Skip to main content

হানিমুনে

#হানিমুনে#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

একগোছা রজনীগন্ধা হাতে নিয়ে ঢোকে বিভাস,আরে এতো বরাবরের অভ‍্যেস মানে আ্যনিভার্সারী ইভ সেলিব্রেশনটা তো এভাবেই হয়। আরে হয় কি এতদিন হয়ে এসেছে তাই।
বসন্তের ভ্রমর যখন গুন গুন করে ঘোরাফেরা শুরু করেছিলো চৈতীর প্রেমের বাগানে ঠিক সেই সময়ই বিভাসের আবির্ভাব। একদম মারকুটে ভোমরা হয়ে অন‍্য ভ্রমরদের তাড়িয়ে চৈতীর সদর দরজা ভেঙে একদম সিধে ঢুকে পড়েছিলো চৈতীর মনের দরজায়।
তারপর থেকেই প্রেমে থেকো আর ভালোবাসায় রেখো করতে করতে কেটে যাচ্ছিলো এক একটা বছর। পাল্টাচ্ছিলো ক‍্যালেন্ডারের পাতা।
       এতোগুলো বছর পরেও ফাগুন আগুন জ্বালায় মনে চৈতীর। আরে এই ফাগুনেই তো একদম বোল্ড টল ডার্ক আর হ‍্যান্ডসাম বিভাস মাতিয়েছিলো ওকে প্রেমের নেশায়। সোজা এদিক ওদিক প্রেমপর্ব মানে লুকোচুরি থেকে টোপর পরে ছাদনাতলায়। আর তারপরেই ওকে পাঁজকোলা করে তুলে নিয়ে একদম ফুলশয‍্যার খাটে নিয়ে গোলাপের পাপড়ির মধ‍্যে শুইয়ে দিয়ে বলেছিলো," ওহ্ এতদিনে খুল্লামখুল্লা প‍্যায়ার করা যাবে শান্তিতে।" আর তারপর সেই রাত্রিটা আর ঘুম হয়নি ভ্রমরের গুঞ্জনে,কে জানে হয়ত আরো কিছুর ছোঁয়া লেগেছিলো মনে আর শরীরে। রজনীগন্ধাগুলো গন্ধে মাত করেছিলো সারারাত,গোলাপের লাল আভা লেগেছিলো গালে। বিভাসের বুকে মুখ রেখে,দুজনেই উজাড় করে বলেছিলো মনের কথা। হয়েছিলো শপথ বিনিময়ও সাথে সাথে থাকার।
      সেদিনের গোলাপের রঙে রাঙা চৈতী আজ পরিণত,মাঝবয়সী এক মা। তবে প্রেম আর রজনীগন্ধা আদান প্রদান চলেছেই এত বছর ধরে হয়ত বা কমে গেছে প্রেমের উন্মাদনা আগের থেকে,আরে বয়েস তো হচ্ছে। যদিও এ সবটাই চৈতীর কথা,বিভাস মানেনা।
                   " আরে হলই বা বয়েস,রান্নাঘরের আলু,পটল,তেল নুন আর ছেলের কোচিং আর জয়েন্টের রেজাল্টের চিন্তায় নিজের মনটাকে মেরে ফেলোনা চৈতী। আরে জীবন তো একটাই,উপভোগ করো।"..তবে হাজার ধাক্কা আর চিন্তার মধ‍্যে বাঁচিয়ে রাখতে পারেনি চৈতী ওর মনটাকে পুরোপুরি। আজকাল কোথাও যেতে বললে অনেক সময়ই বলে," আরে তুমিও পারো,এখন কি আর সেই কুড়ি বছর আগের মত নাকি? বললে আর বেড়িয়ে পড়লাম? বয়েসটা কমছে না বাড়ছে শুনি?"...
  হাসতে হাসতে বলে বিভাস," কমছে না বাড়ছে অত ভাবিনা। শুধু মনের বয়েসটা না বাড়লেই হলো। ওটাকে বাড়তে দিয়োনা চৈতী।"
             অভ‍্যেসের রজনীগন্ধা আজও গন্ধ ছড়ায় বেডরুমে,খোলা জানালা দিয়ে ঢোকে ফুরফুর করে বসন্তের মাতাল হাওয়া। তবে সংসারের চাপে ক্লান্ত চৈতী দুএকটা কথা বলেই হয়ত পাশ ফিরে ঘুমোয়। মাথায় উৎকন্ঠা কাজ করে সবসময়, পাশের ঘরে ছেলেটা পড়ছে রাত জেগে। দরজা বন্ধ করলে কিছু মনে করতে পারে তাই বিভাসের আবেগে জল ঢেলে চৈতী ফিসফিস করে বলে,"এই ছেলে এখনো জেগে যাঃ।"..কাছে টেনে নিয়ে বিভাস বলে," এই ছেলে ছেলে করে কত বসন্ত যে বিফলে গেলো।' মরি হায় চলে যায় বসন্তের দিন চলে যায়।'..কবিগুরুর গানের কলি গুনগুন করে ওঠে বিভাস।
