Skip to main content

Posts

Showing posts from December, 2020

বিশটি অনুগল্প

ওকে প্রথম দেখেছিলাম আমার ছেলের কে.জি স্কুলে।ফর্সা লক্ষ্মীমন্ত বৌ যাকে বলে বেশ ভাব হয়ে গেছিলো। আমাদের দুই ছেলের মারামারি আর ভাবের মাঝে আমরাও জমে যেতাম পিএনপিসিতে।কত কি যে জমা থাকতো ঝুলিতে তারপর দেখা হলেই সব বলে ফেলা।কখনো রান্না করে ও আনতো কখনো আমি। মন ভালো না লাগলেই ছুট দিতাম ছেলের হাত ধরে ওর বাড়িতে।   একটা সময় ছেলেদের অন‍্য স্কুল হলো তবুও কথা ফুরোলোনা। তবে একটা সময় হারালাম সেই বন্ধুকেও চাওয়াপাওয়ার ভিড়ে। স্মার্টফোনে ওর ছবিটা মাঝেমাঝে দেখি কথা হয়না।কি জানি দোষ কার ছিলো? অনেক ভেবেছি,কারণ খুঁজে পাইনি।    এ ঘটনা যখন তখন এইসব ফোনটোন ছিলোনা চিঠিই ভরসা। অফিস থেকে এসে ঘরে ঢোকার আগেই শ্বশুরমশাইয়ের চিঠিটা পায় সমীর মণির শরীরটা বিশেষ ভালো যাচ্ছেনা,তাছাড়া বাচ্চা হওয়ার সময় ও থাকলে ভালো হয়। মণির মুখটা খুব মনে পড়ে সমীরের।পরেরদিন অফিস থেকে বেরিয়েই ট্রেন ধরে।ইশ্ কতটা রাত হয়ে গেছে! চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার টর্চ জ্বালিয়ে হাঁটা লাগায়।হঠাৎই টর্চটাও নিভে যায়,কি করবে ভেবে পায়না। দূরে একটা টিমটিমে আলো দেখতে পায়,ঘোমটা সরে গেলে অবাক হয় মণি! এই শরীরে তুমি অবাক হয়ে বলে। মণি লাজুক হেসে বলে ছেলে হয়েছে,আম...

মোর মাহুত বন্ধুরে

#মোর_মাহুত_বন্ধুরে# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# ট্রেনের কামরায় বসে নিঃশ্বাস ফেলি মোটামুটি জয়তু শান্তি বলে।আহ্ কিছুদিনের জন‍্য মুক্তি থিয়োরি,প্র‍্যাকটিক‍্যাল আর সব ক্রিটিক্যাল ক্লাশ থেকে । ট্রেন এগিয়ে যাচ্ছে উত্তরবঙ্গের দিকে সেখান থেকে পায়ে পায়ে এগোবে সবুজের সাথে হাত মেলাতে মেলাতে একদম আসামের দিকে। আমার মানে আমাদের গন্তব‍্য গৌহাটি। আমাদের দলে আছি চারজন তারমধ‍্যে আমাদের পথপ্রদর্শক আর এইকদিনের আশ্রয়দাতা কমলও আছে।মানে গৌহাটি পার হয়ে কাজিরাঙাতে ওর বাড়িতেই আমরা থাকবো কদিন। সত্যিই ছাত্র অবস্থায় খরচ করে বড় হোটেলে থাকার মত সামর্থ্য তখন ছিলোনা।       তাই কমল যখন প্রস্তাব দিলো তখন আমি,কল‍্যাণ আর ত্রিদিব একটু আমতা আমতা করে বিনয় প্রকাশ করলেও রাজি হয়ে গেলাম। এমন নেমন্তন্ন ঠিক ফেলে দেওয়া যায়না।           ত্রিদিবের টিফিন কৌটো থেকে বেরোলো লুচি আলুর দম প্রথমে সেটা কিছুটা খেয়ে গোটা দশেক স্টোর করলাম সকালের জন‍্য। তারপর রাতে আমার বাড়ি থেকে আনা কষা মুরগি আর কল‍্যাণের আনা ফ্রায়েডরাইস যৎসামান্য খেয়ে যার যার বাঙ্কে শুয়ে পড়লাম। মোটামুটি অক্টোবর মাঝামাঝি পেরিয়ে গেছে তখন।বাতাসে শ...

