Skip to main content

প্রশ্রয়

"বাপি ও সোনা ওঠ না,কত বেলা হয়ে গেলো। চা করে রেখেছি খাবি কখন?ওঠ বাবা,তুই যে কাল বলেছিলি গরম গরম কচুরী খাবি বাবা কখন বাজারে বেড়িয়ে গেছে আনতে। এই এলো বলে,উঠে পড় এবার।"
...."ওহ্ মা! এর থেকে আমার হস্টেলই ভালো। একটু শান্তিতে ঘুমোতে পারি অন্তত। বাড়ি এলেই শুরু হয়ে যায় বাপি আর বাপি‌। মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে একদম।"
           ছেলের ধমকানিতে চুপ করে যায় সীমা,ওদিক থেকে হাঁক মারে বিমল,"কই গো একবার নিচে এসোনা,অনেকগুলো ব‍্যাগ হয়ে গেছে আমি আর পারছিনা।"
...." আসছি আসছি,দাঁড়াও ওখানে।"...."বাপি উঠেছে,রাজুর দোকান থেকে একদম গরম কচুরী এনেছি ওর জন‍্য সাথে গরম জিলিপিও।"...সংক্ষেপে না বলে সীমা ব‍্যাগদুটো নিয়ে উঠে পড়ে দোতলায়।
         বাবা মায়ের ডাকাডাকিতে উঠতেই হয় একরাশ বিরক্তি নিয়ে শঙ্খকে,ভালো নাম শঙ্খশুভ্র। অনেক আদর করে নাম রেখে ছিলেন বিমল। বিয়ের আটবছর বাদে কত ঠাকুর দেবতা ধরে ঐ সন্তান মানে ওদের শিবরাত্রির সলতে। শঙ্খ বেশ কয়েকবছর বাইরে আছে,এটা ওটা অনেককিছু ট্রাই করে এখন প্রাইভেটেই একটা চাকরি করে। মাইনে তেমন কিছু নয় তবে ওর অনেক উচ্চাশা আর তেমনই ঠাট বাট। চোখে রেবানের সানগ্লাস,দুটো তিনটে ফোন মোটামুটি পায়ের পাতা থেকে মাথার চুল পর্যন্ত সবটাই ব্র্যান্ডে মোড়ানো। নিজে যা মাইনে পায় তাতে কুলোয় না অবশ‍্য কোন মাসেই আর তার ফলে বিমলকে প্রতিমাসেই বেশ কিছু টাকা পাঠাতে হয় ছেলের জন‍্য। তাই বন্ধুবান্ধব,খাওয়া দাওয়া কোন কিছুতেই খুব একটা খামতি নেই।
...." মা শোন,আমাদের দোতলাটা এবার একটু রিনোভেট করো,আমার সব বড় বড় বন্ধুবান্ধব। অনেকেই বাড়িতে আসতে চায়।"..." তা ঠিক,কিন্তু অনেকটা খরচ পড়বে রে।"..." তাতে কি সামনেই তো বাবার রিটায়ারমেন্ট,ওখান থেকেই করবে।"...বিমল শুনে বিরক্ত হন," এরপর থেকে তো এতটা টাকা পাবোনা,মাইনে কমবে। তাই এত খরচ না করাই ভালো।" তবুও ছেলের আবদারে সব হয়। সীমা জানতে পারে শঙ্খর বান্ধবীর কথা ওরা সামনে বছর বিয়ে করতে চায়।" তোর বিয়েতে আমাদের আপত্তি নেই তবে তুই চালাতে পারবি তো সবটা। "..." অত ভেবোনা,সব ম‍্যানেজ হয়ে যাবে,আমি তো চাকরির বাইরেও কিছু এডিটিংয়ের কাজ করি,আর ও কিছু ইনকাম করে চলে যাবে।"...মাকে ছবি দেখায় শঙ্খ ওর বান্ধবীর তবে বেশ আধুনিকা মনে হলো মেয়েটিকে সীমার একটু ইতস্তত হয়,"হ‍্যাঁ রে আমরা তো খুব সাধারণ,ও পারবে তো এই বাড়িতে মানিয়ে নিতে?".." হ‍্যাঁ হ‍্যাঁ ওসব নিয়ে ভেবোনা,তাছাড়া ও তো বাইরেই থাকবে বেশি,কদিন আর তোমাদের সাথে থাকবে?"
