Skip to main content

পোড়া মন

"উঃ আপনারা কি সুযোগ খোঁজেন মেয়েদের শরীর ছোঁয়ার।"
   মেয়েটার জ্বলন্ত দৃষ্টি আর কথায় পুরো স্তম্ভিত হয়ে যায় অগ্নি। তাড়াতাড়ি করে হাতটা ছেড়ে দেয় মেয়েটার। কি আশ্চর্য তো মেয়েটা বাসের হ‍্যান্ডেল ধরে পাশাপাশি দাঁড়িয়েছিলো ওরা। হঠাৎই ব্রেক মারে ড্রাইভার,ও না হাতটা চেপে ধরলে তো উল্টে পড়তো বাসেই।
     পাশের লোকগুলো নির্বাক,মেয়েটা ওকে অকারণে অপমান করছে আর ওরা দেখছে। তাই ও নিজেই বলে ওঠে," আশ্চর্য মেয়ে তো আপনি! সবাইকে কি এক রকম মনে করেন নাকি? এতটা বাজে কথা বলতে পারলেন!আমি কোন উত্তর খুঁজে পাচ্ছিনা।"
              ততক্ষণে সামনের সিটটা খালি হওয়াতে মেয়েটা বসে পড়েছে। ওর ফুল স্লীভ কুর্তাটার হাতটা একটু সরিয়ে হাত বুলাচ্ছে।
          মনে মনে খুব রাগ হয়ে যায়,ননীর পুতুল একেবারে,বাপরে কি ঝাঁঝ! অসভ‍্যও মেয়েটা। এদের বাসে রাস্তায় মুখ থুবড়ে পড়াই উচিত। কি ভাবে ছেলেদের এরা?

              অফিসে গিয়েও মনটা খচখচ করে রূপের,ছেলেটাকে এমন করে না বললেই হত। হঠাৎই মেজাজটা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছিলো,আজকাল কেন যেন কেউ সহানুভূতি দেখাতে এলে ওর মাথা গরম হয়ে যায়। খুবই সাধারণ চাকরিটা,মাইনেও খুব কম তবুও বেকার বসে থাকার চেয়ে হয়ত অনেকটাই ভালো। এনা দিয়েছিলো খোঁজটা," ঢুকে যা এখন পরে ধীরে ধীরে দেখবি মাইনে বাড়বে।"
             ছেলেটা যে এমন ভাবে ওর কথার উত্তর দেবে ও ভাবতেই পারেনি। আজকাল কোন অসভ‍্যতা দেখলেই শতগুণ প্রতিবাদে ঝাঁপিয়ে পড়ে রূপ। তবে সত‍্যি ছেলেটা কোন অসভ‍্যতা করেনি,ওকে সাহায্যই করতে এসেছিলো।মা বাবা শখ করে নাম দিয়েছিলো রূপশ্রী। আর সেই রূপই হয়ত কাল হলো ওর জীবনে। তাই আজকাল ছেলেদের ছোঁয়াটুকুও ওর ভালো লাগেনা আজকাল মনে হয় সারা গা জ্বালা করতে থাকে সেই জ্বলুনি আর কমেনা কিছুতেই।
         স্টপেজে নেমে হাঁটতে হাঁটতে রাগে গা জ্বালা করে অগ্নির,অসভ‍্যতার একটা সীমা আছে। আর তেমনি বাসের পাবলিকগুলো। চুপচাপ মজা দেখলো,কেউ কিছু বললোনা।
     অফিসে ঢোকার মুখে একটা কোল্ডড্রিংকস খেয়ে ঢুকলো। গলার কাছটা এখন অনেকটা ঠান্ডা। তবুও মুডটা খুব একটা ভালো হলোনা। অগ্নির চাকরি সুপারভাইজারের একটা বেসরকারি কোম্পানিতে। মাইনে মোটামুটি, যা পায় চলে যায় ওদের মা আর ছেলের। অবশ‍্য মাও চাকরি করে তাই সংসারে কোন অভাব তেমন নেই। মা অগ্নির এক অন‍্য পৃথিবী,মা ওর কাছে একটা নিছক শব্দ নয় অনেক অনেক অনুভূতি ঠিক বলে বোঝাতে পারবেনা যা একদম ওর নিজস্ব। মা রাগ করলে গলাটা জড়িয়ে বলে," আচ্ছা তুমি রাগ করলে আমি কোথায় যাবো বলো?.." বুড়ো ছেলের এখনও মা মা গেলোনা,আচ্ছা বল কি খাবি এখন?"
