Skip to main content

অন‍্য স্বাধীনতা


অন‍্য স্বাধীনতা
#Rumasri#

অনেক দিন বাদে আবার রূপা কে নিয়ে ময়দানে হাঁটতে এসেছেন ডঃ রায়, মাঝে অনেক গুলো বছর কেটে গেছে। বিদেশ থেকে ফিরে আবার পুরনো অভ‍্যাসে ফেরা।
আজ সত্যি সকালের সবুজ কলকাতা চোখ জুড়িয়ে দিচ্ছে । ১৫ই অগষ্ট এর জন্য আজ অনেক রাস্তাই নো এন্ট্রী তাই গাড়ীটা একটু দূরে রেখে আসতে হয়েছে। আজ ময়দানে একটু যেন বেশী ভীড়, ছুটির মেজাজে অনেকেই কচিকাঁচাদের নিয়ে এসেছেন বেড়াতে।
        সত্যি বেশ লাগছে অনেকদিন বাদে দেশের মাটির গন্ধ আর স্বাধীনতার দিনটির মন ভাল করা সুবাস। রূপার ও আজ বড় মনে পড়ে স্কুলের দিন গুলোর কথা, কত আগে থেকে প্র‍্যাকটিস চলত গান আর কুচকাওয়াজের। গান গুলো গাইতে গাইতে চোখে জল চলে আসত। ডঃ রায়ের মনে পড়ে মাএর কাছে শোনা কত শহীদের আত্মত্যাগের গল্প ।
       মা সব সময় বলতেন পারলে  জীবনে মানুষের জন্য কিছু করিস। আর সেই জন্য ই বিদেশে গিয়ে ওদেশ থেকে উচ্চশিক্ষায় নিজেকে শিক্ষিত করা।
সাত বছর বাদে পুরোপুরি দেশে ফিরেছেন ডঃ রায় , এবার থেকে পাকাপাকিভাবে দেশেই থাকবেন। বাবা মায়ের বয়স হয়েছে এই সময় তাদের কাছেই থাকবেন।
     কাল এয়ারপোর্ট এ নেমে মনটা বেশ ভাল হয়ে গেল, বেশ তাড়াতাড়ি চলে এলেন বাড়ীতে। কলকাতার রাস্তা এখন অনেক ভাল, চারিদিকে আলোর মালা দিয়ে কি সুন্দর সাজানো!
       বেশ লাগছে, অনেকদিন বাদে ফেলে আসা শহরটাকে দেখে মনটা ভালো হয়ে যায়,যদিও দুই বছর আগে বাবার অপারেশনের সময় এসেছিলেন খুব অল্প দিনের জন্য। তখন আর কোন দিকে মন দিতে পারেননি।
       তাই আবার পুরনো অভ‍্যাস ঝালিয়ে নেওয়া, নিয়ম করে সকালে ওদেশে থাকতেও বেরোতেন। আজ কত পুরনো কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। সকালের এই আমেজটুকু বেশ ভাল লাগছে।