             শঙ্খর বিয়ে হয়ে যায় রোশনীর সাথে বেশ ধূমধাম করে। সবাই বেশ খুশি,তবে বৌমা একটু বেশিই আধুনিকা। অষ্টমঙ্গলা সেরে ওরা ফিরে আসে আবার এখানে কয়েকদিন থেকে ওরা চলে যাবে কাজের জায়গায়। সীমা দেখে এবার সাথে কোন গয়নাই আনেনি রোশনী,একদম খালি খালি এসেছে। " সব গয়নাগুলো কি করলে? আমিও তো অনেক কিছু দিয়েছি। একদম ন‍্যাড়া হয়ে এসেছো। তোমায় নিয়ে ভাবছিলাম একটু আত্মীয়স্বজনের বাড়ি যাবো। অনেকেই বলে রেখেছে।"..." ওগুলো সব মায়ের কাছে রেখে এলাম,গয়না ক‍্যারি করা তো ঠিক নয়। চুরি হয়ে যেতে পারে।" সত‍্যি তো কথাটা ঠিকই বলছে। আত্মীয়স্বজনের বাড়ি যাবার সময় নিজের গয়নাতেই সাজিয়ে নিয়ে যায় রোশনীকে সীমা। নতুন বৌমা বলে কথা। কদিন বাদেই তো ওরা চলে যাবে।
        ওরা চলে গেলো কিন্তু প্রত‍্যেক মাসে ছেলের চাহিদা বাড়তে লাগলো। " বাবা,এই মাসে আরো কিছু বেশি টাকা পাঠাও,বুঝতেই পারছো বাড়ি ভাড়া তার ওপর হোম ডেলিভারির খাবার নিই সবটাই তো দিতে হয়।"...তিন চার মাস ছেলের দাবী মত টাকা পাঠাতে থাকেন বিমল। কিন্তু সত‍্যি তো পারা যাচ্ছেনা আর কতদিন এভাবে টাকা পাঠাতে থাকবেন।.."বাপি শোন,এ মাসে আমার আর তোর মায়ের কিছু টেস্ট আর চেকআপ আছে এবার অত টাকা পাঠানো যাবেনা।"
    "শোন এই মাসে একটু বুঝে খরচ করো,বাবা অতটাকা দিতে পারবেনা। বাড়িতেই রান্না করো।"..." সে কি আমি কখন রান্না করবো?তা হবেনা,তুমি পারলে করো। আমার প্রত‍্যেক মাসে দশহাজার টাকা হাতখরচ চাই ওসব জানিনা। তুমি দাও আমি কথা বলবো। কোন মুরোদ নেই তো বিয়ে করেছিলে কেন শুনি? তখন তো অনেক বড় বড় লেকচার দিয়েছো। এখন তো দেখি কিছুই নেই।"..."তুমিও তো অনেক বলেছো,তোমারও তো কোন যোগ‍্যতা নেই। শুধু সাজগোজ আর সিগারেট তার উপর ড্রিঙ্কস ও আছে।"..."বেশ করি একটা অপদার্থ ছেলে কোথাকার নিজেও তো নেশা করো,সে বেলা? কি না খাও কিছুই তো বাকি নেই। আমি তো শুধু সিগারেটটাই খাই। মিথ‍্যেবাদী একটা।"
              শঙ্খ আর রোশনীর এক অদ্ভুত সংসার.. যেখানে নেই কোন বাঁধন,নেই কোন নিয়ম। যে যার মত আসে,খাবার আসে হোটেল থেকে। ঘরে ছড়ানো নোংরা,এলোমেলো জামাকাপড়। এ যেন এক অসুখী দাম্পত‍্যের মেসবাড়ি। সীমার খুব ইচ্ছে কয়েকদিন গিয়ে থাকা ছেলে বৌমার কাছে ।ও বলতেই ছেলে বললো," মা আমাদের ওয়ানরুম ফ্ল্যাট তোমরা থাকবে কোথায় ওখানে শুনি।" তাই ওদের আর আসা হয়না।