"মা একটু কাছে বোসোনা,সারাদিন যে কি পরিশ্রম,আর ভালো লাগেনা।"
           ছেলের মাথায় এখনও ছোটবেলার মত হাত বুলিয়ে দেয় প্রতিমা। ওর মুখ চেয়েই জীবনে এত জ্বালা যন্ত্রণা সহ‍্য করে হয়ত বেঁচে আছে এখনও। ছেলেটাকে কেড়ে নেওয়ার কম চেষ্টা করেনি কমল,কত হুমকি দিয়েছে। আইনের দ্বারস্থ হয়েছে কিন্তু পারেনি। না পেরে বলেছিলো "তোমাদের মা ছেলের বিষদাঁত আমি ভেঙে ছাড়বো।" অসভ‍্য জানোয়ারটার কথার কোন উত্তর দিতে ইচ্ছে করেনি প্রতিমার। ছিঃ ভাবতে লজ্জা হয় এই মানুষটা তার স্বামী ছিলো,ব‍্যবহার করেছে ওর শরীরটাকে। অসভ‍্য,মদ‍্যপ,চরিত্রহীন পারলে মানুষকে খুনও করে ফেলতে পারে।
                  প্রতিমার চাকরির ঐ সামান্য মাইনেটা প্রায় ছিনিয়ে নিতো,না দিলেই শুরু হত অত‍্যাচার। বাড়ি থেকে বের করে দেবার হুমকি দিতো প্রতিমাকে। আর সেদিনের কথা তো ভাবতেই পারেনা,ভাবলেই ঘেন্না হয় এখনও।" আমি বাড়িতে নেই বলে তুমি বাড়িতে অন‍্য মেয়েমানুষ নিয়ে এসেছো,ও ভাবতে পারোনি যে আমি তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরে আসবো তাইনা?"
  কমল ফুঁসে উঠেছিলো আর তার সাথে মেয়েটাও। " এই বাড়ির কাজের লোক কাজের লোকের মত থাকবি,বেশি কথা বললে মুখ পুড়িয়ে দেবো একেবারে।"
        লাল শাড়ি আর সস্তার মেকআপ করা মেয়েটা বলে উঠেছিলো
     " তুমি এই মেয়েমানুষটাকে এখনও এখানে রেখেছো? বললেনা আপদটাকে বিদায় করেছো। বেশ আছো তো এক সাথে ডালের আর তলার দুই খাচ্ছো। এক্ষুনি ওকে বিদায় করো। "
      চিৎকার করে উঠেছিলো প্রতিমা, "আমি নিজেই চলে যাবো,বাবু স্কুল থেকে ফিরুক।"
  চিৎকার করে উঠেছিলো কমল," এই আমার ছেলেকে নিয়ে কোথাও যাবিনা। আর যাবি কোথায়? তোর ঐ মাইনেতে সংসার চালাতে পারবি না ছেলে মানুষ করবি?
    " সে কথা তোমাকে ভাবতে হবেনা। অসভ‍্য জানোয়ার তুমি,আমার ছেলেকে কিছুতেই এখানে রাখবোনা।"
   " খুব দেমাক বেড়েছে না? যাবি কোথায় ওই  লোকটার কাছে?"
     আগে পিছে কান জ্বালানো নোংরা কথা বললো কমল। আর মেয়েটা সমানে ওকে তাতাচ্ছে। কত কষ্ট করে গড়েছিলো সংসারটা একটা সময় প্রতিমা। ছেলে আসতেই ওর হাতটা ধরে বেরোতে যায়। ছেলের হাত ধরে টানতে ঘরের দিকে নিয়ে যেতে চায় কমল। মা মা করে চিৎকার করে অগ্নি। তারপর না পেরে হঠাৎই কামড় বসায় বাবার হাতে জোরে। প্রতিমা ছেলেকে নিয়ে বেড়িয়ে যায়,কদিনের জন‍্য ওঠে দাদার ওখানে আর তারপর ভাড়া বাড়িতে।
                   হাল ছাড়েনি কমল মাঝে মাঝেই হুমকি দিতো,বাড়িতে এসে উপদ্রব করতো নেশা করে। আর সেদিনের কথা তো ভুলতেই পারবেনা,নিজের গলাটায় হাত বোলায় প্রতিমা। উঃ কি যন্ত্রণা!
