Skip to main content

Small quotes রূপের হাট তবু মনে রাখি

#শত_শব্দের_গল্প#

#বন্ধন#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

এম.আর.সিপি করতে গিয়ে গত দুবছর ফেরা হয়নি দেশে,খুব মিস্ করে জয় দেশের সবকিছু আর দিদিয়ার সাথে খুনসুটি। ওর সাথে সবকিছু নিয়ে ঝগড়া না করলে ভাতই হজম হতোনা,দিদিয়াও মাঝে মাঝে দিতো কানমলা, আবার পরক্ষণেই একটা ক‍্যাডবেরি দিয়ে রাগ ভাঙাতো। কাল আবার বাড়ি ফেরা অনেকদিন বাদে,দেশের মানুষ আর দেশের মাটি, ভাবলেই মনটা ভালো হয়ে যায়।
   " ইশ্ মনেই ছিলোনা আজ রাখীবন্ধন,দিদিয়াটাকে কি মিষ্টি লাগছে ওরে বাবা আবার মেহেন্দিও পরেছে!"....." ভাইয়া দাঁড়া বলছি এবার কিন্তু কানমলা দেবো,আরে রাখীটা তো পরে নে।....." আগে আমার গিফ্ট দে তারপর রাখী বাঁধবো। "
...." দেখেছো মা তোমার বুড়ো খোকাটা একটুও বদলায়নি।"

সময়কে কাজে লাগিয়ে ফেলো
নয়ত একদিন হবেই কষ্ট
যাদের জন‍্য মরলে ভেবে
সেটা ছিলো শুধুই সময় নষ্ট
অন‍্যের পছন্দ কমই ভাবো
নিজের ইচ্ছেকে মূল‍্য দাও
ভালোলাগা গুলো বাঁচিয়ে রেখে
হাসিমুখে জীবনে এগিয়ে যাও।

সবার চেয়ে দামী জেনো
নিজের কাছে তুমিই নিজে
তাদের থেকে মুখ ফেরাও
যারা তোমায় রাখছে নীচে
আত্মসম্মান বড়ই দামী
বিলিয়ে দিয়োনা কখনোই
আত্মপ্রত‍্যয় অটুট রেখো
জিৎ তোমার হবে হবেই।

    

অনেক খারাপ লাগার মাঝে
একটু ভালোলাগা বাঁচিয়ে রেখো
মনটাকে যত্নে আড়াল করে
সবসময় নিজে ভালো থেকো।
তোমার ভালো থাকার ওপর
নির্ভর করছে অনেক কিছু
জীবনযুদ্ধে ভয় পেয়োনা
কখনো হটবেনা পিছু।
   

সব চাওয়া যদি পাওয়াই হতো
আনন্দ হতো অসম্পুর্ণ।
কিছু না পাওয়া আছে বলেই
জীবনপাত্র পরিপূর্ণ।
যতটুকু পাওনা আছে তোমার
কেউ কেড়ে নিতে পারবেনা।
তাইতো প্রতিমুহূর্ত আনন্দে বাঁচো
অযথা চিন্তা কোরোনা।

সামান‍্য কিছু পেয়ে যদি....
হতে পারো জীবনে অনেক খুশি।
তাহলেই জানবে দুহাত ভরে,
পাবে না চাওয়ার চেয়েও বেশি।
অতিরিক্ত চাহিদা দুঃখ আনে,
মনে জমে থাকে না পাওয়ার ব‍্যাথা।
অল্পেতে খুশি হতে জানে যারা....
তাদের হাসিমুখটাই বলে অনেক কথা।

বটুকু দিয়ে চেষ্টা করো...
নিশ্চয় একদিন আসবে জয়।
আত্মবিশ্বাস অটুট থাকুক,
মন থাক দ্বিধাহীন আর নির্ভয়।
কারা কি বলছে ভুলে গিয়ে যদি
নিজের আনন্দে করো কাজ
একটাই কথা মনে করে রেখো
সফল হবেই কাল অথবা আজ।

She was sweet,she was beautiful and charming.She gave me the love of mother in law ..I even miss the taste of her delicious cooking,I like her two dishes very much  steamed pulao with coconut milk and radhaballabhi with cholar dal.
       I have no blood relation with her but she looked my hubby as her elder son. She had only one son who left for abroad after his marriage.I think there was some misunderstanding with her daughter in law..The old couple had all but they were very lonely. We sometimes went to them to give company. Her beautiful smile touched my heart always.
          But I can't imagine that she was broken down from the depth of her mind..Even her hubby couldn't realize how acute was her loneliness without her dear Son..He always tried to make her happy.
        Suddenly she was ill,doctor detected that it was a case of liver cancer..she expected her son will be there to support her but there was everyone expect him. He was very busy with his work.
        That charming lady was deeply broken she can't bear the pressure of her hubby who is very aged because there was age difference between them.
            One night she cut her vain with great skill and committed suicide.We reached there but can't do anything. She gave a great relief to everyone ..
         I can't explain the cause of her death even today. But as a mother I feel that none can make you happy so don't put the key of happiness even in your children's pocket. You are a separate being you have so many dreams. So just try to be happy and never  lost your dream and happiness among the duties. Love yourself and live the fullest, enjoy every second of life and do some good and positive. Be the winner not the looser.

বৃষ্টির শব্দে নষ্টালজিয়া,বৃষ্টিতে শৈশব দেখি।
তবুও আজকাল বৃষ্টি দেখে,চমকে বলি একি?
রাস্তাতে এক হাঁটু জল!কি যে এখন করি?
অযথা একটা সি এল নিয়ে,দুঃখ পেয়ে মরি।

এ0জএখপ্রেমের চকোলেট#
রুমাশ্রী সাহা চৌধুরী

চকোলেট ডে তে একবাক্স বিদেশী চকোলেট নিয়ে দাঁড়িয়ে অত্রি সেই নিরিবিলি জায়গাটায়,যেখানে ওরা প্রায়ই দেখা করে। অর্চিতার আসতে একটু দেরি হয়ে গেছে। ও আসতেই হাত দিয়ে ওর চোখদুটো চাপা দিয়ে বলে ওঠে,"হ‍্যাপি চকোলেট ডে সোনা। এউন্নতখন একটা সুইট স্মাইল আর হাগ দিয়ে মুখটা খোল,তোর লিপস্টিকের সাথে প্রেম করুক আমার চকোলেটগুলো।"
           মিষ্টি হেসে অর্চিতা বলে,"একটা কথা বলবো? আমাদের পাড়ার ফুটপাথের বাচ্ছাগুলোকে চলনা আজ চকোলেট খাওয়াই। বেশি কিছুনা বেশ অনেকগুলো এক্লেয়ার্সো কিনলেই হবে। কি রে কিনে দিবিতো? আজকের দিনটা নাহয় একটু অন‍্যভাবেই কাটুক। তোর চকোলেটগুলো প্রেম করুক ওদের মিষ্টি হাসিধর সাথে।"
            
  

টাইট হাগ#
রুমাশ্রী সাহা চৌধুরী

মেসেজে হাগ ডের ইমেজ দেখে হঠাৎই কুণালের মনে হলো,ওহ্ আজ তো হাগ ডে। কদিন ধরে মেজাজটা ভালো নেই। মায়ের সাথে ঝামেলা হয়েছে,আর রাগ করে কথা বন্ধ। কেন যে মা এমন হাইপার হয়ে যায় কে জানে? ধ‍্যাৎ ভালো লাগেনা কিছু।
                   আইডিয়া....হঠাৎই মাকে রান্নাঘরে পেছন থেকে এসে একটা টাইট হাগ দেয় কুণাল। একদম আদর করে জড়িয়ে ধরে। মায়ের হাতদুটোও তখন ওর গলায় জড়ানো,চোখের কোলে জল। অনেকদিন বাদে #হাগ ডে# মিলিয়ে দিলো মা আর ছেলেকে।  একঝুড়ি হাসি আর খুশি উপচে পড়লো মায়ের চোখদুটোতে,আদর করে একটা মিষ্টি চুমু এঁকে দিলেন ওর কপালে। ভালবাসায় ভরা থাক সম্পর্কগুলো এমন করেই প্রতিদিন।

টেডি ডে#
রুমাশ্রী সাহা চৌধুরী

   "কুন্তলা তোকে দেবাশীষদা ডাকছে।" বিরক্ত লাগে কুন্তলার,কলেজের জেনারেল সেক্রেটারী বলে কি মাথা কিনেছে? একদম সহ‍্য হয়না ওই দাদাটাকে। ভর্তির দিন কেমন ঘুরে ঘুরে হাঁ করে দেখছিলো ওকে,চোখই সরাচ্ছিলোনা। অসহ‍্য লাগছিলো, তারপরেও একদিন ডেকেছিলো। কি মতলব আছে কে জানে?
                     বিরক্ত হয়ে এগিয়ে যায় কুন্তলা,দেবাশীষ একটা মিষ্টি টেডি আর চকোলেট ধরিয়ে দেয় ওর হাতে।
মুখে একরাশ বিরক্তি নিয়ে কুন্তলা বলে ,"হঠাৎ আমাকে এইসব কেন? সবাইকে হাতের পুতুল ভাবো নাকি?"
....." তোর মাঝে আমার ছোটবোনটাকেই যে দেখি বার বার। আজ তো টেডি ডে,ও থাকলে একটা টেডি আদায় করতোই। হঠাৎই চলে গেলো দুবছর আগে।"
             চোখটা মুছে নেয় দেবাশীষ। কথা হারায় কুন্তলা।

#কিস_ডে#
রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

  শুধুই ছিলো একরাশ ভালোলাগার অনুভূতি,হয়ত বা তা সবে একটু একটু করে রাঙা হচ্ছিলো ভালোবাসার রঙে।
     মাধুরীর গালে আজও যেন লেগে আছে রক্তিমের প্রথম দেওয়া আবীরের ছোঁয়া। এখনো চোখের সামনে ভাসে কত স্মৃতি, কানে বাজে সেই ডাকটা," এই মাধু পালাবিনা,আজ তোকে রঙ মাখাতে দে। কত ছুটে পালাবি দেখি,এই আমি ধরে ফেললাম বলে। আর তো দুদিন বাদেই আমাকে চলে যেতে হবে মিলিটারি পোষ্টিংয়ে কাশ্মীরে তখন হাজার ডাকলেও পাবিনা।
       একছুটে ফুলে ফুলে রাঙা পলাশগাছের পেছনে দাঁড়ায় মাধুরী। ওর একহাত তখন রক্তিমের হাতের মুঠোতে শক্ত করে ধরা। ভালবাসা উজাড় করে লাল আবীরে রক্তিম রাঙিয়ে দিয়েছিলো সদ‍্য যৌবনে পা রাখা মাধুরীকে। গভীর ভালবাসায় আর উষ্ণতায় ছুঁয়ে গিয়েছিলো দুটি মন,এক হয়ে গিয়েছিলো মনের ইচ্ছেগুলো। মাধুরীর নরম গাল দুটো দুহাতে ধরে সমস্ত আবেগে রাঙা করে দিয়ে এঁকে দিয়েছিলো এক গভীর প্রেমের চিহ্ন ওর ঠোঁটদুটোতে । যেন কত দিনের তৃষ্ণায় ভিজিয়ে দিয়েছিলো রক্তিম তৃষিত মাধুরীকে। ভালোবাসার মাদকতা বুঝি এমনই হয়। খুব লজ্জা পেয়েছিলো মাধুরী বুঝতেই পারেনি কি হয়েছিল হঠাৎ।
                সেদিন হয়ত ওরা জানতো না' "কিস ডে' বলে কোন আলাদা দিন হয়। প্রথম ভালোবাসার গভীরতায় বন্দী হয়েছিলো,সন্ধি করেছিলো দুটো তৃষ্ণার্ত ঠোঁট আর সদ‍্য ভালবাসায় রাঙানো দুই মন।
                রক্তিমও বুঝতে পারেনি হঠাৎ কি করে ফেলেছিলো এক মুহূর্তের জন‍্য। সাক্ষী ছিলো শুধুই পলাশগাছের রাঙা ফুলগুলো। হয়ত বা লাল পলাশের ফুলগুলোও লজ্জা পেয়ে আরো রাঙা হয়েছিল মুহূর্তের জন‍্য।
লজ্জায় রাঙা হয়ে রক্তিমের বন্ধন থেকে ছুটে পালিয়েছিলো মাধুরী। বুকের অজস্র ঢেউয়ের ওঠানামার শব্দ শুনেছিলো নিজেই, হাঁপাচ্ছিলো উত্তেজনায়। শুধু গালের লালিমা ঢাকা ছিলো লাল আবীরের নীচে,তাই হয়তো বন্ধুরা খেয়াল করেনি।
                   রক্তিম চলে গিয়েছিলো দুদিন পরে। ওর ঠোঁটের উষ্ণ স্পর্শ ভরিয়ে রেখেছিলো মাধুরীকে। তাই যাওয়ার দিন দূর থেকে দু ফোঁটা চোখের জল গড়িয়ে পরেছিলো নরম গাল বেয়ে।

