মলি। "
রাণা বললো, "হু দিদুনের কাছে শুনেছিলাম, তুমি ছোটবেলায় খুব ডানপিটে আর পাড়াবেড়ানি ছিলে..আর এখন ফেসবুক বেড়ানি।"
....হেসে ফেলে মা, "হ্যাঁরে মায়ের কাছে আমার নামে নিত্যদিন নালিশ আসতো। তোমার ধিঙ্গি মেয়ে সামলাও বাপু।"
...."আর কি তারপর ঐ ধিঙ্গিমেয়েটা কে আমার ঘাড়ে চাপিয়ে দিলো তোর দাদু"--হাসতে হাসতে বলে বাবা। মা চোখ পাকিয়ে বলে," এই যে আমি সবার কাছে লক্ষ্মী বৌমাই ছিলাম।"
দিদির কাছে শুনেছিলো মায়ের খুব পছন্দ হয়েছে মলিমাসির মেয়ে ঝিলমকে। খুব স্মার্ট, ঝরঝর করে ইংরেজী আর হিন্দী বলতে পারে। ড্রাইভিং,ক্যারাটে,সুইমিং স্পোর্টস সবেতেই চ্যাম্পিয়ন। দেখতেও ভালো,শুধু একটু ডানপিটে।
মা আর বাবাকে নিয়ে নিজে গাড়ী ড্রাইভ করে সারা লক্ষ্ণৌ ঘুরিয়েছে। মা তো প্রশংসায় পঞ্চমুখ। ওহ কি স্মার্ট! কি মিশুকে, একাই দোকান বাজার সব করছে। আবার পড়াশোনাতেও ভালো। মা নাকি বলেছে আমাদের রাণা যা হাবা গোবা মার্কা ছেলে সারাদিন বই ছাড়া কিছু বোঝেনা। ওর জন্য এমন মেয়েই দরকার। দিদিকে লাগিয়েছে ওর পেছনে। দিদি সারাদিন ওকে জ্বালিয়ে মারছে । "
মায়ের পরিকল্পনাই সফল হলো ,শেষ পর্যন্ত ওকে মত দিতেই হলো। ওরা লক্ষ্ণৌ থেকে এসেছিলো রাণাদের বাড়ী। ওদের ব্যবহার খুবই ভালো, রাণার মায়ের বান্ধবী মলিমাসির কোন তুলনাই হয়না তেমনই ভালোমানুষ মেসোমশাই। শুধু বলেছিলেন, "মেয়ের আমার মোটেই বিয়ে করার ইচ্ছে ছিলোনা কোনদিন। তবে আমার শরীর খারাপ দেখে না করতে পারেনি। তাছাড়া চন্দনাকে ওর খুব পছন্দ। তবুও তোমরা একবার কথা বলে নাও।"
কথা বলতে গিয়ে তো রাণা পুরো থ।পরিস্কার করে ঝিলম বললো, "ও নাকি কোনদিন ভাবেনি বিয়ে করবে। ছেলেদের ওর অসহ্য লাগে। তবুও মায়ের কথা শুনতেই হলো, চন্দনামাসির ছেলে বলে কথা, মা তো প্রশংসায় অস্থির, তাই বিয়েটা ও করবে।" বাব্বা কি কাটা কাটা কথা মেয়েটার। তবুও রাণা হেসে জিজ্ঞেস করেছিলো, "ছেলেদের অসহ্য কেন লাগে শুনি?"
