জীবন শেখায় অনেক কিছুই,কখনো কাঁদায় আবার কখনো হাসায়।কখনো শেখায় একা পথ চলতে,আর যখন একা একা পথ চলতে শিখে যাই আমরা অথবা নিজেই নিজেকে ভালো রাখতে শিখি তখনই হয়ত মনে হবে বড় হয়ে গেছি এবার।
ভালবাসা মোরে ভিখারী করেছে,
তোমারে করেছে রাণী..,
তোমারই দুয়ারে কুড়াতে এসেছি,
ফেলে দেওয়া মালাখানি..,
অফিসের কাজ বুঝতে একটু সময় লাগে দুষ্টুর আর তার মধ্যেই বুঝতে পারে নারী পুরুষের পরিপূরক হলেও সমকক্ষ বা নারীকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলে মেনে নিতে একটু খারাপ লাগে অনেকেরই।দুষ্টুকেও একটু হলেও সেই অভিজ্ঞতার শিকার হতে হলো,কিছু কিছু কাজ সমালোচিত হলো। আবার কখনো কানে এলো.." কি কপাল করে এসেছি বলতো,হাঁটুর বয়েসী একটা মেয়েকে সারাক্ষণ ম্যাডাম ম্যাডাম করে যেতে হবে। উনি চেয়ারে বসে সই করবেন আর আমরা খেটে মরবো!"
তবে চেয়ারে বসার মত যোগ্যতা অর্জন করতে যে তিনটে বছর চলে গেছে তা নিজে খুব ভালো বোঝে দুষ্টু তাই একটু একটু করে ধৈর্য্য ধরে মাথা না গরম করে পরিস্থিতি সামলাতে লাগলো দুষ্টু। অবশ্য তারজন্য অনেক সময়ই গাইড করে ওর জীবনের প্রিয় দুই পুরুষ যারা হয়ত একটু করে এগিয়ে দিয়েছিলো ওকে শিখরের দিকে।
অদ্ভুতভাবে বাবা আর দীপ্তদা এক কথা বলে," ভয় পাবিনা,আর ,হাল ছাড়বিনা তাহলে শেষ চালটা তোরই হবে।"
দিন পনেরোর মধ্যেই দুষ্টুকে চিনতে পেরেছে অফিসের সবাই যে অনন্যা রায় দরকারে আগুন জ্বালাতে পারে আবার সেই আগুনের মধ্যে ঢুকে আগুনকে নিজের নিয়ন্ত্রণেও আনতে পারে।
কখনো আবার সহকর্মীর শরীর খারাপে তার বাড়ির সামনে জিপ থামিয়ে খোঁজখবর নিতে পারে। গ্ৰামের দুঃস্থ মহিলাদের পাশে দাঁড়িয়ে ওদের একজন হয়ে উঠতে পারে।
ওরাও হয়ত ওর মত একজন মহিলা অফিসার পেয়ে নিজের সবটুকু খুলে বলতে পারে ওকে। সেদিনই একটি কম বয়েসের মেয়ে ওকে হঠাৎই বলে ফেললো.." দিদি তোমার বিয়া হয় নাই?"
" ম্যাডাম দেখেছেন তো,আপনি যেই ওদের একজন হতে চাইবেন সাথে সাথে ওরা আপনার অন্দরমহলে উঁকি দেবে। একটাই গল্প ওদের বিয়ে..."
দুষ্টু ইশারায় থামায় মিঃ দাসকে...তারপর হেসে বলে," বিয়ে করিনি আমি,আগে পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছি তারপর চাকরি,তারপর বাকি সবটা।"
দুষ্টু দেখে ওরা অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছে।
দুষ্টু বলে," তোমরা অবশ্য এখনো কিছু করতে পারো,আমি দেখছি কি কাজ দেওয়া যায় তোমাদের।"
এরিয়া ইন্সপেক্সন সেরে ফিরে আসে দুষ্টু।ইতিমধ্যে মেয়ের সুখ্যাতি রবীনের কানেও এসেছে। অনেকেই বলছেন," সত্যি ভীষণ ভালো মেয়ে হয়েছে আপনার।এরমধ্যেই তো বেশ নাম করে ফেলেছে।"
রবীনের মনে এক নতুন আশা জাগে হয়ত সব বাবা মা স্বপ্ন দেখে তাদের চেয়ে আরো বেশি সামনের দিকে এগিয়ে যাবে তাদের উত্তরসূরী। সন্তানের নামে বাবামায়ের পরিচিতি বোধহয় আরেকটু আলাদা আনন্দ এনে দেয় মনে।
*******************
দুষ্টুর বাংলো খুব সুন্দর, মালী এসে বাগান করে দিয়ে যায়। আরো লোক আছে,তাই ওর কোন অসুবিধা নেই।মিষ্টি বলে," যে যেমন তাকে ভগবান তেমনি রাখেন।তোর আর রান্না শিখতে হলোনা তেমন করে। উঃ আমাকে প্রতিদিন কিচেনে যুদ্ধ করতে হয়।"
গম্ভীরভাবে দুষ্টু বলে," আর বেশিদিন নয়,দাঁড়া ব্যবস্থা হচ্ছে তোকে যাতে রান্না করতে না হয়।"
অবাক হয় মিষ্টি," তুই রান্নার লোক পাঠাবি নাকি?"
