Skip to main content

এক মুঠো আলো

#এক_মুঠো_আলো#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

"এই এসোনা, এখানে একটু দাঁড়াও না প্লিজ।"..."কেন বলতো? একটু পা চালিয়ে এসো প্লিজ। আর ছেলেকে ধরবে, দেখছো তো ভীড়ের জায়গা।"
       অভি বিরক্ত হচ্ছে দেখে আর কিছু বলেনা,ফ্রন্ট ক‍্যামেরায় টুক করে একটা সেলফি তুলে নিয়ে স্টেটাসটা আপডেট করে দেয় টিনা। আরে ওরা বেড়াতে যাচ্ছে এটা না দিলে হয় নাকি,কত বন্ধুরা এরপর কমেন্ট করবে আর হ‍্যাপি জার্নি উইশ করবে তার ঠিক নেই। অনেকের আবার হিংসেও হবে। এমনিতেই তো বন্ধুরা আওয়াজ মারে,তোর কপাল বটে আজ এখানে তো কাল ওখানে,বিন্দাস আছিস কিন্তু।
                  তোমার কি ব‍্যাপার বলতো,রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মোবাইল দেখতে হচ্ছে? আমারই কেমন লাগছে এদিকে লাগেজ নিয়ে হিমসিম খাচ্ছি। ছেলেটার হাতটাও তো ছেড়ে দিয়েছো দেখছি‌।"
        নাহ্ এবার পা চালায় টিনা,যাক কাজটা হয়ে গেছে। তারপর ট্রেনে বসে নিশ্চিন্তে দেখবে কমেন্টগুলো। সব কিছু গুছিয়ে ট্রেনে বসে টিনা,সঙ্গে সঙ্গেই মোবাইলে চোখ রাখতে পারেনা। ছেলেকে জল দিতে হয়,হাত ধোয়াতে হয়। এইসব করতে করতেই ট্রেন ছাড়ে,এবার জানলার ধারে বসে মোবাইলটা খোলে। অভিটা যে কি,ওর এত নেটে থাকা ওর পছন্দ নয়। কেন জানেনা,নিশ্চয় অফিসের লোকের উস্কানি। সব সময় বলে," একটু বাইরেটা দেখতে শেখো। ছেলেটাও বিগড়ে যাবে তোমার কান্ড দেখে। দিয়েছো তো বিগড়ে অলরেডি।"আর অভির আশ্চর্য লাগে এই ভেবে যে একসময় জানলার ধারে বসার জন‍্য ওরা ছোটবেলায় মারামারি করত,কত কি দেখতো দুচোখ মেলে। ভেসে যেত স্বপ্নের জগতে,মনে হত দৌড়চ্ছে গাছপালা আর বাড়িঘর। আর এখন মানুষ জানলায় বসে কিন্তু চোখ থাকে মোবাইলে এমন কি ওর ছেলেটাও চিপস আর কোল্ডড্রিঙ্কস নিয়ে বাবার ফোনটা হাতে বসে পড়েছে গেম খেলতে।
           আসলে টিনার বিয়ের পর পর ও শ্বশুরবাড়িতে থেকেছে কিছুদিন। এমনি সমস‍্যা খুব একটা কিছু ছিলোনা। তবে টিনার ঠিক ভালো লাগতনা ওদের সাথে থাকতে,ওর শ্বশুরমশাই স্কুলটিচার আর শাশুড়িমা হাউসওয়াইফ। যথারীতি বাড়িতে একটু আদর্শের ব‍্যাপারটা খুব বেশি। যদিও ওরা এমনিতে ভালো মানুষ তবুও তেমন ফ্রী হওয়া যেত না। কিছু করলে ওদের নজরে তো পড়তোই,পছন্দমত ড্রেসও পরতে পারতোনা। শ্বশুরমশাই চাইতেন ও একটু বইটই পড়ুক, উনি মাঝে মাঝেই এনে দিতেন বই লাইব্রেরী থেকে। ফেসবুক টুক করা ওনার খুব একটা পছন্দ ছিলোনা। বলতেন এটা একরকম আইডেন্টিটি ক্রাইসিস,ইন্টারনেটকে ভালো কাজে লাগাও বৌমা ওখানে অনেক কিছু করার আছে। এছাড়াও ওখানে ছিলো খুব সিগন‍্যাল প্রবলেম তাই খুব বেশি নেট নির্ভর ছিলোনা টিনা। ঘরের কাজকর্মেও কিছুটা সাহায‍্য করতে হত শাশুড়িমাকে।যতদিন পেরেছে অভি বাড়ি থেকেই অফিস করেছে। তবে আর হলোনা,এখন বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছে ওরা। কিছু করার নেই চাকরির ট্রান্সফার আছেই।
