Skip to main content

অশ্লীল চুম্বন

#অশ্লীল_চুম্বন#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

''মেয়েটা কাঁদছে আর উনি মুখটা ধরে চুমু খাচ্ছেন".." কি বলছেন! চুমু! কোথায়?কে?কাকে?"
এতগুলো প্রশ্ন শুনে খুবই উত্তেজিত মোহনবাবু।
"উফ্ আমি আর দেখতে পারছিলাম না ঠিক মনে হচ্ছিলো একটা থাপ্পড়..না না বাবা থাক দেওয়ালেরও কান আছে। আজকাল প্রকাশ‍্যে চুম্বন মানে চুমু খাওয়া তো একটা ফ‍্যাশন হয়ে গেছে তাই বলে ছাত্রীকে!"
        দেওয়ালের কানের ভয়ে কথাগুলো একদম সাত কান করে ফেললেন মোহনবাবু। আরে এমন একটা ঘটনা কি কখনো চাপা থাকে নাকি? তাই স্টাফ রুমের দেওয়াল ভেদ করে বসন্তের দখিনা বাতাসে ছড়িয়ে পড়লো অধ‍্যাপকের কেলেঙ্কারির কথা তাও আবার একদম কলেজ ক‍্যাম্পাসে ছাত্রীকে কিস্ করে কিস্ ডে সেলিব্রেশন করা।আর মেয়েটা এত অপমানিত হয়েছে যে কেঁদে ভাসিয়ে বাড়ি চলে গেছে। ছিঃ ছিঃ,এখনই দরকার এর একটা প্রতিবাদ হওয়ার।দরকার হলে সাসপেন্ড হবেন ঐ ছাত্রদরদী ভন্ডটা‌
বড্ড বাড় বেড়েছে ওর।সবার মাথার উপরে উঠে চলতে চায়।
   " আরে কেসটা কি বলনা?' বলে বযুক্ত একটা গালাগাল দিয়ে উঠলো শ্রীমন্ত ।'আরে শুধু শুনেছি ঐ যে রে সেই মেয়েটা মানে প্রথমদিন ভর্তির সময় যে মাথা ঘুরে পরে গিয়েছিলো আরে চোখে মুখে জল দেওয়া হলো।প্রণব যাকে দেখে ক্রাশ খায় ওরে নীলা রে।'
     " আজ আবার কি কেস?আজও কি মাথা ঘুরছিলো তাই স‍্যার চুম্মা দিয়ে ঠিক করলো।আমার কিন্তু হেব্বি মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে।"
" নারে আজ কিসব সেন্টুর ড্রামা চলছিলো শুনলাম ভাই।"
  ইউনিয়ন রুম আলোচনায় সরগরম সবাই এক হাত দেখে নিতে চায় নীলাদ্রি স‍্যারকে। ইংরেজী পড়াতে পড়াতে সেক্সপিয়র কি বোঝায় জানিনা তবে ভাই সেক্সটা কিন্তু এখনো বেশ আছে। পাকা চুলে বেশ ঘ‍্যামা লাগে কিন্তু দেখতে। আমরা চোখের সামনে ঘুরে বেড়াই তবুও মেয়েগুলো পাত্তাই দেয়না। সবাই ঐ বুড়ো স‍্যারটার পড়াতে ব‍্যস্ত আর প্রশংসা সারাক্ষণ স‍্যার এই আর ওই। হুঁ একেবারে মহাপুরুষ।
       এদিকে স্টাফরুম তখন ফুটছে একজন বলেন ধ‍্যাৎ এটা রটনা।বয়েস হয়নি নাকি? তারপর উনি বিবাহিত। আরে রাখুন তো বিবাহিত এখন তো কমবয়েসী মেয়েদের এই বয়েসী লোকেদের ওপর চোখ বেশি। অভিজ্ঞ,কেয়ারিং,হাতে প্রচুর পয়সা,কোন দায়দায়িত্ব নেই।দেখছেন না টিভিতে, সিনেমায়।
আর নীলাদ্রি বাবু কিন্তু দারুণ দেখতে আর তেমনি পার্সোনালিটি।
            খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেলো যাকে নিয়ে এত আলোচনা তিনি নাকি চলে গেছেন অনেকক্ষণ তার আর ক্লাস নেই বলে।আর মেয়েটাও নেই। কথা উঠলো বাকিটা তাহলে বাইরে হচ্ছে কোথাও। "এখানে তাহলে পূর্বরাগ হচ্ছিলো।"বললেন বাংলার শশধর বাবু।
"থামুন তো মশাই এই বয়েসে আবার রাগ রাগিণী খুঁজে মরছেন। এখন তো বৈরাগ‍্যের সময়।"
         তবে আসামী না থাকলেও ব‍্যাপারটা থেমে রইলো না। প্রিন্সিপাল পর্যন্ত পৌঁছে গেলো।উনার বিপক্ষের কিছু ছেলেও উস্কানিতে পোস্টার লিখলো।
' আচ্ছা আপনারা বলছেন মৌখিক ভাবে।আপনাদের কাছে কি ভিডিও আছে কোন? বা ছবি?"
