Skip to main content

মিতুয়াকে খুঁজি এখনো

#মিতুয়াকে_খুঁজি_এখনো#

#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

    "কই দাও,এই তো হাতটা বাড়ালাম"...মিতুয়ার নিটোল ফর্সা হাতটা বাড়িয়ে দেয় সুশান্তর দিকে।
"আগে চোখটা বন্ধ করো, তারপর দেবো।"..." উহ্ আবার চোখ বন্ধ ! এই কোনো দুষ্টুমি করবেনা তো। যদি কেউ দেখে ফেলে না তাহলে আর ঐ কি যে বলে না মানে প্রবলেম হয়ে যাবে।"
     ...." কি হবে প্রবলেম শুনি? এতো ভয় কেনো তোমার? আজ হাতটা ধরে আটকে রাখবো একদম আমার কাছে।"
...." উরি বাবা,আমার বাবুজীকে তো জানো। আগে তোমার হাতটা ভাঙ্গবে তারপর আমারটা কেটে ফেলবে। এই আমি যাই তুমি শুধু শুধু ডাকলে আমাকে,কত তকলিফ হয় আসতে জানোতো। "
       ওর গুজরাটি কাজের নীল ঘাঘরাটা ধরে টানে সুশান্ত আর লজ্জায় গালটা লাল হয়ে যায় মিতুয়ার। একহাতে কাছে টেনে হাতটা শক্ত করে চেপে ধরে অনেকগুলো চুড়ি পড়িয়ে দেয় হাতে। চুড়ির মিষ্টি রিনঝিন আওয়াজে কেমন যেন একটা নেশা লাগে মিতুয়ার। মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকায় হাতের দিকে,হাতটা সরিয়ে নেয়না,সুশান্ত ধরে রাখে হাতটাকে একদম ওর বুকের কাছে শক্ত করে। মিতুয়ার খুব পছন্দ বিভিন্ন রঙের চুড়ি,আর ওর নিটোল হাতে সত‍্যিই সুন্দর লাগে একরাশ চুড়ির মেলা।
           এক গোছা মোটা চুলের বিনুণী নাড়িয়ে বলে," এবার ছাড়ো হাতটা আমি আসি,বাবুজী এসেই আমাকে খুঁজবে। আমি লাডলি বেটি আছি তো।"
...." আর আমার কি শুনি,আমার মিতুয়াকে তো সবসময় চোখের সামনেই রাখতে ইচ্ছে করে,ছাড়তেই ইচ্ছে করেনা।"
...." ইশ্ তুমি না,খুব আছো একটা বাজে ছেলে! আমি চললাম এখন।"
  ওর ছুটে চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে সুশান্ত। মনটা এলোমেলো হয়ে যায় এক ধাক্কায়।
ইশ্ কত তাড়াতাড়ি যে শেষ হয়ে যায় সময়গুলো। সবসময় শুধু ভয় আর তাড়া সত‍্যি আর ভালো লাগেনা। একটা ভালো চাকরি পেয়েই বাড়িতে বলতে হবে। নিশ্চয় মা আপত্তি করবেনা। আর মিতুয়াকে তো মোটামুটি সবাই চেনে ওদের পাড়ায়। হাসিখুশি একটা মিষ্টি প্রাণোচ্ছল মেয়ে।
        বাড়িতে বলতে হোলোনা,একদিন মা আর বড়দি ডেকে বললো," তোর সাথে একটু কথা ছিলো। একটু ভালো চাকরির চেষ্টা কর,সারাদিন দেখি মনটা অস্থির করে থাকিস,কি ব‍্যাপার বলতো? এতো ভালো গান গাইতিস সেটাও তো করিসনা।"...সুশান্ত কিছু বলার আগে বড়দি বলে ওঠে," আমার কাছে তো অন‍্যরকম খবর আছে মা। তুমি ওকে একটু সামলে রেখো। ভালো চাকরি করলে না হলে একটা কিছু হত,মানে বিয়ে দিয়ে দিতাম।"