  চৈতীর বোন বলে,দিদি সত‍্যিই তুই লাকি,কি ভালো আর রোমান্টিক হাবি পেয়েছিস রে। আর আমারটা! হুঁ পাশ ফিরে শুয়ে নাক ডাকতে পারলেই বাঁচে।"
          ছেলের টুয়েলভ গেলো,ভালো কলেজে ভর্তি হয়েছে ছেলে তবে বাইরে যেতেই হলো,কিছুদিন চৈতী বিভাসকে ছেড়ে ছেলেকে নিয়েই ছিলো। একটা সময় মনে হলো দূরত্ব বাড়ছে একটু একটু করে দাম্পত‍্যের।
প্রতিবাদী বিভাস এবার প্রতিবাদ করে," আমি চেষ্টা করছি,ওর হষ্টেল হলেই তুমি চলে আসবে একদম আমার কাছে। আরে আমাদের দিনগুলো তো কমছে। একটা সময়ের পর ছেলেমেয়েদেরও ছাড়তে হয়। আমাদের ছাড়া ওদের বড় হতে শিখতে হবে তো?"
         প্রথমে মানতে পারেনি চৈতী তবে মানতে হয়েছিলো বিভাসের কথায়। " আচ্ছা এই ফাঁকা বাড়িতে যে আমায় একা রেখে তুমি আছো ওখানে, যদি আমি খারাপ হয়ে যাই?"...দুষ্টু হাসির ঝলক দেখিয়ে চৈতী বলেছিলো," বুড়ো বয়সে ভীমরতি। আমি তোমায় চিনি গো।".." যদিও আমি বুড়ো নই,তবে বুড়োদেরই তো ভীমরতি হয়। আচ্ছা ছাড়ো,যদি রাতে আমার বুক ব‍্যথা করে তাহলে?"..বিভাসের মুখে চাপা দিয়েছিলো চৈতী, বকেছিলো। বিভাসই আর থাকতে দেয়নি ওকে আলাদা।
     মায়ের আঁচল ছাড়লো ছেলে,তবে চৈতীর আঁচলে লেগে থাকলো ওর হাতের ছোঁয়া। বিভাস খুঁজতে চায় পুরোনো চৈতীকে,পায়না খুঁজে।" কি হলো তোমার তোমার জীবনে আমাকে এবার তো একটু এন্ট্রি দাও। এতদিন ছেলে উঠে পড়বে মনে হত,আর এখন ফাঁকা বাড়িতে হানিমুনটাও ভালো করে এনজয় করতে পারছিনা।"
       ভয় হয় চৈতীরও,সত‍্যিই তো ও যেন কেমন বুড়িয়ে যাচ্ছে আজকাল আয়না দেখতেও ভালো লাগেনা। একদিন বিভাসকে বলতেই বললো,"জীবন যেমন তেমনি থাকবে,কখনো সবুজ,কখনো লাল আবার কখনো গেরুয়া কখনো বা সাদা। তাই এক একটা মুহূর্ত খুব দামি ওগুলোকে নষ্ট কোরোনা। আরে এটাই তো আমাদের জীবনের বেস্ট পিরিয়ড ।"
        "এত জীবনীশক্তি কোথা থেকে পাও গো,আমার যেন মনে হয় সব যেন ফুরিয়ে যাচ্ছে।"..
" আরে নিজেদের জন‍্য তো কখনো বাঁচবো নাকি,সন্তান ছাড়াও তো আমাদের কিছু অস্তিত্ব আছে তাইনা?"
              মেয়েরা বোধহয় এমনি হয়,সংসার সংসার করে একটা সময়ে নিজেকে খুব অবহেলা করতে শুরু করে। আর তার সাথে শুরু হয় মিড এজ ক্রাইসিস,মেনোপজাল সিম্পটম কখনো বা ব‍্যথা, ওজন বেড়ে যাওয়া এইসব।
" এই যে বসন্তের ফুরফুরে হাওয়া,এখন বেশ মোটু হয়ে যাচ্ছো কিন্তু।"..
অভিমান হয় চৈতীর," অফিসে কত সুন্দরী মেয়ে দেখো,আমাকে আর মনে ধরবে কেন। মাঝবয়েসে লোকগুলোর চরিত্র খারাপ হয়ে যায়।"
       " কি করবো,বউ পাত্তা না দিলে। তুমি এ কথা ভাবো! আমার সম্বন্ধে! হায়রে মমতাজ শাহাজাহানকে চিনলেনা!"...দুজনেই হাসে।