   বলে গিয়েছিলো রক্তিম, "পরের ছুটিতেই ফিরে এসে কাকুকে বলে তোকে চেয়ে নেবো। এতোদিন বেকার ছিলাম তাই সাহস পাইনি। সামনের হোলিতে আবার একসাথে আবীর মাখবো ওই পলাশগাছের তলায়। তোকে জড়িয়ে রাখবো বুকের কাছে, আমার শক্ত বুলেট চালানো হাত দুটো দিয়ে। তখন দেখবো কি করে ছুটে পালাস।"
           লজ্জায় মাথা নীচু করে বলেছিলো মাধুরী," ইশ্ , একদম অসভ‍্য তুমি!"
     হোলি এসেছে বহুবার মাধুরীর জীবনে কিন্তু রক্তিম আর ফিরে আসেনি।  বর্ডারে ডিউটিতে থাকার সময়ে জঙ্গীর গুলিতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিলো ওর দেহ। মাধুরী দেখতে চায়নি রক্তিমের ঘুমিয়ে থাকা মুখটা,আর কাপড়ে ঢাকা দেহটা। এখনো রক্তিমের প্রথম চুম্বনে রাঙা মাধুরী নিজেকে আবিষ্কার করে প্রতি হোলিতে নিজের মনের অনুভূতির ছোঁয়ায়।
    জীবন কখনো থেমে থাকেনা। নিজের খেয়ালে এগিয়ে চলে। মাধুরীও পা মিলিয়েছে জীবন যুদ্ধে একা নিজের মতো করে। সম্বল আর শক্তি ছিলো রক্তিমের প্রেম।
             জীবনের মধ‍্যাহ্নের তপ্তবেলায় পা রাখা মাধুরী এখন জানে, ফেব্রুয়ারী মাসে ভালোবাসা আসে বিভিন্ন রঙে। রঙিন মন নিয়ে ছেলেমেয়েরা মেতে ওঠে প্রেমের আহ্বানে। তবে, সত‍্যি কি প্রেমের দিন হয়? সত‍্যি কি ঠোঁটে ঠোঁট রাখার কোন নির্দিষ্ট দিন আছে? নাকি সবটাই অনুভূতির খেলা।
রক্তিমের প্রেম যে এখনো প্রতি মুহূর্তে জীবন্ত ওর জীবনে। এখনো চোখ বুজলে অনুভব করে রক্তিমের উষ্ণ ওষ্ঠের ছোঁয়া। সত‍্যি বোধহয় দিন দেখে কিছু আসেনা। সত‍্যিকারের ভালবাসা আসে হঠাৎই সুনামির মত। হয়তো বা বুঝতেই পারা যায়না কখন ভালোবেসে ফেলেছে।
               অন‍্য কাউকে আর অধিকার দিতে পারেনি ওর নরম ঠোঁটদুটো ছোঁয়ার, হয়তো প্রথম চুম্বনেই আজীবন বেঁচে থাকে ভালবাসা এভাবেই।
প্রথম ঠোঁটে ঠোঁট রাখার লুকোনো স্মৃতি উজ্জ্বল আজো মাধুরীর মনে বছরের সব কটা দিনে,প্রতিটি মুহূর্তে। নাইবা হলো সেদিন কিসডে।
           
       কিন্তু মাধুরীর মিষ্টি চুমুর ছোঁয়া ভরিয়ে দেয় অনাথআশ্রমের কিছু না পাওয়া অনেকগুলো ছোট ছোট ছেলেমেয়ের মিষ্টি গাল আর কপাল। এখন ওরাই মাধুরীর ধ‍্যান জ্ঞান। ওদের মুখে চোখে একরাশ খুশির ঝলক দেখে মাধুরী যখন আদর করে চুমু দেয় ওদের কপালে,গালে,কখনো বা ছোট ছোট মিষ্টি হাতে। অনেক না পাওয়ার মাঝেও একটুকরো ভালোলাগা নিয়ে এখনো রক্তিমেরই স্বপ্ন দেখে মাধুরী,অনুভব করে প্রথম প্রেমের স্পর্শ। সত‍্যিকারের ভালোবাসা মাখা প্রথম চুম্বনের আস্বাদ বোধহয় কোনদিনই ভোলা যায়না। তাই........💝💝💝💝💝
                "ছুঁয়ে যাওয়া দুই ঠোঁটে
                 থাক একটুকরো বিশ্বাস।
                 আবেগের মাঝে যেন থাকে,
                 গভীর ভালোবাসার আশ্বাস।"
© ইচ্ছেখেয়ালে শ্রী🦋🍃

                 

সত‍্যি করে বলনা আজ,
একদম খাঁটি প্রমিস করে..
সারাজীবন থাকবি সাথে,
আমার দুটি হাত ধরে।

ভালোবাসায় ভরা প্রতি মুহূর্ত
হোকনা সদাই অনন‍্য
বিশেষ কোন দিন লাগেনা
ভালোবাসা প্রকাশের জন‍্য।

প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্ত থাক
গভীর ভালোবাসায় পূর্ণ
বিশেষ কোনো দিন লাগেনা
প্রেম প্রকাশের জন‍্য।

দিনটা আজ ছিলোই শুধু
দেবার একটা টাইট হাগ
প্রমিস আজ একটাই থাক
ভালোবাসাটা হবেনা ভাগ।

টাইট হাগ শুধুই থাক
বিশ্ববাসীর জন‍্য
হোকনা তারা দীন দরিদ্র
কেউই নয় নগণ‍্য।

একটা দিন রইলো নাহয়
আলিঙ্গনের জন‍্যে
বিশ্ববাসীও আবদ্ধ হোক
সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধনে।

মিষ্টি চুমু#

বাংলা মিডিয়ম স্কুলে প্রাইমারিতে পড়ে মিলি।ব্রেনটিউমার অপারেশনের পর কেমো নিয়ে সুন্দর একরাশ কালো চুলের সবটাই উঠে গেছে মিলির।            এখন অনেকটা সুস্থ হয়েছে ভালো আছে, কিন্তু চুলের জন‍্য লজ্জায় স্কুলে আসতে চাইছেনা।
ওদের ক্লাস টিচার শোভা বার বার ফোন করায় অনেক কষ্টে রাজী করিয়ে মা পাঠালেন স্কুলে।
মাথায় স্কার্ফ বেঁধে লজ্জায় মাথাটা নীচু করে বসে ছিলো মিলি।
    শোভা মিলিকে কাছে ডেকে,আদর করে কপালে একটা চুমু দিয়ে বললো,"বাঃ মিলি তোকে ন‍্যাড়া মাথায় আরো সুন্দর লাগছে। একদম মিষ্টি মিষ্টি।"
     খুশির হাসি মুখে নিয়ে ছোট্ট মিলি বলে," আজ তো কিস ডে না দিদিমণি?"
      " পাকা বুড়ি! মিলিকে আদর করার জন‍্য  কিসডে লাগেনা।"
      

আলতো ছোঁয়া#
রুমাশ্রী সাহা চৌধুরী

বৃদ্ধাশ্রমের চেয়ারে বসে হঠাৎই চোখ চলে যায় কমলিকার কৃষ্ণচূড়া গাছটার দিকে। কি অপূর্ব সুন্দর লাগছে গাছটাকে!একদিন ভালোবাসার শপথ বিনিময় হয়েছিলো কৃষ্ণচূড়ার তলাতেই। জীবনের বাণপ্রস্থে এসে হঠাৎই মনে হলো না পাওয়া ভালোবাসার কথা।
পেছন থেকে একটা আলতো ছোঁয়া ছুঁয়ে গেলো কাঁধটায়।চমকে ওঠে কমলিকা।
আস্তে আস্তে কমলেশ মুখটা বাড়িয়ে বলে,"প্রেমটা নাহয় ব‍্যক্তিগতই রইলো তবুও তো জীবনের শেষবেলায় পাশাপাশি হাঁটবো দুজনে ওই কৃষ্ণচূড়ার তলায়। ভাগ করে নেবো সুখ দুঃখ গুলো যতদিন আছি। প্রেম এভাবেই থাকুক নিঃশব্দ চরণে,জীবনে।"
     কাকতালীয় ভাবে স্ত্রী মারা যাবার পর আজই এসেছে এখানে।

সমাজবদ্ধ মানুষ আজ
অসামাজিক বেশি,
আত্মকেন্দ্রিকতার ভীড়ে
করছে দর কষাকষি।

ভীড়ের মাঝে হারিয়ে গেছে
মানবিকতা আর মূল‍্যবোধ
জীবন এখন ভীষণ জটিল
প্রতিমুহূর্তে নিচ্ছে শোধ।

বাঁচার বড়াই করতে গিয়ে
সত‍্যি কি আছি বেঁচে?
মনুষ‍্যত্ব পড়ছে চাপা
স্বার্থপরতার নীচে।

মধ‍্যবিত্ত ছাপোষা মন
স্বপ্নে ভরা দুই আঁখি।
একটু থাক নিজের জন‍্য
বাকিটা সবার জন‍্য রাখি।

গোলার্ধের মধ‍্যেখানে
অর্ধগোলার্ধে করি বাস
চিন্তার জালে আটকে থাকি
আত্মকেন্দ্রিক এক অক্টোপাশ।

প্রত‍্যাশার ভীড়ে রোজ
পথ হারায় ভালোবাসা
অফুরান প্রেম পথ হারায়
নির্বাক হয় প্রেমের ভাষা।

ইচ্ছেবন্দী ছোট্ট জীবন
বৃথাই করি পর্যটন
খেয়ালের ঘেরাটোপে
শুধুই আজ বিস্মৃতির অনুরণন।

সামাজিক গন্ডীর বাইরে
অসামাজিক নিরন্তর
অনুভূতিরা হয়েছে ভোঁতা
জীবনটা যন্তরমন্তর।

ভালোবাসারা বাঁচুক যত্নে
কখনো মনে,কখনো মননে
অনুভূতি হোক আবেগে ভরা
সহানুভূতি থাক বিশ্বজোড়া‌।

