Skip to main content

কিস্তিমাত

#কিস্তিমাত#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#
"কি এই মেয়েটা! ইশ্!"
কি হলো মা,এটাও কি বাতিলের দলে?ও কিন্তু আমার ভীষণ ভালো বন্ধু,মেয়েটা ভালো গো মা।"
    " সেই একসাথে পড়া মেয়েকে পছন্দ করলি? সে তো তোরই বয়সী হবে।"
   "আমি জানি তো এই কথা বলবে,একটু ছবিটা দেখো তাহলেই বুঝতে পারবে।"
    "ও মা এতো হাঁটু প‍্যান্ট পরা রে,এ আবার কি বৌ হবে? আমাদের গ্ৰামের বাড়িতে নিয়ে গেলে তো সবাই ছি ছি করবে।"
..." উফ্ মা,ও সবসময় হাঁটু প‍্যান্ট পরেনা,বাপরে এতো মহা মুশকিল,যা দেখাই তাই নাকচ করে।আরে এটা ওদের একটা বেড়াতে যাবার সময়ের ছবি। আর এটা হট প‍্যান্ট,হাঁটু নয়।"
    " ও আচ্ছা তাই,তাহলে অন‍্য কোন ছবি দেখা দেখি কেমন লাগে?".. ঢোক গেলে মৈনাক,এই রে আর তো তেমন কোন ছবি নেই। তাহলে কি শাড়ি পরা ছবি তুলে মাকে দেখাতে হবে নাকি?ওরে বাবা তাহলেই সেরেছে,যাকে এখনো প্রপোজই করতে পারেনি তাকে আবার কি বলবে?যদিও মনে ধরেছে বলে আগে মাকে দেখিয়ে নেওয়া।" একদম মাতৃভক্ত ছেলে মৈনাক,আর দিদিভক্তও। অবশ‍্য না হয়ে উপায়ও নেই। ওরাই তো ওকে আগলে রেখেছে আদরে শাসনে।
        মহা বিপদে পড়েছে মৈনাক,বাড়ির সবচেয়ে ছোট ছেলে হওয়ার এই জ্বালা। ওপরে দুই দিদি তাদের বিয়ে হয়ে গেছে,তাদের চাপে বেচারার খুব খারাপ অবস্থা।"ভাই এটা করিসনা,ওটা করিসনা। এটা কর ওটা কর।"..বাধ‍্য ছেলের মত সেগুলো না করলেই একদম ধমকানি। ওরে বাবা! একসময় যা কানমলা আর কিল খেয়েছে দিদিদের কাছে। তবুও আবার দিদিরাই ছিলো ওর ত্রাতা। পাড়ার কেউ মারলেই হয়েছে দুই দিদি মিলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে রে রে করে..আমার ভাইয়ের গায়ে হাত.. তবে রে। একবার দিদিদের কানে গেলেই হলো ব‍্যাস,তাই কেউ পেছনে লাগলে তার একদম দফারফা শেষ।
           বিয়ের পরেও দিদিরা চালিয়ে যাচ্ছে খবরদারি। পালা করে বা কখনো যৌথভাবে দুই মূর্তিমান আসে বাপের বাড়ি মাকে উস্কানি দেয় আর ভাইকে দাবড়ানি। এই বাড়ির বৌয়ের যা অবস্থা হবে! ভেবেই ভয় পায় মৈনাক। আর তারপর যদি বৌও দজ্জাল হয়!...আর ভাবতেই পারেনা ভবিষ‍্যতের ভয়ে চোখটা বোজে মৈনাক।
               মাকে তো বলে দিলো,অনেকদিন চেনে একসাথে পড়ত,এইসব। আসলে পরিচয় তো মাত্র কয়েক মাসের। প্রেম প্রেম ভাব আছে মৈনাকের কিন্তু কই বিপাশা তো কিছুই বলেনা তেমন। শুধু গল্পই চলছে আর গল্পই চলছে,ধ‍্যাৎ ভালো লাগেনা। আবার যা ডাকাবুকো মেয়ে দেবে হয়ত একটা দাবড়ানি দিয়ে প্রোপোজ করতে গেলে। আসলে ছোট থেকেই সবার বকা খেয়ে খেয়ে কেমন যেন ভীতু হয়ে গেছে মৈনাক,মেয়েদেরই বোধহয় সবচেয়ে বেশি ভয় পায়। উরিব্বাবা দুই দিদি,মা,তারপর আবার বান্ধবী। একসময় তো দিদিদের সাথে ওকে পুতুলও খেলতে হত,বন্ধুরা ক্ষ‍্যাপাতো,' এই যা তো, মেয়েদের সাথে পুতুল খেল।'