  অনেকেরই প্রিন্সিপালের বোকা বোকা কথা শুনে মাথাটা গরম হয়ে গেলো।বিশেষ করে মোহনবাবুর। " স‍্যার,আগে যদি জানতাম উনি কি করছেন তাহলে হয়ত রেডি থাকতাম। আমার আর কোন রুচিই হয়নি।"
                 পরদিন কলেজে পা রেখেই ঢোকার মুখেই একটার পর একটা লেখা দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান নীলাদ্রি শেখর। এই সব কি?
নীলাদ্রি স‍্যার চরিত্রহীন.....
এইসব নাটক চলবেনা...
এই কলেজ ছাড়তে হবে...
নীলাদ্রি তুমি জবাব দাও...
শিক্ষাক্ষেত্রে রাজনীতি ঢুকেছে অনেকদিনই কিন্তু তাই বলে এত অধঃপতন! ছিঃ
অনেকের জ্বলন্ত আর কৌতূহলী নজরের মাঝে কোনরকমে স্টাফরুমে এসে ঢুকে এক গ্লাস জল চাইতেই লক্ষ্মণও কেমন মুচকি হেসে জল দিয়ে গেলো। নাহ্ প্রিন্সিপালের কাছে যেতেই হবে এখনি। তখনই ডাক আসে.. স‍্যার আপনাকে প্রিন্সিপাল স‍্যার ডাকছেন। আসে পাশে তাকান নীলাদ্রি যারা বসে অনেকেই পেপারে মগ্ন যেন কিছুই বুঝছেননা। সুমনা আর সৈকতও আসেনি আর রহমান তো ছুটিতে। অগত‍্যা পা বাড়ান অনেক প্রশ্ন নিয়ে প্রিন্সিপালের ঘরে। বড় ঘরটা জুড়ে অনেকেই বসে মোহনবাবু, শশধর বাবু,আরো দুজন। বাইরে কয়েকজন উত্তেজিত ছাত্রও দেখলেন।
        ''স‍্যার আজ তো ঢোকার মুখে যা দেখলাম এরপর তো আমার..."
উনার মুখের কথা কেড়েই প্রিন্সিপাল বলেন," সেই জন‍্যই আমি আপনাকে ডেকেছি কথা বলবো বলে। আমাদের কলেজের ছাত্র ও অধ‍্যাপক কারো জন‍্যই যেন এখানে কোন বিশৃঙ্খলা না হয় তা আমাদের সবাইকে দেখতে হবে। কাল আপনি কটায় চলে গেছেন?"
     "ক্লাস শেষ হওয়ার খানিক বাদে গেছি।"
ক্লাস শেষ হওয়ার পর কিছুক্ষণ ছিলাম তারপর পেছনে যেখানে আমার গাড়ি থাকে সেদিক দিয়ে গাড়িতে উঠেছি আর সোজা বাড়ি।"
       " তার মানে পেছনের বারান্দা দিয়ে গেছেন ঐ দিকটাতে তো বিশেষ কেউ থাকেনা। আপনার সাথে কি কেউ ছিলো?"
   রাগে কপালটা দপদপ করে নীলাদ্রি শেখরের.." আমি একাই ছিলাম কে আবার থাকবে? আপনারা কি আমাকে জেরা করছেন?"