মুঠোর প্রেমে বন্দীজীবন
বৃদ্ধাশ্রমে আপনার জন।
সহানুভূতি আজ লুকিয়ে মুখ
জয়ী হয়েছে আত্মসুখ।

পরিমিত প্রেমের মাঝেই হোক
অপরিমিত ভালোবাসার প্রকাশ
বিন্দুর মাঝে হোক সিন্ধু দর্শন
মনের খুশিতে একরাশ।

আত্মহত‍্যার প্রবণতার
হওয়া দরকার নিয়ন্ত্রণ
ভাবাটা সত‍্যি জরুরী
সমাজে আমাদের
কতটা প্রয়োজন।
অন‍্যদের কাছে যদি
পেয়েছো অপমান
হয়েছো কমদামী
ভাবতে হবে আমার কাছে
জীবনটা ভীষণ দামী।

অমূল‍্য জীবনে
প্রতিমুহূর্ত দামী
ভালো থাকা
ভালো রাখা
একান্তই

যদিও পরিমিত প্রেম
তবু পর্যাপ্ত ভালোবাসা
এক আকাশ খুশি নিয়ে
বাঁধি সুখের বাসা।

হত‍্যার খেলায় মেতেছে মানুষ
চলছে হত‍্যা আর নির্যাতন
বুঝতে হবে বাঁচা আর বাঁচানো
দুটোরই আজ বড় প্রয়োজন।

আত্মহত‍্যা,ভ্রূণহত‍্যা,
নানাবিধ হত‍্যার
খেলার নিরন্তর
চলছে আয়োজন।
ভুলতে বসেছে
সৃষ্টির কাজে....
সবারই যে আছে,
বড়ো প্রয়োজন।

অনিত‍্য জীবনে
দুঃখ আসে প্রতিনিয়ত
তারই মাঝে সুখের খোঁজ
চলছে অবিরত
         
                
ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছেটা মন থেকে খুব একটা ছিলোনা। কিন্তু তবুও বাবার ইচ্ছেটা একবার পূরণ করার জন‍্য নিজের স্বপ্ন গুলোকে একটু একটু করে পাল্টে নিয়েছিলো সৌম‍্য। মাঝে মাঝে মনটা বিক্ষোভ করতো আ্যনাটমির ডিসেক্সনের ক্লাশগুলোতে। তবুও মন দিয়ে মানুষের শরীরের কাঁটাছেড়াটা শিখেছিলো। বাবার হার্ট অপারেশন করে নতুন হৃদয় দান করে নিজের হৃদয় হয়ে উঠেছিলো তৃপ্ত। অজস্র মানুষের হৃদয়ের ধুকপুকানির মধ‍্যে নিজের মনের আনন্দের স্পন্দন খুঁজে নিয়েছেন কার্ডিয়াক সার্জেন সৌম‍্য রায়। জীবন যা দিয়েছে তা পেয়েই খুশি হয়েছেন নিজের জীবনে।

না পাওয়ার ব‍্যথা সে ছিলো ভালো
সয়েছি হাজার জনের অপমান‌।
তবুও আজও অসহায় লাগে
বিপক্ষে যখন দাঁড়ায় সন্তান।
একলা মনের অন্ধকারে
কান্নায় ঢাকি দুহাতে মুখ।
নিজেকে শুধাই,এই কি জীবন?
এর নামই কি অপত‍্য সুখ?

আহত মনকে ভালোবাসা দিয়ে,
বোঝাই মন আমার,কষ্ট পাসনা,
আমি তো তোকে ভালবাসি খুব..
আর কারো ভালবাসা চাইতে যাসনা।

যন্ত্রণাকাতর অসহায় মন
আর খোঁজেনা আপনজন,
ক্ষতস্থানে প্রলেপ লাগিয়ে
মনকে বলি ওরে শোন...
খুঁজে নিয়েছি গোপন কোণ
নিজের দুঃখ নিজেকেই বলি
আপন ছন্দে শুধু পথ চলি।

রক্তের রঙে ভেদাভেদ নেই
সব ভেদাভেদ মানুষের মনে
নষ্ট হচ্ছে সমাজব‍্যবস্থা
জাত পাত আর বিভাজনে।

হজরত,যীশু,বুদ্ধ,নানক
শুনিয়েছিলেন শান্তির বাণী
ধর্মের ধ্বজা উড়াই সবাই
ধর্মের কথা কত জন মানি?
নিষ্ঠুরতায় প্রাণ হারায়,
শত অসহায় সিরিয়ায়...
ঘৃণার সাথে ধিক্কার জানাই
মানুষের এই হত‍্যালীলার।
বন্ধ হোক হত‍্যার খেলা,
আসুক সিরিয়ায় শান্তি।
শিশুরা বাঁচুক,হাসুক আবার
দেখুক শান্তি সম্প্রীতি।

ভালবাসারা পথ হারিয়েছে..
গভীর সংকটে রয়েছে প্রেম,
বোঝেনা অনেকেই কোনটা সত‍্যি
কোনটা আসলে নিছকই গেম।
অস্থির মন বন্দী হয়েছে
কখনো কথায় কখনো চ‍্যাটে
নিরাপত্তাহীন ভালোবাসায়
অস্থির হয়ে সময় কাটে।
একটা ফোনেই ঠিক হয়ে যায়,
ভালোবাসা না ব্রেকআপ হবে,
আসল ভালবাসা কি কোনদিনও...
হৃদয়ের কাছে পৌঁছতে পাবে?

মায়ের কোলে জন্ম নিয়ে..
প্রথম 'মা' ডেকেছি বাংলা ভাষায়।
এখনো গর্বে বুক ভরে যায়,
কথা বলি যখন মাতৃভাষায়।
শত শহীদের রক্তে রাঙানো
ভাষাদিবসে আজ শপথ করি..
মর্মে,মননে,আত্মায় থাক
চিরস্মরণীয় একুশে ফেব্রুয়ারী।

একুশের স্মৃতি উজ্জ্বল থাক
হৃদয়ে হোক রক্তক্ষরণ..
বাংলাভাষার রাখতে মান
শত শহীদের মৃত‍্যুবরণ।
বৃথা যায়নি তাদের আত্মদান,
রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষাকে
করেছে তারা আরো মহান।

ভাষার জন‍্য যারা ঝরালো রক্ত
তাঁদের আজকে স্মরণ করি।
বৃথা যায়নি তাদের আত্মবলিদান
অমর হয়েছে একুশে ফেব্রুয়ারী।

বাংলা মিডিয়ামে ভর্তি হয়েছে রাকেশ। হেডমাস্টারমশাই একটু আপত্তি করছিলেন, "ওর কথায় তো বেশ হিন্দী টান,ও কি বাংলা পারবে?" তবুও ওর মা বললেন,"স‍্যার আমি মনে প্রাণে বাঙালী, যদিও বিয়ে হয়েছে যেখানে সেখানে ওরা হিন্দীতে কথা বলে। আমাদের আর ওর খুব ইচ্ছে ও বাংলা শিখুক।"
          ক্লাশ সেভেনে একুশের তাৎপ‍র্য পড়াতে পড়াতে খুব আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেছিলেন হেডস‍্যার,তার জেঠু এই ভাষা আন্দোলনেই শহীদ হয়েছিলেন, বাবার কাছে শোনা। এখনো কাঁটা দেয় গায়ে,অথচ তার জন্মের আগের কথা। ভাষার জন‍্য প্রাণ দেওয়া,এ যেন এক নজীর বিহীন ঘটনা। চুপ করে শুনছিলো ছেলেরাও, অনেকে প্রশ্নও করছিলো।
           আজ ক্লাশে ঢুকে দেখেন,ছেলেরা খুব মজা করছে রাকেশকে
নিয়ে। রাকেশের মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে উঠেছে।
   "স‍্যার ওতো হিন্দুস্থানী,আপনাকে নাকি বাংলা গান শোনাবে,হা হা হা। "
        হেডস‍্যার জিজ্ঞেস করেন," আজ কত তারিখ, তোমাদের কিছু মনে আছে?"
      রাকেশ উঠে বলে," আজ একুইশ স‍্যার,ভাষাদিবস। সেই জন‍্যই তো মা আমাকে এই গানাটা শিখালো। আর ওরা মজাক করছে।"
        ...."তুই এদিকে আয়তো দেখি,নে এবার শোনা তোর গান।"
      রাকেশ গাইলো,"মোদের গরব মোদের আশা আ মরি বাংলা ভাষা। তোমার কোলে তোমার বোলে কতই শান্তি ভালোবাসা।"
         মনটা জুড়িয়ে গেলো স‍্যারের। কাছে ডেকে পিঠ চাপড়ে বললেন," তোর হবে,এগিয়ে যা। মনে প্রাণে সত‍্যিই তুই খাঁটি বাঙালী,তুই মাকে আর মায়ের ভাষা বাংলাকে ভালোবাসিস আর শ্রদ্ধা করিস।"

আজ ডক্টর চৌধুরীর মায়ের শ্রাদ্ধ,খুব নিষ্ঠাভরে ষোড়শ শ্রাদ্ধ করছেন। দুদিনে প্রচুর লোকজন খাওয়া দাওয়া করবে। কলকাতার সেরা ক‍্যাটারারকে দেওয়া হয়েছে দায়িত্ব, যাতে নিরামিষ আর আমিষ মিলে একদম বেষ্ট মেনু হয়। মায়ের কাজ বলে কথা। কোন ঘাটতি যেন না থাকে।
         ছোটবেলায় বাবা মারা যাবার পর খুব কষ্ট করে মা মানুষ করেছিলেন দুই ভাইবোনকে। নিজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওগুলোকে ঠুনকো ইমোশন বলে মনে হয়েছিলো। তাই আর পেছন ফিরে তাকান নি। মায়ের অসুস্থতার দুইবছরে এক প‍্যাকেট কমপ্লান কিনে দিয়েই দায়িত্বমুক্ত হয়েছিলেন। শেষের দিকে মা আর চিনতে পারতোনা ভালো করে শুধু ফ‍্যাল ফ‍্যাল করূ দরজার দিকে তাকিয়ে থাকতো। মাকে দেখতো দিদিই,কেনই বা দেখবেনা ওই তো বাবার চাকরিটা পেয়েছিলো।
            পুরোহিত মশাইয়ের সাথে সুর মেলান," জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী।"
         নাইবা হলো লৌকিক কর্তব‍্য। পারলৌকিক কাজে কোন ত্রুটি রাখবেন না। হাজার হোক ডাক্তারবাবুর মা বলে কথা।

বাবা অফিস যাবার সময় পর্দার আড়াল থেকে মাকে লুকিয়ে আদর করতে দেখে ফেলেছে মিঠাই। কোমরে হাত দিয়ে এসে দাঁড়ায়," বাপি তুমি মা কে ব‍্যাডটাচ করছো কিন্তু,আমি এখন সব বুঝি। একটু লজ্জা পেয়ে হেসে বাবা বলেন," তাই নাকি? পাকা বুড়ি একটা" একটু হেসে ওর গালে একটা চুমু দিয়ে বললেন,"এটা একটা মিষ্টি গুড টাচ।"
         সেদিন মেট্রোতে ওরা সীট পেয়েছিলো,কিন্তু একটু বাদে ভীড়ের মধ‍্যে দেখে নেহা আর ওর বাবা দাঁড়িয়ে আছে।
  মিঠাই আস্তে আস্তে বলে," বাপি নেহাকে একটু কোলে নিয়ে নাও না।' একটু হেসে ওর বাবা মিঠাইএর কানে কানে বলেন," নিতে পারি,কিন্তু ব‍্যাড টাচ হবেনা তো?"
            গালে হাত দিয়ে একটু ভেবে মিঠাই বলে,"তাইতো....আচ্ছা আমি তোমার কোলে বসি,নেহা আমার জায়গায় বসুক। তাহলে আর কিছু হবেনা। এইইই নেহা এদিকে আয়।"