বাড়িতে আর কে আছে ওরাই তো দুটো প্রাণী তবুও বিভাস কখনো ড্রাইফুট,খেজুর,ফল সব্জি সবই আনে বেশি বেশি,বিরক্ত হয় চৈতীও। ড্রাইফ্রুটসগুলোও পড়ে থাকে অবহেলায়। ওর নাকি মনে থাকেনা। আবার বিভাস রাগ দেখালে রাগও হয়।

           হঠাৎই এক বিপর্যয় হয়ে গেলো চৈতীর,কথা জড়িয়ে গেলো, তার সাথে শ্বাসকষ্ট আর জ্ঞান হারানো। ডাক্তার বললো স্ট্রোক। ঝড় বয়ে গেলো সবার ওপর। আজকাল নিজেকে বড় বোঝা মনে হয় চৈতীর,ভালো করে হাঁটতে পারেনা। ফিজিওথেরাপি চলছে,ছেলে এসেছিলো চলে গেছে। এত সেবা নিতে আর ভালো লাগেনা চৈতীর,কবে যে সুস্থ হবে কে জানে! মাঝে মাঝে মনে হয় কার নজরে এমন হলো?

     আর মাসছয়েক বাদেই ওদের পঁচিশতম বিবাহবার্ষিকী,কে জানে তার মধ‍্যে ও সুস্থ হয়ে উঠতে পারবে কিনা? এতদিন যে বসন্তের ঘ্রাণ সংসার আর সন্তানের চাপে ভালো করে নিতে পারেনি আজ তা নিতে ইচ্ছে করে বড় বেশি করে। অসুস্থ হওয়ার পর বুঝতে পারে সময়ে ভালো শাড়ি গয়না কিছুই প্রাণে ধরে পরতে পারেনি। নষ্ট হয়ে যাবে দামী শাড়ি এই ভেবে প্রাণে ধরে পরেইনি। গয়নাগুলো পড়ে আছে লকারে। এখন হয়ত আর সেগুলো মানাবেই না পরলে। নাইটি পরেই আর যেমন তেমন করে সাজগোজ না করেই দিন কেটেছে ছেলের আর সংসারের তদারকি করে।
           বিভাসের গাওয়া রবীন্দ্রসঙ্গীতটা বড়ই  মনে হয় আজকাল...'মরি হায় চলে যায়,বসন্তের দিন চলে যায়।' হয়ত ভালো সময়গুলো বড় অযত্নে কাটিয়েছে,কোথা থেকে যে এতগুলো বছর কেটে গেলো কে জানে!
                           একটু একটু করে পা ফেলছে এখন চৈতী, তবে সেই ফিটনেসটা এখন আর নেই।জানেনা কতটা ঠিক হবে,বা আদৌ হবে কিনা। যদিও বিভাস বলে সব ঠিক হয়ে যাবে।