" হুঁ,অনেকদিন ঠিক করে রেখেছি।"
" মানে? মিষ্টি অবাক হয়ে বলে।
"মানে জোজোদা এরপর থেকে তোকে রান্না করে খাওয়াবে আর তুই খাবি।"
" সত্যিই বোন এত সিরিয়াস হয়ে বললি যে আমি ভাবলাম সত্যিই লোক পাঠাচ্ছিস।কবে যে যাবো তোর ওখানে! যাক আমাদের একটা ভালো যাবার জায়গা হলো।"
" চলে আয় দিদি শিগগিরই, এখানে আরো একবার ব্যাচেলর পার্টি হয়ে যাক সব আমি অ্যারেঞ্জ করবো।দারুণ হবে।"
" কিন্তু দীপ্তকে কোথায় পাবো? ও না এলে ঠিক জমবেনা,মানে তোর পাশে দাঁড়ানোর জন্য তো কাউকে লাগবে।"
লজ্জা পায় একটু দুষ্টু, আজকাল দিদি মাঝে মাঝেই ওর সাথে মজা করে দীপ্তদাকে নিয়ে।
অথচ যাকে নিয়ে এতো মজা তার নাকি পরীক্ষার রেজাল্টের কথা ভেবে ঘুম হচ্ছেনা।
কেন যেন দীপ্তর মনে হয়..স্যারের কাছে এখনো সোজা হয়ে দাঁড়ানোর মত নিজেকে তৈরি করতে পারেনি। ও কি করে বলবে দুষ্টুর কথা স্যারকে?
হয়ত কোনদিনই সেই কথা বলতে পারবেনা।কিন্তু মনের খাঁচাবন্দি কথাগুলো হাঁফিয়ে উঠলেও দুষ্টুকে বলতে পারেনা কখনো। জানে দুষ্টু খুব রাগ করবে শুনলে।
আজকাল দীপ্তর দুষ্টুকে অনেকটা উঁচুতে মনে হয়। কি সুন্দর বাংলো ওর,তেমন সুন্দর অফিস।চারদিকে কত লোকজন ওর...দুষ্টুকে সেকথা বলতেই বলেছিলো....
যতই ভালো জায়গা হোক তবুও জানলা দিয়ে তো চা বাগান দেখা যায়না,তাই দুষ্টুর মনে হয় কালচিনির কোয়ার্টার অনেক ভালো। মা বাবা দুজনেই এসে ঘুরে গেছে।অনু আর রবীন দুদিন থেকে নিজের হাতে করে গুছিয়ে দিয়ে গেছে দুষ্টুর নতুন সংসার। শুধু দুষ্টু ভাবে মাঝেমাঝে এই এতগুলো ঘরে ও কি করবে? তবে এখানে সব কিছুই প্রয়োজন অনুযায়ী গুছোনো। সারাদিন কাজের পর রাতের অনেকটা সময় নিজেকে তৈরি করতে আর কাজ শিখতে লাগে দুষ্টুর, একটু একটু করে সব কিছু জেনে বুঝে এগোতে চায় দুষ্টু কারণ ও বোঝে দায়িত্ব যত বেশি পদ যত উঁচু ততই হয়তো ঝুঁকিও অনেক বেশি প্রতি পদক্ষেপে কোথায় বিপদ অপেক্ষা করে আছে কেউ বলতে পারেনা। তাই চোখ,কান দুটোই খোলা রাখা জরুরী শুধু মুখটা আপাততঃ বন্ধ রেখে হাসিমুখে এগিয়ে যাওয়া তবে দরকারে নিশ্চয় কঠোর হতে হবে।
আজকাল রাত্রে বাবার সাথে আর দীপ্তদার সাথে কাজের কথাই বেশি হয় অন্য কথার চেয়ে। নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে দুষ্টুকে সমৃদ্ধ করে দীপ্ত।
ভালোবাসা আর ভালোলাগার সাথে মিলেমিশে গেছে নির্ভরতা অনেকদিন। দুষ্টুর ক্ষেত্রে বোধহয় সবচেয়ে আগেই সম্পর্কের বোঝাপড়া ছিলো তারপর হাত ধরা। তবে হাত ধরা সেভাবে হয়নি কখনো সেই ট্রামরাস্তা ছাড়া।
আজকাল এক পরিণত দুষ্টুকে রাতের আলোতে দেখে দীপ্ত।হয়ত কিছু ক্ষেত্রে ওর থেকেও পরিণত দুষ্টু। সত্যিই কি মেয়েরা কিছু কিছু সময় সর্বজয়া? তাই বোধহয় একসময় সব দেবতারা মহিষাসুর বধের জন্য দেবী দুর্গার হাতে তুলে দিয়েছিলেন অস্ত্র। তবুও কেন যে নারী নিগ্ৰহের অভিশাপ নিয়ে বাঁচে মানুষ কে জানে?
