Skip to main content

আজ একটা ছোট অনুভূতি খুব শেয়ার করতে ইচ্ছে হলো,আজ থেকে ঠিক একবছর আগে লেখা শুরু করেছিলাম দিয়েছিলাম ফেসবুকে তারিখটা এটাই ছিলো। আমার মনে ছিলোনা,ফেসবুকই মনে করিয়ে দিলো।হঠাৎই এক বন্ধুর কাছে শোনা একটা ঘটনা লিখে। কাগজে কলমে আমার লেখা শুরু হয়েছিলো যখন ক্লাশ ফোর,স্কুলের ম‍্যাগাজিনে বেড়িয়েছিলো সেই লেখা। তারপর স্কুলে লিখেছি কিছু,একটা সময় পরে লেখাটা ছোট চিরকুটে চলে এসেছিলো যে কখন বুঝতে পারিনি। ইচ্ছে হলে ছোট ছোট লেখা লিখতাম ছেঁড়া কাগজে বা খাতার পেছনে। কখনো বা হস্টেলের বন্ধুদের দরজায় মারতাম পোষ্টার। ইনস্ট‍্যান্ট লিখে ফেলতাম যা মনে হত,তারপর একসময় সেটা আবদ্ধ হয়েছিলো প্রেমপত্রে,মানে নতুন বিয়ের পর বিরহে লিখতাম কলকাতা প্রবাসী স্বামীকে। এখনো যত্নে রাখা আছে চিঠিগুলো হয়ত কোন আনাচে কানাচে একান্তে। সংসারের থোড় বড়ি করতে গিয়ে কখন যে ভালোলাগা গুলো হারাতে বসেছিলাম বুঝতেই পারিনি। এক এক করে হারিয়েছিলাম ছবি আঁকা,আলপনা দেওয়া,লেখা,গান,আবৃত্তি সবই। যে গুণ গুলো ছিলোনা কখন যে সেগুলো শিখেছিলাম বুঝতেই পারিনি। রান্না শিখেছিলাম,উপার্জন করেছি সাধ‍্যমত। মন জয় করতে চেয়েছি সবার লক্ষ্মীমন্ত বৌ,বাধ‍্য গিন্নী আর দায়িত্ত্বশীল আর স্নেহময়ী মা হিসেবে। কিছু হারিয়েছি,পেয়েছি অনেককিছু। এই করতে করতে কখন যে দুইদশক পার করে দিয়েছিলাম বুঝতেই পারিনি। ভালো বন্ধুও হওয়ার চেষ্টা করছি একটা সময়,আনতে চেয়েছিলাম সবাইকে একটা ছাদের তলায়। আড্ডা,গল্পে আবার ফিরে পেতে চেয়েছিলাম আবার ইউনিভার্সিটির দিনগুলো। বন্ধুদের একটু ছোঁয়া পাওয়ার জন‍্য ছুটে গেছি অনেকদূরে,ভালো লেগেছে মন ভরেছে। তবে হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো বোধহয় আর কখনোই ফেরত আসেনা,যা যায় তা হয়ত চলেই যায়,আর ফেরেনা। বন্ধুত্বের ক্ষেত্রেও দেখলাম সবার অন‍্য জগত হয়ে গেছে,ছেলে মেয়ে সংসার নিজেদের কাজ নিয়ে সবাই ব‍্যস্ত। ফেসবুক আর হোয়াপে আলাপও হয়েছে কিছু অপরিচিত মানুষের সাথে। ভালো লেগেছে তাদের,কথা বলেছি, বন্ধু হতে চেয়েছি। কিন্তু কে জানে একটা সময়ের পর দেখেছি আমি বাড়ি আর বাইরে শুধুই ভালোমানুষী আর কর্তব‍্য করে গেছি। নিজের কথা কখনো ভাবিনি বোধহয় হয়ত ভাবার সুযোগই হয়নি তেমনভাবে। কর্তব‍্য আজও করি,বুঝি মুখে কিছু না বললেও বুঝি আমার ভালোলাগার চেষ্টা হয়ত ভালো লাগেনা কখনো বাড়ির প্রিয় মানুষটিরও। তাই নিজের কাজগুলো বাড়িয়ে নিয়েছি,চাকরি রান্না বান্না সব সামলে যে সময়টা পাই সে সময়টা কারো আ্যটেনশন ড্র করার চেষ্টা করিনা। ভাবিনা কেউ আমার কথা ভাবছেনা কেনো। প্রত‍্যাশা করিনা কারো কাছে কিছু। আজ আমি এক স্বয়ং সম্পূর্ণ নারী যে নিজের মনখারাপ আর একা থাকার সঙ্গী হিসেবে পেয়েছে ,মানে খুঁজে পেয়েছে এক হারিয়ে যাওয়া প্রিয় বন্ধুকে যাকে স্কুলে অঙ্কের ক্লাসে বা শেলি কিটস্ পড়তে পড়তে মিস্ করতাম। হারিয়ে ফেলে ছিলাম নিজের ভালোলাগাকে হাজার কাজের ভীড়ে। সময় পাইনা,সময় খুঁজি। প্রতিযোগীতা ভালো লাগেনা,আসলে জীবনে অনেক প্রতিযোগীতা পার হয়ে এসেছি। ভালো মেয়ে হওয়ার,ভালো বৌমা হওয়ার,ভালো বৌ হওয়ার,ভালো মা হওয়ার,ভালো শিক্ষিকা হওয়ার আবার কখনো বা ভালো বন্ধু হওয়ার প্রতিযোগীতা। এখন মনে হয় সবগুলোতেই শূন‍্য পেয়েছি হা হা হা। তাই লেখাটা শুধু ভালোলাগা আর ভালোবাসার জিনিস হয়ে থাক মানে আমার একান্ত গোপন প্রেম। লিখতে গিয়ে বহু মানুষের সান্নিধ‍্য পেয়েছি,ভালোবাসা পেয়েছি অনেক এই একবছরে। অনেক দাদা,দিদি,ভাই,বন্ধু,সন্তানতুল‍্য স্নেহের পাত্র পেয়েছি। তাই আজ এই একবছরের প্রাপ্তি আমার কাছে অনেক অনেক কিছু। অনেক ধন‍্যবাদ জানাতে চাই সবাইকে যারা অনেকটা সময় খরচ করে আমার হিজিবিজি চিন্তা পড়েন আমাকে ভালোবাসেন। ভালো থাকুন সবাই।

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...