..দিদিরা ওকে দিয়ে পুতুলের বিয়ের ফাই ফরমাশ খাটাতো। 'জল আন তো ভাই,নেমন্তন্ন করে আয়,কনেযাত্রী যা।' আরে ছো ছো মহা বদমাশ ছিলো দিদিদুটো একদম দাবড়ে রাখতো ওকে। না না অবশ‍্য ওরা এখনো নয়নের মণি করে রেখেছে ভাইকে যেটা ভাবলেই কলারটা বেশ উঠে যায়। ভাইফোঁটাতে ভি আই পি তো মৈনাকই। যাবোনা বললেই হয়েছে একেবারে কেঁদে কেটে তেল মেরে একশা করে ভাইকে।
                  এই কয়েকমাসে পেন্টু মানে মায়ের ভাষায় আরকি,এছাড়া আর কিছু পরতে দেখেনি বিপাশাকে। আর বেশির ভাগই ছে‍ঁড়া পেন্টু,এটাও মায়ের কথা।" কি যে হলো আজকালকার মেয়েগুলোর ভালো জামাকাপড় না পরে ছে‌ঁড়া পরছে একেবারে যাচ্ছেতাই।"..." কি যে বলো মা,ওটাই এখন ট্রেন্ড। ও তুমি বুঝবেনা।"
            মুশকিলে মুশকিলে কেটে গেছে আরো দুটো মাস। নাহ্ আর না,সেদিন ক‍্যাফেতে বসে কফিতে চুমুক দিতে দিতে একটু বেশি সাহসী হয়ে বলেই ফেলেছে বিপাশাকে," আচ্ছা আমরা কি মানে.... আমি তোমাকে বিয়ে করতে পারি?"
              চোখটা গোলগোল হয়ে গিয়েছিলো বিপাশার," আরিব্বাশ তোমার তো হেব্বি সাহস দেখছি। একেবারে বিয়ের কথা। মহা কাটখোট্টা ছেলে তো তুমি! ডেটে গেলাম না প্রেম করলামনা। তোমার বাড়ির কথা কিছু জানলামনা একদম একেবারে ডাইরেক্ট ছাদনাতলা!"..বিপাশার কথার সুরে ভয় পায় মৈনাক,আরে যত সব দাপুটে ডাকাবুকো মেয়ের প্রেমেই ও পড়ে। কেন যেন মিষ্টি মিষ্টি ন‍্যাকা মেকআপের ঝুড়ি মেয়ে ওর ভালো লাগেনা। মৈনাকের মুখটুখ দেখে হাসি পায় বিপাশার,মনে মনে পছন্দ তো করে ও মৈনাককে, শুধু দেখছিলো হাঁদুটা কবে নিজে থেকে বলে। আরে মেয়েরা সস্তা নাকি! যে সবসময় আগ বাড়িয়ে বলতে হবে আই লাভ ইউ।
                 ময়দানে,ভিক্টোরিয়ায় প্রেম!ধুসস্ এখন আর এসব হয় নাকি? তাই প্রায়ই চলে রেস্টুরেন্টের আনাচে কানাচে বসে মুখে খাবার দিতে দিতে কথার গভীরে ডুবে যাওয়া,কখনো বা হাতে হাত রেখে আরো বেশি ঝুপ করে ডুব দেওয়া প্রেমের গাঢ় নীল সমুদ্রে। মৈনাককে খুব ভালো লাগে বিপাশার,সত‍্যি ছেলেটা ভালো কিন্তু একটা ভীতুর ডিম,বাড়ি থেকে ফোন এলে বলে অফিসে আছি,একস্ট্রা আওয়ার কাজ হচ্ছে। দিদিরা ফোন করলে বলে রাস্তায় আছি।
                যাচ্ছেতাই একটা,আরে বিয়ে করতে চায় কিন্তু বলতে পারেনা বান্ধবীর সাথে আছি। হোটেলে কম করে খায় বাড়ি গিয়ে খাবে বলে। বিপাশা দেখে কখনো রাগ হয়, কখনো হাসি পায়। একদিন বলেই ফেললো,"এই শোন তোমার মা আর দিদিদের ভয় পেয়ে আমি বিয়ে করে ওই বাড়িতে থাকতে পারবোনা।"...মৈনাক আঁতকে ওঠে,ও তো বাড়ি আর দিদিদের ছাড়া থাকতেই পারবেনা তাই এতদিন যা বলতে পারেনি তাই বলে ফেললো," আর বোলোনা যাকে দেখাই তাকেই তো নাকচ করে ওরা,তোমাকে নিয়ে যে কি করবে কে জানে। আসলে ওরা এত ভালোবাসে আমায়..."