দুষ্টুর কাছে কত রকমের গল্প শুনতে পায় দীপ্ত,দুটো একলা মন কখন যে একে অপরের কাছে পৌঁছে যায় বুঝতেই পারেনা।
তবে রবীন খুব বুঝতে পারে দুষ্টু কত কাজ করতো বাড়িতে। সত্যিই বোধহয় দুষ্টুকে চিরকাল পুত্রসন্তানের মতই মানুষ করেছে রবীন।কখনো দুই মেয়ের কাউকেই মেয়ে বলে পিছিয়ে রাখেনি রবীন।
" বাবা তুমি এত কাজের মধ্যে আমাদের নিতে আসবে কেন? আমি তো চলে যেতাম জোজোর সাথে।"
" অনু তুমিই বুঝিয়ে বলো মেয়েকে, আর ওরা কি তুই তোকারি চালিয়েই যাবে? আমার এবার হাসি পাচ্ছে জোজো তুই এইসব শুনে।"
...." আচ্ছা মিষ্টি সত্যিই এবার তুমি বলা শুরু কর। বিয়ে করতে আসার আগে একটু অভ্যেস কর।"
" মা কোন ছোটবেলা থেকে ওকে দেখছি বলতো? কখনো ভেবেছিলাম..."
অতীত চোখের সামনে চলে আসে অনুর আর রবীনেরও,রাণুর বিয়ের সময় যখন দুষ্টু মিষ্টিকে নিয়ে গেছিলো তখন তো সারাক্ষণ ঐ জোজোর সাথেই খেলেছিলো মিষ্টি। সত্যিই খেলার সাথীকে জীবনসাথী করে নেওয়া..তবে হয়ত এটাই ভালো দুজনের দুজনকে বুঝতে সুবিধা হবে।
অনু রবীনকে বলে," যদি দুষ্টুর জন্য এমন কেউ আসতো? তাহলে নিশ্চিন্ত হতাম,যা জেদী আর অভিমানী মেয়ে আমাদের।"
আজ মনের সব কথা রবীনের অনুকে বলতে ইচ্ছে করে...দুষ্টু তো স্বীকার করেছে নির্ভীকভাবে সেদিন দীপ্তর সাথে কথা বলছিলো। ওকে গান গাইতে শুনেছে রবীন। এই বয়েস তো একদিন রবীনেরও ছিলো....
" আমি তো ভেবে রেখেছি একজনের কথা,তুমি অবশ্য তাকে অনেকদিন দেখোনি।তবে আমার খুব পছন্দ তাকে।"
অনু বুঝতে পারে রবীন কার কথা বলতে চায়,এতোটা বোকা সে নয় তবুও ইচ্ছে করলো আজ বোকা সাজতে তাই মুখে আলতো হাসি আর চোখে বিস্ময়ের ছোঁয়া মাখিয়ে বললো.." আমার মেয়ে আমাকে একবার জানালে না? কার কথা বলছো তুমি? না না বড় মেয়ের বিয়ে এইভাবে হুট করে হয়ে গেলো নিজেদের মধ্যেই দুষ্টুর জন্য আমরা দেখেশুনে মাথা ঠান্ডা করে ছেলে আনবো।ওর সমকক্ষ তো হওয়া চাই।"
অনুর শেষ কথাটাতে একটু ধাক্বা খায় রবীন..সমকক্ষ,এতো কঠিন শব্দটা হঠাৎই ব্যবহার করলো অনু।তবে সত্যিই কি দীপ্ত দুষ্টুর সমকক্ষ? পরক্ষণেই মনে হলো..পাশাপাশি হাঁটতে আর হাত ধরতে সমকক্ষের কি দরকার? এত অঙ্ক কষে কি ভালোবাসা হয় নাকি? তাই বলে..." দীপ্তর সঙ্গে দুষ্টুকে ভাবলে কেমন যেন নিশ্চিন্ত লাগছে আমার জানো অনু। ওদের মানসিকতায় মিলবে,ঠিক মিলবে তুমি দেখো।মনের সাথে মনটা মিলে যাওয়াটাই তো জরুরী।আর দুষ্টুর এই পরীক্ষাতে পাশের পেছনে কিন্তু দীপ্তর অনেকটা অবদান জানো তো?"
