Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2022

আকাঙ্খা

"আপনার এখন কতমাস চলছে? এখানকার ডাক্তার দেখিয়ে হল বুঝি?"   নিজের পেটে হাত রেখে অনেক কষ্টে পাওয়া মাতৃত্বের ওমটুকু অনুভব করতে করতে উত্তর দেয় পরিধি," ছমাস চলছে এখন। হ‍্যাঁ এই ডাক্তার খুব ভালো। আসলে আমার প্রায় এগারো বছর বাদে হচ্ছে। বেশি বড় জায়গায় যেতে পারিনি খরচ বলে। তবে এখানকার চিকিৎসা কাজে লেগেছে।"    পরিধি দেখে পাশের মহিলাটি মাতৃত্বের স্বপ্ন দেখে ঠিক ও যেমন দেখত কিছুদিন আগে। মহিলাটি বলে," তাহলে আমার সুযোগ আছে,আমার তো মাত্র পাঁচবছর। আসলে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা এত কথা বলে না। আর আমার বরও খুব বাচ্চা ভালোবাসে।"       হাত বাড়িয়ে দেওয়া ছাড়া আর কিছু করতে পারেনি পরিধি। একই সমস‍্যার মধ‍্যে দিয়ে সেও পার হয়েছে গত এগারো বছর। আসলে মেয়েদের কাছে জীবন একটা কাঁটা তারের বেড়া। প্রথম থেকেই সে জেনে বড় হয় একদিন তাকে এই বাড়ি এখানকার প্রিয়জনকে ছেড়ে চলে যেতে হবে কোন অজানা দেশে কাঁটাতারের পরীক্ষা পেরিয়ে সেখানে খুঁটিয়ে দেখা হবে তার পাসপোর্ট ভিসা মানে রূপ,গুণ কখনও বাবার টাকা। তারপর অনেক খরচ আর কষ্ট করে নতুন জায়গাতে পৌঁছেও ভালো থাকতে পারবে না ফিরে আসতে হবে সেটাও বলা মুশকিল।   ...

মানবিক

স্কুলে যাবার আগে মেয়েকে বকুনি দেয় কুহু," কী রে তোর স্কার্ট কী ছোট হয়ে গেছে নাকি? এত উপরে তুলেছিস কেন?"    -"মা তুমি সব কথাতে টিক টিক কোরনা তো। এইখানেই সবাই স্কার্ট পরে। তোমাদের যুগ নাকি এখন যে হাঁটুর নীচে জামা পরে স্কুলে যাব? দাও আমার টিফিন আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে।"    সদ‍্য যৌবনে পা রাখা মেয়ের সাথে পেরে ওঠে না কুহু। আর তখন মৌমী হাওয়াতে ভাসছে।  ক্লাশ এইটে উঠতে না উঠতেই তার অ্যাডমায়ারের সংখ‍্যা দশ ছাড়িয়ে গেছে। চেক স্কার্ট পরে সে যখন স্কুলের বাসে ওঠে তখন তাকে নচিকেতার গানের নীলাঞ্জনার সাথে তুলনা না করে উর্মিলা বা আগের সিনেমার ববির সাথে দিব‍্যি তুলনা করা যায়। ওর ফর্সা পা দেখে অনেকেরই মনে দোলা লাগত। নিজেকে সন্তর্পণে হরিণীর মত শান্ত রেখে একটা কুল লুক দিলেই একদম ফিদা হয়ে যেত ছেলেদের দল। আর সেটা দেখেই ওর মনে জাগত একটা অদ্ভুত আনন্দ।     স্কুলের কড়াকড়িতে চোখে চোখে কথা বলার মতই প্রেমগুলো ওখানেই আটকে রইল মানে একটু দেখা ইশারা বা হাত ধরে গল্প করা তার বেশি কিছু নয়। তবে আরেকটু বড় হওয়ার পর কুহুর পক্ষে মেয়েকে সামলানো দুরূহ হয়ে উঠল। মাকে পাত্তাই দিত না মৌমী। বাবা সারাদিন ব...

নিরুদ্দেশের দেশে

আকাশে তখনও ভোরের আলোর লুটোপুটি শুরু হয়নি হয়ত সূর্য মামা হামাগুড়ি দেবার আয়োজন শুরু করেছে তার আগেই অভ‍্যেসমত ঘুম ভেঙে যায় অমৃতার। বিছানায় খোঁজে সুগতকে তারপর চোখটা খোলে দেখে সে উঠে গেছে বিছানা থেকে। আওয়াজ পায় সুগত উঠে বাইরে ডাইনিং স্পেশে খুটখাট করছে। নিশ্চয় এরপর আপেল কাটবে আর ফলের রস করবে। তারপর সব গুছিয়ে নিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করে পৌঁছে যাবে ময়দানে ওখানে হেঁটে ওয়ার্ম আপ করে তারপর ফলের রস আর আপেল খেয়ে চলে যাবে মেডিটেশন করতে। সেখান থেকে ফিরতে ফিরতে মোটামুটি নটার কাছাকাছি। অবশ‍্য তার মাঝে একদম বাজার করেই ফেরে।    অমৃতা বারণ করেছে দুএকবার। বলেছে," তোমার কী লাগবে বলবে আমি সব গুছিয়ে রাখব রাতে। সকালে উঠে কী দরকার?" -" নিজের কাজ আমি নিজেই করতে ভালোবাসি তুমি তো জান। আর বাসী ফলের রস আর কাটা ফল আমি খাই না তুমি জান। তুমি তো ভোরে উঠতে পার না আমি জানি। আর সারাদিন কাজ করছ তো এটুকু কাজ আমিই করে নেব।"    যত্নে ফল কেটে,ফলের রস কাঁচের কন্টেইনারে ভরে সুগত। তারপর নিজে তৈরি হয়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখে খুশি হয় সুগত কে বলবে ওর বয়েস পঁয়ষট্টি পেরিয়ে প্রায়..না থাক মেয়েদের মত ছেলেদেরও বয়েসটা গ...