Skip to main content

আছি রে সাথে

#আছি_রে_সাথে#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

মলির নাক চেপু বার্বি ডল মিঠাই, সবসময় হাসিখুশি থেকে বাড়ি মাতিয়ে রাখে। এই কার্টুন দেখছে তো ওই কাগজ কেটে ফুল পাতা বানাচ্ছে। মলিও এমনি ছিলো ওর ছোটবেলায়। ও অবশ‍্য একদম ছোটবেলায় টি ভি পায়নি খুব গল্পের বই পড়তো। মলি জানে মিঠাই বোকা নয় যথেষ্ট বুদ্ধি রাখে,তবুও কেন যে খুব একটা সিরিয়াস না মেয়েটা কোন কিছুতেই বুঝতে পারেনা। একটা সময় মলির কাজ ছিলো পড়তে বোস পড়তে বোস বলা,তবে একটা সময়ের পর আর সেটা বলেনা,ও জানে ওর ডলু বুড়ি ঠিক সময়ে পড়তে বসবে। আসলে আমরা বাচ্ছাদের ওপর সবসময় জোর খাটাই খাওয়া নিয়ে,পড়া নিয়ে কোন কোন সময় খেলা নিয়েও তাই হয়ত ওরাও মুখ ফিরিয়ে নেয় কখনো পড়া, কখনো খাওয়া,আবার কখনো বা নিয়মে বাধা ধরা জীবন থেকে।
                 ......."দেখতে দেখতে কিন্তু উঁচু ক্লাশ হয়ে গেলো মাম্মা। এবার একটু সিরিয়াস হতে হবে তাইনা রে?"
    ....." আমার অত সিরিয়াস লাইফ ভালো লাগেনা মা,এই তো পড়ছি দেখেছো কত বই আমার সব ছড়িয়ে বসেছি। দেখি কতটা করতে পারি। তবে এরপর কিন্তু আমি একটু সিনচ‍্যান দেখবো।"
....." তা দেখ একটানা বেশিক্ষণ পড়তে পড়তে তো বোর লাগে আচ্ছা ঐসময় আমি একটু স্ন‍্যাক্স দিয়ে দেবো,ঠিক আছে। তবে তারপর কিন্তু একদম দৌড়োদৌড়ি করে বই খাতাগুলোকে ধরে ফেলবি। নাহলে আবার ওরা পালিয়ে যাবে। "
...." একদম মা, খেয়ে দেয়ে চাঙ্গা হয়ে ঐ বইগুলোর সাথে একটু দোস্তি করার চেষ্টা করে নেবো ঠিক আছে।"
          মজা করে কথাগুলো বললেও মলি বোঝে ওর নাক চেপুটা একটু খাটছে,চেষ্টা করছে সিনচ‍্যান কম দেখে,অঙ্কের খাতাগুলো বেশি দেখার। বইয়ের ভারে বাঁকা পিঠটাকে কষ্টে সোজা করে যখন বাড়িতে ঢোকে মেয়েটা তখন খুব মায়া হয় দেখে। এইভাবে ওর মিঠাইয়ের মত কত ছেলেমেয়ে হয়ত হারিয়ে ফেলছে ওদের ইচ্ছেগুলো। আর তারপর ফেসবুক স্ট‍্যাটাসে বন্ধুদের শিখর ছোঁওয়ার স্টোরি দেখে ডিপ্রেসনে ভোগে। জানতে পারে হয়ত স্কুলের বা কলেজের পড়াশোনা না করা ছেলেটারও পার আ্যনাম স‍্যালারির খবরাখবর।
                ....." মাম্মি কুছ খানে কো দো..."
  মেয়ের কথায় আনমনা মলি হেসে বলে," এই তো তোর খাবার বানিয়ে রেখেছি অনেকক্ষণ। শুধু মাইক্রোওভেনে গরম করে দিলেই হবে।"
....." মা বাবাকে বোলোনা গো আমার জন‍্য একটু ফুচকা আনতে,আর নাহলে চুরমুর। আর আমি কিন্তু কাল বা পরশু সুইগি থেকে খাবার এনে খাবো। তুমি খাবে তো?"