চোখ পাকিয়ে উত্তর দিয়েছিলো,"অত কৈফিয়ত দিতে পারবোনা, অসহ্য লাগে ,আবার কি এত কথা। বললাম তো আমার বিয়েতে আপত্তি নেই।"
ঝিলমকে দেখে না করা যায়না,শুধু একটু কাটখোট্টা এই যা। মায়ের কাছে তো কিছু বলার উপায়ই নেই। আসলে রতনে রতন চিনেছে, দুজনের স্বভাব প্রায় একরকম,আর ওর দিদিটাও হয়েছে তেমন।
এইভাবেই বিয়েটা হয়ে যায় ওদের। বিয়ের পরদিন ফ্লাইটে ফিরে আসে ওরা। ঝিলমের চোখে জল দেখে রাণারও খুব খারাপ লাগে,মাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদছিলো মেয়েটা। সত্যিই তো অনেকটা দূরে চলে আসতে হলো বেচারাকে। মলিমাসি শুধু বলেছিলেন,"চন্দনা আছে তো,দেখিস তোকে আগলে রাখবে।"
ক্লান্ত হয়ে বিকেলের দিকে ঘুমিয়ে পরেছিলো ঝিলম, রাণা দেখে ঠান্ডায় গুটিশুটি মেরে পড়ে আছে মেয়েটা। মায়ের কড়া হুকুম সন্ধ্যের পর এ ঘরে ঢোকা যাবেনা। যাক এখন তো বিকেল,ঝিলমের গায়ে চাদর দিতে গিয়েই বিপত্তি। এক ঝটকা খেলো রাণা। ঝিলমের ক্যারাটের জোর টের পেলো হাড়ে হাড়ে । অবশ্য পরে নিজেই সরি বলেছে ঝিলম।
বাড়ীর সবাই খুব খুশি ঝিলমকে পেয়ে, ওর মা আর দিদি তো মনে হয় কতদিনের পরিচিত আপনজন পেয়েছে। মেয়েটা সত্যিই খুব জলি কিন্তু কেন যেন একটু ছেলেদের থেকে দূরে থাকতে ভালবাসে। রাণাকে যেন পাত্তাই দিচ্ছেনা যত ভাব বাড়ীর সবার সাথে।
ফুলশয্যার রাতে ঘুমোতে ঘুমোতে অনেক রাত হয়ে যায়। তাই আর বিরক্ত করেনি ঝিলমকে, থাক বেচারা একটু ঘুমোক। ভোরবেলা ঘুম ভেঙে ঘুমন্ত ঝিলমের মুখটা দেখে মনটা কেমন উদাস হয়ে যায় রাণার। ডাকাবুকো মেয়েটা যেন একদম সরল বাচ্ছার মত পাশবালিশ জড়িয়ে ঘুমোচ্ছে।
কতক্ষণ তাকিয়ে ছিলো খেয়াল নেই হঠাৎ ঝিলমকে চোখ খুলতে দেখে চোখ সরিয়ে নেয়।
বিয়ের পর প্রায় একসপ্তাহ কেটে গেছে , অষ্টমঙ্গলাও হয়ে গেলো,তবুও কাছাকাছি আসতে পারেনি ওরা। অদ্ভুত একটা ভয় দেখেছে ঝিলমের চোখে। একদিন নিজেই বলেছে ," আমাকে একটু সময় দাও প্লিজ,একটু সময় দাও ফ্রি হতে।" জোর করে সম্পর্ক করাতে বিশ্বাসী নয় রাণা। ও এটুকু জানে সম্পর্কের ভিত্তি ভালোবাসার ওপর হওয়াই কাম্য,দাবী দিয়ে নয়।
রাণাকে জয়েন করতে হবে ইউনিভার্সিটিতে ছুটি প্রায় শেষ। ভেবেছিলো ঝিলমকে এবার নিয়ে যাবেনা। ওখানে একা একা ওর ভালোও লাগবেনা, সারাদিন কি করবে মেয়েটা একদম নতুন জায়গা। মা কিছুতেই শুনলোনা। শেষ পর্যন্ত ঠিক হলো মা বাবা গিয়ে কদিন ওখানে থেকে সব গুছিয়ে দিয়ে আসবে। শেষ পর্যন্ত তাই হলো, ওর মা বাবা এমনকি দিদি জামাইবাবু সবাই পিছু ধরলো ওদের। যাক ভালোই হলো সবাই মিলে বেশ ভালোই কাটবে কয়েকটা দিন।
সব কিছুর মাঝেই রাণার মনে জিজ্ঞাসার ভীড়। কেন ঝিলম শুধু ওর কাছেই ফ্রী হতে পারছেনা। আর সবার সাথে তো কি সুন্দর মিশে গেছে,মনে হয় যেন কতদিনের চেনা। সবাই ওকে পেয়ে খুব খুশি। তাহলে কি ওর আগের কোন সম্পর্ক ছিলো? নাকি রাণাকে ওর পছন্দ হয়নি?