" তাতে কি হয়েছে দীপ্তকে বড় করার পেছনে তোমার অবদান কি কম? নিজের সন্তানের মতো ওকে ভালোবেসেছো পাশে থেকেছো। ও দুষ্টুকে যদি একটু গাইড করে থাকে তো কি হয়েছে? শোনো দুষ্টুর মেধা ছিলো এটা সত্যি।"
অনুর কথাতে রবীন অবাক হয়ে যায়..কি সব বলছে অনু! তার মানে দীপ্তর সাথে সম্পর্ক অনুর ভালো লাগবেনা কখনোই।
তবুও রবীন বলে.." তুমি ভেবে বলছো তো?"
" হ্যাঁ, ওর কোয়ার্টার, চাকরি কিছুই দুষ্টুর আসেপাশে না আমি ছবি দেখেছি তো।"
" অনু কিন্তু দুষ্টুর আসেপাশে হাঁটতে তুমি ওকে দেখোনি,আমি দেখেছি।মন ভরে যায় একদম।"
" কিন্তু লোকে কি বলবে? রবীনবাবু ছাত্রদের এইভাবে জামাই করলো!"
" লোকের কথায় কি এসে যায় অনু।"
রবীনের কথা শুনে আর নিজের মুখটা সিরিয়াস রাখতে পারেনা হেসে ফেলে। বলে," মিষ্টি আমাকে বলেছে সব।যদিও দুষ্টু কিছু বলেনি,তবে আমি তো ওর মা আগে দেখবো নিজের চোখে পাশাপাশি হাঁটলে ওদের কেমন লাগে তারপর ভাববো।"
অনুর কথাতে রবীনের মনটা হাল্কা হয়ে যায় হঠাৎই। অনুও বেশ ঘুরিয়ে কথা বলে আজকাল এই ভেবে কিছুক্ষণ হাসলো। লজ্জা পেলো অনু রবীনের কান্ড দেখে।
জোজোর কান্ড দেখে মিষ্টির অবাক লাগে,এই ছেলেটা নাকি হাবি হবে আর কদিন বাদে। এখন থেকেই তো খাবি খাওয়া শুরু করেছে। রীতিমতো বিদ্রোহ করলো জোজো এবার.." ইশ্ ভাবলাম কোথায় সিনেমার মত দুজনে বিয়ের আগে লাস্ট একটা ট্রেনজার্নি করবো।কত পুরোনো কথা বলবো সারা রাত জেগে।তা নয় স্যার শ্বশুর চলে আসছেন একদম মেয়েকে নিতে।"
" খুব বাড়াবাড়ি করছিস কিন্তু,বাবাকে বলে দেবো এবার সব কথাগুলো।"
খুনশুটি করলেও আজো স্যারকে তেমনি ভয় পায় জোজো,যার একটা কথাতে অনেক কাজ করে দিতে পারে।
তবে সারপ্রাইজ চূড়ান্ত হলো যখন জোজোর বাবাও চলে এলো হঠাৎই, মধুমিতার কড়া অর্ডার "বিয়ের সব কিছু তো আমিই করলাম,অনেক জিনিস ওখানে রয়ে গেছে তুমি না গেলে হবেনা।"
সুতরাং অগত্যা হঠাৎই চলে আসতে হলো..বাবা আসাতে কেন যেন মনটা খুশি হয়ে গেলো জোজোর বুঝতে পারলো বাড়ির সবাই ওকে আর মিষ্টিকে জড়িয়ে আছে।
যদিও মিষ্টি লেগপুল করলো.." এবার কি হলো? চলো বাবার সাথে আমাদের পেছন পেছন।"
সুতরাং একসাথে নয়,একদিন আগে পরে ফিরতে হলো দুজনকেই বাবাদের সাথে।
দুষ্টু শুনে বললো," একদম ঠিক আছে,এখন নো দেখা সাক্ষাৎ একদম বিয়ের দিন দেখা হবে।"
" মঞ্জুর,কিন্তু শালীর সাথে তো দেখা করা যেতে পারেই। আমি চলে আসবো যে কোনদিন তোর বাংলোতে।"
সত্যিই এই ছেলেকে থামানো খুব মুশকিল, দীপ্তদা আর জোজোদা দুজনে দুই মেরুর।একজন কত ভাবনা চিন্তা করে পা ফেলে,আরেকজন পা ফেলে একদম দুমদাম করে যেখানে সেখানে।
তবে যেদিন মণিমাকে আর জয়কে নিয়ে জোজোদা এলো সেদিন খুব ভালো লাগলো দুষ্টুর।
..." মণিমা! ফোন করোনি তো! ভাগ্যিস আমি ছিলাম।না থাকলে কি হতো?"