         এখানে এসে একা বাড়িতে খুব বেশি নেট নির্ভর হয়ে গেছে টিনা। কিই বা করবে ছেলে আর অভি বেড়িয়ে যাবার পর ওটাই তো বন্ধু। অবশ‍্য ঘুম থেকে উঠেই চোখ চলে যায় মোবাইলে,কখনো মাঝরাতেও খুলে দেখে কানে পিং আওয়াজ এলেই। অভি আর ছেলে তখন অঘোরে ঘুমোয়। ফোনটা ওর পাশেই থাকে রাতে,অভি কতদিন বলেছে," এভাবে ফোন পাশে নিয়ে শুয়োনা,রাতে একটু শান্তিতে ঘুমোনো উচিত।"
          মাঝে মাঝে রেগে যায় টিনাও," আমার কি কোন অবসর নেই,সারাদিন রান্না করবো আর ছেলে সামলাবো। ভাগ‍্যিস ফেসবুক আর বন্ধুগুলো ছিলো বলে একটু মনটা ভালো লাগে। যখন ইউটিউব দেখে রান্না করে খাওয়াই তখন তো বেশ লাগে।"..." তুমি ইউটিউব দেখো,ফেসবুক করো আমার কিছু এসে যায়না। কিন্তু তোমার ঐ সেল্ফি ব‍্যামো আমার জাষ্ট অসহ‍্য। যত সব ন‍্যাকা ন‍্যাকা ছবি আর তাতে তেমন সব কমেন্ট,অসহ‍্য।"
                      মাঝে মাঝে অভির মনে হয় টিনারও একটা কিছু করা উচিত,তাহলে হয়ত এতটা আইডেন্টিটি ক্রাইসিস হতনা। ছবি পোষ্ট করার পর আশ্চর্য হয়ে যায় ওর কথা শুনে। " ইশ্ ছবিটা কেন যে সকালে দিলাম রাতে দিলেই হত। তাহলে প্রচুর লাইক পড়ত। এত ভালো করে তুললাম ছবিটা।"
            আজকাল আবার ছেলের আঁকা ছবি,প্রোজেক্ট বা ছেলের ভালো কিছু দেখলেই সেটা পোষ্ট করে ফেলে সাথে সাথে। আর ছেলেটাও হয়েছে তেমনি,এই তো সবে ক্লাশ থ্রি তাতেই মোবাইলের খুঁটিনাটি জানে। এই তো সেদিনই ওর একটা আঁকা ছবি ফেসবুকে পোষ্ট করেছিলো টিনা অবশ‍্য অভি কিছুই জানতোনা। ছেলেই বললো,"বাবা দেখো আমার আঁকা ছবিটা ফেসবুকে কত লাইক পড়েছে। প্রথমে তো মা বারবার দেখছিলো আর আমিও কেউ কমেন্ট করলো কিনা। "...ছেলেকে কিছু বললোনা অভি একটু হেসে বললো," ভালো করে পড়াশোনা কর আর ছবি আঁক। স্কুলে ভালো করলে রেজাল্টের দিন সবাই ভালো বলবে তাইনা।"
        রাতে টিনাকে বলে," ছেলেটা তো একসময় ছবিই তুলতে চাইতোনা। চোখ বুজে থাকতো,বিরক্ত হত। ওকেও আ্যডিকটেড করে তুলছো লাইক আর আনলাইকের চক্করে! একেই তো টিভি দেখে খায়,গেম খেলে আর কি বলবো। নাহ্ বাড়ি থেকে আসাই আমার ঠিক হয়নি। ওখানে বাবা  তবুও ওকে সময় দিতো। এখানে নিজেও ফোন নিয়ে থাকো,আর ছেলেটাও তেমন হচ্ছে। ওকে নিয়ে একটু অন‍্য কিছু করাও।"
...." সারাদিন তো ছেলের পেছনেই খাটছি,তুমি কতটা দেখো ওকে শুনি? করবো আবার কথাও শুনবো। তোমার যত অসুবিধে আমার ফেসবুক করা নিয়ে তাইতো?"