     " ভালো করে মনে করুন,আমাদের জানাটা দরকার।আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে আপনাকে পেছনের বারান্দায় আপত্তিজনক অবস্থায় দেখা গেছে।"
        ফ্রেব্রুয়ারী মাস চলছে তেমন গরম এখনো নয় কিন্তু রাগে অপমানে কপাল বেয়ে বিন্দু বিন্দু ঘাম গড়িয়ে পরে।
  " কেমন ঘামছে দেখেছেন?"
---" দেখুন না কি বলে?" উত্তেজনা তখন অন‍্যদের মধ‍্যেও।
  ''মানেটা আমায় পরিস্কার করে বলুন প্লিজ আমি জানতে চাই।''
         " আমারও বলতে খুবই অস্বস্তি হচ্ছে। আপনি জানেন কাল কিস্ ডে ছিলো?"
  গলাটা হঠাৎই জোরালো হয়ে ওঠে নীলাদ্রিশেখরের..." আমি খবর রাখিনা মানে রাখতেও চাইনা। বিদেশী সংস্কৃতি আর ব‍্যবসার জন্য আমরা নিজেদের ভালো জিনিসগুলো হারিয়ে ভাসছি উন্নয়নের জোয়ারে। চুমু খেতে আর ভালোবাসতে কোন দিন লাগেনা।দুটোই তাৎক্ষণিক হয়।"
     " আর সেই তাৎক্ষণিক আবেগেই বোধহয় আপনি পিছনের বারান্দাতে সেটাই করছিলেন?"
          কলেজ পড়ানো,ফেলে আসা কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা,বর্তমান ছাত্র ছাত্রীদের ভিড়ে আর নিজের ব‍্যক্তিগত রিসার্চ পড়াশোনা ইত‍্যাদি করে বড্ড সময় পান তাই হয়ত সেভাবে স্টাফরুমেও বসতে পারেননা আড্ডা মারতে। নেলিকেও সেভাবে কই সময় দেওয়া হয়? ঐ সকালের চা টা আর রাতের খাবারটাই যা একসাথে হয়। দুজনেই দুজনের কক্ষপথে ঘুরছেন। তাই আচমকা প্রশ্নে বড় অসহায় লাগে।
" কি করছিলাম,বলুন কি করছিলাম?"
মোহনবাবু তো দেখেছেন আপনিই বলুন।আমার আর ভালো লাগছেনা।
   ..."এই মরেছে শেষকালে স‍্যার আমাকেই ফাঁসালো!"
   নীলাদ্রিশেখরের বজ্রদৃষ্টির সামনে কেমন যেন কুকড়ে যান মোহনবাবু।বাইরে তখন শোনা যাচ্ছে নীলাদ্রিশেখর কলেজ ছাড়ো...কলেজ ছাড়ো..কলেজ ছাড়ো।
     মোহনবাবু বলতে থাকেন তিনি কি কি দেখছেন।
নীলাদ্রিশেখরের মুখের ছবি একটু একটু করে পাল্টাতে থাকে।
" শুনেছেন তো সবটাই,আপনার বিরুদ্ধে কি অভিযোগ।এবার আপনি বলুন।"
  উঠে দাঁড়াতে গিয়ে মাথাটা একটু কেমন যেন ঘুরে যায় তবুও সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে বলেন.." আমি কিছু বলবোনা।আমি রেজিগনেশন দেবো।কাল থেকে আর এই কলেজে আমাকে কেউ দেখবেনা। আমার কিছু বলার নেই।"
          বাইরে আরো চিৎকার গন্ডগোল শোনা যায়..বাধা সত্ত্বেও দরজা ঠেলে ঢুকে আসে একটা মেয়ে পেছনে কিছু উত্তেজিত ছাত্রও।
     ফিসফিস আওয়াজ ওঠে.. এই মেয়েটা?
---হ‍্যাঁ এই মেয়েটাই...এই তো নীলা।
" আমার অনেক কিছু বলার আছে। আমি বলতে চাই..প্লিজ আমাকে বলতে দিন।"
     " একি? তোমরা এতজন এখানে কেন? ডিসিপ্লিন বলে আর কি কিছুই থাকলোনা?"