" আরে এই ছেলেকে সামলানো মুশকিল, একা ড্রাইভ করে আসবে এতোটা।শেষে দিদিভাই ড্রাইভার দিয়ে আমাকে দিয়ে পাঠালো। কি ভালো লাগছে তোকে দুষ্টু, আসলে এমনভাবে কখনো তো তোকে দেখিনি। সত্যিই ভীষণ গর্ব হচ্ছে আমার।"
জোজোদার মুখেও এক অদ্ভুত সুন্দর হাসির ছোঁয়া দেখতে পায় দুষ্টু,বুঝতে পারে ওর স্বপ্নপূরণ ছুঁয়ে গেছে সবাইকেই।
জোজোদা বলে,"এবার তো গিফ্টটা নিয়ে নে। বলেছিলি সময়ে চেয়ে নিবি।"
আজ দুষ্টুর মনটা হঠাৎই এলোমেলো হয়ে যায়,বাগানের বোগেনভেলিয়া গাছটার সামনে দাঁড়িয়ে বলে ফেলে.." এইভাবেই তোমার হাসি আর মজার মুহূর্তগুলো নিয়ে আমাদের পাশে থেকো। দিদিকে খুশি রেখো।"
দুষ্টুর মনটা আজ যেন স্বচ্ছ্ব কাঁচের মত দেখতে পায় জোজো,ওর সাফল্যে ভালো লাগে খুশি হয় মনটা। পাশে থেকে এভাবেই ভালো রাখবে ওদের।
" একদম প্রমিস সবসময় আছি সাথে।মিষ্টিকে খুব ভালো রাখবো। আর তুইও নিজেকে খুব ভালো রাখিস পারলে আমার বন্ধুটাকেও।"
রাণু ওদের মাঝে এসে দাঁড়ায়.."তোদের গল্পে আমিও থাকবো।"
সবার গল্পে দুষ্টুর বাগান আর বারান্দা জমজমাট হয়ে ওঠে।
********************
মাঝে কেটে গেছে বেশ কয়েকটা দিন,কাজ যতটা পারে সামলাচ্ছে দুষ্টু অন্ততঃ চারটে দিন ছুটি হলে ভালো হত। কিন্তু একদম নতুন চাকরি,তারপর এত দায়িত্ব, তাই ভেবেছে দরকারে বিয়েবাড়ির মধ্যেও হয়ত একবার যেতে হবে। অবশ্য যাওয়া মানেই দিনটাই কেটে যাবে পুরোটা,দেখা যাক কি হয়।
কালচিনিতে ওদের কোয়ার্টার সেজেছে বিয়েবাড়ির প্রস্তুতিতে সামনের পুরো জায়গাটা জুড়ে প্যান্ডেল হয়েছে,অমলকাকু,পাশের কাকিমা,দত্তস্যার সবাইকে বলা হয়েছে ঘরের কথা।এছাড়া দরকার হলে হস্টেল তো আছেই। জোজো শুনেই লাফিয়ে উঠেছে.." তাহলে তো আমি হস্টেলেই থাকবো,সাথে দীপ্তকেও নিয়ে নেবো।মাসিমাকে বলে দেবো নারকেল নাড়ু পাঠাতে।"
মধুমিতা হেসে ফেলে," আচ্ছা তুই কি বিয়ে করতে যাচ্ছিস? না আবার ওখানে ভর্তি হয়ে নতুন করে পড়াশোনা করবি?"
"সত্যিই মা,আবার যদি ছোট হয়ে যেতে পারতাম!"
মিষ্টির মনে তখন ভ্রমরের আনাগোনা...হাতে একটা দিন মাত্র।কালকেই মামা,মামী,মাসি,মেসো দাদু দিদা সবাই আসছে। কতদিন বাদে সবাই একসাথে শুধু ও আনন্দ করতে পারবেনা বৌ সেজে বসে থাকতে হবে।
দুষ্টুর কাজের তৎপরতার মধ্যেই ইনবক্সে মেসেজটা আসে..." আমি আসছি,চাবাগানের মাঝে পলাশফুল দেখতে। জিনিসপত্র গুছোচ্ছি,একটু হেল্প করবি আমাকে।মানে কি কি নেবো সাথে?"
" তোমার সত্যিই এবার একটা বৌয়ের দরকার দীপ্তদা,খুব অগোছালো তুমি।বেশি কিছু নিয়োনা..."
বাকিটা আর বলতে পারেনা দুষ্টু, তোমাকে সাজানোর জন্য তোমার বন্ধু পুরো ব্যবস্থা করে রেখেছে।
দুষ্টুকে দেওয়ার জন্য কেনা উপহারটা যত্নে ট্রলিতে ভরে দীপ্ত। অনেকবার ভেবেছে ওকে কি দেবে,বারবারই মনে হয়েছে হয়ত এই দেওয়ার কোন শেষ নেই...ভালোবাসা সত্যিই বোধহয় কখনো নিঃস্ব করে দেয়।
মা শুনছিলো গান,কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে তবুও বাজছে নিজের খেয়ালেই। বন্ধ করতে এসেও বন্ধ করতে পারেনা,গানের কথাগুলো মন ছুঁয়ে যায় অনেক চিন্তার মাঝেও.......