         ...." আচ্ছা থাক বাদ দাও,এবার ভাবছি ওর পরীক্ষার আগে বাবাকে কদিন এখানে থাকতে বলবো। তাহলে ওকে একটু পড়াতে পারবে।"
    ...." তাহলেই হয়েছে,ঐ সময় বাবা এলে ওর পড়াশুনা আরো মাথায় উঠবে। সারাদিন দাদুর কাছে বসে রাজ‍্যের গল্প শুনবে। আমাকে তো পাত্তাই দেবেনা। ঐ তো সেদিনই নেলি বলছিলো ছেলের পরীক্ষার আগে ওর নিজের বাবা মাকেই পরিস্কার বলে দিয়েছে এখন যেন ওনারা না আসেন এই একটা মাস বাড়িতে।"
         অশান্তির ভয়ে কিছু বলেনা অভি,এরপর ছেলের রেজাল্ট খারাপ হলে দোষ হবে ওর। থাক দরকার নেই। অথচ ছেলেটা যখন ছোট ছিলো দাদুর হাতেই ওর প্রথম হাতেখড়ি। কি যে হয়েছে টিনাটার কে জানে! সবই আকড়ে ধরতে চায় অথচ পারেনা।
         বেশ কয়েকদিন বাদে অফিস থেকে এসে অভি দেখে ছেলের খুব মন খারাপ।" কি হয়েছে রে? বাবা মা আমার একটা ড্রয়িংয়ের ছবি পোষ্ট করেছিলো তাতে মাত্র টেন লাইকস কেউ কমেন্ট করলোনা এখনো। কত কষ্ট করে আঁকলাম ছবিটা! মায়ের ছবিতে ফাইভ হানড্রেড লাইকস,ঐ যে খাদের সামনে দাঁড়িয়ে তোলা ছবিটায়।"
          মনে পড়ে যায় অভির কি বিপজ্জনক ভাবে সেলফিটা তুলেছিলো টিনা। খুব রাগ হয়েছিলো ওর। " তুই ভালো করে আঁক তো আমি দিল্লীর একজিবিশনে তোর ছবি পাঠিয়ে দেবো। কত লোক দেখবে দেখিস।" এই বলে ছেলেকে শান্ত করে অভি। মাঝে কেটে গেছে বেশ কিছুদিন। আজকাল খুব ভয় লাগে কেন যেন ওর,ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা সব অদ্ভুত গেম খেলছে। কখনো কেউ বা বেছে নিচ্ছে আত্মহত‍্যার পথ।
                    কাকে আর কি বলবে,টিনাটাকেই তো বুঝিয়ে উঠতে পারলোনা এতদিন। সারাদিন মোবাইল হাতে বসে আছে। সেদিন রবিবার ছেলেকে নিয়ে ফ্ল্যাটের ছাদে উঠেছে অভি। একটু খোলা হাওয়া পাক ছেলেটা পাশে ফোনদুটো রেখে ছেলের সাথে ঘুড়ি ওড়ানোর চেষ্টা করছিলো ছাদে। যদিও ছেলে পারেনা ঘুড়ি ওড়াতে তবুও মজা পায়। হঠাৎই একটা ফোন  আসে,লাটাই হাতের থেকে রেখে কথা বলতে শুরু করে অভি।
          হঠাৎই চোখ চলে যায় ওর,কি করবে ভেবে পায়না অসহায় ভাবে দৌড়ে ছুটে আসে জাপটে ধরে ছেলেকে। হয়ত আজ ঘটে যেতে পারত এক বিরাট দুর্ঘটনা। বাবার আরেকটা ফোন নিয়ে একহাতে ঘুড়ি আর লাটাই নিয়ে ছাদের রেলিং বেয়ে উঠে একটা বাঁকানো রডে দাঁড়িয়েছে ছেলে সেল্ফি তুলবে বলে। মায়ের খাদের সামনে তোলা ছবির চাইতেও অনেক বেশি লাইক পাবে ছবিটা হয়ত বা ভাইরাল হয়ে যাবে। চোখের কোলে আজ জল টলটল করে অভির,ছেলেটাকে হারাতে বসেছিলো আরেকটু হলেই। টিনা শুনে অভিকেই দোষ দিলো,অশান্তি হলো খুব দুজনের মধ‍্যে।