  ওদের পঁচিশবছরের বিবাহবার্ষিকী অথচ বিভাসের যেন কোন তাপ উত্তাপ নেই। ছেলেটাও একদম চুপ কারোই বোধহয় মনে নেই এই অসুখের চক্করে। প্রতিবারের মত এবার বিভাস ঢুকলোনা রজনীগন্ধা হাতে,অপেক্ষায় থাকতে থাকতে প্রায় অনেক রাত হলো।নিজেই বোকা হলো চৈতী, হঠাৎই কেন যেন খুব সাজতে ইচ্ছে হয়েছিলো,অনেকদিন আলমারিই খুলতে পারেনি শারীরিক প্রতিবন্ধকতার জন‍্য। খুব কষ্ট করে দেওয়াল আলমারিটা খুলে আজ যেন বিভাসের জন‍্যই সাজতে ইচ্ছে করলো চৈতীর। অনেকদিন বাদে নিষ্প্রভ চেহারায় রঙের ছোঁয়ায় নিজেকেই বেশ অন‍্যরকম লাগলো। কানে ছোট ঝুমকো,ইশ্ কবে কিনেছিলো পরা হয়নি!ঠোঁটে হাল্কা লিপস্টি। শাড়িটা পরতে পারেনা,তবুও একটা লঙ ড্রেস পরে,ছেলেকে দিয়ে শখ করে আনিয়েছিলো অনলাইনে পরে পরবে করে আর পরা হয়নি।
           বিভাস অফিসের কাজ সেরে দেরিতে ঢুকলো। চৈতীকে দেখে যেন খুব আশ্চর্য হলো,কিন্তু কই আজ যেন আর সেই পুরোনো বিভাসকে খুঁজে পাওয়া গেলোনা। কই হাতে রজনীগন্ধাও তো নেই। শুধু বললো," বাহ্ এই তো বেশ লাগছে,এই জন‍্যই বলি একটু সেজে থাকো মন ভালো থাকবে।"..অভিমান হয় চৈতীর শুধু এইটুকুই ওর কি আজকাল কিছুই মনে থাকেনা! বাইরে বারান্দায় গিয়ে কিছুক্ষণ কার সঙ্গে যেন বেশ হেসে হেসে কথা বললো বিভাস। ছেলেটাও কিছু বললোনা,আসবেনা আগেই বলেছিলো তবে একবার জিজ্ঞেসও করলোনা!
                  রাতে ঘুম পেয়েছে বলে পাশ ফিরে শুলো বিভাস। আজ বড় ছুঁতে ইচ্ছে করছে চৈতীর বিভাসকে। কতদিন তেমন ভাবে কাছে হয়ত খুব কাছে আসা হয়না ওর। আলতো হাত রাখে বিভাসের গায়ে অন‍্য সময় হলে পাশ ফিরে ওকে জড়িয়ে ধরত,নাহ্ হয়ত ঘুমিয়ে পড়েছে।
                  কখন ঘুমিয়ে পড়েছিলো জানেনা চৈতী। হঠাৎই ঘুম ভাঙে একটা শক্ত দৃঢ় বন্ধনে,ঘাড়ের কাছে স্পর্শ পায় আলতো আদরের। পরিচিত ঠোঁটের উষ্ণতা ছুঁয়ে যাচ্ছে ওকে।
" শুধু পঁচিশ নয় একসাথে হাঁটতে চাই আরো অনেক বছর এমনি তাপে,উত্তাপে শীতলতায়। তাই ম‍্যাডাম এবার ওঠো তো দেখি। এই হাতটা ধরো,আর আমি সাহায‍্য করি তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নাও।"
  " কোথায় যাবো এই ভোরে? পাগল হলে নাকি?"

