Skip to main content

Posts

Showing posts from April, 2024

নকল সুখ

'আজ কী দিয়েছো গো! তুমি ঢুকতেই তো পুরো লেডিস কম্পার্টমেন্ট আলো হয়ে গেল।'  নিজেকে আয়নায় দেখে অবশ‍্য চুমু খেতে ইচ্ছে হয়েছিল নিজেরও জুহির। এমনকি অভিও বলেছে যে নীল এই জামাটাতে আজকে ওকে খুবই রয়‍্যাল লাগছে দেখতে।         অথচ নীল কিন্তু মোটেই ফেভারিট কালার নয় জুহির। বিয়েতে পাওয়া সব নীল শাড়িগুলো মোটামুটি সাইড করে রেখে দিয়েছে। একেই ওর শাড়ি পরতে ভালো লাগে না,মানে তেমন একটা ক‍্যারি করতে পারে না শাড়ি। তবুও বিয়ের পর মাঝেমধ্যে অঙ্গে চড়াতে হয় অসহ‍্য জিনিসটাকে। আর তখনই হয় মোটামুটি ল‍্যাজে গোবরে অবস্থা।        অফিসে যেতে হয় অনেকটা রাস্তা ট্রেনে করে সুতরাং অন‍্য পোশাকই পরা হয় বেশি। আগে জিন্স টপ বেশি পরলেও বিয়ের আগেই ওর লক্ষ্মীমন্ত আর বুদ্ধিমন্ত মা বলে দিয়েছিল প্রথমটা কুর্তা বেশি পরতে।   -'কেন মা? বিয়ের পর কী আর প‍্যান্ট পরা যাবে না? ওদের তো কোন আপত্তি নেই। তাছাড়া আপত্তি থাকলেও আমার কিচ্ছু এসে যায় না। এটা আমার ব‍্যাপার।'  মায়ের কাছে বকুনি খেয়েছিল। ' নতুন বৌ একটু এথনিক পোশাক পরলেই সুন্দর লাগে। মানে আমার তো ভালো লাগে। আমাদের ভারতীয় পোশাক কত কালারফুল জুহি...
আমাদের জীবনের যে দিনগুলো চলে গেছে তা নিয়ে আর আফশোস করি না। তবুও মাঝেমধ্যে মনে হয় আমরা বোধহয় একটু বেশিই বাধ‍্য আর ভীতু ছিলাম। যার ফলে আমাদের কিশোরীবেলা আর সদ‍্য যৌবনে পা রাখা জীবনের কঠোর অনুশাসন মেনে নিয়েছি চুপ করে। মেনে নিয়ে,মানিয়ে নিয়ে আর ভয় পেয়ে কেটে গেছে কখন যে জীবনের অগুনতি দিন তার কোন হিসেব নেই,হয়ত বা মুছে গেছে কিছু আলো ঝরানো সোনালী দিনও। আমাদের সেই সময়ে ছিপছিপে গড়ন থাকা সত্ত্বেও সরু ফিতের তো দূর অস্ত এমনকি হাত কাটা জামা পরার কথা স্বপ্নেও ভাবা হয়নি,কারণ সেটা ছিল অশালীন পোশাক আমাদের বড়দের কাছে। তাছাড়া আরেকটা বড় বিষয় ছিল লোকে কী বলবে? যত বড় হতে শুরু করলাম জামাতে কুচির সংখ‍্যা বাড়তে শুরু করল। বাবার শাসন চোখে কাজল পরা যাবে না, কোন সাজগোজ করা যাবে না। যাতে মেয়েকে দেখতে সুন্দর লাগে বা ছেলে ছোকরাদের নজর পড়ে এমন কিছুই করা যাবে না। এখন কম বয়েসেই মেয়েরা সাজে,নানা ড্রেস পরে মুখকে চোখকে সাজায় মনের মত করে। পার্লারে গিয়ে চুল কাটে নিজের মত পছন্দ করে। আমাদের লম্বা চুলকে শাসন করতে মা বসতো টুলের ওপর,আমি মাটিতে। তারপর চলত ঘ‍্যাচাঘ‍্যাচ চিরুনির টান আর তেলের আদর। তারপরে সেই তেল মাখা চুলকে দুই ভাগ করে ...
ক্লাস টেনে একটা চ‍্যাপটার আছে Our Runaway Kite. পড়াতে গিয়ে জেনেছিলাম Claude আর Phillipa নামে দুই মা হারা ভাইবোনের মনের কষ্টের কথা। দুই ভাইবোন এই দেখে অবাক হয়েছিল যে তাদের কেন কোন আত্মীয় নেই। সবার  আত্মীয় আছে অথচ তাদের নেই কেন? একদিন বাবাকে জিজ্ঞেস করাতে দেখেছিল বাবার চোখে মুখে বিষণ্ণতা এবং তাদের বাবা স্বীকার করেছিলেন যে তার জন‍্যই আজ তাদের কোন সম্পর্ক নেই। একদিন ভাইয়ের সাথে ঝগড়া করে তিনি বাড়ি ছেড়ে চলে এসেছিলেন। বেশ কয়েক বছর বাদে ফিরে এসে দেখেছিলেন তার ভাই মারা গেছে এবং একমাত্র বোন কোথায় গেছে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। ছোট ছোট দুটো ছেলেমেয়ে বাবার কষ্ট দেখে কষ্ট পেয়েছিল। তারা একটা নির্জন দ্বীপে থাকত যেখানে তার বাবা লাইট হাউসে কাজ করতেন। নিজেরাই খেলত নিজেদের মত করে সারাদিন। যখন সমুদ্রে বরফ জমত তার আগেই তারা সেই দ্বীপ ছেড়ে মেইন ল‍্যান্ডে চলে যেত। সেখানে অনেক ছেলেমেয়েদের তারা দেখত যাদের রিলেটিভ আছে। ওদের কাছেই ওরা ঘুড়ি বানানো শিখেছিল। একদিন সেই ঘুড়িই মিলিয়ে দিয়েছিল ওদের সাথে ওদের হারিয়ে যাওয়া পিসিমাকে। কারণ ঘুড়িটা ছিঁড়ে যাওয়াতে পিসির লেখা একটা পুরোনো চিঠি দিয়ে ওরা ঘুড়িটা জুড়েছিল আর ঘুড়ি...