ভালবাসা মোরে ভিখারী করেছে,
তোমারে করেছে রাণী..,ভালবাসা মোরে ভিখারী করেছে,
তোমারে করেছে রাণী..,
তোমারই দুয়ারে কুড়াতে এসেছি,
ফেলে দেওয়া মালাখানি..,
*********************
ফুলে ফুলে আর আলোতে সেজেছে জোজোদের বাড়িটাও।মধুমিতা রাণু সবাই ব্যস্ত নিজের কাজে। রাণুকে নিয়ে আরেকবার গায়ে হলুদের তত্ত্বের ট্রেগুলো ভালো করে মিলিয়ে নেয় মধুমিতা। যদিও রবীনদা বারবার বলেছেন," বৌদি এই তো কত ট্রে এসেছে আশীর্বাদের সময়।আবার কি হবে?"
মধুমিতা শোনেনি,এ বাড়ি ও বাড়ি থেকে সবাই দেখতে আসবে ঐটুকু তো মজা। একমাত্র ছেলের বিয়ে তাই সব হোক একদম মন ভরে।
দুষ্টু না থাকাতে মিষ্টিকে মায়ের সাথে হাত লাগাতে হয় সব কিছু গুছিয়ে দেখে নিতে।
" মা বোন তো সব রেডি করে রেখে গেছে দেখছি,বাকিটা ছোটমাসি,মামী করে নেবে। আমার ভালো লাগছেনা।"
মনটা সত্যিই খারাপ লাগে মিষ্টির,চোখটা ছলছল করে অনুরও। ছোটবেলায় সবসময় বলতো পিঠোপিঠি দুই মেয়েকে বড় হলে বাঁচি।উঃ সারাদিন সময় পাইনা একটুও। এরপর হয়ত শুধুই অবসর আর একাকীত্ব,এতগুলো বছর কোথা দিয়ে কেটে গেলো বুঝতেই পারেনি ।সংসারে সেই কবে নতুন বৌ হয়ে এসেছিলো আর এখন শাশুড়ি হওয়ার পালা।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সানাইয়ের সুর বাজতে শুরু করলো। রবীন বকুনি দিলো," ওরে এখন থাম,আজ থেকেই যে বুকটা কাঁপে কালকের দিনটা তো হাতে আছে। সবাই আসুক তারপর বাজাস সানাই।"
এতদিন হাসি মজাতে কতগুলো বছর কেটে গেছে।বোনের সাথে খুনশুটি আর ঝগড়া সব মনে পড়ে যায় মিষ্টির। বালিশে আর প্রিয় বিছানায় মুখ ডুবিয়ে বারবার মনে হলো..." মিস্ ইউ মেয়েবেলা, যত্নে থাক দিনগুলো স্মৃতির পাতায়।"
অনেক রাত পর্যন্ত স্মৃতির পাতায় আলপনার আঁকিবুকি কাটতে কাটতে ঘুম আসতে অনেকটা দেরি হয়ে যায়...ওকে অনলাইনে দেখে দুষ্টু ফোন করে," দিদি ঘুমিয়ে পড়,অনেক রাত হলো। তোর কথা খুব মনে হচ্ছে,কাছে থাকলে আজ দুজনে একসাথে শুয়ে পড়তাম।যেমন ছোটবেলায় ভূতের ভয় পেয়ে তুই আমার বিছানায় চলে আসতিস তারপর দুজনে কাছাকাছি এসে শুতাম রাম নাম করতে করতে।"
মিষ্টি অবাক হয়ে যায়,দুষ্টু কি মন পড়তে পারে? সত্যিই তো এই কথাগুলোই ভাবছিলো ও মনে মনে।
" এই কথাগুলোই ভাবছিলাম, তুই কি করে জানলি? সত্যিই খুব মন খারাপ করছে।"
দুষ্টুর মন খারাপ হলেও বলে," মন খারাপের কি আছে শুনি? চেনা বর আর চেনা ঘর একদম দাপিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকবি। তোকে রীতিমতো প্রপোজ করে পেছনে পড়ে থেকে নিয়ে যাচ্ছে।তো মন খারাপ আবার কি?"