   হঠাৎ দুজনের ই চোখ যায় সামনে দাঁড়িয়ে থাকা একটা বাচ্ছা ছেলের দিকে, হাত ভরতি সাদা, সবুজ আর কমলা রঙের বেলুনে আর পাশে দাঁড়ানো ক্র্যাচ হাতে একটি লোক ।
ছেলেটি বলে তুমি এই গাছতলায় বোসো বাবা,আমি এখানেই আছি, ঐদিকে বেলুন গুলো বিক্রী করে আসছি।
          রূপার সামনে এসে ছেলেটি বলে , বেলুন নেবেন ম‍্যাডাম,তিনটে দশ। মনটা খারাপ হয়ে যায় রূপার, বাবা অসুস্থ হওয়ায় এইটুকু ছেলের কত দায়িত্ব । রূপা বলে , তুমি ওদিকটায় বিক্রী করে এসো,তারপর যেগুলো থাকবে সব আমি নিয়ে নেবো।
        ডঃ রায় হেসে ফেলে বলেন, তুমি কি বাচ্ছা হলে নাকি?☺️এত বেলুন নিয়ে কি করবে? রূপা হেসে ফেলে আজ ফ্ল্যাটের বাচ্ছাগুলো কে একটু চকলেট আর বেলুন দেব। ওরাও খুশী হবে আর এই ছেলেটারও সব বেলুন গুলো বিক্রী হয়ে যাবে।
      ডঃ রায়ের রূপার কথায় মনটা ভরে ওঠে, কি সুন্দর মন রূপার! এতদিন বিদেশে থেকেও রূপা একটুও বদলায়নি।
          দুজনে বসে কথা বলছেন , এমন সময় ক্র‍্যাচ হাতে কাছে এসে দাঁড়ায় লোকটি,' চিনতে পারছেন স‍্যার? আমি, সুধীর।'
        ডঃ রায়ের মনে পরে যায়,প্রথম গাড়ী কেনার পর সুধীরই পাঁচ বছর তার গাড়ী চালিয়েছিল, কি পাকা হাত ছিল ছেলেটার! কত রাতে হসপিটাল থেকে ফেরার পথে নিশ্চিন্তে গা এলিয়ে দিতেন পেছনের সীটে ওর ভরসায়।
        আবার কখনও বা সপরিবারে ছুটির দিনে বেরোলে সুধীরই ছিল ভরসা। মা,বাবা,রূপা সবাই ভালোবাসত ওকে।
       প্রথম কিছুই বোধহয় ভোলা যায়না। দুজনেই একসাথে বলে ওঠেন সুধীর! কি অবস্থা হয়েছে তোমার! আমরা বিদেশে যাবার আগে প্রাইভেট কোমম্পানীতে ভাল একটা চাকরী পেয়েছো বাড়ীর কাছে বলেছিলে, আমরাও তোমাকে আটকাইনি।
       কি করে এমন হলো? সুধীর উত্তর দিল, ডিউটি থেকে ফেরার সময় রাতে রেললাইন পার হতে গিয়ে একটা পা কাটা পরে। কোম্পানী কিছু টাকা দিলেও আর স্টীয়ারিং এ বসা হয়নি সুধীরের।
        এখন সরকারী কিছু ভাতা, আর কখন ও লজেন্স ,ধূপকাঠী বিক্রী করে সংসার চলে ওদের।
         বলতে বলতে দুচোখ ঝাপসা হয়ে যায় সুধীরের, জল চিক্ চিক্ করে রূপার দুই চোখেও।

             আজ ছেলেকে নিয়ে সুধীর এসেছে ময়দানে, স্বাধীনতা দিবসের দিন বেলুন বিক্রী করতে। সুধীর বলে,' ও আমার ছেলে পল্টু,' ততক্ষণে পল্টুও এসে দাড়িয়ে হাঁ করে শুনছে ওদের কথা।

             ডঃ রায় বলেন,সুধীর ,কাল একটু আসবে বাড়ীতে? পল্টুকে নিয়েই এসো,আমি তোমার পা টা একটু দেখতে চাই। সুধীর ঘাড় নাড়ে।
         রূপা আস্তে আস্তে কি যেন বলে ডঃ রায়কে, রূপা পল্টুকে বলে , আজ আমরা তোমাদের বাড়ী যাব , নিয়ে যাবে তো? খুশীতে পল্টু নেচে ওঠে কিন্তু সুধীর খুব করুণভাবে বলে,' স‍্যার আপনারা ওখানে--,' রূপা ওকে থামিয়ে দিয়ে বলে, তাতে কি হয়েছে?'
        এবার পল্টু বলে, কিন্তু বেলুনগুলো? রূপা হেসে বলেন ওগুলো তো আমি সব গুলোই নেবো।
       আজ গাড়ী চালাচ্ছেন ডঃ রায় পাশে র সীটে রূপা। শুধু ছবিটা পাল্টে গেছে, ড্রাইভারের সীটে বসা সুধীর আজ পেছনের সীটে পাশে পল্টু। দ্বিতীয় হুগলী সেতুর ওপর দিয়ে যাচ্ছে গাড়ী, পল্টু যেন আজ হাওয়ায় ভাসছে। আর তার সাথে আজ হাওয়ায় পাখনা মেলেছে ক‍্যারিয়ারে বাঁধা সাদা,সবুজ আর কমলা বেলুনগুলো।

মাঝে একটা দোকান থেকে গাড়ি থামিয়ে পল্টুর পছন্দমত অনেক বিস্কুট চকলেট আর মিষ্টি কিনলো রূপা। আর ও অনেক কিছু কিনলো পল্টুর বন্ধুদের জন‍্য ও।