         দিন দিন ওদের চাহিদা বাড়তেই থাকলো,শঙ্খেরও খুব অসুবিধে ওর হাতখরচ কমছে কারণ রোশনীর চাহিধা মেটাতেই অনেক খরচ হয়ে যায়। চলে মন কষাকষি আর ঝগড়াঝাটি। কোনদিন হয়ত সেই নিয়ে গলা আরো বেশি উঁচু হয়,আর তারপরেই শঙ্খর ঘুমের ওষুধ খেয়ে পাশ ফিরে ঘুম আর রোশনীর সিগারেটে টান দিয়ে মনের জ্বালা মেটানো।
               হঠাৎই শঙ্খ মানে সীমার আদরের বাপি বাড়ি চলে এলো। " কিরে বাপি,তুই একা! বৌমা এলোনা?"..." না মা ওর তো ওখানে কাজ আছে তাই পরে আসবে। আমি এলাম কয়েকদিন ছুটি নিয়েছি।"..ছেলের রকম সকম একদম ভালো লাগেনা ওদের,একি সারাদিনই প্রায় ঘুমোতে চায়,ফেরার নামও করছেনা।.." এই শোন আমি রোশনীর সাথে কথা বলবো।" সীমা বিমলকে ফোন করতেই হয়না তার আগেই রোশনীর ফোন আসে," কি ভেবেছে আপনাদের ছেলে মায়ের আঁচলের তলায় ঢুকে থেকে বাঁচবে? ওকে বলবেন আমার হাতখরচের টাকাটা পাঠিয়ে দিতে।"...ছেলের কাছে কিছু শুনেছিলো ওরা,চাপ দিতে মোটামুটি বেড়িয়ে পড়ে। ওর চাকরিটা আর নেই,আর তার ওপর রোশনীর এত টাকা দেওয়াটা আর ও পেরে উঠছে না।"...এরপর থেকেই আসতে থাকে রোশনীর ফোন আর তার সাথে অশ্রাব‍্য গালাগাল চাপে পড়ে বিমল টাকা পাঠাতে থাকেন প্রতি মাসে দশহাজার করে। তবুও মাঝে মাঝেই আবার টাকা চেয়ে পাঠাতো রোশনী। আর তার সাথে জঘন‍্য সব কথা। আকাশ থেকে পড়ে সীমা,তার ছেলেটি যে বড় বড় গল্প করেছে এতদিন সবটাই,তাও জানতে পারে। ছেলের নেশার কথাও জানতে পারে।
       কান্নায় ভেঙে পড়ে সীমা,স্তব্ধ হয়ে যায় বিমল হায় ভগবান এ কেমন ছেলে ওরা মানুষ করলো যার মুখে সবসময় বড় বড় কথা। এতদিন নিজেও ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে স্বপ্ন দেখেছে আর ওদেরও দেখিয়েছে। কি করবে ওরা এখন? সন্তান বাবা মাকে কথায় কথায় ছেড়ে দিলেও ওরা পারলেন না সন্তানকে ছেড়ে দিতে। তবে এর মধ‍্যেই ঘটে গেলো এক চরম বিপর্যয়,ওরা টাকা না দেওয়াতে ক্ষিপ্ত রোশনী প্রতিদিন রাতেই ফোনে হুমকি দিত। ওরা ফোননম্বর পাল্টে দেওয়াতে কি করবে ভেবে পায়না রোশনী,টাকা ওর সত‍্যিই খুব দরকার।