.." জাহান্নামেই যাবো না হয় একদিন ক্ষতি কি? তোমার আপত্তি নেই তো?"

        ভোরের কলকাতাতে আবার বেরোলো হারানো প্রেম খুঁজতে বিভাস। আজ সত‍্যি একটা যাচ্ছেতাই দিন,তাই হয়ে যাক যাচ্ছেতাই রকমের প্রেম। ভোরের নরম আলোয় গরম ধোঁয়া ওঠা চায়ে চুমুক দেওয়ার মজাই আলাদা। আজ শুধুই নিয়ম ভাঙা,তাই মন ভরে সূর্য ছোঁয়া। বসন্তের পাগল করা বাতাস গায়ে মাখা। অনেকদিন বাদে বাইরে বেড়িয়ে আবেশে মাখা চোখদুটো চৈতীরও,বিভাসের ইচ্ছে করে নতুন করে আবার ওর ঘরের রাণী ঘরণীর চোখে ডুব দিতে। গাড়ি ততক্ষণে,ভোরের কলকাতা ছাড়িয়ে গঙ্গার পাশে একটা নির্জন একটা রিসর্টের সামনে দাঁড়ায় খুব যত্নে চৈতীকে নামায় বিভাস ওরা ততক্ষণে ওদের সাদর অভিনন্দন জানায় ফুলের বোকে আর মালা দিয়ে। সুন্দর করে সাজানো হয়েছে ঘরটা হানিমুন স্পেশাল রুম শুধু ওদের জন‍্য।

" ওহ্ না সেই রাতের মত কোলে তুলতে পারবোনা আজ তবে এইতো পেরেছি। জাষ্ট একটা এয়ারটাইট, হাগ উইথ ফুল আদর আর ভালোবাসা।"
..." ইশ্ সত‍্যি তুমি পারো,কাউকে নেমন্ত্রণ করলেনা কিছুনা,এভাবে সেলিব্রেশন!"
   চৈতীর মাথাটা বুকে নিয়ে বললো বিভাস," সেতো হবেই পরে। আমার তো ইচ্ছে ছিলো আজ ফাগুনের পূর্ণিমায় পালিয়েই যেতে দূরে কোথাও,আরো দূরে।"...শরীরটা,মনটা অদ্ভুত আবেশে আবিষ্ট আজ দুজনেরই,এ যেন এক ঝলক মুক্তির আশ্বাস যার হয়ত খুবই প্রয়োজন ছিলো।
        বিভাসের আর চৈতীর মত এমন হানিমুনের রেশ থাকুক সবার জীবনে। জীবনের ক্লান্ত মুহূর্তগুলো একটু সতেজ হোক এইভাবেই স্বাদবদলের টুকরো হাওয়ায়।
     হা হা হা জানি সবার বরগুলো এত রোমান্টিক নয় ঠিকই তবে গিন্নীর মুখের আর ছেলেমেয়ের মুখের এই হাসিটুকু মোটামুটি সব পুরুষেরই প্রিয়,আরে ওরাও তো করছে দিনরাত্রি লড়াই আমাদের মতই।
       এই যাহ্ বিভাস আর চৈতী যে ডুবে আছে সোহাগে আদরে,টুকরো কথায়। কিন্তু ফোনটা যে বাজছে.." হ‍্যাপি আ্যনিভার্সারী মা,খুব ভালো থেকো তোমরা। বাবা কি অফিসে?আচ্ছা আমি রাতে ফোন করবো আবার"

চৈতীর মুখটা চেপে ধরেছিলো বিভাস পরে বললো সেকেন্ড হানিমুনটা সিক্রেটই থাক মানে 'এই রাত তোমার আমার শুধু দুজনের'..ইশ্ একটু হলেই বলে ফেলেছিলে!"©রুমাশ্রী সাহাচৌধুরী
ভালো লাগলে নামসহ শেয়ার করুন।
   সমাপ্ত:-

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...