                         অগ্নির আজ অন‍্য অফিসে যাওয়ার কথা,একটু সকাল সকালই বেড়িয়েছে। ওর অফিস থেকে প্রায় আরো আধঘন্টা লাগবে যেতে। অফিসে পৌঁছে কাগজপত্র গুলো দেখার মাঝেই এসে গেলো চা,একটু অন‍্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলো। " স‍্যার এই  হিসেবগুলো কম্পিউটারে আছে,আপনাকে দেখিয়ে দিচ্ছি। কই আসছে?"
                     কম্পিউটারের মাউসে আঙুলের নাড়াচাড়ায় ব‍্যস্ত অগ্নি। " এক্সকিউজ মি স‍্যার এই ফাইলে আছে আমি খুলে দিচ্ছি।"
         মুখের দিকে তাকানোর আগেই অগ্নির শরীরটা কেমন অস্থির করে ওঠে। ইশ্ হাতটা কি সাঙ্ঘাতিক ভাবে ঝলসানো, চামড়াগুলো গুটিয়ে আছে। কিছুটা কালো আর কিছুটা সাদা। ওর মুখটার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায় অগ্নি। হঠাৎই ওর শরীরটা খারাপ করছে যেন।
" এক্সকিউজ মি,আমি একটু আসছি।"
  বাথরুমে বেসিনের সামনে গিয়ে চোখেমুখে জলের ঝাপটা দেয়। এখন কিছুটা ভালো লাগছে।
        সেদিনের সেই বাসের মেয়েটা! আজ একটা ছোট হাতা পোশাক পরেছে। চোখের সামনে ভেসে ওঠে সেদিনের চূড়ান্ত অসভ‍্যতার মুহূর্তটা। তবে সবই আজ যেন কেমন ঝাপসা হয়ে যায় ওর সুন্দর নিরীহ মুখটা আর ঝলসানো হাতটা দেখে।
ইশ্ কি বিভৎস! কে এমন করে ওকে পোড়ালো?
সেদিন মেয়েটা হাতে হাত বোলাচ্ছিলো। নিশ্চয় অগ্নি ওর হাতটা ধরায় ব‍্যাথা পেয়েছিলো।
              আজ আর একটুও রাগ হচ্ছেনা ওর ওপর। শুধু মনে আছে অনেক জিজ্ঞাসা আর কষ্ট। ভুল বুঝেছিলো মেয়েটাকে বাসে তাই ফেরৎ দিয়েছিলো ওর খারাপ ব‍্যবহারের জবাব।
                   অগ্নি বাথরুম থেকে ফিরে আসে,মেয়েটা ততক্ষণে ফাইলটা খুলে ফেলেছে। রূপেরও খুব অস্বস্তি হয় স‍্যারকে দেখে। ভাবতেই পারেনি সেদিনের সেই ছেলেটা ওদের স‍্যার,এক সপ্তাহ আগের ঘটনা। এখনো ভুলতে পারেনি,তবুও কিছু করার নেই। " রূপ স‍্যারকে একটু ডিটেলসে দেখিয়ে দাও সবটা। এক্সকিউজ মি স‍্যার আমার একটা ফোন এসেছে।"
       অগ্নির ইচ্ছে হলো মেয়েটাকে একটা সরি বলতে,রূপেরও খুব অস্বস্তি হচ্ছে হয়ত চাকরিটাই আর থাকবেনা যদি কোন নেগেটিভ রিপোর্ট দেয়। একটা সরি কি বলবে?