......." এই সবসময় শুধু খাওয়ার কথা। মোটু হয়ে যাচ্ছিস তো। "
...." ওটাই তো আনন্দ মা,এতো চাপের মাঝে ওটাতেই শান্তি। আরে ভুখা পেটে কি পড়াশোনা হয় নাকি? "
      সত‍্যি তো, বাচ্ছাগুলোর জীবনে বোধহয় গ‍্যাজেট,খাওয়া আর কমপিটিশন ছাড়া আর কিছুই নেই।
           দেখতে দেখতে মিঠাইয়ের মাধ‍্যমিক এসে গেলো,সত‍্যিই মেয়েটা পরিশ্রম করছে। আর তার সাথে মলিরও চিন্তা বেড়েছে। মেয়েটাকে চেষ্টা করছে একটু রিলিফ দিতে, সত‍্যি ইচ্ছে করছে না ওর মানসিক চাপ আর বাড়াতে।..." তোমরা কি ভালো গো মা, আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড কুহু সেদিন খুব দুঃখ করছিলো। ওর মা বলেছে যে ও যদি নায়িন্টি ফাইভ পার্সেন্টের বেশি না পায় তাহলে ওর মায়ের আর কারো কাছে মুখ দেখানো হবেনা। হয়ত মরে যেতে হবে। খুব ভয় পেয়েছে  মা ও। "
      "সত‍্যি বোধহয় মা বাবারাও সামিল হয়ে গেছে প্রত‍্যাশা পূরণের ইঁদুর দৌড়ে। যেখানে ট্র‍্যাপিজের ওপর ব‍্যালেন্স করছে বাচ্ছারা তবুও নিঃশ্বাস বন্ধ করে আমরা বলছি আরো ওপরে লাফিয়ে ওঠ। ওই যে ওই দড়িটা ধরে নে পারবি,কাছেই তো আছে।"
         মিঠাই মাধ‍্যমিকে নায়িন্টি ফাইভ পার্সেন্টেজ যে কিভাবে পেয়ে গেলো ভাবতেই পারেনি মলি। এতোটা সিরিয়াস তো ওকে কোনদিনই দেখেনি,সত‍্যিই মলির এতোটা এক্সপেকটেশন ছিলোনা কখনই। ছেলেমেয়ে ভালো করলে কার না ভালো লাগে! সকাল থেকেই বাড়িতে ফোন,আসলে রেজাল্টের দিন মলি বুঝতে পারে ওদের কত বন্ধুবান্ধব আর আত্মীয়স্বজন। সবাই খুশি,মলিও বড় গলায় বলতে পারলো সবাইকে মেয়ের সাফল‍্যের কথা। শুধু স্কুল থেকে হাতে মার্কশীট আর সার্টিফিকেট নিয়ে মুখটা কালো করে বেড়োলো মেয়েটা।
    ...." কি হয়েছে রে মিঠাই? আন্টিরা তোকে বকেছে না কি? কিছু বলেছে,মার্কস নিয়ে?"