" তোদের সবার জন্য,আমার বিছানা,আমার ঘর,চাবাগান সব কিছুর জন্য।"
দুষ্টু বকুনি লাগায়," দিদি পাগলামি করিসনা,ঘুমিয়ে যা।রাত জাগলে চোখের তলায় কালি জমবে।জোজোদা সুন্দরী বৌয়ের ছবি তোলার জন্য কত আয়োজন করেছে।"
এবার হেসে ফেলে মিষ্টি,দুষ্টু সত্যিই মন খারাপের ওষুধ জানে।যেমন দুষ্টু তেমনি জোজো,একদম এক রকম।
সুন্দরী কথাটা মনের মধ্যে ঘোরে দুষ্টুর, একটা সময় কত শুনেছে..তোমার ছোটমেয়ে বড় মেয়ের মতো অত সুন্দর হয়নি। মিষ্টি খুব সুন্দরী,দুষ্টু অতটা হয়নি। তবে আজ পদমর্যাদা, শিক্ষা আর ব্যক্তিত্বে রাজন্যাকে রাজকন্যা ছাড়া হয়ত কিছুই ভাবা যায়না অবশ্য সবটুকু লোকের কাছেই শোনা। বাবা যেদিন থেকে বলেছে,নিজেকে কখনো ছোট ভাবতে নেই।সেদিন থেকেই নিজেকে শান দেওয়ার শুরু।"
দুষ্টুর সাথে কথা বলে অনেকটা হাল্কা লাগে মিষ্টির।তবুও ঘুম আসেনা চোখে চেষ্টা করে চোখ বন্ধ করে মনটাকে শান্ত করে।
অনুর চোখেও ঘুম নেই কদিন ধরে, রবীন ঘুমিয়ে পড়েছে।আস্তে আস্তে মেয়ের ঘরের দরজার সামনে এসে দাঁঁড়ায় অনু,এই ঘরেই তো মেয়েদের ছোটবেলা জড়িয়ে আছে।
হঠাৎই চোখে পড়ে মিষ্টি ছটফট করছে, ওর মাথায় হাত রাখে অনু। মায়ের হাতের ছোঁয়া পেয়ে হাতদুটো জড়িয়ে ধরে মিষ্টি...." মা একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দেবে। কেন যেন মনটা ভালো লাগছেনা"
মন তো ভালো নেই অনুরও তবুও তা প্রকাশ করেনা অনু,রবীন বারবার বলেছে," মনকে পাথরচাপা দিয়ে রাখবে অনু,আশীর্বাদ করবো আমরা ওরা যেন খুব ভালো থাকে।
" এই তো আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি ঘুমিয়ে পড় এবার।"
মায়ের নরম আঁচলের মিঠে গন্ধটা ভাসে নাকের আসেপাশে। আস্তে আস্তে ঘুমের মাসি নেমে আসে মিষ্টির চোখে।
সকালের রোদ জানলা দিয়ে এসে চোখেমুখে রঙ মাখাতেই মিষ্টির ঘুম ভেঙে যায়। ইশ্ কতটা বেলা হয়ে গেছে,তাড়াতাড়ি উঠে পরিস্কার হয়ে নেয়।
কিছুক্ষণ বাদেই ওদের উঠোনে একঝাঁক আনন্দমাখা গলার হৈ চৈ শুনতে পায় মিষ্টি...
' কই গো রবীনদা এসে পরেছি গো সবাই একদম দলটো বেন্ধে।"
কৃষ্ণমামা,মামী,ছোটমাসি, মেসো,দাদু,দিদা সবাই তার সাথে ভাই বোনেরাও।
মিষ্টি শুনতে পায় বাবা স্বভাবজাতঃ হাসিমুখে এসেই বলছে," এতক্ষণে জমবে বিয়াবাড়িটো। ওহ্ আর আমার চিন্তা নাই।"
বাড়ি আনন্দে আর হাসিতে ভরে ওঠে,মামী আর মাসি এসেই মিষ্টিকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে..." আর কি,মিষ্টি সোনা আজকের দিনটা আরাম করে নে,কাল থেকে আমরা যা বলবো তাই করবি।"
" মানে? তোমরা যা বলবে তা করবো কেন শুনি?"
" এ মা মেয়েটা কিছু জানেনা দেখেছো,আরে বিয়ের দিন বর কনের অনেক গার্জেন।তোরা মোটামুটি হাতের পুতুল, বোসো বললে বসবি,মালা পরাও বললে পরাবি।সিঁদুর দাও বললে জোজো দেবে। এই আর কি?"
মিষ্টি হো হো করে হেসে ফেলে এবার.." সত্যিই জানো তো বোন না থাকায় একদম ভালো লাগছিলো না।এখন তোমরা আসাতে খুব ভালো লাগছে।"
" হ্যাঁ আরো ভালো লাগবে একদম জমে যাবে বিয়েবাড়ি।"
মামী কে দেখে সত্যিই অবাক লাগে মিষ্টির,অথচ কৃষ্ণমামা মায়ের জেঠতুতো দাদা। অথচ ওর কাকিমা কখনো ওদের আপন করে নিলোনা,কি এমন সমস্যা কোনদিন বোঝেনি মিষ্টি। মা রাগ করলেও বাবাকে কখনো ভাই বা ভাইবৌয়ের সম্বন্ধে কিছু বলতে শোনেনি। বাবা সবসময় বলতো.." ভগবান একদিক শূন্য করলেও অন্যদিক পূর্ণ করে দেয়। আমার চারপাশে কত আপনজন বলতো?"
