Skip to main content

ক্ষত

#ক্ষত#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

"কি গো তোমার ননদদের তো দেখছিনা,দুই ননদ তো তোমার?"
  " হ‍্যাঁ মাসিমা।এসে যাবে একটু বাদেই। হয়ত আটকে গেছে কোন কাজে।"
" বাবার কাজ তাতে তো সকাল থেকেই থাকবে।আটকে পড়েছে আবার কি গো। কলকাতাতেই তো থাকে।তাইতো?"
  " হ‍্যাঁ, এখান থেকে ঘন্টাখানেক লাগে।"
কথাগুলো বলে কোনমতে অতসী মাসিমার সামনে থেকে সরে আসে অনিতা। ওর অফিসের কলিগদের কাছে এগিয়ে আসে।
" এই শোন ঠিক করে খাস কিন্তু। আমার ছেলেমেয়ে দুটোকে নিয়ে ঠিকমত দেখতে পারছিনা। ও কাজে বসেছে,আমাকেও একটু বাদে বসতে হবে।"
   " না না একা মানুষ কতদিকে সামলাবে তুমি।আর তো কেউ নেইও দেখছি তোমাদের পাশে দাঁড়াবার মত। আমাদের নিয়ে ভেবোনা। তা তোমার ননদরা এখনো এলোনা তো।আমরা তো খেয়ে একটু বাদেই চলে যাবো,দেখা হবেনা মনে হচ্ছে।"
           সবার মুখে একটাই প্রশ্ন ননদরা কোথায়,মাঝে মাঝে সত‍্যিই অসহ‍্য লাগে অনিতার। এই প্রশ্নটা করে কি সবাই বাজিয়ে দেখতে চাইছে একবার যে ওদের ননদ বৌদির সম্পর্কটা কেমন।
       কোন সুস্থ স্বাভাবিক মানসিকতার মানুষ যে এইরকম কাজ করতে পারে তা চিন্তাতেই আসেনা অনিতার।কি করেছে ও? ওর শ্বশুরমশাই সিরোসিস অফ লিভারের রোগী ছিলেন,বারবার হসপিটালে নিয়ে যেতে হত পেট থেকে জল বের করতে। অসুস্থ ছিলেন খুব।দেখভালে তেমন কোন ত্রুটি করেনি অনিতা আর সুমন্ত। ননদরা কোন কর্তব‍্য করেনি শ্বশুরমশাইকে ইন্ধন দেওয়া ছাড়া। একবার সুমন্ত অসুস্থ থাকায় এক সপ্তাহের জন‍্য শ্বশুরমশাইকে নিয়ে গেছিলো ছোট ননদ কিন্তু কয়েকদিন বাদেই মোটা অঙ্কের টাকা ব‍্যাঙ্ক থেকে তুলে নিয়ে তাকে ভর্তি করে দিয়েছিলো মানসিক হসপিটালে। কারণ বাড়িতে নাকি খুব অস্থিরতা করে ওদের গলা টিপতে এসেছিলেন।
              অনিতাকে দেখেই অভিযোগ করেছিলেন উনি," আমাকে নিয়ে গিয়ে আমার টাকা তুলে নিয়েছে।আর আমাকে পাগল সাজিয়ে এখানে ভর্তি করেছে।তুমি কিছু বলো।"
      কিছু বলেনি শুধু তিনদিন বাদে ওনাকে বন্ড সই করে বাড়িতে আনার সময় বলেছিলো," তোমার টাকা তো ছেলে মেয়েরাই পাবে।তো ওরাই নিয়েছে।তাতে এত মন খারাপের কি আছে?"
      আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা পেয়েই এটা জানে ভালো করে যে ছেলের বৌরা মোটামুটি বাড়িতে আঁটি হয়।আমে দুধে মিশে যাবার পর মাটিতে গড়াগড়ি দেওয়া ছাড়া কোন ভূমিকা থাকেনা।
             ওনার মৃত‍্যু স্বাভাবিক, হসপিটালে হয়েছে।আয়াও ছিলো সে যথেষ্ট যত্ন করতো। নিজে দুটো বাচ্চা সামলেও দেখাশোনা করতো অনিতা। তারপরেও ওনার মৃত‍্যু সংবাদ পেয়ে বাড়িতে এসে অসভ‍্যতার চূড়ান্ত করেছিলো ওরা।প্রথমেই চেয়ে নিয়েছিলো আলমারির চাবি।অনিতা আর সুমন্ত তখন নিচে বাবার মৃতদেহের পাশে। আয়া এসে বলেছিলো,"ওরা আলমারি তছনছ করছে।"
     " তুমি নিজের কাজ করো,আমাদের ব‍্যাপারে কথা বোলোনা।"
          বার্ণিং ঘাট থেকে একা ওদের দাদা বাড়ি ফিরেছিলো রাত আড়াইটার সময় ভাগ‍্যিস সাথে একজন আত্মীয় ছিলেন।অনিতা তখন বাড়িতে একা সাথে তিন বছর আর নয় বছরের দুই বাচ্চা।
           তারপর থেকে আর ওরা আসেনি,খোঁজ নেয়নি কোন।সুমন্ত গিয়ে ওদের বাড়ি গিয়ে বলে এসেছিলো কাজের কথা। অনিতা ভাবতে পারেনি বাবার কাজের দিনও ওরা আসবেনা। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে অনিতার কি করেছে ও? বারোটা বছর শ্বশুর নিয়ে ঘর করেছে।ননদরা এলে যত্ন করেছে সাধ‍্যমত।ওদের সূঁচফোটানো কথা হজম করেছে। দুই একসময় ছাড়া উত্তর দেয়নি এই ভেবে যে মা মরা মেয়েদুটোর বাপের বাড়ি আসা হবেনা ওর জন‍্য তা হয়না। ওর গায়ের রঙ কালো বলে অপমানিত হয়েছে তবুও ননদাই দের ভালো মন্দ খাওয়াতে রান্নাঘরে কাটিয়েছে ঘন্টার পর ঘন্টা। সব করেছে একটু ভালোবাসা বা ভালোকথা পাওয়ার জন‍্য। না পায়নি,পেয়েছে সমালোচনা।ওরা বিষিয়েছে শ্বশুরমশাইয়ের মন,নিন্দা করেছে আত্মীয়স্বজনের কাছে।
      তখনকার অপরিণত অনিতা এখন ভালো করে বোঝে ওটা ছিলো ডিভাইড এন্ড রুল পলিসি।শ্বশুরমশাইয়ের টাকা পয়সার এক ভাগও যাতে ওরা না পায় হয়ত সেইজন‍্য। তবে ভগবান অনিতাকে নিরাশ করেনি,নিজেরা পরিশ্রম করে একটু একটু করে পায়ের তলার মাটি আর মাথার ওপরের ছাদ দুইই শক্ত করেছিলো ওরা।
                শ্রাদ্ধ শেষ হবার পর যখন খাওয়াদাওয়া চলছে তখন ওরা এসেছিলো দলবেঁধে অনেক অনুরোধ করেও কিছু খাওয়াতে পারেনি অনিতা আর সুমন্ত। ছোট ননদাইয়ের হাতটা ধরেছিলো অনিতা," প্লিজ একটু খেয়ে যাও,বাবা কষ্ট পাবেন।তোমরা শ্মশানে গেছিলে।"
     " ছাড়ো তো শ্মশান টশান আমি ওসব মানিনা।আমরা খেয়ে এসেছি।"
    শ্রাদ্ধের জায়গা থেকে চলে এসে ওরা শ্বশুরমশাইয়ের ঘরে বসে অন‍্য আত্মীয়দের সাথে মেতেছিলো অনিতা কতটা খারাপ সেটা প্রমাণ করতে। ইচ্ছে করেই তখন সেই জায়গাতে আসেনি অনিতা পরে আবার আত্মীয়ারাই মানে যারা দ্বিমুখী তারাই বলেছিলেন," উঃ বৌমা তোমার যা নিন্দা করলো কানপাতা দায়।"