           " আর তুমি? কাকে বেশি ভালোবাসো? আমাকে না ওদের?"..একটু ঘাবড়ে যায় মৈনাক মুচকি হাসে বিপাশা নাও এবার সামলাও.." সবাইকেই,কাউকে ছাড়া থাকতে পারবোনা। শুধু তুমি যদি হাঁটু মানে..."..." হাঁটু! সে আবার কি? কি যে বলোনা।"..." মানে মা বলে হাঁটু পেন্টু,হাঁটু ছেঁড়া পেন্টু।মানে হট প‍্যান্ট,টর্নড জিন্স এগুলো যদি.."
           বিপাশার মুখ দেখে আর বাকিটা বলতে সাহস পায়না মৈনাক,ইশ্ আজই বোধহয় ব্রেকআপ হয়ে যাবে। বিপাশা একটাও কথা বলেনা,সেদিনের মত দুজনেই চুপ। একসপ্তাহ টুকটাক কথা হলেও বিপাশা আর দেখা করেনি মনটা ভালো নেই মৈনাকের। কি করবে,একদিকে ওর মা আর দিদিরা,তার ওপর বাবা নেই। আরেকদিকে বিপাশা। থাক এ জীবনে আর বোধহয় বিয়ে করা হবেনা। তারপর আবার সামনের মাসে দিদিরা বায়না তুলেছে মাকে নিয়ে বেনারস যাবার,একদম একলা হয়ে যাবে একটা সপ্তাহ।
        অনেক তেল মারার পর বিপাশাটা এলো দেখা করতে। এসেই একটা বোমা মারলো," মাকে,দিদিদের বলেছো আমার কথা?"..." ইয়ে মানে,ওরা এখন বেড়াতে যাওয়া নিয়ে মেতে আছে,তাই সময় হচ্ছেনা। ঘুরে আসুক বলবো।"
.."তাই নাকি? কোথায় যাচ্ছে বেড়াতে? কোন ট্রেনে? কবে? হোটেল বুকিং হয়ে গেছে?বেড়িয়ে আসার পর কিন্তু বোলো,আরো কুড়িদিন সময় দিলাম।"এই বলে সমস্ত ডিটেলস নিলো।...যাক আপাতত একটু নিশ্চিন্ত হলো মৈনাক।
              গতকাল মা চলে গেছে দিদিদের সাথে হাজার একটা কথা বলে গেছে। এই করিসনা,তালা দিবি।এটা খাবি ওটা খাবি। তাড়াতাড়ি ফিরিস। ফোন ধরিস আরো কত কি!"
                যাক কটা দিন একদম চুটিয়ে প্রেম আর বাইরে খাওয়া। জানেনা এরপর কি হবে?