...." আমি আবার কি করলাম,মা যা বলে সবই তো শুনি,কি বলো মা? শুনছিনা?"
   ...." ভাই,আমাদের বিয়ে হয়ে গেছে,এখন তুই মায়ের ভরসা। তুই কি ঐ গুজরাটি মেয়েটা মানে মিতুয়ার সাথে মানে ঘুরছিস নাকি?"..দিদির কথা শেষ না হতে হতেই মা বলে ওঠে," কি বলছিস এইসব,আমি তো ভাবতেই পারছিনা। দিদি যা বলছে তা ঠিক? বল আমাকে,তোর কি মাথা খারাপ হয়েছে শেষে ঐ গুজরাটি মেয়ে,যা মেজাজ ওর বাবার।"
      মাথা নিচু করে সুশান্ত,কি করে বলবে মাকে। মা যদি রাগ করে।
" শোন ভাই,তুই যখন কিছু বলছিসনা বুঝলাম ব‍্যাপারটা একদম সত‍্যি আমার কানে যা এসেছে। আমাদের  আপত্তি নাই বা থাকলো। তবে ওরা কি মেনে নেবে? ওর বাবা কাকা দাদা প্রত‍্যেকেই খুব রাগী।"...." তুই কি করে বলছিস,আমরা মেনে নেবো। ওই গুজরাটি মেয়েকে একটা মাত্র ছেলের বৌ করবো,আর ওদের মেয়েদের আমাদের বাড়িতে বিয়ে দেবেই কেনো?"
     "ভাই তুই সরে আয়,অযথা ঝামেলায় জড়াসনা। আমার ভালো লাগছেনা ব‍্যাপারটা।"
      ..." তোরা যদি মিতুয়াকে মেনে নিস আমি সবটা সামলে নেবো। ওকে ছাড়া আমি..."
    কথাগুলো গলার কাছে আটকে যায় সুশান্তর।
  "আচ্ছা আমি কথা বলি মায়ের সাথে। তবুও একবার ভেবে দেখি।"রাতে ভালো করে ঘুম হয়না সুশান্তর এদিক ওদিক করে কখন যে ভোরের দিকে চোখটা লেগে আসে বুঝতে পারেনি। গঙ্গার ধারে আসতে বলেছিলো আজ মিতুয়াকে,কে জানে আসতে পারবে কিনা। অনেক অনেক কথা বলার আছে ওর সাথে। ওকে ছাড়া সত‍্যি কিছু ভালো লাগছেনা। এদিকে বাড়িতে মায়ের মুডটাও খুব একটা ভালো লাগছেনা তবুও ওর শুকনো মুখটা দেখে আর খাবার থালা নিয়ে নাড়াচাড়া করছে দেখে বললো," এতো চিন্তা করিসনা,তোর খুশি হলে কর আমি বাধা দেবোনা তবে আমার একটু ভয় লাগছে কেনো জানিনা।" মায়ের কথা শুনে মনটা একটু হাল্কা হলো ওর,তবুও একটু চিন্তা হলো সত‍্যিই তো প্রেমটা থাকবে তো,ও পাবে তো মিতুয়াকে একদম নিজের করে।
         পরের দিন অনেকক্ষণ গঙ্গারঘাটে অপেক্ষা করার পর এলো মিতুয়া। হাতে ওর দেওয়া চুড়িগুলো ঝিকমিক করছে,ওর গভীর কালো চোখদুটো মনকে বলে হারিয়ে যেতে নিরুদ্দেশে।
..." শোনোনা,আমরা বিয়েটা করেই নি। তারপর তো আর কেউ কিছু করতে পারবেনা।"..মাথাটা লজ্জায় নিচু করে মিতুয়া,পাগল একটা,একটু ধৈর্য রাখোনা। " আমি হয়ত আর এভাবে লুকিয়ে আসতে পারবোনা। আজ ভাবিকে অনেক বলে এসেছি। আর এইভাবে বিয়ে,আমি ভাবতে পারছিনা,বাবুজী পুলিশ কেশ করে দেবে,পাড়াতে মারামারি হবে একটা।"..."যা হয় হোক, আমি তো আছি ভয় কি?"..." তোমার জন‍্যই তো আমার ভয়,হয়ত তোমায় জানে মেরে দেবে।"...."মারুক,যা হয় হবে।আমার বাড়িতে তোমাকে মেনে নেবে সবাই। আর চাকরি পেয়ে যাবো একটা ভালো দেখো। এখন যেটা করছি সেটাতে তোমার জন‍্য চুড়ি, আর ভালোবাসা দিয়ে ফুচকা এনে খাওয়াতে পারবো।"