ঘড়ির কাঁটায় বন্দী জীবন,
ব‍্যস্ততায় কাটে সারাক্ষণ।
তবুও আকাশের রঙ দেখি,
শুনি পাখিদের ডাকাডাকি।
অনুভূতিরা যত্নে থাকুক...
ইচ্ছেগুলো পাখনা মেলুক।

ভোরবেলা মেয়ের সুর করে কবিতা পড়ার আওয়াজে ঘুম ভাঙে আনোয়ারের। বাহ্ মেয়েটা বেশ পড়ছে তো,এই তো সেদিন যেন কর্পোরেশনের স্কুলে ভর্তি হলো। সারাদিন লরী চালিয়ে সুযোগই হয়না মেয়েটার দিকে তাকানোর।
     কি পড়ছিস রে আখতারা ? বাবা আজ নাকি বাংলা ভাষার দিন তাই আমাদের বাংলা কবিতা বলতে হবে। মায়ের ভাষার পূজা আছে আজ।
        পাশের লরীটা ওভারটেক করে গেলো বাজে ভাবে। দাঁত বার করে হাসলো খালাসিটা। মুখের ডগায় একটা খিস্তি এসে গিয়েছিলো। হঠাৎই মনে পড়ে যায় আজ তো মায়ের ভাষার পূজার দিন আছে। আজ আর মুখ খারাপ করবেনা।

উন্নত প্রজাতির প্রাণী মানুষ
আপন শক্তিতে বলীয়ান
অতীতের স্মৃতি আঁকড়ে বাঁচে
যদিও বর্তমানে ভ্রাম‍্যমান।

বলতে পারাটা জরুরী যেমন
থামতে শেখারও আছে প্রয়োজন
লাগামছাড়া কথার আঘাতে
আহত না হয় আপনজন।

অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে
বর্তমানের হই মুখোমুখি
ভবিষ‍্যতের স্বপ্ন দেখে
নিজেকে রাখি সুখী।
 

হীরের টুকরো

ছেলের বিয়েতে একটাই দাবী ছিলো অলোক আর রুচিরার ওদের শুধু মেয়েটাকেই চাই আর কোন জিনিসপত্র নয়।
      বাড়ীর পুরোনো খাট যখন সাজানো হলো ফুলশয‍্যার জন‍্য তখন আত্মীয় স্বজন বলেছিলো এমন হীরের টুকরো ছেলে তোমার,কিছুই পেলোনা বিয়েতে!
       মিষ্টি হেসে রুচিরা বললো," হীরের পাশে যে ওই যৌতুকগুলো বড় জৌলুসহীন লাগবে,তাই আর কিছুই নিইনি।"
 
     কর্মে হোক শ্রেষ্ঠ মানুষ,
       হোকনা ধর্ম ভিন্ন।
    রক্তের রঙ সবার এক,
      কারোর নয় অভিন্ন।

পথের বিপত্তি যতই থাক,
জয় করে যাবো এগিয়ে।
আত্মবিশ্বাসে মন ভরিয়ে,
চলবো একরাশ স্বপ্ন নিয়ে।

জীবনের ছন্দে
আনন্দ থাক।
খুশির ছোঁয়া
লাগুক মনে।

                  বসন্তের ছোঁয়া
                  রাঙিয়ে দিক।
                   থাকুক রঙ,
                    সবার জীবনে।

      রঙের উৎসবে
      সবাই মেতেছে
      রঙ লেগেছে
      মনে আর বনে।
                             লাল,গোলাপী
                              হলুদ,সবুজের
                              সমারোহ থাক
                              সবার জীবনে।

    রঙের ছোঁয়ায়,
    বসন্তের নেশায়...
    মনে আজ দোলা।
    ভালোবাসার রঙে,
     আবীর মিশিয়ে..
     আজকে শুধুই
     রঙের খেলা।
                             
                              

         এই ধরনের একটি ঘটনা আমার এক আত্মীয়া করেছে। ছেলের বাড়ী থেকে 14 জন এক সাথে দেখতে এসে খাওয়া দাওয়া করে প্রশ্নের পালা শুরু করলেন।  হেঁটে দেখাও চুল খোলো এ সব তো হল।  সে যা খুশি প্রশ্ন।  মেয়ে তো রেগে লাল।  ঠিক করেই ফেলেছে এখানে বিয়ে সে করবেই না।  এবার পাত্রের বাবা জানতে চাইলেন মাংসতে কত নুন দেবে।  পাত্রির জবাব " আপনার সাইজের পাঁঠা হলে কয়েক কিলো লাগবে "।  হবু শ্বশুরের দশাসই চেহারা  ছিল।

উত্তরবঙ্গের কন‍্যা আমি,ঘুম ভাঙতো পাখির ডাকে। কান পেতে শুনতাম বৃষ্টির শব্দ,মেঘের ডমরু। বৃষ্টির মিষ্টি জল মাখতাম দুহাত ভরে। স্বপ্ন দেখতাম মেঘের দেশে যাবো, পাহাড়ের হাত ধরে। মেঘের সাথে পাহাড়ের দেশে যাওয়া হয়নি আমার, ইট কাঠ পাথরের শহরে নিত‍্য আমার ছোটাছুটি। তবুও স্বপ্ন দেখি, ভোরের সূর্যের আলো চুরি করে গালে মেখে স্বপ্ন দেখাই আমার ছাত্রীদের। যা পেয়েছি তা নিয়ে ভালো আছি,যখন পাগলামির ভূত চাপে ঘাড়ে মনের এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার বেগে টুক করে ঘুরে আসি পাহাড়ের দেশে। ভালো থাকার স্বপ্ন দেখি,ভালো রাখতে চাই সবাইকে।

রঙ যদি ধুইয়ে দিতো,
রাগগুলোকে ম‍্যাজিকটাচে..
ভালোবাসার অনুরাগে,
আসতে তুমি আরো কাছে।
রঙের ছোঁয়ায় মুছতো যদি,
জাতপাত আর বিভাজন..
বিশ্ববাসী এক নিমেষে,
হতো সবার আপনজন।

রঙ দিয়ে আজ খেলবো হোলি
রক্ত দিয়ে নয়
রঙের বন্ধনে বাঁধা থাক সবাই
হোক সম্প্রীতির জয়।

রঙের খেলায় রঙের ছোঁয়ায়
রঙীন সবার মন।
রঙের বন্ধনে বিশ্ববাসীকে আজ
করবো আপনজন।

মাঝরাতে হঠাৎই ঘুমটা ভেঙে গেলো, হাত দিয়ে অনুভব করলাম পাশে আছো। গায়ে হাত দিয়ে একটু নিশ্চিন্ত হলাম,নাহ্ ঘামছে না। যা গরম পড়েছে হঠাৎ করে। আমাদের ভালোবাসা এমনি ছোট ছোট অনুভূতি। নাহ্ প্রেম করার সুযোগ সেভাবে হয়ত হয়নি আমাদের  বিয়ের আগে,হয়নি আবেগে মাখা কথায় পথ চলা আর চ‍্যাটে রাত জাগা। শুধু ছিলো একটা ছোট দেখার আর কয়েকটা কথার রেশ। আজও তা আছে মনে অনুভূতিতে। হঠাৎই মনে হলো এই যাঃ এতোগুলো বছর কাটিয়ে দিলাম। এখনো তো মনে হয় এই তো সেদিনই ওর সাথে বাস ভাড়া ছিলোনা বলে কত পথ হেঁটেই পার হয়েছি। কখনো একটু মন খারাপও করেছে ভালো কিছু দিতে পারেনি বলে। আমাদের মাঝে ছিলোনা  বিদেশী সুগন্ধ, ছিলোনা দামী রেস্তোরার খাবার, ছিলোনা অনলাইনে বুক করা ওলা, উবার। তবুও যখন তোমার খুব কম মাইনে,আর আমি কোন  চাকরি করিনা সেই দিনগুলো আজ অনেক পাওয়ার মাঝেও মনে করিয়ে দেয়,তুমি যেমন ছিলে পাশে আজও তেমন আছো। দামী রেস্টুরেন্টে ভালো পোশাকে যখন ডিনার করি তখন মনে পড়ে যায় কোন এক ক্লান্ত দুপুরে ধেবড়ে সিঁদুর পড়ে একটা বৌ তার অফিস কামাই করা বরের পাশে বসে ঝালমুড়ি খাচ্ছে আর মাঝে মাঝে ফ‍্যাঁচ ফ‍্যাঁচ করে কাঁদছে  নন্দনের কোন এক নিরিবিলিতে বসে। কারণ ওইটুকুই হয়ত ছিলো আমাদের প্রাইভেসি। আজও জীবনযুদ্ধে অনেককিছু পেয়েও আহত একটা মাঝবয়সী ভদ্রমহিলা ওই লড়াই করা আধপাকাচুলের লোকটার পাশে বসে বা গলা জড়িয়ে মাঝে মাঝে ফ‍্যাঁচফ‍্যাঁচ করে কাঁদে আর বকুনি খায়। প্রেমের কথা কখনো হয়তো সেভাবে বলা হয়নি এই সাতাশ বছরে কোনদিন,কিন্তু আজো পাশে বসে যখন ফেসবুকে চ‍্যাট করি তখন বুঝি বিশ্বাস করো। সকালে আধোঘুমে উঠে যখন টিফিনটা নিয়েছি কিনা জিজ্ঞেস করো বুঝি ভালোবাসো। নিজের অপছন্দের মাছটা যখন বাজার থেকে আনো আমি ভালোবাসি বলে বুঝি আমার কথা ভাবো। আমার মুখের হাসি দেখে যখন খুশি হও বুঝি প্রেমটা এখনো আছে। আমি সাজলে যখন মুগ্ধ চোখে তাকাও তখন বুঝি এখনো রোমান্টিক, ঠিক সাতাশ বছর আগের মতই। পথ চলতে চাই এভাবেই,পার হতে চাই আরো অনেক বছর খ‍্যাঁচখেচে ফ‍্যাঁচফেচে বুড়ি হয়ে তোমার কাঁধেই মাথা রেখে। কি বলো রাজী আছো তো?