     ...." বাড়ি চলো মা,আমার কিছু ভালো লাগছে না। কুহু আমার সাথে কোন কথা বললোনা মা,অনেক বন্ধু আমার সাথে আড়ি করে দিয়েছে মা। অহনা তো বলেই ফেললো,সারাদিন তো কার্টুন না কি দেখতিস বাড়িতে। তাহলে কি চিটিং করে এতো ভালো মার্কস আনলি নাকি রে? আমি আর এই স্কুলে পড়বোনা মা। আমি আর কখনো এখানে আসবোনা।"
       একসাথে টিফিন খাওয়া,কাড়াকাড়ি করে কুলের আচাড় খাওয়ার মাঝে কখন যে নায়িন্টি ফাইভ পার্সেন্টটা এসে ঢুকে পড়ে টুক করে বন্ধুত্বের রঙ গুলোই ফিকে করে দিলো।
       মেয়ের সাথে খুব মজা করে থ্রি ইডিয়ট সিনেমাটা দেখেছিলো মলি। ওর কর্তারও খুব ভালো লেগেছিলো সিনেমাটা। আজ ঐ সিনেমার একটা ডায়ালগ খুব বেশি মনে পড়লো,বন্ধু ফেল করলে দুঃখ হয় কিন্তু বন্ধু প্রথম হলে তার থেকে অনেক বেশি দুঃখ হয়।
               মিঠাইয়ের মনটা ওরা বুঝেছিলো তাই জোর দেয়নি ওই স্কুলে পড়ার জন‍্য,যদিও দিদিমনিরা আপসোস করেছিলেন খুব। পুরোনো বন্ধুদের ছেড়ে মিঠাই নতুন স্কুলে ভর্তি হোলো,মানিয়ে নিলো। এটা তো ওরই ডিশিসন ছিলো,শুধু কুহুর জন‍্য খুব খারাপ লাগতো। কে জানে ওরা সবাই কেমন আছে? কুহু আর ওর সাথে কথা বলবেনা ভাবতেই পারেনি। এই স্কুলেও অনেক বন্ধু হয়ে গেছে,শুধু দুএকজন দিদিমণি মাঝে মাঝে বাইরের স্কুল থেকে এসেছে বলে হেয় করেন । আবার অনেকেই খুব ভালোবাসেন। মলিও অনেকটা নিশ্চিন্ত হয়েছে শুধু ওরা দুজনেই বলেছিলো," মাম্মা তুই সায়েন্স পারবি তো? আমাদের কিন্তু কোন চাপ নেই।"
..." আমি সায়েন্স পারবো মা তোমরা না বোলোনা।"
      মিঠাইয়ের অন‍্য জগত একটু একটু করে কমতে লাগলো। সারাদিন টিউশন আর কোচিংসেন্টার বন্দী মুক্ত মনটা। তার মাঝে টিউশন ফেরত দশটাকার ফুচকা দিতো অনেকটা ভালোলাগার আমেজ। মেয়েটার দমবন্ধ জীবনটা দেখে ভালো লাগেনা মলির। তারই ফাঁকে কখনো একটুকরো খোলা আকাশ দেখায় মিঠাইকে কখনো শঙ্করপুর বা মন্দারমনিতে নিয়ে গিয়ে।
   কিছুতেই মেয়েটাকে জয়েন্টের কোচিং নেওয়াতে পারলোনা মলি, ওর ঐ এক কথা" মা আমি পছন্দমত বিষয় নিয়েছি,চেষ্টা করছি মা। আমার একটা ছুটির দিন অন্তত রাখো,সেদিনটা আর আমাকে সারাদিন ঐ দমবন্ধ করা উইকএন্ড সিডিউলে রেখোনা। আমি পারবোনা মা,যা হয় হবে।"