দেখতে দেখতে ওদের শিলিগুড়ি যাবার দিন এসে গেলো। সবাই মিলে হৈ হৈ করে রওনা দিলো, খুব খুশি সবাই। ঝিলম তো বলেই ফেললো,"তোমরা সবাই না এলে আমি আসতামই না এখানে একা একা আমিতো আন্টির কাছেই থেকে যেতাম জবরদস্তি করে। "
মা চোখ পাকিয়ে বলে,"আন্টি কিরে? মা না বললে দেবো কানমলা।"....জিভ কাটে ঝিলম।
রাণার ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাশে কোয়ার্টার টা খুব সুন্দর। চারিদিকে গাছ পালা আর দূরে পাহাড়ের উঁকিঝুঁকি। কাছাকাছি আসতে চায় দুজনেই কিন্তু কেন যে ঝিলম কিছুতেই স্বাভাবিক হতে পারছেনা। ঝিলমের ও খুব খারাপ লাগে রাত্রি হলেই অদ্ভুত এক দোটানার মধ্যে থাকে ও। কেমন যেন ভয় করতে শুরু করে।
জয়ন্তীর সরকারী ট্যুরিষ্ট লজটা বুক করেছে রাণা ,সবাই মিলে একটু ঘুরে আসা যাবে। যদিও এখানেও আনন্দের কোন ঘাটতি নেই। সারাদিন আড্ডা চলছে, ঝিলমের বায়না ও গাড়ী ড্রাইভ করে নিয়ে যাবে সবাইকে। মায়ের বকুনি খেয়ে একটু নিরস্ত হলো।
অপূর্ব প্রাকৃতিক শোভা জয়ন্তীর, পাহাড়ের কোলে একটুকরো নিরিবিলি প্রকৃতি। পাশ দিয়ে ঝির ঝির করে বয়ে চলেছে মিষ্টি নদী। ইচ্ছে করলে বর্ষাকাল ছাড়া অন্যসময় হেঁটেও পার হওয়া যায়। সবুজ সুন্দর প্রকৃতি আর নানান পাখির ডাক। দিদি আর ঝিলম সারাদিন নেচে বেড়ালো ইচ্ছেমত। দুজনকেই খুব সুন্দর লাগছে।
সেদিন পূর্ণিমার রাত্রি চাঁদের আলোয় চারিদিক ভেসে যাচ্ছে। সাদা নেটের নাইটড্রেস পরে ঝিলম যখন ঘরে এলো রাণা জড়িয়ে ধরলো সমস্ত অনুভূতি দিয়ে শক্ত বাঁধনে।ঝিলম আজ নিজেকে আড়াল করলোনা কিন্তু হঠাৎ চমকে ছিটকে বারান্দায় বেড়িয়ে এলো। সারা বারান্দা রূপোলি আলোর বন্যায় ভেসে যাচ্ছে। বেতের সোফায় বসে হাঁটুতে মুখ গুজে কান্নায় ভেঙে পড়লো ঝিলম। রাণা এসে সামনে দাঁড়াতেই ওর কাছে যেন নিরাপদ আশ্রয় খুঁজলো মেয়েটা।
রাণা জিজ্ঞেস করলো, "তোমার কি হয়েছে ? বাড়ীর জন্য মন খারাপ? আমাকে বলো প্লিজ। আমি চেষ্টা করবো তোমার যাতে মন ভালো হয়।"
অসহায় লাগে ঝিলমের কি করে বলবে সে তার মন খারাপের কথা, অথচ আজ তাকে বলতেই হবে। নাহলে হয়ত অনেক দেরি হয়ে যাবে।
জয়ন্তীর পাহাড় আর চাঁদ থাকলো ঝিলমের মন খারাপের বন্ধু হয়ে। ওর মাথায় হাত রেখে ওকে শান্ত করে রাণা যা জানতে পারলো তাতে স্তব্ধ হয়ে যায় ও।
ঝিলমের যখন মাত্র সাত বছর বয়েস তখন ওর বাবা খুব অসুস্থ হয়ে হসপিটালে ভর্তি হয়েছিলেন। মাকেই তখন ছুটোছুটি করতে হত হসপিটালে তাই ঝিলমের স্কুল থেকে ফেরার পর ঘন্টা দুয়েকের জন্য ওকে রাখতেন মাসতুতো বোনের বাড়ীতে।