ভালোবেসো চোখদুটোকে
অকারণে কেঁদোনা।
ইচ্ছেগুলো পূর্ণ না হলে
একদম ভেঙে পড়োনা।
ভালবাসা অমূল‍্য ধন
সবার কি ভাগ‍্যে জোটে?
আশা আর স্বপ্ন থাকুক বেঁচে,
যতই থাকো সঙ্কটে।

পৃথিবীর আলো উপভোগ করো,
সরিয়ে মনের অন্ধকার।
সূর্যের আলোতে সবার আছে,
সমান সমান অধিকার।
ভালোবাসো এই জীবনটাকে..
মরতে তো হবেই একদিন।
তবুও যতক্ষণ বেঁচো আছো,
উপভোগ করো প্রতিমুহূর্ত, প্রতিদিন।

নারীবাদী নই আমি
একটা কথাই মানি
নারী পুরুষের সম্পর্ক
সবচেয়ে বেশি দামী
প্রতিপক্ষ চাইনা হতে
ভালোবেসে সহযোদ্ধা হব
জীবনের পথে আমরা
সুখে দুঃখে এগিয়ে যাবো।

আমার সুখের চাবিকাঠি
নিলাম না হয় আমার হাতে।
মনের জোরে এগিয়ে যাবো,
ছুটে চলা সময়ের সাথে।
চলার পথের বাধাগুলো,
যতই দেখাক ভয়...
লড়াই করে এগিয়ে যাবো,
করবো বাধা জয়।

কেন্দ্রীভূত জীবনে,
চাইনা আত্মকেন্দ্রিকতা।
স্বাধীনতার স্বাদ নেবো,
করবোনা স্বেচ্ছাচারিতা।

একটা প্রদীপ আগুন জ্বালাক
হাজার প্রদীপের বুকে
একটা আশা

     
নারীর সম্মান অটুট থাক,
যত্নে বাঁচুক শিশুকন‍্যা।
সমাজে নারী এগিয়ে যাক,
হোক নারীরা অনন‍্যা।
নারী পুরুষ থাক পাশাপাশি,
ভালোবাসার অটুট বন্ধনে।
আর যেন না ঘুম ভাঙে,
নারী,শিশুকন‍্যার ক্রন্দনে।

নারীদিবসের শপথ হোক
ভালো থাকবো আর
সবাইকে ভালো রাখবো
নিজের সম্মান অটুট রেখে
মাথা উঁচু করে চলবো।

নারীদিবসের শপথ হোক,
সবাই ভালো থাকবো।
নিজের সম্মান অটুট রেখে
মাথা উঁচু করে চলবো।

অনুভূতি"
রুমাশ্রী🦋🍃

মোবাইলটা হাতে নেয় মণিকা আজও সুশীলাদি কাজে এলোনা,একটা ছুতো পেলেই কামাই করা।"কি গো সুশীলাদি,তোমার ব‍্যাপারটা কি বলতো? এভাবে ডুব মারলে আমার চলবে কি করে। কতো অজুহাত আর দেখাবে?"  
          "না গো দিদিমণি,বন্ধ হবার সময় আসতেছে তো,একদম বিছানা থেকে উঠতে পারতেছিনা। কি করবো বলো।"
               "গজগজ করে মণিকা,মহা ফাঁকিবাজ একটা,আসুক কাজে তারপর হচ্ছে।"
              দুবছর বাদে বিছানা থেকে উঠতে পারছেনা ব্লিডিংয়ের জন‍্য মণিকা। শরীরটা খুব দূর্বল। সাতদিন অফিস কামাই,সবটা সামলাচ্ছে সুশীলাদি।
        "বলেছিলাম না দিদিমণি এইসময় এমনটাই হয়। তোমারও বন্ধ হবার সময় আসতেছে মনে হয়।"
        মণিকা অনুভব করলো,যদিও দেরী হয়ে গেছে অনেক।

     মেয়েদের দিন#
       রুমাশ্রী🦋🍃

          দোকান থেকে ফিরলো রমেন,পাড়াতেই একটা চপের দোকান চালায়। হাতে দুটো বিরিয়ানীর প‍্যাকেট। অবাক হয় শেফালি,"এসব কেন?"
       দুটো লোক রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে বলছিলো, মেয়েদের আবার দিন? জন্ম থেকে মা ঠাকমাকে হেঁসেলে দেখলাম হাড়ি ঠেলছে ওতেই সুখে থাকতো। যত্তসব।
             "আজ আর রুটি কোরোনা,একটা দিন নাইবা হাড়ি ঠেললে।" শেফালি অবাক হয়ে হাসে,"মেয়েদের দিন! কত তারিখ গো আজ?"

ছোট থেকে সবসময় চোখের সামনে যাকে দেখে এসেছি তার কথা খুব মনে হচ্ছে আজকে। যদিও ইশ্ ! সকালে ফোনে কথা হলেও হ‍্যাপি উইমেনস ডে বা শুভ নারীদিবস কিছুই বলতে পারিনি। আসলে নারী পুরুষ উভয়েরই ভালোবাসার সান্নিধ‍্যে বড় হয়েছি মানে প্রায় বুড়ি হতে চলেছি হা হা হা। তাই আমার কাছে তো সবদিনই মানুষকে সম্মান করার আর ভালোবাসার দিন।ছোট থেকে দেখেছি,মায়ের কোন ছুটির দিন ছিলোনা,যদিও মা পড়াতো একটা উচ্চমাধ‍্যমিক স্কুলে কিন্তু তবুও নিয়ম করে ভোরবেলাই ছিলো মায়ের ওঠার সময় আজো সেই রুটিনের হেরফের হয়নি। হাসিমুখে সব কাজ করে,নিজে তৈরী হয়ে মা স্কুলে যেতো। মা যখন তরকারীর ঝুড়ি নিয়ে বসে সবজি কাটতো আমি বলতাম," আচ্ছা মা তোমার বিরক্ত লাগেনা প্রতিদিন কি রান্না হবে ভাবতে?" মা বলতো না রে অভ‍্যেস হয়ে গেছে।"  গ্ৰামের কো এডুকেশন স্কুলে হিন্দু,মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়ে পড়তো। তারা হয়ত ওদের ভগবানের মতোই শ্রদ্ধা করতো। তাই আজো তারা একটু পায়ে হাত দেবার অপেক্ষায় থাকে। বেড়াতে গিয়ে বাবা যখন ওখানেই অসুস্থ হয়ে যান,মা সাথে সাথে খবর দেয়নি। খুব অভিমান হয়েছিলো আমার,পরে বুঝেছিলাম হয়ত অসুস্থ স্বামীর চেয়ে সন্তানের সুস্থতাই বেশি কাম‍্য হয়েছিলো তখন তার কাছে। আজো ভাবলে অবাক লাগে,বিদেশে বাবার শেষ সময়ে নিজেকে কি করে সামলেছিলো মা। জিজ্ঞেস করেছিলাম,উত্তর পেয়েছিলাম ,"ওটাই তোর বাবার সাথে আমার কথা হয়েছিলো। ভুলে যা কষ্ট পাসনা,সবটা ঠাকুরের ইচ্ছে।" আজ শ্রদ্ধা করি তার মনের জোরকে। আমার মুশকিল আসান মা,আমার পরম আশ্রয় আর নির্ভরতাকে বাঁধতে চাইনা কোন দিবসে। এমন শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা থাক চিরদিনের জন‍্য। শাশুড়িমাকে আমি পাইনি,তবে মা,ঠাকুমা,দিদা,মামীমা,কাকিমা,জেঠিমা,পিসিমা সবার আদর পেয়েছি। এখন কিছুটা আদর আর শাসন পাই আমার ভবিষ‍্যত প্রজন্মের আরেক স্পষ্টবক্তা নারী আমার মেয়ে তার কাছে। এই দিনগুলোতে খুব মিস করি দিদার হাতের রান্না,ঠাকুমার হাতের ক্ষীর,মোয়া,বোঁদে আর পিঠে। ইশ্ তাঁরা যদি এখন থাকতেন বেশ বড় একটা গ্ৰিটিংস কার্ড আর আমার লেখাগুলো তাদের দিতাম।
         দিদাকে দেখতাম একসাথে বঁটি, শিলনোড়া আর উনুন কিভাবে যে ম‍্যানেজ করতো আশ্চর্য লাগতো,তখন আমি খুব ছোট,দুই দিদাকে(দিদা আর দিদার জা) দেখতাম এক রান্নাঘরের দুপাশে দুটো উনুন জ্বালিয়ে রান্না করছে। সকাল থেকে রাত্রি অবধি চলছে সবাইকে ভালো রাখার প্রস্তুতি,অথচ কোন বিরক্তি ছিলোনা। হয়ত ওটাই ছিলো তখন খোলা জানালা। সারদাদেবীও বলেছেন," যার যেখানে কর্ম তার সেখানেই মুক্তি"।
       আমাদের জীবনে গ‍্যাস,ইন্ডাকশন,মাইক্রোওভেন,কুকিং রেঞ্জ,টোস্টার,গ্ৰিলার,মিক্সার সব আছে আবার অবসাদও আছে। দিদা জানতো না নারীদিবস কবে,মাও জানতোনা,ঠাকুমাও জানতোনা সেইসময়।
       ওদের জীবনে ওইসময় টিভি,মোবাইল,ফেসবুক আর হোয়াটস আ্যপ ছিলোনা। ছিলোনা অনলাইনে বা শপিং মলে গিয়ে কেনাকাটার অপসন। আমাদের মতো ভালো শাড়ী,গয়না পরে সেলফি তোলার অপসন বা রেস্তোরাতে খাওয়ার স্ট‍্যাটাস দেওয়ার অপসনও ছিলোনা। তবুও দেখেছি কি মিষ্টি অকৃত্রিম হাসি ওদের মুখে হয়তো একদম টেনশনবিহীন হাসি। আমাদের কুড়ির মুখগুলোকে ঘসে মেজে পরিস্কার রাখতে হয় যা ওদের হয়ত কখনোই করতে হয়নি। সময় বদলেছে,আমরা এগিয়েছি ভালো আছি কিন্তু কোথায় যেন সেই জমজমাট দিনগুলো হারিয়ে গেছে। শারীরিক পরিশ্রম কমেছে,মানসিক চাপ বেড়েছে। সবটাই হয়ত আমাদের একাকীত্বের জন‍্য,অনেক ভীড়ের মাঝেও মানুষ একা। আমাদের মায়ের হাতে হাতে কাজ করতে হোত,ছেলেরা বাবার বাজার করে দিতো। আমার মামারা অনেকসময় দিদাকে রুটি বেলে দিতো। এখন হয়ত ছেলেমেয়েদের সেই অনুভূতিগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। তবে আগের থেকে বাড়ীর কর্তারা এখন গিন্নীর অনেক খেয়াল রাখেন,আমার বাড়ীর ভদ্রলোক তো কচুর শাক,মোচা,ছোট মাছ এইসব দাঁড়িয়ে থেকে কাটিয়ে আনে আমার কষ্ট হবে বলে যেগুলো আগে করার কোন ব‍্যবস্থাই ছিলোনা। হাসিমুখে সবাই সেইকাজ গুলো করতো। অনেক না পাওয়ার মাঝে পূজোর একটা জামা পাশের বাড়ীর কাকিমাদের দেখিয়ে আনন্দ পেতাম যা এখন আর পাইনা। মাকে দেখতাম পিঠে রোদ দিয়ে ছুটির দিনে আসন সেলাই করতে,ভালো লাগতো। অনেক সেলাই, আবৃত্তি,রান্না মায়ের কাছে শিখেছিলাম। ভালো লাগতো,মোবাইল আমায় অনেক কিছু শিখিয়েছে। কিন্তু পাইনি সেই নির্ভেজাল আনন্দ আর ভালো থাকার চাবিকাঠি। খুব টিপস নিতে ইচ্ছে করেগো,দিদা তোমার কাছ থেকে কি করে এতো অল্পেই খুশি রাখতে নিজেকে। নারীদিবস আসে আমরা একদিন হৈ চৈ করি,কিন্তু ভালো রাখতে চাই আর ভালো রাখতে চাই নিজেকে সারাবছর। আমার মত তোমরাও নিশ্চয় ভাবো অত‍্যাচার আর নির্যাতনের ভয় থেকে মুক্ত হয়ে নিজেদের চাপগুলো ম‍্যাজিকটাচে উড়িয়ে দিয়ে ভালো থাকি। নিশ্চয় ভালো থাকবো কি বলো?
     