        মিঠাইয়ের পরীক্ষার আগে আত্মীয়স্বজনকে তেমন না পেলেও মলি জানতো রেজাল্টের আগে ও সবাইকে পাবে। সকাল থেকে অধীর আগ্ৰহে রেজাল্টের জন‍্য ওরা বসে,কিছুতেই ওয়েবসাইট খোলা যাচ্ছেনা। অপেক্ষায় অপেক্ষায় মলির গলা প্রায় শুকিয়ে এসেছে। মিঠাই মুখ শুকনো করে বসে আছে। আসলে ওর ফিজিক্স পরীক্ষাটা খুব একটা ভালো হয়নি।এর মাঝেই সবাই খোঁজ করছে কি হলো, অবশেষে ওয়েবসাইটের লিঙ্কটা খুলেছে। রোল নম্বরটা ক্লিক করেই রেজাল্টটা দেখে চোখটা অন্ধকার হয়ে গেলো মলির,কি বলছে এখানে,শুধু ওর মেয়ের রেজাল্টের এখানে স্কুলের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে কেন। তাহলে কি? আর ভাবতে পারেনা মলি,মেয়েটা মুখটা শুকনো করে মায়ের দিকে তাকিয়ে বসে আছে দুচোখ ভরা জল," আমাকে ক্ষমা করে দাও মা,আমি পারলামনা। হয়ত সায়েন্স নেওয়াটাই ঠিক হয়নি। মা,বাবা আমি পারলামনা।"
       হঠাৎই একসাথে মোবাইল আর ল‍্যান্ডফোনটা বেজে ওঠে ওদের শুভাকাঙ্খীরা একের পর এক ফোন করছে। তেমন কিছু বলতে পারছেনা মলি শুধু বললো," এখনো জানিনা।" ওপার থেকে কৌতূহলী গলা ভেসে আসে,সে কি কেনো গো। রেজাল্ট এখনো বেরোয়নি? ও আচ্ছা আমাদের পাশের বাড়ির ছেলেটা তো বললো ৯৫% পেয়েছে। তখনি মনে হোলো আমাদের  মিঠাইও তো দিয়েছে।"......হাত পা তখন কাঁপছে মলির,ফোনটা কেটে দেয় মাঝপথে, সুইচড অফ করে মেয়েকে নিয়ে স্কুলের দিকে রওনা দেয় ওরা। ট‍্যাক্সিতে টেনশনে লজ্জায় প্রায় আধমরা মিঠাইয়ের হাতে হাত রাখে মলি,আর ওর বাবা রাখে মাথায় হাত। ভয় পাসনা আমরা আছি রে সবসময় তোর সাথে। দেখিস সব ভালো হবে।
                   স্কুলের ভেতরে চলে যায় মেয়ে,দুটো সুইচড অফ ফোন হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে ওর মা বাবা। ভেতরে ঢোকার আগে একবার পেছনে তাকিয়ে মিঠাই, দেখে হাত নেড়ে তখনো আশ্বাস দিচ্ছে দুটো পরিচিত মুখ,যারা তাকে আগলে রেখেছে প্রতিনিয়ত।
               মাথাটা নিচু করে অন‍্যদের থেকে মুখ লুকিয়ে বসে ছিলো মলি,ভাগ‍্যিস স্কুলটা নতুন তেমন কারো সাথে ওর খুব একটা বন্ধুত্ব নেই। মিঠাই পুলকারেই যাতায়াত করতো। অনেকটা অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়ার আগে শুনতে পায় হঠাৎ মলি...
......." মা আমি পেরেছি,সত‍্যি পেরেছি। এই দেখো,আমি পাশ করে গেছি গো। তবে ভালো কিছু করতে পারিনি, দেখো মা।"
            ফেলের সাথে পাশের যে কতটা পার্থক‍্য এই দুইঘন্টাতে মলির চেয়ে বোধহয় তা আর কেউ বেশি বোঝেনি। এতোটা চোখের জল কোথায় জমা ছিলো কে জানে? আজ তা ঝরলো অঝোরে। মায়ের হাতটা গভীর ভরসায় আঁকড়ে ধরে মেয়েটা। ওর হাত থেকে মার্কসীটটা নিয়ে আর দেখতে ইচ্ছে করেনা কত পেয়েছে মেয়ে,শুধু মনে হলো একটা অন্ধকার জীবন হয়ত এই পাশ কথাটার হাত ধরেই আজ বাঁচলো তাই পার্সেন্টেজের কথাটা আর মাথায় এলোনা প্রথমেই।...." কি হয়েছিলো রে,ঐরকম দেখিয়েছিলো কেন হঠাৎ?"
