Skip to main content

Posts

Showing posts from June, 2023

পুজোর ঠাকুর দেখা

ছোটবেলার দুর্গামন্ডপ,একচালায় ডাকের সাজের দুর্গাঠাকুর সবই এখন অতীত। মা,বাবা চলে যাবার পর দীর্ঘদিন গ্ৰামের বাড়ির পুজোর নস্টালজিক স্বাদে বঞ্চিত মন। কলকাতার থিমের পুজোর ভিড়ে মাঝেমাঝেই উঁকি মারে ছেলেবেলার সেই দিনগুলো। গ্ৰামের একটা পুজোকে কেন্দ্র করে কত হইচই আর বাড়িতে আত্মীয়স্বজনের মেলা। তারপর বিজয়া দশমীর মেলার আনন্দটুকু দুহাতে ধরে মাকে বিদায় দেবার পালা বিজয়াদশমীর মিষ্টিমুখে। দীর্ঘদিন কলকাতা শহরে থাকার সুবাদে এখন আমি মোটামুটি শহুরে,তবুও কোথায় যেন এখনও মাটির গন্ধমাখা মনটা মাঝেমধ‍্যেই উঁকি দেয় স্মৃতির ঝাঁপি নিয়ে। ছুটে যেতে ইচ্ছে করে একছুট্টে ছোটবেলার দিনগুলোতে। কিন্তু সময় বড় কঠিন,যা যায় তা যায়ই আর ফেরত আসে না কখনও। তবুও আমরা অনেক কিছু হারিয়ে ভালো থাকতে শিখে যাই,অনেক কষ্ট আর কান্নাকে লুকোতে শিখি হাসিমুখে। তাই নাইবা হল গ্ৰামের সেই দিনগুলো ফেরত পাওয়া,দুধের স্বাদ ঘোলে মেটালে ক্ষতি কী?  কর্তার উদ‍্যোগেই আমরা দুজনে আজ বেরিয়েছিলাম ডাব্লুউবিটিসির বাসে গ্ৰাম বাংলার ঠাকুর দেখতে ধান‍্যকুড়িয়া আর আড়বালিয়াতে। সকাল আটটায় এসি বাস ছাড়ল ধর্মতলা ট্রামডিপো থেকে। বাসে ওঠার কিছুটা বাদে এলেন পরিবহনমন্ত্রী তিনি য...

কেনিয়ায় কয়েকদিন

     কেনিয়ায় কয়েকদিন রুমাশ্রী সাহা চৌধুরী জঙ্গলপ্রেম আমার প্রথম থেকে ততটা না থাকলেও যত পরিণত হয়েছি ততই নেশাতুর হয়েছি জঙ্গলের ডাকে। তবে আজকাল কেন জানি না মাঝে মাঝেই ইচ্ছে করে এত কোলাহল আর কৃত্রিমতা ছেড়ে চলে যাই সবুজের কোলে যেখানে শুধু নীরবতাকে উপভোগ করব আর প্রাণভরে শ্বাস নেব। খুব ভোরে ঘুম ভাঙবে পাখির ডাকে,সারারাত টেন্টের আসেপাশে শুনব রাতজাগা পাখির গাছের ডাল ঠোকরানোর কুটুর কুটুর শব্দ অথবা কোন বন‍্যজন্তুর পায়ের খসখস আওয়াজ। আর সেইরকমই একটা ভালোবাসার টানে জঙ্গলে যাওয়ার ইচ্ছে মাঝেমধ্যে মনকে ব‍্যাকুল করে। তবে এবার আমাদের ইচ্ছে হল স্বদেশ পেরিয়ে আফ্রিকার জঙ্গলে যাব। বহুদিন ধরে ইচ্ছে মাসাইমারা যাব,গ্ৰেট মাইগ্ৰেশন দেখব কিন্তু কোনভাবেই তা সম্ভব হচ্ছিল না। আসলে বোধহয় কখনও জীবনে সুযোগ হঠাৎই আসে,অনেক আগে থেকে পরিকল্পনা করেও কিছু হয় না।      মাসতুতো দেওর নাইরোবিতে থাকে,অনেকদিন ওর সাথে তেমনভাবে যোগাযোগ হয়নি। এবার হঠাৎই দেখা হল ওর সাথে। ওর সাথে দেখা হবার কিছুদিন পরে একদিন আমার স্বামী প্রস্তাব দিল কেনিয়া যাবার। ব‍্যাস ঐ আর কী উঠল বাই তো কেনিয়া যাই। শুরু হয়ে গেল তোড়জোড়। এই প্র...

ডিসট‍্যান্ট রিলেশনশিপ

চড়ুইগুলো এসে বারান্দায় অনেকক্ষণ ধরে কিচমিচ করছে কিন্তু তবুও আজ উঠতে ইচ্ছে করছে না সুনিতার। বড় ক্লান্ত মনটা,যেন বহুদিনের বয়ে চলা শোকের যাত্রাপথ পেরিয়ে সে ভেঙেচুরে গেছে। সুনিতা কান পাতে এক সুরে পাখিগুলো কিচিরমিচির করে যাচ্ছে সমানে,আসলে তন্ময় ওদের অভ‍্যেস খারাপ করেছে। সকালে ফুলগাছকে আদরে জল দিয়ে ওদের পরিচর্যা করার সময়ে এই পাখিগুলোর সাথেও বকবক করত। নিজের জন‍্য ভিজিয়ে রাখা ছোলা আর বাদামের ভাগ দিতে দিতে কত কথাই না বলত। শেষে তো সুনিতা নিজেই রাগ করে বলত,' আচ্ছা এগুলো খাও নিজের শরীর ঠিক রাখার জন‍্য। বল এতে শক্তি হয়,বি টুয়েলভ আছে। তা এই ভিটামিন আর পুষ্টি সবই তো ছাদে গড়াগড়ি খাচ্ছে আর পাখিদের পেটে যাচ্ছে।'     তন্ময় হাসত,' আরে ওরা আর কতটুকু খায়,আমিই তো খাই। অতগুলো করে ভেজাও আর কত খাওয়া যায়?'    একটা সময়ের পর পাখিদের জন‍্য দানাশস‍্য এনে সেগুলোই ছড়িয়ে দিত ছাদে তন্ময়। ওরা আনন্দে খেত সেগুলো। তন্ময় চলে যাবার পরেও সুনিতা সেই গম,ছোলা দিয়ে পাখিদের খেতে দেয় রোজ। প্রথম কয়েকদিন কিছুই করতে পারেনি,তারপর ওদের চিৎকারে মনে হয়েছিল ওরা যেন বলছে আমাদের খুব খিদে পেয়েছে। একটু খাবার দাও। তাই পায়ে ব‍্...