ছুটির দিনের অবসরে...
আজকে শুধুই কাটাতে চাই,
মনের নিবিড় আদরে।
মনখারাপের টুকরো স্মৃতি,
মুছিয়ে দেবো নিজের হাতে।
আজ যে শুধুই গোপন কথা,
বলবো রে মন তোরই সাথে।

মনের কথা মনের সাথে
হোকনা দিনে একবার।
মনের খোঁজ খবর রাখা
সবারই আছে দরকার।
তোমার কাছেই আছে জেনো,
ভালো থাকার হাজার পথ।
নিজেই নিজেকে রাখবো ভালো,
হলোই না হয় আজ শপথ।

চোখের মাঝে স্বপ্ন হাজার
মনের মাঝে লক্ষ আশা
এগিয়ে তোমায় যেতেই হবে
জীবন মানেই চলার নেশা।
স্বপ্ন কিছু পূরণ হবে
রইবে অনেক অপূর্ণ
তবুও যদি এগিয়ে যাও
জীবন হবে অর্থপূর্ণ।

একটা খাতা কিনেছিলাম
হিসেব নিকেশ রাখবো বলে
লাভ হোলনা কিছুই তেমন
হিসেব নিকেশ গেলো জলে
জীবন নিজের ছন্দে চলে
প্রতিটি দিন বলে অন‍্য কথা
জীবনখাতায় হিসেব কষা
অনেকসময় হয় যে বৃথা।

প্রাপ্তি হয়ত ছোট্ট কিছু,
তাতেই হই অনেক খুশি‌।
যা পেয়েছি তাই অনেক,
চাইনা আর কিছুই বেশি।

ছোট্ট সোনা সায়ন্তিকা
মিষ্টি ফুলের মতো।
তোমার মুখেভাতে আমরা,
মজা করলাম কতো!
খুশি আর আনন্দে..
কাটলো সবার দিন।
দিন গুনছি কবে তোমার
আসবে জন্মদিন।

সেপারেশনে থাকলেও হোষ্টেলে থাকা ছেলের সামনে সুখী মা বাবার অভিনয়টা বেশ পারফেক্ট করলো সৌম‍্য আর মলি। এখন ভাবলেও হাসি পায় সৌম‍্যর একসময় ভুলভাল অভিনয়ের জন‍্য কলেজ সোশ‍্যালে পচা ডিমে ছুঁড়ে মেরেছিলো ছেলেরা।

তৃতীয় ব‍্যক্তির উপস্থিতিতে জীবনে নেমেছে অমাবস‍্যা। কলেজে পড়তে একসময় অনুরাগে রাঙানো অনেক চিঠি লিখেছিলো চন্দ্রিকা। আজ ছোট্ট চিঠি লিখে চলে গেলো......

         " প্রেসারের ওষুধটা প্রতিদিন খেয়ো।"

                                        'চাঁদ'

সম্পর্কগুলো ভীষণ দামি
ভালো থাকার মন্ত্র
সম্পর্ক ছাড়া জীবনটা যে
বিগড়োনো এক যন্ত্র
ভালোবাসা আর সহানুভূতি
বাঁচিয়ে রেখো যত্নে
একটু নাহয় রাখলে সময়
আপনজনের জন‍্যে।

প্রাইমারি স্কুলে সবে ভর্তি হয়েছে তীর্থ, প্রথম পরীক্ষায় সবই ভুল। সব পড়াই মাথার ওপর দিয়ে চলে যাচ্ছে। ক্রশ দিলে মানসিক চাপ বাড়তে পারে তাই আন্ডারলাইন করে ছেড়ে দিলেন মাষ্টারমশাই। " আমাকে কিছুতো দাও স‍্যার"
....." কি দিই বলতো,কিছুই যে ঠিক হয়নি।"
......" তাহলে একটা গোল্লাই দিয়ে দাও।"
ওহ কি ঝামেলা! বাধ‍্য হয়ে শূন‍্যই বসালেন।
            পরের পরীক্ষায় দশে দশ পেলো তীর্থ,খুশি হয়ে মাষ্টারমশাইকে বললো," ভাগ‍্যিস তুমি গোল্লাটা দিয়েছিলে,তাই একটা বসিয়ে নিতে পেরেছি। ইস কেন যে দুটো গোল্লা দিলেনা,তাহলে একশো হয়ে যেতো।"
              "শূন‍্যই পূর্ণতা পাক তোর জীবনে, এগিয়ে যা।"
         কথাটা না বুঝেও খুশি হয় তীর্থ।

             
    
    একফোঁটা জল অমৃত হয়ে
     বাঁচিয়ে রাখে জীবনটাকে  
   তাইতো জরুরী বিশুদ্ধ রাখা
    জীবনদায়ী পানীয় জলকে।
    জলের অপচয় বন্ধ করে
    হোক জলের সংরক্ষণ
     বাঁচাতে হবে পৃথিবীকে
    তাইতো জলের প্রয়োজন।
  দিবস অনেক পালিত হয়
   সারা বছর নানান কারণে
   ২২শে মার্চ দিনটি শুধুই
   পরিশুদ্ধ জলের জন‍্যে।

কোন এক ২৫শে মার্চ, আ্যনেস্থেসিয়ায় আচ্ছন্ন তখন,একটু হাল্কা আওয়াজ কানে আসছিলো,একটা বাচ্ছার কান্না। আর অনেকের কথার আওয়াজ বুঝতে পারলাম দশমাস ধরে যে একটু একটু করে বেড়ে উঠছিলো আমার শরীরে,মাঝে মাঝে ফুটবলও খেলতো হয়তো মহাআনন্দে, সে আজ পৃথিবীর আলো দেখেছে। চোখটা না খুলতে পারলেও অনুভব করলাম এক অদ্ভুত আনন্দ,প্রথম মা হওয়ার আনন্দ। ট্রলিতে করে যখন বাইরে নিয়ে এলো,চোখদুটো আধো খোলা,তারমাঝেই চোখে পড়লো কয়েকটা উজ্জ্বল মুখ। তার মাঝেই বেডে দেওয়ার সাথে সাথে ওরা সামনে এনে ঝুলিয়ে দেখালো তোকে,মনটা ভরে গিয়েছিলো একনিমেষে ভুলে ছিলাম সব কষ্ট। তারপর প্রতিদিনের লড়াই শুরু এক অনভিজ্ঞ কমবয়সি মায়ের প্রতিদিনের অভিজ্ঞতায় তার সন্তানকে একটু একটু করে বড় হতে দেখা। কখনো হয়ত প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভালোবাসা দিয়েছি আবার কখনো করেছি বেশি শাসন,কষ্টও পেয়েছি। প্রতিদিনের অপেক্ষায়,আর কবে বড় হবে এই আশায় কখন যে বড় হয়ে গেলি হয়ত বুঝতেই পারিনি। তবে জীবনের লড়াই বোধহয় কখনো শেষ হয়না,আর আমি শিখে গেছি হাসিমুখে ঐ লড়াইটা চালাতে। তোর হাসিমুখটা খুব মিস করি। সবসময় খচু থাকাটা একদম ভালো লাগেনা। তবে বুঝি তোর লড়াইটা যে তোকেও একা করতে হয়। আসলে সব মানুষই এক যায়গায় খুব একা। তাই আমিও কখনো রাতে,কখনো দিনে দেখি আমার ছোটছেলেটা ট্র‍্যাপিজের খেলা খেলছে, বা খাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। যখন আমি শুধুই দর্শক। পড়াশোনায় ফাঁকি দিলে বা মোবাইলে থাকলে বলেছি,তোর পড়াশোনা আর হবেনা। আবার ঠাকুরের কাছে একটা কথাই বলি ওদের তুমি ভালো রেখো। আজো একটা কথাই বলি,জীবনের রঙ হয়তো পাল্টাবে। সময় আমাদের অনেক সময় দাঁড় করিয়ে দেয় খাদের সামনে,তবে মা বাবার আশীর্বাদ সন্তানকে ঘিরে থাকে সবসময়। ছোটবেলায় অঙ্ক পরীক্ষার আগের দিন আমার পাশে শুয়ে বলতিস," মা ভালো হবে তো?" আর এম বি বি এসের আ্যনাটমি পরীক্ষার দিনও একই কথা বলতিস।
জীবনের ওটিতে ডিসেকশানটা চলুক নিজের মতো করে। তখনো বলতাম যার সাথে মা আছে তার কোনো বিপদ হয়না বিশ্বাস করে হাতের মুঠোটা ধরতিস। আজ হয়ত বিশ্বাসটা নড়বড়ে হয়ে গেছে। হাতের মুঠোটা তোর বেশি শক্ত আমারটা নড়বড়ে তবুও আশীর্বাদ করি জীবনে ভালো মন্দ যাই আসুক সব বাধা পার হয়ে প্রকৃত মানুষ হতে পারিস। ভালোবাসা আর আদর দিলাম প্রাণভরা। মুখের মিষ্টি হাসিটা বাঁচুক চিরকাল,গোমড়ামুখো রাগী ডাক্তারবাবু আমার একদম না পসন্দ।

নিজের যা আছে
তাতেই খুশি থাকি
পরের কি আছে
ভেবে লাভ কি?
ভাবাটা জরুরী
যা কিছু পেয়েছি
ছোট্ট জীবনে
তাই নিয়ে বেশ
ভালোই আছি।

