Skip to main content

all out blog

#অলআউট_সারাদিনের#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

বিয়ের পর নতুন জীবনে পা রাখার সাথে সাথে কখন যে দায়িত্বগুলো একটু একটু করে বাড়তে শুরু করেছিলো বুঝতেই পারিনি। তবে রান্নাঘরে রান্না করতে গিয়ে অস্থিরতা বাড়তো খুবই একেই আমি নতুন বৌ তারপর রান্নার অভিজ্ঞতাও তেমন ছিলোনা আর তার সাথে রান্নাঘরে ভীষণ মশার উপদ্রব। বেশিরভাগ সময়ই হাত পা ফুলিয়ে ফুলকো লুচি বা অমলেট নিয়ে বেরোতাম বাইরে।
      
            একদিন বলেই ফেললাম," ইশ্ যদি মশারির ভেতরে থেকে রান্না করা যেতো! তাহলে ভালো হত।"
      এর মধ‍্যেই আমার স্বামীর ডেঙ্গু হলো,খুব দূর্বল শরীর,জ্বর বমিভাব কিছু খেতে পারেনা। ওকে নিয়ে কদিন খুব দুশ্চিন্তায় কাটলো।ওষুধ খেয়ে ঠিক হতে বেশ কিছুদিন লেগে গেলো।
      ও ভালো হয়ে গেলেও নিশ্চিন্ত হতে পারলামনা। যদি শান্তিতে থাকা না যায় তাহলে বোধহয় কোনকিছুই মন দিয়ে করা যায়না।

          হঠাৎই একদিন আমার স্বামী অফিস থেকে ফিরলো একটা ছোট বাক্স নিয়ে দেখে মনে হলো গিফ্ট বক্স। আমি খুশি হয়ে বললাম," কি আছে গো এতে?"
 ও হেসে বললো "আমার ভালোবাসা ভরা তোমার গিফ্ট,আমার ডেঙ্গুর সময় প্রতিদিন চিকেন স‍্যুপ করে খাওয়াতে তুমি। তাই তোমাকে আর বাড়ির সবাইকে ভালো রাখার দায়িত্ব তো আমারই।" 
      খুশিতে মনটা ভরে উঠলো আমার,প‍্যাকিং খুললাম সুন্দর গিফ্ট প‍্যাক করা। খুলেই অবাক হলাম এ তো অল আউট! টিভিতে তখন অ্যাড দেখেছি তবে সেই প্রথম ঘরে এলো।
    
    ওর মুখে হাসি, " এটাই তোমার সুরক্ষা মানে আমাদের সুরক্ষার জন‍্য আনলাম। তোমার তো ধোঁয়া সহ‍্য হয় না শ্বাসকষ্ট হয়।এটাতে কোন ধোঁয়া হবেনা বরং মিষ্টি সুগন্ধের সাথে মশারাও যাবে অনেক দূরে।"
                 "কিন্তু এতগুলো! একসাথে?"
  আমার কাঁধে হাত রাখে ও," বাড়ির সব ঘরে থাকবে তাই। ইশ্ আগে যদি এটা ভাবতাম তাহলে হয়ত আমার ডেঙ্গু হতোনা।"
         অল আউটের সাথে আরো দোস্তি বাড়লো আমার সন্তান আসার পর। সব সময় লক্ষ‍্য রাখতাম ওর নরম চামড়ায় যেন মশা না কামড়ায়। একটু বড় হতেই ও দুরন্ত হলো, তাই হাতের নাগাল থেকে সরিয়ে রাখলাম ধারালো জিনিস। তবে শুধু জিনিস সরালেই তো হলোনা ওকে তো মশার থেকেও সাবধানে রাখতে হবে। একটা বাচ্চা যদি সবসময় রোগের বিপদে থাকে তাহলে ওর মানসিক আর শারীরিক বিকাশ কি করে হবে? তবে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম যে বন্ধু অল আউট আছে।
আমি ওর কাছে না থাকলেও ওকে জড়িয়ে থাকবে অলআউটের নিশ্চিন্ত আর নিরাপদ স্নেহ।
     
        দেখতে দেখতে অলআউটের সাথে বন্ধুত্বের প্রায় আঠাশ বছর পার হয়ে গেলো।
            
         
         আপনাদের জীবনেও নিশ্চয় অনেক গল্প আছে ঠিক এমনি আমার মত... মা দুর্গা অসুর বধের জন‍্য হাতে তুলে নিয়েছিলেন দশহাতে অস্ত্র। তেমনি অস্ত্র থাক আমাদের হাতেও মশাকে ঘায়েল করতে। মশাই বা অসুরের চেয়ে কম কি? দরকারে এক কামড়েই প্রাণটাও নিতে পারে।
     লেখাটা যদি ভালো লাগে তাহলে নিশ্চয় লাইক,শেয়ার এবং কমেন্ট করবেন। আপনাদের ছোট ছোট অনুভূতি জানার অপেক্ষায় রইলাম।

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...