     গাড়ী এসে থামলো সুধীরদের ছোট্ট বাড়ীটার সামনে, ভীড় করলো কলোনীর বাচ্ছাগুলো। বেশ লাগছে ওদের,অনেকেই স্কুল থেকে ফিরেছে হাতে তাদের কাগজের ছোট্ট ছোট্ট জাতীয় পতাকা।
        কারো বা আজ পল্টুর মত স্কুলে যাওয়া হয়নি। পল্টুই রূপার হাত ধরে ওদের মাঝখানে নিয়ে যায়।
       ডঃ রায় সুধীর কে বলেন,' তোমার ডান পা টা আমি একটু দেখবো সুধীর। বারান্দায় কাঠের চেয়ার পেতে দেয় সুধীরের বৌ ।
          রূপা মেতে গেছে পল্টুর ক্ষুদে বন্ধুদের সাথে, বিদেশে যাবার আগে একটা বাচ্ছাদের স্কুলে পড়াত ও। তাই বাচ্ছাদের সাথে ভাব করতে  একটুও সময় লাগেনা ওর।
            পল্টুর হাতে ধরা সব বেলুনগুলো এখন ওর বন্ধুদের হাতে, পল্টুও ব‍্যাগ থেকে আরও বেলুন বার করে ফুলিয়ে নিয়েছে। তার হাতেও তিন রঙের তিনটে বেলুন ধরা।
       রূপা পল্টুকে বললেন গাড়ীর মধ‍্যে রাখা চকলেট,মিষ্টি,আর বিস্কুটের প‍্যাকেট গুলো বার করে আনতে। পল্টুর সাথে ওর বন্ধুদের হাতেও তুলে দিলেন ওগুলো।
       খুশীতে উজ্জ্বল মুখগুলো দেখে রূপার মনটাও ভরে উঠলো, কত অল্পে খুশী এই কচি মুখ গুলো। এত আনন্দ বুঝি কখনও হয়নি রূপার। কত মানুষকেই তো কত দামী উপহার দিয়েছে কিন্তু এমন খুশির ঝলক আর কখন ও দেখেনি।
        ততক্ষণে ডঃ রায় উঠে দাড়িয়েছেন,সুধীরের কাঁধে হাত রেখে বলছেন,'তোমার পা আমি পরীক্ষা করে দেখেছি, কিছু ছবিও তুলে নিয়েছি,আমি আজই মেইল করে দেবো আমার বন্ধুকে যিনি চেন্নাই এ আর্টিফিশিয়াল লিম্ব এক্সপার্ট । তোমাকে আমার বাড়ীতে একদিন আসতে হবে, পায়ের সঠিক মাপ দিতে।

   একটুকরো আলো খেলে ওঠে সুধীরের ম্লান হয়ে যাওয়া চোখ দুটো তে। আনন্দে বলে ওঠে,' আবার আমি দুই পা ফেলে হাঁটতে পারবো? সত‍্যি স‍্যার?
       ডঃ রায় সুধীরের পিঠে হাত রেখে বলেন, নিশ্চয় পারবে। হয়ত প্রথম দিকে একটু অসুবিধে হবে,কিন্তু আমার বিশ্বাস তুমি নিশ্চয় পারবে। হয়ত বা তোমার মনের জোরে একদিন বসতে পারবে ড্রাইভারের সীটেও।

          হাসিতে ঝলমল করে ওঠে সুধীর আর তার পরিবারের সদস্যদের মুখগুলো।
         সবাইকে হাত নেড়ে বাচ্ছাদের আদর করে গাড়ীতে ওঠেন রূপা আর ডঃ রায়। গাড়ী চলতে শুরু করে, জানলা দিয়ে মুখ বাড়ায় রূপা। হাত নাড়ে, পেছনে দেখে হাত নাড়ছে এক ঝাঁক উজ্জ্বল মুখ। আর তাদের সাথে সুধীর আর পল্টু।

সত্যি আজ যেন এক অন‍্যরকম স্বাধীনতার দিন, অদ্ভুত এক ভাললাগা ছুঁয়ে যায় ওদের দুজনের মনকে।
      অন‍্যদিকে সুধীরের মনে আজ এক নতুন স্বাধীনতার স্বপ্ন। সুধীর স্বপ্ন দেখে আজ আবার নতুন করে বাঁচার। তার স্বপ্ন উড়ান তাকে উড়িয়ে নিয়ে যায় পঙ্খীরাজ ঘোড়ায় করে সব পেয়েছির দেশে।