         সেদিন রাতে ওরা তখন ঘুমোচ্ছে হঠাৎই মাঝরাতে দরজায় খুব জোরে জোরে কড়া নাড়ার শব্দ," আমরা পুলিশ,দরজাটা খুলুন। নাহলে ভেঙে ফেলবো। ".. ভয়ে উৎকন্ঠায় দরজা খোলেন বিমল,একদল পুলিশ আর বড় জিপ নিয়ে আসে রোশনী। ও ৪৯৮ করেছে শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে,টাইট জিন্স আর টাইট গেঞ্জি পরা রোশনীকে দেখে চমকে ওঠে সীমা। " ইনস্পেক্টর ওনাদের বলুন আলমারি খুলতে আমার অনেক গয়না এখানে আছে। "..বলে ওঠে সীমা," না ওর কোন গয়না এখানে নেই,ওগুলো আমার গয়না,বিশ্বাস করুন। ".." লকার খুলতে বলুন ওনাকে স‍্যার" বলে রোশনী। আলমারি খুলে দিতে বাধ‍্য হয় সীমা। বাড়িতেই গয়না রাখতো সীমা,আর রোশনীকে এর আগে নিজের গয়না পরিয়েছে তাই সবটাই জানতো ও। তাই লকার থেকে সীমার গয়নাগুলো তুলে নেয় ও।" স‍্যার বিশ্বাস করুন,ওগুলো আমার গয়না।".."আপনি প্রমাণ দিয়ে নিয়ে যাবেন পরে থানা থেকে,সবগুলোর ক‍্যাশমেমো লাগবে।"..ওরা শঙ্খকে আ্যরেষ্ট করে নিয়ে যায় সে রাতেই,ননবেলেবল অফেন্স।
      পরদিনই ব‍্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে সীমা আর বিমল রওনা দেয়। "হে ভগবান,কার পাপে কে শাস্তি পাচ্ছে? অথচ কি করে ফেলবো ছেলেটাকে!"
      সত‍্যি ছেলেকে ফেলতে পারেনা ওরা,লড়াই চলতে থাকে, সর্বস্বান্ত হয়ে যায় ওরা। ফেরত পায়না গয়না। অসুস্থ হয়ে পড়ে সীমা,চোখের জল ফেলে ফেলে চোখদুটো অন্ধ হওয়ার জোগাড়। আজকাল মুখে খাবারও উঠতে চায়না ঠিকমত।
     প্রায় দুইবছর লড়াই করে ডিভোর্সটা হয়ে যায় ওদের তবে বিমলের গচ্ছিত টাকার সবটাই চলে যায়। সীমা ফেরত পায়না ওর গয়নাগুলো,ওর বিয়ের সময়ের গয়নার ক‍্যাশমেমো কোথায় পাবে?
             অনেকদিন বাদে হয়ত নিশ্চিন্ত জীবন,কিন্তু নাহ তা হয়না। শঙ্খ ডুবে যায় নেশায় আর মানসিক অবসাদে। হয়ে ওঠে খুব হিংস্র,ভয়ে দরজা বন্ধ করে রাতে শোয় ওরা। বাধ‍্য হয়ে ওকে আ্যসাইলামে দেয় ওরা আর কোন উপায় ছিলোনা। এর মাঝেই সীমার ধরা পড়ে ক‍্যান্সার,নড়ে যায় বাড়ির স্তম্ভটা। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করতে থাকে বিমল। সীমাও বাঁচতে চায় বিমলের জন‍্য,সারাজীবন মানুষটা মার খেয়েছে ও চলে গেলে কে দেখবে মানুষটাকে?
