Skip to main content

Posts

Showing posts from May, 2024

নীরবতা

বাবা মায়ের সাথে কথা বলার সময় থাকত না ছেলের, এখন আর তারা কথা বলতে পারেন না। তাই ফুরিয়েছে সব কথা।

ভাড়াটিয়া

রবীন যখন স্টেশনে নামলো তখন সন্ধ‍্যে নেমে গেছে,ওদের শহর হলে হয়ত তেমন করে অন্ধকার বোঝা যেত না। স্টেশনের লাগোয়া দোকানগুলোতে জ্বলত আলো। পথ চলতি মানুষজন সেখানে কেনাকাটা করত,অথবা একটা মোগলাই বা রোল খেত গপগপ করে ক্ষিদের পেটে।                 সুতরাং ট্রেন থেকে নেমে ঐ পথ দিয়ে সিঙাড়া আর গরম চপ ভাজার গন্ধ নাকে নিয়ে হেঁটে যেতে বেশ লাগত। তবে ওর ঠিকাদারি কাজের সূত্রে অর্জুনপুরে এসে প্রথমেই একটা ধাক্কা খেল। বেশ নিরিবিলি জায়গাটা। ট্রেন থেকে বোধহয় এখানে চার পাঁচটা লোকও নেমেছে কিনা সন্দেহ।        সুতরাং কিছু করার নেই পিঠের ব‍্যাগটা আর হাতের বাক্সটা ধরে এগোতে থাকে স্টেশন থেকে বেরিয়ে। তার আগেই লোকটাকে ফোন করেছিল কিন্তু লোকটা ধরেনি। কী একটা বাবুরাম না কিছু নাম.. বলেছিল তো স্টেশনের বাইরেই থাকবে কিন্তু এখন তো ফোনও ধরছে না। বাইরে কিছুটা এগোনোর পর টিমটিমে আলোতে একটা চায়ের দোকান দেখতে পায়। মনে তো হচ্ছে খোলা। ওখানেই বরং একটু দাঁড়িয়ে বাবুরামকে আবার ফোন করে এগোবে। আর যদি সে অগত‍্যাই না আসে তো জিজ্ঞেস করেই এগোতে হবে।      ফোনটা হঠাৎই বেজে ওঠে...

হারিয়ে যাওয়া

গোলাপী কার্ডের মাঝে একগুচ্ছ গোলাপের ভীড়ে অনেকগুলো প্রজাপতি খুশিতে উড়ে বেড়াচ্ছে আর এক কোণে লেখা ইউ আর করডিয়ালি ইনভাইটেড অন দ‍্য অকেশন অফ লাভ অ্যান্ড কমিটমেন্ট।            মনটা হঠাৎই উড়ে যায় বত্রিশ বছর আগের অতীতে,একদম ছিপছিপে সুন্দরী একটা মেয়ে সবসময় ডান হাতে ঘড়ি পরত। দুপাশে কাটা লকস্ আর পিঠে শাসন করা সুন্দর সোজা কালো চুলের লুটোপুটি। কথা বললেই মুখে ঝলমল করত একটা মিষ্টি হাসি। ওর রুমমেট একটু বকবকিয়া হলেও ওর মুখে বেশি দেখা যেত হাসিই আর কথা কম। তাপ্তীর জন‍্য আমাদের ডিপার্টমেন্টে কজন ফিদা ছিল জানি না। কারণ ওর রোগা পাতলা চেহারাতেও বেশ ব‍্যক্তিত্বের ছাপ ছিল। চট করে নিজের ভারী মলাটের আবরণ খুলে বেরিয়ে আসত না কারও কাছেই।        তবুও আমাদের ওকে নিয়ে ফিসফাস আর কৌতূহল কম ছিল না। মাঝেমধ্যেই এর ওর সাথে ওকে জুড়ে আমরা ক্ষ‍্যাপাতাম। ও মিটমিট করে হাসতো কিছু বলত না। কখনও বা বলত,' ইশ্ ঐ প‍্যাংলা কাঠি,ক‍্যাবলা ছেলেটা ওকে আমার পাত্তা দিতে বয়েই গেছে। অমন কারও সাথে প্রেম করব ভাবলে তো সেই কবেই করতে পারতাম।'       আমাদের হাসির রোল উঠত। তারপর কেউ একজন ফ...

মাসকাবারি

প্রতিবারই আগের দিন ডাক্তারের কাছে যেমন নাম লেখায় তেমনি নাম লিখিয়েছিল কামিনী। ওপাশ থেকে ভারী গলায় শুনতে পেয়েছিল,হ‍্যাঁ বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ চলে আসবেন। আর ডাক্তারবাবুর ভিজিট এখন ছশো টাকা। দেখানো হয়ে গেলে ওষুধটা এখান থেকেই নেবেন বুঝলেন।         এর আগেও এই ডাক্তারকে দেখিয়েছে কামিনী,তখন মুখে বিচ্ছিরি রকম ব্রণ বেরিয়েছিল। তবে তখন ভিজিট ছিল তিনশো। ডাক্তার বাবু মোটামুটি মাসে দেড়মাসে একবার করে সময় দিয়ে ডেকে সেই ব্রণ সারিয়েছিলেন আড়াই না তিন বছর ধরে। প্রথমে একরকম ক্রীম আর সাবান,পরের বার ক্রীম বদল,তারপর আবার রাতে এক রকম আর দিনে এক রকম এইভাবেই দীর্ঘ গবেষণাতে সেরেছিল মুখ। কামিনীর মুখের চামড়া কখনও লাল,কখনও কালো,কখনও ঘেমো,কখনও শুকনো হয়ে অবশেষে তিন বছরে একটা জায়গায় এসেছিল। ব্রণ ফুসকুড়ি ভেগেছিল ডাক্তারের চিকিৎসায়। প্রতি মাসের মাসকাবারি ডাক্তারের আর ওষুধের খরচ বন্ধ হয়েছিল বেশ অনেকটা অধ‍্যাবসায় আর আর্থিক গচ্চায়। তবুও কামিনী নিজেকে বুঝিয়েছিল মুখ বলে কথা,কত লোকেই তো হিজিবিজি মেখে আর ফেসিয়াল করে পয়সা খসায়। ও ডাক্তারের পেছনে করেছে তা যাক,তবুও তো মুখটা আবার ঠিকঠাক হয়েছে।     তবে ...