আয় ঘুম যায় ঘুম।

#আয়_ঘুম_যায়_ঘুম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# বাজারের থলেটা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন অনিরুদ্ধ, ভালোবেসেই হোক বা বাধ‍্য হয়েই হোক এই কাজটা এখনো করে যেতে হচ্ছে নিয়মিত তাকেই। অবশ‍্য এখন এটা অবসরের অভ‍্যেস,ভালোই লাগে বাজারে যেতে তার মত কয়েকজন অবসর প্রাপ্ত ঝঞ্ঝাটহীন অথবা সংসারের ঝঞ্ঝাটের সাথে দেখা হয় আলুপটল কেনার ফাঁকে। একটু রাজনীতি বা বাজারের দ্রব‍্যমূল‍্য বৃদ্ধির গল্প হয় মাছ কাটাতে কাটাতে ঐ টুকুই এখন খোলা জানালা দিয়ে আসা ফুরফুরে বাতাসের মত।মানে একসাথে ওয়াক,সাইড টক আর কেনাকাটা সবই হয় টুকটাক করে। নিজেকে সংসারের ঝঞ্ঝাট বলাতে একদিন খুব বকুনি খেয়েছিলেন মিনুর কাছে.." সারাদিন বাড়িতে বসে থেকে মাথাটা গেছে,কে তোমাকে ঝঞ্ঝাট মনে করে শুনি? না আছে যৌথ পরিবার। না আছে ছেলেবৌমা যে তাদের সাথে কোন অশান্তি। সেই পড়ে আছে ছেলেটা কোন বিদেশে,দুবছরে একবার আসে। আর বৌমা তো এখনো হয়নি। আর আমি তোমাকে ঝঞ্ঝাট মনে করি বুঝি?"      " আরে মনে করবে কেন? তোমাকে তো কম সামলাতে হয়না আমার জন‍্য। সারাজীবন তো জ্বালিয়ে গেলাম তোমায়।"    " তাহলে স্বীকার করছো? অবশ‍্য সারাজীবন নয়,বিয়ের আগে মাকে জ্বালিয়েছো।"       ...
বসন্তে রঙের মাখামাখিতে পুরুলিয়া দেখে কিছু রঙ সাথে নিয়ে এসেছিলাম হয়ত সেই রঙটুকু সম্বল করেই কাটিয়ে দিয়েছি এই এতগুলো মাস। প্রথমটা মনে হয়েছিলো বেশ তো ছুটি পেলাম অবশেষে নিশ্চয় মুক্তি মিলবে এই একটা মাসের শেষে। কিন্তু একটা সময় হতাশ হলাম।         সারাদিন রান্নাখাওয়া,বাইরে বেরোনো নেই।আমার স্কুলের ছাত্রীদের সাথে সেই মুঠোফোনে দেখা সাক্ষাৎ। একটা সময় দেখলাম ওরা অনেকটা বড় হয়ে গেছে আর আমি অনেকটা বুড়ো। দৈর্ঘ‍্যে বড় হবার তো আর বয়েস নেই প্রস্থে বেড়ে চলেছি আহ্লাদে। তার মাঝে মাঝেই হানা দেয় ভয় কখনো অবসাদ,কখনো বা কোন প্রিয়জনের মৃত‍্যুতে মন হয় খুব ভারাক্রান্ত। তবুও জীবনকে জিততে এগিয়ে চলতে হয়,এখন আর ছুটতে পারিনা তবুও চেষ্টা করি এগিয়ে চলতে।              আলমারির সাথে অনেকদিনের আড়ি। মনে হয় কি হবে এসবে? কত মানুষের ঘরে ঘরে বিষাদ আর মৃত‍্যু,এইসব ভাবনা হঠাৎ হঠাৎ চেপে বসে মনের মাঝে। ভালো লাগেনা,সত‍্যিই ভালো লাগেনা।কবে যে যাবে এই করোনা?           তাই আবার ফ্ল্যাটবন্দি মনটাকে মুক্ত করতে একদিনের জন‍্য ছুট ছুট।কোথায় আর যাবো? মানুষের সাথে ...