           মাঝে চারটে বছর সীমার চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে থাকে বিমল,বাড়ি প্রায় অচল। শঙ্খ এখন কিছুটা ভালো আছে,একটা চাকরি পেয়েছে যদিও ছোটখাটো তবে পার্মানেন্ট। এক চিলতে আলো দেখে সীমা। " মা একটা কথা বলবো,আমি এবার বিয়ে করতে চাই।"..আবার বিয়ে!অস্বস্তিতে পড়লেও তারা অমত করলেননা। সীমার হাতে দিন গোণা সময়,সংসারের হাল ধরতে কেউ এলে আসুক। যদি ছেলেটা ভালো থাকে। এবার খুব সাধারণ ঘরের মেয়ের খোঁজ আসে,শঙ্খ হ‍্যাঁ করাতে ওরা আর আপত্তি করেননা। তবে সীমার ভাগ‍্যে বোধহয় আর সুখ নেই,অতিরিক্ত স্নেহ আর প্রশ্রয় শঙ্খকে করেছে মাত্রাছাড়া আত্মসুখী। কোন সহানুভূতিই ওরা পায়না ছেলের কাছ থেকে। বিমলের আজকাল হাঁটতে খুব কষ্ট হয়। বয়েস তো কম হলোনা,তবুও সারা সংসারের দায়িত্ব তাকেই নিতে হয়। তার সাথে সীমার যত্ন তো আছেই।
       ওদের নতুন বৌমা প্রতিমা,ভালো ব‍্যবহার করেনা ওদের সাথে। শঙ্খর ওপর জমে থাকা রাগটা সবসময় উশুল করে শ্বশুর শাশুড়ির ওপর। অথচ একটা সময় সব জেনেই ও এসেছিলো এই বাড়িতে একদম গরীব ঘর থেকেই মেয়ে এনেছিলো ওরা। তবুও হয়ত সুখের ভাগ‍্য সবার থাকেনা,তাই সীমাকে এখনো চোখের জল ফেলতে হয় বৌমার খারাপ ব‍্যাবহারে। বিমল তরকারী কাটা থেকে অন‍্য সব কাজ করেও একটু ভালো কথা শুনতে পায়না। সীমার শরীর খারাপ হতে লাগলো আরো বেশি তবে এর মাঝেও একটা ভালো খবর পাওয়া গেল প্রতিমা মা হতে চলেছে। শঙ্খ যেন কিছুতেই খুশি নয়,ওর অত‍্যন্ত উচ্চকাঙ্খা ওকে পুড়িয়ে শেষ করে দেয়। এমন জীবন তো ও চায়নি,একটা সাধারণ চাকরি আর সাধারণ বৌ। শঙ্খর অবসাদ বাড়তে থাকে অথচ একসময় নিজেই বিয়ে করতে চেয়েছিলো।
          প্রতিমার ছেলে হলো,অনেক দুঃখ আর মৃত‍্যুযন্ত্রণার মাঝেও নাতির মুখ দেখে একচিলতে সুখ পেলো সীমা। প্রতিমাকে বললো.." ওকে স্নেহের সাথে সাথে শাসনও কোরো বৌমা। আমরা বাপিকে তো কিছুই করিনি শুধু আদর দিয়ে গেছি। মুখ ব‍্যাকায় প্রতিমা,"নিজের ছেলের ভবিষ‍্যতের সাথে সাথে আমার জীবনটাও নষ্ট করেছেন।" সীমার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। দু মাসের মধ‍্যেই চলে যায় সীমা। বিমল আজও পাপের প্রায়শ্চিত্ত করে চলেছে। শঙ্খকে এখনো শোধরাতে পারেনি,নীরবে অসহায়ের মত সহ‍্য করে ওর উপদ্রব। আজ বর্ণপরিচয়ের রাখাল আর গোপালের গল্প বড় বেশি মনে পড়ে, সময়ে
শাসন করলে এই দিন তাকে দেখতে হতনা। সন্তানকে স্নেহ দেওয়ার পাশাপাশি প্রয়োজনে তাকে কঠোর শাসন করাও বাবা মায়ের কর্তব‍্যের মধ‍্যে পড়ে এ কথা কেন যে বোঝেননি তখন।©ইচ্ছেখেয়ালে শ্রী
সমাপ্ত:-

     

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...