#রূপের_হাট#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

"কি ব‍্যাপার বলতো দেখি? এইভাবে যদি মাঝে মাঝেই আয়না দেখো তাহলে সাজাবো কি করে বলতো?" পার্লারের মেয়েটি একটু ঝাঁঝালো স্বরেই কথা বলে। ..."এইরকম জানলে একটা ড্রেসিংটেবিল ভাড়া আনলেই হোত,এই ঘরটাতে তো বড় আয়নাও নেই। আমাদের কি বিশ্বাস হচ্ছেনা? এতো জায়গায় সাজাই আমরা।"
         এরমাঝেই উঁকি মারে রূপশ্রীর দুই ননদ," কতদূর হলো? ভালো করে ফাউন্ডেশনটা দিয়ো,যা সুন্দর আমাদের ভাইয়ের বৌ!"
       ...."তা দিচ্ছি,ওনাকে একটু বলে যান ধৈর্য ধরে বসতে। মনে তো হচ্ছে আমাদের সাজানো ওনার পছন্দ হচ্ছেনা।"
          ......" তাহলে আর কি? নিজেই সেজে নাও। আর আমাদের নাক কাটাও।"
          ননদদের সামনে মুখ খোলেনা রূপশ্রী,বাবা যে কেন এই নামটা দিয়েছিলেন! এর থেকে কালী,তারা বা কৃষ্ণকলিও চলে যেতো। রূপই যার নেই তার নাম রূপশ্রী,মানে ছোটবেলায় এমনই শুনেছে ওই কানা ছেলের নাম পদ্মলোচনের মতো আরকি। আর সেই মেয়ের প্রেমে পড়লো ফরসা ধবধবে সায়ন। ধন‍্যি ছেলে একটা, প্রথমে একটু এড়িয়ে গিয়েছিলো রূপ,পাত্তা দেয়নি। হয়ত একটু ছোঁয়ার জন‍্য বা সময় কাটানোর জন‍্য এই প্রেম। নাহলে ওর পাশে কি মানায় নাকি সায়নকে,ধুস্ যত্ত পাগলামি।
                তবে সায়নের একটা কথা শুনে হাঁ হয়ে গিয়েছিলো," আরে তুমি হলে গিয়ে কালো কালি যা দিয়ে পাতার পর পাতা কবিতা,গল্প সব লেখা যায়। আর আমি হলাম তোমার হোয়াইটনার,সব মিসটেকগুলো কারেকশন হয় যেটা দিয়ে। আমার জীবনের গল্পটা লিখবে নাকি তোমার কালো কালিটা দিয়ে? তোমার ভুলগুলো আমি কারেকশন করে নেবো।"
                স্বপ্ন দেখছে মনে হয়েছিলো রূপের,সত‍্যিই এমন ছেলে হয় নাকি? যাহ্ বাবা,যদিও মা বাবা বলতেন," আমাদের রূপ জগতের আলো, এমন মিষ্টি মুখ আর টানা চোখ কজনের আছে?"
                হঠাৎই চমকে ওঠে , ওমা এটা কি ফাউন্ডেশন লাগাচ্ছে ওরা! দরকার নেই ওর অত ফর্সা হয়ে। আরে কয়লার ময়লা কি ধোয়া যায়!
জানে বকুনি খাবে তবুও বলে ফেললো, "শেডগুলো একটু দেখিনা? আমাকে প্লিজ এই ব্রোঞ্জ শেডটা লাগাও হালকা করে, আর এই আইশ‍্যাডোটা তার সাথে ম‍্যাচ করে এই লিপস্টিকটা। আমার পার্সে আছে।
           "বাবা তুমি তো অনেক কিছু জানো দেখছি,তাহলে তো নিজে সাজলেই পারতে। আচ্ছা বেশ,তোমার ননদদের পছন্দ না হলে আমরা কিন্তু বলে দেবো তোমার কথা।"
                   আর যদি ভালো হয়,তাহলেও আমার কথা বোলোনা। যদি পারো,এই ডিজাইনটা কপালে দিয়ো,এঁকে রেখেছিলাম আমি।"
    মুখ চাওয়াচাওয়ি করে মেয়েদুটো,আর কিছু বলেনা শুধু হেসে বলে," এবার চুপ আর কথা নয়।"
   রূপশ্রী বৌভাতের বৌ দেখা পর্ব নিশ্চিন্তে উতরে যায়। আত্মীয়রা একটু কানাকানি করছে বুঝতে পারে। তবে সায়নের বান্ধবীরা মজা করে বলে যায়," ইশ্ আমরা লাইনে ছিলাম,বাট সায়ন ব্ল‍্যাকবিউটিকে চয়েশ করে ফেললো। এই গয়নাগুলো বোধহয় রূপ তোমাকেই মানায়। খুব সুন্দর লাগছে গো তোমায়।"
                  পার্লারের মেয়েরাও খুশি,যাক কেউ খারাপ বলেনি। বরং অনেকেই ফোননম্বর নিয়ে নিলো। তবে মনে মনে ভাবলো,বৌটা সাজতে জানে।
             ফুলশয‍্যায় সায়নের আদরে ভেসে গিয়েছিলো রূপ। দুষ্টুমি করে সায়ন বলেছিলো,"কি সুন্দর লাগছিলো গো তোমায়! ভাগ‍্যিস একগাদা ময়দা মেখে সাদা ভূত সাজোনি, সব মিসটেক কেমন হোয়াইটনারে ঢেকে দিলাম। ভালোই মানিয়েছে বলো এযুগের রাধাকৃষ্ণকে,ব্ল্যাক রাধিকা আর হোয়ইট কৃষ্ণ।"
                  তবে আত্মীয়স্বজনের কাছে মাঝে মাঝেই শুনতো বিশেষত ননদরা বলতো," চাকরিবাকরি করলেও হতো একটা, ভাইটুটা যে কি দেখে মজলো কে জানে! পীরিতে মজিলে মন..."
             অস্থির লাগতো,মাঝে মাঝে অনেকসময় বিরক্তিও প্রকাশ করতো সায়নের কাছে। সায়ন শুধু বলতো "একটু মানিয়ে নাও সোনা, সব কথার উত্তর কথায় দিতে নেই,অশান্তি বাড়ে। কাজ করে দেখাতে হয়‌। সম্পর্কগুলো খুব দামি,মতান্তরে সেগুলো নষ্ট কোরোনা।
               এই করে একবছর প্রায় কেটে আসছে রূপের শ্বশুরবাড়ীতে, কথাগুলো গা সওয়া হয়ে গেছে । আসলে অনেক ছোটবেলা থেকে শুনে আসছে কথাগুলো, খুব একটা গায়ে লাগেনা। শুধু অবাক হয় যখন কেউ বলে,"তোমার বউয়ের মুখখানা খুব মিষ্টি কিন্তু।"
               আজ ওদের বিবাহবার্ষিকী মনটা খারাপ সকাল থেকেই রূপের। আজ সকালেই ফিরে আসার কথা ছিলো,সায়নের ট‍্যুর থেকে। ফোন করে জানাচ্ছে আজ হয়ত ফিরতে পারবেনা তবে খুব চেষ্টা করবে রাত্রি বারোটার মধ‍্যে পৌঁছতে।
  ধাৎ কিচ্ছু ভালোলাগেনা, ওর ফোনটাও নট রিচেবল আসছে,প্রায় এগারোটা বাজে। এখনো তাহলে ফ্লাইটটা ল‍্যান্ডটা করেনি,কিন্তু এতোক্ষণে তো এসে যাওয়ার কথা।
              আবার একবার ট্রাই করে প্রায় পৌনে বারোটা,সুইচড অফ বলছে। কানে ইয়ারপ্লাগটা গুঁজে রোমান্টিক গানেও মন দিতে পারেনা। গ‍্যালারি খুলে ওদের ছবিগুলো দেখে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে।
               হঠাৎই একটা মেসেজ আসে,দরজাটা খোলো সোনা,আমি আসছি। লাফিয়ে ওঠে রূপ,হাতে বোকে নিয়ে দাঁড়িয়ে সায়ন," মেনি মেনি হ‍্যাপি রিটার্ণস অফ দ‍্য ডে। বড্ড দেরি হয়ে গেলো গো। তোমার গিফ্টটাই কেনা হলোনা।"একটু হাসে রূপ তাহলে তো হবেনা,"একেই দেরি তারওপর গিফ্ট নেই,যাও আমি রাগ করলাম।"
....বাবা হেসে রাগ হয় নাকি? এইবার একটু কাছে এসো,চোখটা বন্ধ করো দেখি। না না হচ্ছেনা, এইবার একটা মিষ্টি হাগ।"
                   রূপের হাতের মুঠোয় একটা ছোট্ট কাগজ, চোখ খোলে রূপ। ছোট্ট দুটো কথা লেখা, 'আমার রূপের স্বপ্ন রূপের হাট, আমি তোমায় দিলাম।'
             একটু বুঝতে দেরি হয় রূপের মোবাইলটা খুলে একটা ছবি দেখায় সায়ন,একটা পার্লারের ছবি নাম "রূপের হাট"। কাল এটার উদ্বোধন হবে এটা শুধুই তোমার। নিজের ইচ্ছেমতো সাজিয়ো আর নিজেও সেজো। আজকের রাত্রিটা শুধু আমাদের দুজনের আর কোন কথা নয়। কাছে টেনে নেয় রূপকে সায়ন,কথা হারায় রূপ। চোখদুটো স্বপ্নে ঝিকমিক করে আরো বেশি করে ভালোবাসতে ইচ্ছে করে সায়নকে।
             রূপশ্রী নিজেকে সুন্দরী করতে হয়ত পারেনি,কিন্তু ওর রূপের হাট স্বপ্ন পূরণ করে অনেকেরই। বিয়ের কনেরা রূপের মেকআপের ছোঁয়ায় হয়ে ওঠে অনন্যা। ওর ননদরাও প্রায়ই আসে নিখরচায় পরিচর্যা করতে মাথার চুল থেকে পায়ের নখের। ভালোলাগে রূপের, আসলে সায়ন ঠিকই বলেছিলো সবকিছুর জবাব কথায় দিতে নেই,তাতে মতান্তর হয়। সম্পর্কগুলো যে খুব দামি।
....হ‍্যালো কে বলছেন?
....আমি রূপকে চাই শুধু একবারের জন‍্য।
রাগ করে ফোনটা কাটতে যায় রূপ,সায়ন হেসে বলে," রূপের হাটের রূপের রানি,শেষে আমাকেই ভুলে গেলে?"
.....ওহ্ তুমি না? শেষে গলা পাল্টে ল‍্যান্ডফোনে। হচ্ছে আজ বাড়ী যাই। দুজনেই হেসে ফেলে এবার।©ইচ্ছেখেয়ালে শ্রী🦋🍃
        সমাপ্ত:-
           