         আশ্চর্যজনক ভাবে এক সাথেই দুজনে সরি বলে ফেলে। হেসে ফেলে অগ্নি,একটু লজ্জা পায় রূপও। অগ্নি ওর মুখটার দিকে তাকায়,হাতটা সত‍্যি দেখতে ইচ্ছে করেনা। হাতটা দেখলেই কেমন যেন অস্থির লাগে।
                তবুও সবার আড়ালে অগ্নি বলেই ফেলে সরি বলার সেলিব্রেশনে একটা কফি খাওয়া যেতে পারে আমার সাথে?রূপ আজ অনেক বেশি মার্জিত,কারণ ও জানে এটা অফিস,বাসের অগ্নির সাথে যে ব‍্যবহার করেছিলো সেটা এখানে চলেনা।
                উইকএন্ডে একদম মুখোমুখি কফিশপে রূপ আর অগ্নি।অগ্নি দেখা করতে চাইলে রূপ না করতে পারেনি,চাকরিটা যে ওর খুব দরকার। আর অগ্নি যে খারাপ মানুষ নয় কেন যেন ওর মন ওকে বলে দিয়েছে। রূপকে আজ আরও সুন্দর লাগছে,ওর পরনে আজ লাল একটা কুর্তি গুজরাটি কাজ করা আর তার সাথে চন্দন রঙের,ধোতি প‍্যান্ট। এমনিতে বেশ লম্বা রূপ আজ আর ওর হাতটা দেখা যাচ্ছেনা পুরোটাই ঢাকা। তাই মনটা খারাপ লাগেনা অগ্নির।
            কফির পাশাপাশি রাখা কাপদুটোর মত আজ অগ্নি ভাব করে নিলো রূপের সাথে।রূপকে পুড়িয়েছে কিছু মানুষ যারা শুধুই শিখেছে নারী প্রত‍্যাখ‍্যান করলে বা রুখে দাঁড়ালে তাকে আক্রমণ করতে হয়। পুড়িয়ে গুড়ো করে দিতে হয় তার আত্মসম্মান যাতে সমাজের কাছে মাথা নিচু করে বাঁচতে হয় মেয়েটাকে তার আধপোড়া চেহারাটা নিয়ে। রূপের তাই শাস্তি হয়েছে অপছন্দের প্রেম ফিরিয়ে দেওয়ার অপরাধে। আবেদন নিবেদন, হুমকি,চিঠি,টিজিংয়ের পরে শেষ শাস্তি আ্যসিড ছুড়তে ছুড়তে বলে যাওয়া " পুড়িয়ে দিলাম রূপের দেমাক। দেখি এখন কোন রাজপুত্র জোটে তোর। মুখকে হয়ত লক্ষ্য করেছিলো,কিভাবে যে সেই মুহূর্তে হাতটা উঠে যাওয়াতে বেঁচে গিয়েছিলো মুখটা।ঐ পাড়ায় ওদের মত নিম্ন মধ‍্যবিত্ত পরিবারের আর থাকা সম্ভব হয়নি। প্রমাণের অভাবে সঠিক বিচারও পায়নি। আসলে অপরাধীদের আজও তোষণ করে আমাদের সমাজ তাদের দিয়ে আরও অপরাধ করানোর জন‍্য। তাই রূপ সুবিচার না পেলেও অপরাধী থাকলো যত্নে। আর প্রমাণ? কি করে দেবে প্রমাণ। পুলিশ বললো," শুনুন সন্দেহের ভিত্তিতে আমাদের পক্ষে কিছু করা কতটা সম্ভব হবে বলতে পারছিনা,দেখছি।"
                   একটা মেয়ের অসহায়তা মন ছুঁয়ে গেলো অগ্নির। সেদিনের সেই বাসের ছেলেটা যার সামনে নিজের জীবনের পর্দাটা সরিয়ে আজ কিছুটা হাল্কা লাগলো রূপের।
                       আজকাল মাঝে মধ‍্যেই অগ্নি আর রূপের দেখা হয়। এরমধ‍্যে একদিন ওদের বাড়িতেও গেছে অগ্নি। সত‍্যিই বেশ কষ্ট করেই থাকে ওরা। সেদিন রাতে মনটা খুবই খারাপ হয়েছিল ওর। আ্যসিডে পোড়ার সাথে সাথে রূপের মনটাও কি পুড়ে গেছে! তাই সেখানে পৌঁছয় না ওর ভালোবাসার মিঠে সুবাস।
" আমি কাউকে ভালোবাসিনা,বলছি তো। আমার ওসব ভালো লাগেনা। চাকরিটা আমার খুব দরকার বলে দেখা করেছি। তাই বলে কি ভেবেছেন যা বলবেন তাতেই রাজি হয়ে যাবো?
চাকরিটা না থাকলে..."
" চাকরি তোমার থাকবে চিন্তা কোরনা।
           
      

          

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...