  সারাদিনের শ্রমে ক্লান্ত অনিতা বলেছিলো," থাক,আড়ালে তো লোকে রাজারও নিন্দা করে।কি এসে যায় তাতে।চলুন খেয়ে নেবেন।"
          একটু নিরুৎসাহ হয়ে আত্মীয়া বললেন," তা চলো,খারাপ লাগছিলো তাই বললাম। শোনা না শোনা তোমার ইচ্ছে।"
         তারপরেই একটু একটু করে ঘটেছিলো দিন বদল মানে ননদদের রূপ বদল হয়েছিলো। আগে যারা বিঁধিয়ে কথা বলতো তারা হঠাৎই তেল মারা শুরু করলো।ভাবটা এমন যে বৌদিই ত্রাতা,বন্ধু,সখা সব। বাড়লো ভাবসাব আর আনাগোনা। না মুখ ফিরিয়ে থাকেনি অনিতা,এর পেছনে দুএকটা কারণ ছিলো।প্রথম কথা কখনোই চায়নি ওর ব‍্যবহারে ওদের বাপের বাড়ি আসা বন্ধ হোক,হাজার হোক ওরা মা বাপ মরা। দ্বিতীয়ত স্বামী আর সন্তানদের চোখে ছোট না হওয়া। আবার সেই ভালো সাজতে গিয়ে সব ভুলতে চাইলো অনিতা।কিন্তু সত‍্যিই কি সব ভোলা যায়?কিছু কিছু ক্ষতর ওপর প্রলেপ পড়ে কিন্তু শুকোয়না। আগে ওদের বাড়ির অনুষ্ঠানে বাদ পড়তো অনিতা,পুজোতে জামাকাপড় থেকেও।হঠাৎই সব অনুষ্ঠানে বৌদি না গেলেই কোনমতে হবেনা এমন বার্তা জারি হলো।অগত‍্যা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের জন‍্য অনিচ্ছা সত্ত্বেও সেখানে উপস্থিত হতে হলো। একটা সময় দেখলো নিখরচায় সাহায‍্যকারী হিসেবে সেখানে মোতায়েন হয়েছে অনিতা।যেমন ষাট পিস ভেটকি পাতুড়ি বানাও বা আশি পিস ফ্রাই ভাজো দাঁড়িয়ে তারপর সবাইকে খাওয়ানোর দায়িত্ব।সব শেষে একটা শুকনো হাসি অনেক সামলে দিয়ে গেলে।তাতেই খুশি হয়ে অনিতা ছেলেমেয়ে বরের সাথে ফিরে এসেছে। হঠাৎই একবার প্রচন্ড কোমরের যন্ত্রণায় প্রায় শয‍্যাশায়ী অনিতার কাছে আবার ভাইফোঁটাতে যাবার আমন্ত্রণ এলো।ও বলে ফেললো," আমি আর এবার যাবোনা গো।ডাঃ আমাকে বেশীক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করতে বারণ করেছে।আর আমার তো কাজ করতেই যাওয়া।"
      শেষের কথাটা যে অনিতা বলবে ওরা বোঝেনি ভেবেছিলো চিরকালের বোকা অনিতা বোধহয় বুঝতেই পারেনি ওদের চালাকিটা।
" না না করতে হবেনা।আচ্ছা ঠিক আছে আমরা এবার হোম ডেলিভারি নিয়ে নেবো।"
         বর আর ছেলেমেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে রওনা হতেই হলো। শান্তনু বললো," তুমি কোন কাজে হাত দেবেনা।খুব খারাপ হবে তাহলে।"
  " আমি যাবোনা তো বলছি।"
" তাহলে কি ব‍্যাপারটা ভালো হবে? ছেলেমেয়ে দুটোর মন খারাপ হবেনা?আমারও তো চিন্তা হবে।কেন সবার আনন্দ মাটি হবে?"
     সবার আনন্দ বজায় রাখতে গিয়ে ওদের বাড়ি পৌঁছনো মাত্র ননদাই চেয়ার নিয়ে আসে।"বৌদি এখানে বোসো একদম নড়বেনা।তোমার কোমরে ব‍্যথা মনে আছে তো?"