সত্যিই এখন তো মনে হচ্ছে পুরো কালচিনির সবাই বাবার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে।
তবুও আপনজনের সাথে বিরোধ বাবার মনকে ভারাক্রান্ত করে মাঝেমাঝেই জানে ওরা।
মিষ্টিও নিজের জীবনে বাবার মতই অনেক কিছু না পাওয়ার মধ্যে সব কিছু পাওয়া খুঁজে নিতে চায়। মামার ছেলে অর্ক অনেকটা বড় হয়ে গেছে এখন,মিষ্টি তো দেখে অবাক..." হ্যাঁ রে এই তো সেদিনই দেখলাম তোকে, আরও লম্বা হয়েছিস নাকি এরমধ্যে?"
" তোমার বিয়েতে পিড়ি তুলতে হবে মা বলেছে তাই জিমে যাচ্ছি এখন।"
ওর কথা শুনে সবাই হেসে কুটোপাটি হয়।
মিষ্টি বলে," এই ভাই আমি এতোটাও না যে তোকে জিমে যেতে হয়েছে।"
জমজমাট খাওয়া দাওয়ার মাঝেই জোজোর ফোন আসে ছোটমাসি উঁকি দেয়..." ইশ্ কালই তো দেখা হচ্ছে,এখন এতো কথার কি দরকার শুনি? বলে দে এখন কথা বলতে নেই।"
ওপার থেকে জোজো বলে," মাসিমণিও পেছনে লাগছে এই সেরেছে! ওদিকে শালীর সাথে ভাবলাম কথা বলবো,সে ধমকে ফোন কাটলো তার এখন সময় নেই,ভাবলাম তোকে একটু ফোন করি...এদিকেও দেখছি সিগন্যাল নেই। আমার বন্ধুটাকেই ফোন করি দেখি কখন এসে পৌঁচচ্ছে কাল। সবাই ব্যস্ত,একটা দিন আগে আসতে পারলোনা?"
" সেটা দীপ্তকেই জিজ্ঞেস করে নে,আমিও খুব বিজি মানে ব্যস্ত এখন বিয়ের আগের শেষ আড্ডাটা দিচ্ছি।"
তবুও ফোন কাটেনা জোজো,মাসিমণি আর মিমি ওদিকে মজা করছে।তার মধ্যেই জোজো বলে," তোর আইবুড়ো নাম কি ঘুঁচলো? মানে আইবুড়ো ভাত খেলি? হ্যাঁ রে মেনু কি হচ্ছে রে?"
" বিয়ে বিয়ে করে তোর মাথাটা একদম গেছে! সকালে উঠেই আইবুড়ো ভাত? আমি আইবুড়ো নাম ঘোঁচাবো না। তুই মানে তুমি এখন রাখো প্লিজ।"
মিষ্টির কথা শুনে সত্যিই হো হো করে হেসে ফোনটা রাখে জোজো,দুষ্টু থাকলে সব আপডেট পেতো।মিষ্টি তো পাত্তাই দিচ্ছেনা।
মধুমিতা একবার এসে ছেলের কান্ডকারখানা দেখে যায়..."সত্যিই বড় হলোনা ছেলেটা,মিষ্টিই তোকে সামলাতে পারবে।"
দীপ্তকে ফোন করতে করতে মায়ের দিকে তাকিয়ে হাসে জোজো..." কাল কখন এসে পৌঁচোচ্ছিস ঠিক বলতো?আগে আমাদের বাড়িতে আসবি তো? মানে তুই তো বরযাত্রী।"
"না রে আমাকে আগে কালচিনিতেই যেতে হবে,স্যার রাগ করবেন। প্রথমে তো স্যারের কথা রাখতে হবে,তারপর আসবো তোর কাছে।"
সবটাই তো জানা তবুও একবার বন্ধুর মনের জানলায় উঁকি দিয়ে দেখলো। সেখানে কতটা ভালোবাসার স্তর জমে আছে দেখতে হবে তো।
" স্যার কি সত্যিই রাগ করবে? নাকি অন্য কেউ রাগ করবে তাই আগে কালচিনিতেই যাচ্ছিস? অবশ্য দুষ্টু এখন কাজকেই বেশি ভালোবাসে মনে হচ্ছে। দিদির বিয়ে তবু এখনো সে যায়নি বাড়িতে।"
দীপ্ত হাসে আর মনে মনে বলে..কাল ঠিক পৌঁছে যাবে দুষ্টু ও পৌঁছনোর আগে মন বলছে যদিও দুষ্টু সেকথা বলেনি বলেছে.." তুমি তো সবাইকে চেনো তাই চিন্তা কি,আমি ঠিক চলে আসবো দুপুরের আগে।আমারও মন ভালো লাগছেনা কিন্তু কিছু করার নেই নতুন চাকরি বুঝতেই পারছো।"
দীপ্তর মনেও এক দোলাচল স্বপ্নপূরণের, তবুও দুষ্টুর জন্য আর বন্ধুর বিয়েতে থাকার জন্য যাচ্ছে। কারণ এখন মন জুড়েই রেজাল্টের চিন্তা।আর তো বেশিদিন নেই হাতে।
*****************
Comments
Post a Comment