                   কিন্তু বিপাশার হলো কি? ফোনটা সবসময় আউট অফ রিচ। অনেক তপস‍্যার পর পায় ফোন কখনো। বলেছে বাড়িতে অনেক লোকজন এই দিন দেখা করতে পারবেনা। ধ‍্যাৎ কেউ ওকে পাত্তা দেয়না,ভেবেছিলো এই কদিন চুটিয়ে প্রেম করবে সবটাতে জল ঢাললো। খুব রাগ হচ্ছিলো বিপাশার ওপর।
                  মা আর দিদিরা ফিরে এলো,ওহ্ সবার ভীষণ খোশমেজাজ। মাঝে মাঝে বেড়াতে যাওয়া সত‍্যিই ভালো অন্তত মায়ের মেজাজটা ভালো থাকে। এরা ফিরে গেলো,এখনো মহারানীর পাত্তা নেই। কতদিন ভালো করে দেখা হয়না,ওর বাড়ির আত্মীয়রা কি এখনো যায়নি? মাথাটা গরম হয়ে যায় মৈনাকের। দুদিন ধরে ওর ফোনটা সুইচড্ অফ,নিজের ফোনটা ভেঙে ফেলতে ইচ্ছে করে মৈনাকের। রবিবার বিকেলে বলেছিলো আসবে অথচ অসভ‍্যতার চূড়ান্ত,ফোনটাকে বন্ধ করে রেখেছে।
               বিকেলে দুই দিদি হাজির,সাথে দুই বিচ্ছু ভাগনে। " এই ভাই চল আজ রেস্টোরেন্টে খাওয়াবি আমাদের সাথে বেড়াতে গেলিনা তাই।আজকাল কিন্তু বড্ড কিপ্টে হয়েছিস। আমি শাশুড়িকে বলে এসেছি রাতে খাবোনা। তোর জামাইবাবুরা আসছে একটু বাদে।"..একবার বায়না ধরেছে যখন আর উপায় আছে,একেই মুড অফ তারপর এই যন্ত্রণা।
                       সব তৎপর একদম আগে থেকে..অলরেডি টেবিল বুক করা হয়ে গেছে। চরম দুঃসংবাদ পেলো চেয়ারে বসে,মা নাকি ওর জন‍্য একটা মেয়ে পছন্দ করে ফেলেছে,দিদিদেরও দারুণ পছন্দ হয়েছে। খুব ভালো ভদ্র,শিক্ষিত আর চাকরি করা ম চোখ কপালে ওঠার জোগাড় মৈনাকের। বেড়াতে গিয়ে ঘটকালি করে এসেছেন ওনারা। হায় ভগবান,এরা তো মহা ওস্তাদ বাড়িতে একটুও বলেনি। মেয়ে নাকি আসবে এখানে,আর এখানেই পাকা দেখাশোনা। টয়লেটে যাবে বলে পালিয়ে যেতে ইচ্ছে করলো মৈনাকের,চেষ্টা করলো একবার। দাবড়ে দিলো দিদিরা প্রথমে,তারপর বললো আচ্ছা যা।
            তবে বাথরুমটা আর করা হলোনা মৈনাকের ধপ করে বসে পড়লো আবার। " আসুন,আসুন।"..." একটু দেরি হয়ে গেলো,খুব দুঃখিত।" বাবা মায়ের পেছনে কেউ একটা আছে,বুঝলো ও কিন্তু তাকাতে ইচ্ছে করলোনা। টয়লেট মাথায় উঠলো। একদম যাচ্ছেতাই অবস্থা,না না অন‍্য মেয়ের দিকে ও কিছুতেই তাকাবেনা। আজ বলবেই ঐ হাঁটু প‍্যান্ট পরা মেয়েকেই ও বিয়ে করবে।
                   ..." এই আমার ভাই,মৈনাক।"...বলেই বড়দি একটা গুঁতো মারে আর ছোড়দি একটা চিমটি। চমকে ওঠে মৈনাক,ফিসফিস করে বলে ওরা," ভাই,নমস্কার কর।"