       কথার ছুঁচটা অনিতাকে বিঁধলেও বলে," হ‍্যাঁ ননদদের বাড়ি বছরে একটা দিনই তো আসি। কাজ করে খাবো কেন কোমর ব‍্যথা নিয়ে? তাই এই বসলাম।একেবারে খেতে উঠবো।"
       মেয়েরা শ্বশুরবাড়িতে এসেই বোধহয় কথা বলতে শেখেনা।পরিস্থিতি বোধহয় শিখিয়ে নেয় অনেক কিছু বেঁচে থাকার তাগিদে।
              মাঝে কেটে গেছে অনেকগুলো বছর।ছেলেমেয়েদের কাছে আত্মীয়দের খারাপটা কখনোই তুলে ধরতে ভালোবাসেনা অনিতা।তাতে খারাপই হয়।ওরা মাকে নিন্দুক ছাড়া আর কিছুই ভাববেনা। অদ্ভুতভাবে ছেলেটা বড় হয়েছে তবুও স্মৃতি থেকে মুছতে পারেনি মায়ের কিছু অপমান । তাই অনিতার বাড়াবাড়িতে মাঝে মাঝে ক্ষুব্ধ হয়। হঠাৎই একটা অঘটন ঘটে গেলো বাড়িতে এত বছর বাদে বড় ননদাইয়ের  সেরিব্রাল আ্যটাকে মৃত্যু।খুবই দুঃখজনক, সময় পাওয়া গেলোনা কিছু করার মত। সবার মনই ভীষণ খারাপ কিন্তু মৃত‍্যুকে স্বীকার করে নেওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই কারো।
        শ্মশানে,শেষ সময়ে সব সময়ই ছিলো সুমন্ত,ছেলে আর অনিতা। সুমন্ত সব দায়িত্ব নিয়ে সামলেছে।অনিতা সামলেছে কেনাকাটাগুলো। কিন্তু কি সমস‍্যা করোনা আতঙ্কে চারিদিকে লকআউট আর কার্ফু চলছে এর মধ‍্যেই ওদের শ্রাদ্ধের কাজ। চারিদিকে প্রচার বাড়ি থেকে না বেরোনোর জন‍্য।অনেক করে একটা মঠে ব‍্যবস্থা করেছে সুমন্ত।খুবই সীমিত লোকজন সেখানে আসবে তবুও কাজটা করতে হবে।অনিতার দুই ননদ বারবার বলছে," বৌদি তোমাকে কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে সব করতে হবে। আসতে হবে তিনদিন। সব দায়িত্ব তোমার।এখন তোমরাই গার্জেন।"
   অনিতা মনে মনে ভাবে মানুষ কিভাবে পাল্টে যায়! হয়ত এরা এমনি, পেছনের কোন কথাই এদের মনে থাকেনা। ওর ছোটননদ বারবার বলে," ঘাটের কাজে তুমি আসবে তো? তুমি থাকলে জামাকাপড় গুলো এগিয়ে দিতে।শান্তভাবে অনিতা বলে," চারিদিকে লকআউট,কাজের লোক আসছেনা।বাড়ির সব কাজ আমাকেই সামলাতে হয়। তুমি আর তোমার দাদা তো আছো।"
  " তুমি থাকলে সুবিধা হত গো।"
অনিতা বোঝে ও গেলে হয়ত আর ননদের যাওয়ার দরকার হতোনা। তাই বললো," কোন অসুবিধা হবেনা।আমার শ্বশুরমশাইয়ের মৃত‍্যুর সময় আমাদের পাশে তো কেউ ছিলোনা। তখন যখন অসুবিধা হয়নি।এখনো হবেনা। আমি যাবো শ্রাদ্ধের দিন,লকআউটে যে কোনভাবেই যাবো। ওটা আমার কর্তব‍্য।"
        এরপর বোধহয় আর কোন কথা হয়না আসলে ভালোবাসা যেখানে আহত হয় সেখানে শুধু কর্তব‍্যই থাকে।আর তাই ওরা যাই করুকনা কেন করোনাকে অগ্ৰাহ‍্য করে ঝুঁকি নিয়েই অনিতা যাবে শুধু বিবেকের টানে কারণ ওর মধ‍্যে মনুষ‍্যত্ব আছে। প্রতিবাদ হয়ত কখনো করে কিন্তু প্রতিশোধ নিতে চায়না।
সমাপ্ত:-

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...