Skip to main content

মনের কথা

'ভয় পেয়োনা,ভয় পেয়োনা তোমায় আমি মারবোনা।
সত‍্যি বলছি কুস্তি করে তোমার সাথে পারবোনা।মনটা আমার বড্ড নরম হাড়ে আমার রাগটি নেই তোমায় আমি কামড়ে দেবো এমন আমার সাধ‍্যি নেই।'
        ও আদুরে গলায় হাত নেড়ে নেড়ে বলতো আমার সামনে দাঁড়িয়ে আর আমি কখনো হাত দিয়ে শিং দেখাতে বলতাম আবার কখনো ছেলের কান্ড কারখানা দেখে মুখ টিপে হাসতাম।
                      সেই আমিই সেদিন ওর স্ট‍্যাটাস দেখে হঠাৎই চমকে উঠেছিলাম। একটা ঝাপসা ছবি,বুঝলাম ট্রান্সপারেন্ট কভারের ভেতর থেকে ছবিটা তুলেছে তাই ঝাপসা ছবিটা। ছেলেটা কি বড় হবেনা? সব কিছু স্ট‍্যাটাসে দিতে হয়!
           কোন রিআ্যকশন দিতে পারলামনা। যতই ও ভয় পেয়োনা,ভয় পেয়োনা বলুক আমার যেন কেমন হলো। ভালো করে জুম করে দেখলাম ছবিটা,একবার নয় বারবার করে। খুঁজতে চাইলাম সেই ভীতু ছেলেটাকে যে মা বাথরুমে গেলে পেছন পেছন মা মা বলে ছুট লাগাতো।অথবা অঙ্কে কম নম্বর পেয়ে কাচুমাচু মুখে আমার কাছে দাঁড়িয়ে থাকতো।
             কখনো পরীক্ষা খারাপ দিয়ে কোশ্চেনটা নিয়ে দাঁড়াতো আর আমি মরিয়া হয়ে নম্বর যোগ করে দেখতাম পাশ মার্কস উঠবে তো?
                    সবাই যখন খুব বড় গলায় ছেলের সম্বন্ধে বড় বড় কথা বলতো আমি বলতে পারিনি কোনদিন। সত‍্যি কথা বলতে আত্ম আর আত্মজপ্রশংসা লোকের কাছে কোনদিনই করতে ভালোবাসিনা।শুধু বলতাম বড় হয়ে একটা কিছু করিস নাহলে সবাই বলবে মা ভোর পাঁচটায় কাঁধে ব‍্যাগ ঝুলিয়ে চলে যায় বাইরে ছেলেটা মানুষ হলোনা।
                 বাংলা মিডিয়ম সরকারী স্কুল,সরকারী হসপিটালে এমবিবিএস,সরকারী কলেজে এমএস। সেই কাচুমাচু মুখের ছেলেটা এখন অনেক মেজাজী,স্বাবলম্বী আর নির্ভীক যে ভয় পায়না উল্টে আমিই ভয় পাই,চিন্তা করি। যেমন করলাম ওর পিপিই পরা ছবিটা দেখে। তারপর আবার বারবার ছবিটা দেখলাম গর্ব হলো যে এই বিপদের দিনে অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ওদের সেবা করছে। ভালো রান্নাবান্না এই কদিন তেমন করছিনা,তবে ভালো তো থাকতেই হবে তোদের ভালো রাখার জন‍্য। হোটেলের চার দেওয়ালে বন্দি হয়ে তোর কেমন লাগছে আমি জানি,অবসরে বেড়াতে যাবার ছবিগুলো দেখিস। আবার নিশ্চয় ঝড় থামবে আমরা চারজনে আবার পাড়ি দেবো কোন নতুন দেশে নতুন সূর্যোদয় দেখার অপেক্ষায়।
                 শুধু বলি সুস্থ থাকিস,আর ভালো থাকিস। চিন্তা হচ্ছে,তবুও মনটা একটা ভালো লাগায় ভরে আছে এই ভেবে এমন ছেলে আছে কজনের কাছে💝? সব কথা অত বাড়িয়ে গল্প করে আমি বলতে পারিনা,গল্প কথা লিখতে পারি। আজ তাই লিখেই ফেললাম।

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...