             হাতটা তুলতেই চোখাচোখি হলো যার সাথে সেই দুটো চোখে তখন কপট রাগ মেশানো দুষ্টুমি...আরে এতো পুরো কিস্তিমাত। না না মৈনাকের ক্ষমতা নেই উল্টো চাল দেওয়ার তাই একদম উল্টে পাল্টে গেলো সব‌। মনের মধ‍্যে তখন হাজার ট্রেনের হুইসেল বাজছে। সত‍্যি বিপাশা লাজবাব,শাড়ি পরে হেব্বি লাগছে তো দেখতে উফ্ একদম হট। ওর মাতৃদেবী গদগদ সুরে বলছে," শাড়ি পরে এসেছো কেন,তোমরা এখনকার চাকরি বাকরি করা মেয়ে,চুড়িদার পরে এলেই তো হত।"..." না না আন্টি,শাড়ি আমার খুব ভালো লাগে আসলে তাড়াহুড়োর সময় ম‍্যানেজ করতে পারিনা ঠিক তাই প‍্যান্টই বেশি পরা হয়।"
          ওহ্ বাবা এই মেয়ে যে একদম ম‍্যানেজ করে ফেলেছে পুরোপুরি। আনন্দের চোটে গরম স‍্যুপে চুমুক দিয়ে জিভ পোড়ালো মৈনাক। বিপাশা ওর ভ‍্যাবাচাকা অবস্থা দেখে চোখ মারলো। আজ বোধহয় গাইতে ইচ্ছে করলো,আঁখ মারা...ইশ্ না না হিন্দি নয়,কবিগুরুই ভালো..'চক্ষে আমার তৃষ্ণা,তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে।' সারা টেবিল জুড়ে চলছে খাওয়া দাওয়া আর কাটাচামচের ঝনঝনানি,তার মাঝে মিলে গেলো দুটো মন। " কি রে ভাই,বিপাশাকে পছন্দ তো?আমাদের সাথে এই কয়দিনে একদম মিশে গেছে। তাহলে এগোই আমরা?"..জামাইবাবুরা আওয়াজ মারে," মুখ দেখে বুঝতে পারছোনা।"
      বিচ্ছু ভাগ্নেদুটোও আজ লেগপুল করছে। বিপাশা ওই হনুমান দুটোকেও হাত করে ফেলেছে। কিন্তু এসব হলো কি করে?
                   বিপাশাটা আবার ফোন বন্ধ করে রেখেছে। তবে খাওয়ার ফাঁকে একটা ছোট্ট চিরকুট দিয়েছিলো,কাল আসছে। রাতটা কোন রকমে না ঘুমিয়ে কাটলো আরে একেই বোধহয় লাড্ডু ফুটছে বলে। ক‍্যাফেতে এলো মহারানী,মেলানো যায়না কালকের সাথে। পরনে সেই হাঁটু ছেঁড়া পেন্টু। ওর কাছে মায়েদের যাবার কথা শুনেই,সব খবর নিয়ে ট‍্যুর প্লানিং করে নিয়েছিলো। আর পথেই আলাপ,পথেই মন জয় করে ফেলেছিলো।পুরো ট‍্যুরটাই ওদের পেছন পেছন করেছিলো, মানে পাশে পাশে..শুধু হাঁটু পেন্টুটা কদিন পরেনি। তবে শাশুড়িমা যা মোল্ড হয়ে গেছেন আর সমস‍্যা হবেনা,তবে ড্রেসকোডটা ভালোই জানে বিপাশা। ওর আ্যডএজেন্সির ড্রেসটা হয়ত একটু আলাদা থাকবে।" বুঝেছিলাম এই হাঁদুটার খপ্পড়ে পরে বিয়েটাই হবেনা। তাই আমাকেই নামতে হবে।"....লাল গোলাপ আর চকোলেটটা শুধুই আজ বিপাশার জন‍্য। দুজনের মুখেই তখন মিষ্টি হাসি। ক‍্যাফেতে তখন বাজছে..'কহে দু তুমহে য়‍্যা চুপ রহু দিলমে মেরা আজ ক‍্যায়া হ‍্যায়।'...রিয়েলি আজ বিপাশাকে গুরু বলতে ইচ্ছে করলো মৈনাকের। কানের কাছে এসে বিপাশা বললো," এই যে হাঁদু আমি কিন্তু সবচেয়ে বেশি তোমাকে ভালোবাসি,মোর দ‍্যান ইউ।"
সমাপ্ত:-
          
             

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...