#স্বাধীনতা_আনো_মুক্তি#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

স্কুলে আজ যেতে বলেছিলো স‍্যার তবে যাওয়া হয়নি বিল্টুর,যদিও মনটা খুব টানছিলো জিলিপির জন‍্য। আজ ময়দানে অনেক ভীড় হবে কাল বাবা অনেক বেলুন কিনে এনেছে। তাই আজ বিল্টুর গেরুয়া সবুজ আর সাদা বেলুনগুলো প্রাণভরে নিশ্বাস নেবে স্বাধীনতার আনন্দে। স্বাধীনতা মানে আজ বাড়তি পয়সায় একটা এগরোল খাওয়া।

আজ স্বাধীনতা,খুশির দিন। সকাল থেকেই বাজছে দেশ মেরা রঙ্গিলা মাইকে। মুখে রঙ মেখে আজ সত‍্যিই রঙ্গিলা হয়ে খোলা পিঠের ব্লাউজটা পরে বুকের কাছের শাড়িটা নামিয়ে বারান্দায় উঁকি মারে শেফালি। 
আজ ছুটির দিন,সবাই ফূর্তি করছে। আজ সকাল থেকেই ওর শরীরটা মন ভরাবে অনেকেরই ক্ষিদে মেটানোর স্বাধীনতার আনন্দকে। স্বাধীন দেশের শেফালি শরীর বেচে আর্থিক স্বাধীনতার জন‍্য। আজ কিছু বাড়তি রোজগার আর কিছুনা।

  আজ সকাল থেকেই এসে কাজে লেগে পড়েছে চাঁপা,দিদিমণির আজ পতাকা তুলতে যাওয়া। লালপাড়ের শাড়ী পরে মেকআপটা শেষবারের মতো দেখে নেয় সৃষ্টি। নারী স্বাধীনতার ওপর লেখা স্ক্রীপ্টটায় একবার চোখ বুলিয়ে নেয়। আজ ছুটি চেয়েছিলো চাঁপা ছেলেটার খুব জ্বর। আসতেই হলো,দিদিমণি যে স্বাধীনতার অনুষ্ঠানে যাবে,না এলে একশো টাকা কাটবে। ঐ টাকাটা যে খুব দরকার আজ ছেলের ওষুধ কেনার জন‍্য।

"পনেরোই আগষ্ট কাল মনে আছে তো? মালগুলো রেডি রাখিস।"কালই কথা হয়ে গিয়েছিলো। সকাল থেকেই মাইকে কান ফাটানো স্বাধীনতার গান,দেশ স্বাধীন হয়েছিলো বলে কথা। আসলে আসল মজা তো রাতে,মাইকে বাজবে কানফাটানো গান আর তার সাথে উদ্দাম নাচ। ক্লাবঘরে অন‍্য জিনিসগুলো মজুত আছে। আরে আনন্দের দিনে পার্টি না হলে হয়!

বাবু দশটা টাকা দাওনা খাবার খাবো। স্বাধীনতার দিনে পরাধীন বুলি,ভিক্ষে করে যা পাবে তুলে দেবে ওস্তাদের হাতে। আজ কি মুশকিলে পড়েছে ঐ দিদিমণির জন‍্য।" ঐ ভিক্ষা করিস কেনো?টাকা পাবিনা। কি খাবি বল কিনে দিচ্ছি।" এটা ওটা করে অনেক কিছু দিয়েই হাত ভরলো তবুও মুখে হাসি নেই ওরা যে আজও বড় পরাধীন অপরাধীদের জুলুমের কাছে।

  মায়ের আজ খুব পেট ব‍্যাথা,ইটের বোঝাটা টেনে দেয় বাবলু। মাইকে গান বাজছে,' যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে'। সত‍্যি বোধহয় একলা চলতে শেখাটাই আসল স্বাধীনতা। স্বাধীনতার মানে পুরোপুরি বোঝেনা ও শুধু বুঝলো অন্তত একদিনের জন‍্য মাকে কাজের থেকে স্বাধীন করলো।
   

     

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...