             টিনা না চাইলেও অভি কিছুদিনের জন‍্য নিয়ে এলো ওর বাবা মাকে। নাতিকে পড়ানোর দায়িত্ব কিছুদিনের জন‍্য নিলেন দাদু। বিরক্ত লাগে টিনার কি পড়া হচ্ছে কে জানে,এদিকে ওর বেড়েছে কাজের চাপ। যদিও শাশুড়িমা অনেকটা করে দেন কিন্তু লোকও তো দ্বিগুণ। অভিকে বলতেই ও রেগে ওঠে," একা থেকে থেকে সত‍্যিই তোমার অভ‍্যাস খারাপ হয়ে গেছে।একটু ভরসা রাখো,বাবা কত ছাত্র তৈরি করেছেন।"
          সেবার বার্ষিক পরীক্ষায় সত‍্যিই খুব ভালো ফল করলো ওদের ছেলে। সত‍্যিই সেইদিনটা একটা মনে রাখার মত দিন। সবার হাততালির মধ‍্যে প্রাইজ আর সার্টিফিকেট নিলো সায়ক ক্লাসে প্রথম হওয়ার জন‍্য। চোখটা ভিজলো টিনারও। আজকের দিনটা বোধহয় সেল্ফি তুলে হাজার হাজার লাইক পাওয়ার থেকেও বেশি আনন্দের। আজ আর বার বার ফেসবুক খুলে কটা লাইক পড়েছে সেটা দেখতে একদম ইচ্ছে করলোনা টিনার। হয়ত সায়কের হাত ধরে টিনাও আজ এসে পৌঁচেছে সব পেয়েছির দেশে। সায়কের হাতে অনেকগুলো সার্টিফিকেট আজ,সবাই ঘিরে ধরেছে সায়ককে। ও একছুটে আসে মায়ের কাছে," মা আমার এই সার্টিফিকেট হাতে ছবিটা ফেসবুকে দেবেনা। "..চোখটা ভিজে যায় টিনার হাসে অভিও,টিনা বলে," না রে সূর্য যখন আকাশে ওঠে সবাই তার আলো দেখে। তুই আজ নিজেই উজ্জ্বল,আর আমিও দেখছি সেই আলোটা। "...মায়ের কথাগুলো ঠিক বুঝতে পারেনা সায়ক,হাঁ করে তাকিয়ে থাকে মায়ের মুখের দিকে," কি উজ্জ্বল আমি মা?"...." আচ্ছা চল এবার বাড়ি যাই দাদু আর ঠাম্মা সেই কখন থেকে অপেক্ষায় আছে। দাদুর পছন্দের মিষ্টি নিয়ে যাবো আজ চল।"
       বাড়ি আসে ওরা,সবাই হৈ হৈ করে ওঠে আজ বড় উজ্জ্বল লাগে সায়কের দাদুর মুখটা নাতির সাফল‍্যের আনন্দে। দাদু আর ঠাম্মাকে প্রণাম করে দাদুর হাতে মিষ্টির বাক্সটা দেয় সায়ক। " দেখি দেখি দাদুভাই,কত বুদ্ধি হয়েছে আমার দাদুর।"..." মা বলে দিয়েছে তোমাদের প্রণাম করতে। "..." মা বাবাকে প্রণাম কর দাদু ওরাই তো আসল শিক্ষক। আর এই যে এদিকে এসো তো সোনা দাদু আমার। "..আদর করে নাতিকে রসগোল্লা খাইয়ে বলেন," কখন থেকে তোমার জন‍্য বড় বড় রসগোল্লা কিনে আমি আর তোমার ঠাম্মি বসে আছি। আমাদের সময় ভালো কিছু করা মানেই পেটভরে মিষ্টি খাওয়া।"....আজ আর ফেসবুকে উঁকি দিয়ে বার বার দেখতে ইচ্ছে করলোনা টিনার সুখের আকাশের একচিলতে রোদ্দুর আলো করে রেখেছে ওর দুকামরার ফ্ল্যাটটা তাই হাসি আজ সবার মুখে। এ এক পরম পরিতৃপ্ত মাতৃত্বের স্বাদ যার কাছে হয়ত অন‍্য সব কিছুই ফিকে আজ।©ইচ্ছেখেয়ালে শ্রী

সমাপ্ত:-
               

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...