.... মায়ের গলাটা জড়িয়ে ধরে মিঠাই বলে," ওটা হয়ত কোন এরর মা অথচ এমনটা হওয়া কখনই উচিত ছিলোনা, তবুও হয়ত আনন্দকে আরো বেশি উপভোগ করার জন‍্য এমনটা হয়েছিলো। কম্পিউটারে এমন তো হয়না কখনো,ঐ রেয়ার কেসটা আমায় আর তোমায় হয়ত শেখালো অনেক কিছু।"
             ট‍্যাক্সিতে বসে মলির একটা কথাই মনে হয়েছিলো,খোলা আকাশে খোলা মন নিয়ে বাঁচুক মেয়েটা। পার্সেন্টেজ আর পার্সেন্টাইলের খেলায় হয়ত এইভাবেই নষ্ট হয়ে যায় কত জীবন। ভালো থাক মেয়েটা,বেঁচে থাক অন্তত সুস্থ থাক। বাড়ি এসে মার্কশীটটা দেখলো মলি,দেখতেই হলো মেয়ের উৎপাতে,আসলে ওর পাশ কথাটা শুনেই মনটা ভরে গেছে মলির।
....." খুব খারাপ করেছি না মা?"
.... " ওমা এই তো ৮০%র ওপরেই সব,আবার কি চাই?"
       পরিশ্রম করে ছেলেমেয়েরা, রাত জাগে। মা বাবারাও রাত জাগে,টিউশনে নিয়ে যায় নিয়ে আসে,অনেক স্বার্থত‍্যাগ করে বাচ্ছাদের জন‍্য হয়ত জীবনের একটা সময় ফুটপাথে বসেই কেটে যায়। খারাপ ফল করলে বাবা মায়েদের থেকেও ওরাই বোধহয় সবচেয়ে বেশি কষ্ট পায়,তাই কি দরকার ওদের কষ্টগুলোকে খুঁচিয়ে?
            মলির বাড়িতে আনন্দের মহল,সুইচড অফ ফোনগুলো আবার সুইচড অন হয়ে তারস্বরে বাজছে মিষ্টি রিংটোনে। উচ্ছ্বসিত মলি কথা বলছে সবার সাথে। শুধু মনটা খারাপ মিঠাইয়ের,ইশ্ আরেকটু ভালো করে পড়লে ভালো হোত। তাহলে মা আরো খুশি হোত বোধহয়। গুটি গুটি পায়ে রান্নাঘরে গিয়ে মায়ের কাছে দাঁড়ায়," মা তোমরা খুশি তো,ইশ্ যদি একটু ভালো করতাম!"...." ভালো থাকিস মাম্মা,আমার আর কিছু চাইনা।"
....." তোমরা এতো ভালো কেনো মা!"...খারাপ মুহূর্ত পার করা মিঠাইয়ের শুধু মনে হয়েছিলো মা বাবার চেয়ে বড় বন্ধু বোধহয় আর কেউ হয়না।
       অন‍্য সময়ে মেয়েকে শাসন করলেও দুঃখের অন্ধকারে ডুবে যাওয়া মেয়েটাকে আর বকতে ইচ্ছে করেনি মলির,ভাঙতে ইচ্ছে করেনি ওর আত্মবিশ্বাস। তাই ওর মাথায় হাত বুলিয়ে আলতো করে প‍্যাট করে বলে," এগিয়ে যা... আছিরে সাথে সবসময়।"
**********
আসলে এই  কম্পিউটারের এররটা কাল্পনিক,এমন হয়ত বাস্তবিকে কমই ঘটে। তবুও এমন এরর মানে ভুল যা আমরা মা বাবারা করি তা হয়ত পৃথিবী থেকে ইরেজ করে দেয় অনেক জীবন আর কোন কারণে নয় শুধু মাত্র ভয়ে। তাই তো পরীক্ষার হল থেকে বেড়িয়ে বা পরীক্ষার রেজাল্ট খারাপ হবে এই ভয়ে অকালে শেষ হয়ে যায় কত প্রাণ। লোকে কি বললো নাইবা ভাবলেন,ওরা তো ঘাম ঝরায়নি আপনার সন্তানের জন‍্য। নাইবা হলো ওরা সমাজের সেরা কৃতী ছাত্র,শুধু শিখুক আপন আনন্দে নিজেদের মতো করে। নিজেদের ভালোবাসা নির্ভর ক‍্যারিয়ারে খুশি থাক আর মানুষ হোক। তাই ওদের বাঁচতে দিন,বড় হতে দিন বলুন আছি রে সাথে।

     সমাপ্ত:-
......

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...