ছোট্ট ঝিলম মাকে বলেছিল,'মা মেসো আমাকে জড়িয়ে ধরে খুব আদর করে আমার না একটুও ভালো লাগেনা।" মা বুঝিয়েছিলেন অমন বলতে নেই বাবার মত মেসো, আদর করলে কি আছে। অমন বলতে নেই। পরের দিন ও যেতে না চাইলেও মা বুঝিয়ে বলেন আর দুটো দিন পরেই বাবার ছুটি হয়ে যাবে। মাসিকেও বলেছিলেন একটু দেখতে মেয়েটাকে। মাসিকে পাশের বাড়ি থেকে কেউ ডাকতে এসেছিলো। ভগবান হয়ত রক্ষা করেছিলেন ওকে, মাসি একটু বাদেই এসে পড়েছিলো নাহলে কি যে হোত! তবুও ওই ভয়ঙ্কর ঘটনার স্মৃতি তাড়িয়ে বেরাচ্ছে ঝিলমকে। বাড়ীতে এসে কান্নায় ভেঙে পরে ও । মাকে দেখায় শরীরের আঁচড়গুলো। অসহায় মা কান্নায় ভেঙে পড়েন। হে ভগবান মেয়েটাকে রক্ষা করতে পারলেননা শেষ পর্যন্ত। দোষ তো তারই মেয়েটাতো যেতে চাইছিলোনা। তিনিই গুরুত্ব দেননি। দেবেনই বা কিভাবে কোথায় রেখে যেতেন মেয়েটাকে। এমন ঘটনা তখন চাপা দিয়ে রাখা হত, এত প্রতিবাদ করার মত সাহস মানুষের ছিলোনা। সন্তানের বদনামের ভয়ে, তার ভবিষ্যতের চিন্তায় কাউকে কিছু বলেননি। যদিও আর কোন সম্পর্কই রাখেননি ওই বোন আর ভগ্নীপতির সাথে।
আশ্চর্য হয়ে যায় রাণা কি সাঙ্ঘাতিক লালসা একজন মধ্যবয়স্ক পুরুষের যার পাশবিক নির্যাতনের শিকারে ট্রমায় চলে গেছে একটা ফুলের মত সুন্দর মেয়ে। এত বছরেও ওই দুঃস্বপ্ন তাড়া করে বেড়াচ্ছে মেয়েটাকে। এখনও প্রেমের আবেদন ওর কাছে পাশবিক আবেদন বলেই মনে হয়।
কেন ধারাবাহিকভাবে আজও ঘটে চলেছে এমন ঘটনা। আজ হয়ত মানুষ প্রতিবাদ করার শক্তি পেয়েছে। কিন্তু ঝিলমের মা আর ঝিলম প্রতিবাদ করতে পারেনি লুকিয়ে লড়াই করে গেছে সমাজের চোখ বাঁচিয়ে।
ঝিলমের সেই ট্রমা আজও কাটেনি, এখনও মেয়েটা পুরুষের স্পর্শকে ভয় পায়।
ওর মা অনেক চেষ্টা করেছিলেন ওকে ডাকাবুকো করে তৈরী করতে। যাতে দরকার হলে বিপদে পড়লে ও দু এক ঘা বসিয়ে দিয়ে আসতে পারে।
ঠিক তেমনি তৈরী হয়েছে ঝিলম ,ক্যারাটের ব্ল্যাকবেল্ট,সব কিছুতেই চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু আজও একটা অসহায় মন লুকিয়ে আছে ওর মধ্যে ঠিক ছোট্ট শিশুর মত। এত বছরের খারাপ স্পর্শের অভিজ্ঞতা এখনও ওর মনের গভীরে আছে ক্ষতের মত, যা কিছুতেই ওকে স্বাভাবিক হতে দিচ্ছেনা রাণার কাছে।
আজ সরলভাবে স্বীকার করে ঝিলম রাণাকে ও খুব ভালবাসে। আবারও কান্নায় ভেঙে পড়ে মেয়েটা।
রাণা আলতো ছোঁয়ায় আদর করে ওর এলোমেলো চুলগুলোতে। সরিয়ে দেয় মুখের থেকে। কান্নাভেজা ঝিলমের মুখটা যেন আজ বড় মায়াবী লাগে রাণার। ঝিলমের আজ বড় হাল্কা আর নির্ভয় লাগে। রাণার হাতের শীতল স্পর্শে মনে হয় সব টাচ্ ব্যাড টাচ্ নয়। রাণার আজ খুব শান্তি লাগে বিয়ের পর এই প্রথম তার দুই বাহুর নিরাপদ আশ্রয়ে মেয়েটা নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে।
সমাপ্ত:-
Comments
Post a Comment