...." কি! আমি শুধু ফুচকা খেয়ে থাকবো নাকি? একদম দিওয়ানা হয়ে গেছো তুমি।".." হয়েছি তো, তুমি যদি রাজি থাকো তাহলে আজই চলো দক্ষিণেশ্বরে গিয়ে বিয়েটা করেনি..."
    একটু কেঁপে ওঠে মিতুয়া না না আজ না,তাহলে ভাবিকে ওরা বের করে দেবে। আর তোমাকেও পুলিশে দেবে।"
        অনেক টুকরো কথার জাল বুনতে বুনতে বাড়ি ফিরে যায় দুজনেই। প্রায় দিন সাতেক বাদে মিতুয়া বলে ওরা কিছুদিনের জন‍্য দেশে যাচ্ছে ওর দাদিমার খুব অসুখ। বাবুজী হঠাৎই টিকিট কেটে এনেছে,ভাইয়া ভাবি সবাই যাবে।...মনটা খুব খারাপ হয়ে যায় সুশান্তর," কিন্তু আমি কি করে থাকবো? তোমাকে যেতে হবেনা।"
...." দাদিমা অসুস্থ কি করে বলবো বলো? আর সবাই তো যাচ্ছি। আমি চলে আসবো তাড়াতাড়ি।"
        মিতুয়া শক্ত করে ধরে ওর হাতটা মাথা রাখে বুকে,সুশান্ত জড়িয়ে ধরে। আজ দুজনেই যেন বড় বেশি মনের কাছাকাছি। তখন প্রায় সন্ধ‍্যে হয়ে আসছে। মিতুয়ার চোখ দুটো একটু ছলছল করে ওঠে। "শোনো,যদি পারো একবার কারো ফোন থেকে ফোন কোরো আমাকে। আমি তো করতে পারবোনা।" মুখে ফুচকাটা নিয়ে মিষ্টি হাসে মিতুয়া,মাথাটা নাড়ে। ছাড়তে ইচ্ছে না করলেও হাত ছাড়ে ওরা। চলে যায় মিতুয়া পরদিন। হাজারো কাজের মাঝে সুশান্ত বুঝতে পারে সব আছে কিন্তু কেমন যেন মনটা বড় ফাঁকা ফাঁকা। পনেরো দিন দেখতে দেখতে কেটে যাবে কিন্তু কিছুতেই যেন কাটতে চায়না। ওদের বাড়ির পাশ দিয়ে যাবার সময় মনটা বড় খারাপ লাগে,দরজার তালাটা দেখে।
    এর মাঝে দিদিরা এসে ঘুরে গেলো,ভালোই কাটলো কয়েকটা দিন। সত‍্যি মেয়েটা একটা ফোন করলো না এই কয়দিনে, কেমন আছে ওর দাদিমা কে জানে? এবার আসুক আর ছাড়বেনা,একদম রেখে দেবে নিজের কাছে। তিন চারদিন বাদে হঠাৎই দুপুরে একটা ফোন আসে আননোন নম্বর থেকে,মনটা চঞ্চল হয়ে ওঠে সুশান্তর। যাক তাহলে এতোদিনে মনে পড়েছে। ফোনটা কানে নিয়ে আধা হিন্দী,আধা গুজরাটিতে যা শুনলো তা বোধহয় ও স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি। মিতুয়াকে ওর বাবা আর কাকারা জোর করে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে ওদের গ্ৰামের পাশেই,খবর পেয়েই যেন ও চলে আসে খুব কাঁদছে মেয়েটা,ওকে ওরা আটকে রেখেছে।