" স‍্যার প্লিজ আমাকে বলতে দিন।"
প্রিন্সিপাল অনুমতি দেওয়াতে বলতে শুরু করে নীলা..." আমাদের একটা ছোট বাড়ি ছিলো।মা বাবা আর আমি আমাদের ছোট সংসার।হয়ত  বড়লোক আমরা নই তবুও শান্তি আর খুশিতে ভরা ছিলো আমাদের বাড়ি। বাবার খুব ইচ্ছে ছিলো। আমি ইংরেজী নিয়ে পড়ে আই পি এস হবো‌। কিন্তু সব স্বপ্ন কি পূরণ হয়? গতবছর এই সময় বাবা চলে গেলো হঠাৎই আ্যক্সিডেন্টে।মা হাসেনা,কথা বলেনা। আমার টিউশনে কোনরকম সংসার চলে। অনেকদিন ভালো করে খাওয়া জোটেনা আমার। রাতে ফিরে কোন রকমে রান্না করে মাকে খাইয়ে খাই। স‍্যারের বাড়িতে আমি যাই মানে আমরা অনেকেই যাই কিছু বুঝতে না পারলেই। গত পরশু মায়া বোধহয় স‍্যারকে বলেছিলো আমার পরীক্ষার ফি জোগাড় হয়নি।
        কাল আমার কলেজে আসতে দেরি হয়েছিলো।কাল বাবার চলে যাওয়ার ঠিক একটা বছর পূর্ণ হলো। আমি পেছনের বারান্দা দিয়ে ক্লাস করবো বলে তাড়াতাড়ি আসছিলাম।
      স‍্যারের মুখোমুখি পড়ে গিয়ে একটু ঘাবড়ে যাই।স‍্যার কাছে ডাকেন ,কথা বলেন তারপর হঠাৎই পকেট থেকে বের করে টাকাটা দেন আমার হাতে। আমি অবাক হয়ে যাই,স‍্যার কি করে জানলেন।আমি কেঁদে ফেলি,মনে হলো আমার বাবা যেন স‍্যারের হাত দিয়ে ফিসটা পাঠিয়েছে।
         স‍্যার বলেন উনি আমাকে ক্লাসে খুঁজছিলেন দেখা হওয়ায় ভালোই হলো। আমি একটু ইমোশনাল হয়ে বলে ফেলি..কি আশ্চর্য জানেন স‍্যার আজকে বাবার মৃত‍্যুদিন আর আজকেই আপনি আমাকে।আমার চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে আমি স‍্যারকে প্রণাম করতে যাই নিচু হয়ে যেন মনে হয়েছিলো বাবা আর স‍্যার মিলেমিশে এক হয়ে গেছিলো।
হঠাৎই ওর কথার মধ‍্যে বাধা পড়ে.." তারপর কি হলো বলো?"
"স‍্যার আমার মাথায় একটা চুমু দিয়ে বলেন... "আমারও একটা মেয়ে ছিলো হয়ত বড়ো হলে এতদিন এইরকম বয়েসই হত।'' বলতে বলতে কেঁদে ফেলে নীলা আবার।       
নীলাদ্রিশেখরের চোখটাও বোধহয় জলে ভরে গেছে। পকেট থেকে সাদা রুমালটা বার করে উঠে
দাঁড়ান," আপনাদের নিশ্চয় সবটা জানা হয়ে গেছে। আমি এখন আসি, বড় ক্লান্ত লাগছে। রেজিগনেশন লেটারটা মেল করে পাঠিয়ে দেবো রাতে।
           মাথা উঁচু করে বাইরে বেরোতে গিয়ে মাথাটা কেমন যেন টলে উঠলো।হঠাৎই স্পর্শে অনুভব করলেন একজোড়া পরিচিত হাতের বাঁধন যা আগলে রেখেছে তাকে এত বছর ভালোবাসার বন্ধনে...নেলি। "মায়া আর এরাই আমাকে খবর দিয়েছিলো,চলো আজ তোমার বিশ্রামের দরকার।"
         পেছনে তখন ভালোবাসা মাখানো অনেকগুলো আব্দারের স্বর..কিছুতেই আপনার যাওয়া চলবেনা স‍্যার।আপনাকে ফিরতেই হবে।
সমাপ্ত:-

    

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...