  
#তবু_মনে_রাখি# 
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# 
         
 " সারপ্রাইজ আছে তোদের জন‍্য"
একসঙ্গে সবাই প্রায় চেঁচিয়ে ওঠে কি সারপ্রাইজ গো সুমিতাদি।
"আরে মেয়ের বিয়েরে।"
"সেকি গো কিছুই তো বলোনি আগে?"
"আরে বলবো কি, আমিই তো বুঝিনি,একদম চট মাঙনি,পট শাদি। মানে ওঠ্ ছুড়ি তোর বিয়ে।
বিয়েটা এখানেই হচ্ছে,রিসেপশনটা কেরলে হবে।"
"অত দূরে কেনো গো?"
আরে কার্ডটা তো দেখ।
দেখি দেখি বলে ওদের কলিগরা সবাই হামলে পরলো,সুমিতাদির মেয়েটা ওদের সামনেই বড় হলো,বাবা দেখতে দেখতে আবার সেই মেয়ের বিয়ে।
           শুধু বেবি বললো ,"ওহ্ ছেলে তো মনে হচ্ছে খ্রীষ্টান,তা তোমরা মেনে নিয়েছো তো?" সবাই একটু মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে শুধু সুমিতাদিই বললেন,"ঠিকই বলেছিস রে ওর বাবা বেশ আপত্তি করেছিলো আসলে ওরা তো ভট্টাচায‍্যি বামুন বুঝিসই তো। কিন্তু একমাত্র মেয়ে তার সুখটাও তো দেখতে হবে বল তাই আমিই বললাম,বিয়েতো ওরা করবেই। শুধু শুধু সম্পর্কগুলো খারাপ করতে যাবে কেনো? তাই বললাম ভালবাসাকে আর বেঁধোনা জাতের গন্ডীতে, তার চেয়ে প্রাণভরে আশীর্বাদ দিই যাতে ওরা ভালো থাকে। ঠিক করেছিনা কি বলিস? তোদের মতামত নিই কারণ স্কুলটা আমার দ্বিতীয় সংসার।"
                সবাই হৈ হৈ করছে শুধু বেবির মনটা হারিয়ে যায় পঁচিশবছর আগে। আজো ফাঁকা লাগে বুকের ভেতরটা পুরোনো স্মৃতির কুয়াশায় ডুব দিলে।
             এখনো মনের স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করে নামটা,বেবির তখন সবে কলেজ। সাইকেলে করে যেতে যেতে হঠাৎই ফটাস,ওরে বাবা গেলো টায়ারটা,কাছাকাছি তো কোন দোকানও চোখে পড়ছেনা অথচ দশটার অনার্সের ক্লাশটা ধরতেই হবে। ফরসা গালদুটো ঘামে টেনশনে আরো লাল হয়ে যায়। টানতে থাকে সাইকেলটা যদি কিছু নজরে পরে। হঠাৎই পেছন থেকে কানে আসে," শিলিগুড়ি কলেজ তো,আমিও যাচ্ছি সেখানে। উঠে আয় সাইকেলটা ঐ দোকানটায় রেখে যাবো। কি রে হাঁ করে কি দেখছিস? সামনে বসতে আপত্তি,আমার পেছনে ক‍্যারিয়ার নেই। তাহলে রিক্সায় চলে যা। পেছনে দেখে কোন রিক্সার চিহ্ন নেই,অগত‍্যা বসে পড়লো।
"আরে আরে ওড়না তো সামলা, তোর ওড়নায় মুখ ঢেকে এবার আমি ব‍্যালেন্স হারাবো।"
        ওড়নাটা কোমরে বেঁধে নিয়েছিলো বেবি,কিন্তু মন বলছিলো,' এই পথ যদি না শেষ হয় তবে কেমন হোত তুমি বলতো?"
              সাইকেল থেকে নেমে ছুটতে ছুটতে এসে ডিপার্টমেন্টে ঢুকলো মনটা তখন একদম উড়ু উড়ু । ফেরার সময় যথারীতি আবার দাঁড়িয়ে ও," উঠে পড় নাকি রিক্সা নিবি,অবশ‍্য রিক্সায় উঠে লাভ নেই। তোর বাহনটা তো নিবি।"মনটা যে উঠি উঠিই করছিলো তাই উঠেই পড়েছিলো বেবি। আর তারপর থেকে শুধুই পথচলা একসাথে,কখনো সাইকেলে পাশাপাশি। হাতে থাকতো টাইমপাশ বাদাম আর মশলামুড়ি আর তাতেই একটা বড়সড় ফিষ্ট হয়ে যেতো।
            কোনদিন দুষ্টুমি করে সাইকেলটা হারুদার দোকানে রেখে দুজনেই এক সাইকেলে যেন পেরোতো এক অজানার টানে নিরুদ্দেশের পথে।
কুশলের বাড়ীর সবাই ভালোবাসতো বেবিকে। মাঝে মাঝেই চলে আসতো কাকিমার কাছে বেবি। আবার কোনদিন কুশল কাছে এসে টিফিন কৌটোটা খুলে বলে," এই নে মা পাঠিয়েছে। ফিডব‍্যাক দিবি কিন্তু।" সত‍্যিই তো তখন মোবাইল ফোন ছিলোনা,তাই বলে আসতে হতো কাকিমা খুব ভালো হয়েছিলো গো।
                   কুশলের টিউশনের টাকা থেকে কখনো একটু বাঁচিয়ে নিয়ে আসতো বেবির জন‍্য ছোট্ট গিফ্ট বা কাঁচের চুড়ি,বেবির নিটোল ফরসা হাতে ঝিকমিক করতো চুড়িগুলো, কখনো বা লুকিয়ে সিনেমা দেখা অথবা দুজনে কাছাকাছি কোথাও গিয়ে চুপ করে বসে থাকা তিস্তার দিকে তাকিয়ে। কলেজের পরে ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হলো ওরা,বেশ কিছুটা পথ একসাথে যাতায়াত। তবে সবটাই বেবির বাড়িতে গোপন করে। এখনকার ছেলেমেয়েরা যেমন বাবা মায়ের সামনেই ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলছে বা আইনক্সে গিয়ে মুভি দেখছে তেমন নয়। আসলে সবটা খোলামেলা না হয়েও গোপনীয়তার মাঝে ছিলো এক অদ্ভুত শিহরণ। একসময় পড়াশোনার জন‍্য দুজনেই হষ্টেলে এলো,শালবনের ছায়ায় ছায়ায় কানাকানি হোত ওদের মনের কথাগুলো। কখনো লাইব্রেরীতে বকুনি খেতো ফিসফিস করে গল্পটা যখন একটু জোরে হয়ে যেতো।
     মনের কাছাকাছি এসে দুটো স্বপ্নিল মনের এক হয়ে যাওয়া। কত কথা,কত স্বপ্ন, কত পরিকল্পনা। পার্ট টুতে পড়ার সময় কুশলের চাকরিটা হয়ে গেলো। "বেবি এবার তো বাড়িতে বল, এরপরে হয়ত আমি পোষ্টিং নিয়ে বাইরে চলে যাবো।"
       "জানিনা,বাবা কি বলবে, পরীক্ষার পরে বলি।"
       কোন বলাতেই কোন কাজ হয়নি, আজও মনে হয় বেবির কেন অমন মানসিকতা ছিলো তখনকার বাবাদের। বাবা বেঁকে বসেছিলেন, বামুনের একমাত্র মেয়ে তাকে দেবেন কিনা অন‍্য নিচু জাতে বিয়ে। কি সে কম তাঁর বেবি,রূপে লক্ষ্মী আর গুণে সরস্বতী। কুশল বলেছিলো," আমার বাড়ী থেকে কোন আপত্তি নেই,তুই আমাদের বাড়ি চলে আয়। মা বলেছে, সব ব‍্যবস্থা করবে।" কিন্তু হয়নি,গৃহবন্দী বেবি জন্মদাতার আদেশকেই সম্মান জানিয়েছিলো কুশল চলে গিয়েছিলো দিল্লী। ওদের বিয়েটা হয়নি,হয়ত বেবির কপালে ছিলোনা কুশল।
        হারিয়ে গিয়েছিলো ভালোবাসা,দূরে চলে গিয়েছিলো ভালোবাসার মানুষ। বেবি এখন দুই সন্তানের মা। স্বামী, সন্তান,চাকরি,সংসার আরো আরো কাজে ডুবিয়ে রাখে নিজেকে। সুখী দাম্পত‍্যজীবনের মাঝে হঠাৎ করেই একটুকরো স্মৃতি কখনো কখনো হাতছানি দেয়। মনটা উড়ে যায় কলেজের গেটে অথবা ইউনিভার্সিটির লাইব্রেরীতে। একসময়ের এক হতে চাওয়া দুটো মানুষ ছিটকে পড়েছে কোথায় যেন। শুধু ওর হাবি মাঝে মাঝে বলে, বেবি মন দিয়ে সংসার করে কিন্তু সংসারী নয়। খুব অভিমান হয় বেবির কি চায় সংসার মেয়েদের কাছ থেকে? ছেলেরা বড় হয়েছে আজকাল যেন হাঁপ ধরে ক্লান্ত বেবির,মনটা মাঝে মাঝে মুক্তি চায়। ক্লান্ত মনটাকে মুড়িয়ে রাখে বুটিকের রকমারী শাড়িতে আর কষ্টিউম জুয়েলারীতে। কয়েকমাস আগেই কিনেছিলো স্মার্টফোনটা ছেলের বায়নায় জিওর কানেকশনটা নিতেই হয়েছিলো। আর ওই খুলে দিয়েছিলো ফেসবুক আর হোয়াটস আ্যপ আ্যকাউন্টটা। সারাদিনের কাজের মাঝে একটু বাইরের জগতে উঁকি মারা। বেশ কিছু বন্ধুর সাথেও যোগাযোগ হয়েছে যদিও হাবি একটু অসন্তুষ্ট হয়ে নেগেটিভ দিকগুলোই বলে ইন্টারনেটের।
             বেবি ভেবেছিলো নাহ আর করবেনা ফেসবুক,কি দরকার অশান্তি করার। কিন্তু অদ্ভুতভাবে ইন্টারনেট এখন একটুকরো খোলা জানালা বেবির জীবনে এখন।
       হঠাৎই একদিন একটা ফ্রেন্ডরিকোয়েষ্ট এসেছিলো,নামটা চেনা কিন্তু অনেক  পাল্টে গেছে  চেহারাটা। আর ইনবক্সের মেসেজটা ছুঁয়ে গেলো বেবিকে। "পৃথিবীটা বোধহয় সত‍্যিই গোল, তাই পেয়ে গেলাম তোকে, অনেক খোঁজাখুঁজির পর। বন্ধুত্বটা মনে রেখেছিস তো,তাহলেই হবে। অনেকিছু হারিয়ে ফেলেছি তবুও এইটুকুই থাকনা। যদি অসুবিধে না থাকে তাহলে রাখিসনা এই বন্ধুটাকে ফ্রেন্ডলিষ্টে।"
                কাউকে বলতে পারেনি কিছু বেবি,তবুও ওরা কথা বলে। অনেক বন্ধুর মাঝে কুশল আছে বেবির বন্ধুদের তালিকায়। তবে প্রাইয়োরিটি লিষ্টে বোধহয় একটু এগিয়ে কুশল। স্কুলে যাবার পথে সীটে হেলান দিয়ে বেবি খুলে দেয় ওর মনের ছোট্ট জানলাটা,মনটা ঘুরে বেড়ায় কখনো ভূমিলক্ষ্মীতে কখনো ক‍্যান্টিনে,কখনো বা শালবনের নির্জনে। কুশল একটু সময় বের করে নেয় পঁচিশ বছরের পুরনো বুদবুদগুলোকে একটু নাড়াচাড়া করার জন‍্য। কথাগুলো একটু পাল্টে গেছে শুধু,কখনো ছেলেদের পড়াশোনা। কখনো বা কুশলের মিসেস এর শরীর খারাপের গল্প তবুও সম্পর্কটা আছে হয়তো অন‍্য মোড়কে, যেখানে বেবি শুধুই মা বা মিঃ চক্রবর্তীর মিসেস। আর কুশল মিঃ ঘোষ,দুজনেই সফল নিজের যায়গায়।
           তবুও সব সাফল‍্যের মাঝেও বোধহয় কোথাও একটু ফেলে আসা মিষ্টি অতীতে উঁকি মারলে বা কাউকে মনের কথা কোন রাখঢাক না করে বলতে পারলে কোথাও যেন একটা শান্তি পাওয়া যায়। যে কথাগুলো কবে হারিয়ে গেছিলো ডালে ফোঁড়ন দিতে গিয়ে বা আলু পটলের খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে অথবা আলমারি গুছোতে কোনো ভাজ না খোলা শাড়ীর কোনায়।
             মাঝে মাঝে মনেহয় বেবির এটা কি পরকীয়া বা এক্সট্রাম‍্যারিটাল আ্যফেয়ার্স। আজকাল এই কথাগুলো খুব শোনে ও।
না না এটা একঘেঁয়ে ডালভাত খাওয়ার ফাঁকে মাংসভাত খাওয়া নয় মনে হয়। বা কোন কফিহাউসে বা ফার্মহাউসে বসে শরীর ছোঁয়া নয়। একসময়ের প্রেম কবে তিস্তা বা মহানন্দার জলে ভেসে আজ রেখে গেছে শুধু কয়েকটা নুড়ি পাথর। হয়ত জীবনের মধ‍্যাহ্নে বসে বসে আজ গোণে সেই পাথরগুলো কথায় আর চ‍্যাটে। কখনো বা যত্নে সাজিয়ে রাখে দুজনেরই কিছু না পাওয়া স্বপ্ন মেসেঞ্জারের কোণে কোণে। এখন যে ওরা শুধুই প্রাক্তন।©ইচ্ছেখেয়ালে শ্রী🦋🍃
সমাপ্ত:-

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...