    কিছুই ভাবতে পারেনা সুশান্ত শুধু ঠিক করলো তক্ষুণি ওকে যেতে হবে গুজরাট,অবসন্ন শরীরটাকে টানতে টানতে কোনরকমে স্টেশনে পৌঁছেছিলো সেদিন কারণ ফ্লাইটে যাওয়ার টাকা ওর কাছে ছিলোনা।
  মা দিদিদের কোন কথাই শোনেনি,হাতে মাত্র দুদিন ওকে এর মধ‍্যেই পৌঁছতে হবে গুজরাটে। রিজার্ভেসনের তোয়াক্কা করেনি,মিতুয়ার সাথে কথা হয়নি ফোন করেছিলো ওর ভাবি। ও মোটামুটি নজরবন্দী ওকে না জানিয়ে দেশে কোন এক ছেলের সাথে বিয়ের সম্বন্ধ করেছিলো ওর বাবা। ওদের প্রেমটা জানাজানি হয়ে গিয়েছিলো কোনভাবে। উনি মাথা গরম করেননি,মাথা ঠান্ডা রেখে প্ল্যান করে দেশে চলে যান। ঠিকানাটা জেনে নিয়েছিলো খুব তাড়াতাড়িতে ওদের বাড়ির। দুদিন কিভাবে যে ট্রেনে কাটিয়েছিলো ভাবতেই পারেনি। ক্লান্ত শরীরটাকে টানতে টানতে যখন পৌঁছলো ততক্ষণে ওর হলদি হয়ে গেছে,আর কিছুক্ষণ বাদে বর আসবে। বিয়ে বাড়িতে সুশান্তকে দেখে মিতুয়ার বাবার মাথায় আগুন জ্বলতে থাকে। ওকে মারধোর করে ওরা ফেলে দেয় আধমরা অবস্থায় অনেকটা দূরে এক রাস্তায়। পুলিশে দিতে চায়,খুনের হুমকি দেয়। ওর একার পক্ষে হয়ত ভালোবাসাকে খুন হয়ে যেতে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিলোনা।
   চিন্তায় ভাবনায় অস্থির হয়ে যায় ওর বাড়ির লোক। সুশান্তর জীবনে মিতুয়া এক অলিখিত প্রেমের গল্প যেখানে নেই কোন সম্পর্কের পরিণতি। পুরোটাই চোখের জল আর রক্তে ধোয়া প্রেম। মিতুয়া,সুশান্ত পাগলের মত ভালোবাসতো যাকে সে তার ভাঙা মন নিয়ে আর চোখে জল নিয়ে সুহাগ রাতে,গয়নার বাক্সে লাল সবুজ চুড়িগুলো গোপনে রেখে ওর শরীরটাকে ছেড়ে দিতে বাধ‍্য হয় এক অন‍্য পুরুষের কামনার কাছে। হয়ত এভাবেই খুন হলো আরো অনেকের মত ওদেরও ভালোবাসা।
        আহত রক্তাক্ত সুশান্তকে উদ্ধার করেছিলো কিছু ভালো মানুষ সাহায‍্য করেছিলো, শরীরের ক্ষত একটু একটু করে সারলেও মনের ক্ষত সারেনি।
     সুশান্তর কখনো মনে হয়না মিতুয়া ওকে ঠকিয়েছে। প্রেমে ব‍্যর্থ হয়ে কখনো ইচ্ছে করেনি আ্যসিড বাল্ব ছুড়ে দিতে ওর মুখে। সঙ্গীত কেই প্রেমিকা করে নিয়েছে যে কখন বুঝতেই পারেনি,যে সময়টা গঙ্গার ঘাটে বা পার্কে বসতো সেই সময়টা এখন রেওয়াজ করে আর কখনো বা গায়," মোর প্রিয়া হবে রানী দেবো খোঁপায় তারার ফুল।"যে মুখটা ওর কাছে ছিলো চাঁদের আলোর মত স্নিগ্ধ সেই চাঁদমুখের স্বপ্ন হয়ত আজও দেখে ঘুমের মধ‍্যে। তাই আজও ভুল করে কখন যে হোয়াটস আ্যপ বা মেসেঞ্জারে গুডনাইট মিতুয়া কথাটা টাইপ করে ফেলে ওর নিজেরই অজান্তে বুঝতেই পারেনা। পরে বন্ধুরা মেসেজ করে মজা করলে সরি বলে। গুজরাটের কোন প্রত‍্যন্ত গ্ৰামে কলসী করে জল তুলতে তুলতে হাতের কঙ্গনের দিকে তাকিয়ে হয়ত আনমনা হয়ে মিতুয়াও ভাবে কেমন আছে ঐ পাগলটা,যে একদিন পাগলের মত ওকে ভালোবেসেছিলো কিন্তু কাছে ধরে রাখতে পারেনি।
           সমাপ্ত:-
      

     
         

       

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...