#বৌ_চুরি#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#
"বৌ চুরি করা যায় জানিস তো?"
হা হা করে হেসে উঠেছিলো ওরা সবাই সেবার পিকনিকে।" হুঁ ছোটবেলায় একবার একটা ছড়া পড়েছিলাম মানে কি যেন একটা গঙ্গাফড়িংয়ের বৌ চুরি।"
ধ্যাৎ পোকামাকড় আর পাখিদের বৌ চুরি তো হচ্ছেই সবসময়। এ হচ্ছে খোদ দেখিয়ে জানিয়ে বৌ চুরি। আফ্রিকার এক বিশেষ অঞ্চলের আদিবাসীদের মধ্যে আছে এই প্রথা। ওরা বেশ মুখে রঙ টঙ মেখে বিয়ের একবছরের মাথায় অন্যের বৌ চুরি করে ফেলে দিব্যি তার সাথে সংসার শুরু করে,সমাজ মেনে নেয় ওদের।"
...." আর যার স্বামী অন্যের বৌকে চুরি করলো সেই বৌটা কি করবে শুনি?"...চোখ পাকায় বিপ্লব,"এই যে ডালিয়া,দেখতে তো বেশ শান্তশিষ্ট লাগে এত কৌতূহল কিসের শুনি? মতলব ভালো না মনে হচ্ছে।".." আহা নিজে এসে রাজ্যের অদ্ভুত সব কথা বলবে আর জিজ্ঞেস করলেই দোষ।"
"সত্যি বিপ্লব তোর মাথায় শুধু দুষ্টু বুদ্ধি"...বলে সাম্য। " কি রকম ইন্টারেস্টিং ব্যাপারটা তাইনা?"
আড্ডায়,গানে আর গল্পে মেতে উঠেছিলো ওরা সবাই। আর তার মাঝে মাঝে একদম জমিয়ে খাওয়া। শীতের পিকনিক তাই,খেজুরের রস,মিষ্টি,মোয়া,মাংস,কেক কিছুই বাকি রইলোনা। আর শেষে ডাব খেয়ে ঢক করে ঢেকুর তোলা। সত্যি কলেজের পিকনিকগুলোর স্বাদটাই একেবারে ঝাঁঝালো আর টক মিঠে। চট করে ভোলা যায়না।
ডালিয়া যখন গান গাইলো মনটা যেন কেমন করে উঠলো বিপ্লবের। একপাশে সরে সিগারেট খেলো। ডালিয়া মিষ্টি আদুরে ,এখনো খুব ইনোসেন্ট আবার কিছুটা বোকা বোকাও। তবুও কেমন যেন মিঠে মিঠে লাগে ওর সবটাই বিপ্লবের,তবে এই কথাটা ওর মনকেও বলতে ভরসা পায়না কখনো। কি আছে ওর? এখনো দুটো ছোট ভাইবোন। অনেকগুলো টিউশন আর রাতে কখনো করে আ্যকাউন্টসের কাজ। মা বকে," নিজের চেহারার দিকে একটু নজর দে বাবু। ঐসব সিগারেট টিগারেট খাওয়া ছাড়। ইশ্ একদম দাঁড়কাক হচ্ছিস দিনে দিনে। " ভালোই তো মা এবার কা কা করে উড়ে বেড়াবো,সারা দেশ।"
ডালিয়াকে দেখতে ভালো লাগে,কি সুন্দর আলতো আদরে সাজিয়ে রাখার মত একটা মিষ্টি মেয়ে। ওর পাশে কাধে ঝোলা,গালে দাড়ি আর চোখে চশমাওয়ালা বিপ্লব মানে মা যাকে দাঁড়কাক বলে। ধ্যাৎ কি সব ভাবছে একা দাঁড়িয়ে। হঠাৎই সাম্য আর রীতা এসে ওকে টেনে নিয়ে যায়," কার বৌকে চুরি করার প্ল্যান করছিস শুনি? পাড়াতে কোন বৌদি টৌদি নেই তো।"..তাল দেয় ডালিয়াও," আমার তো তাই মনে হচ্ছে,ওকে কোন বিশ্বাস নেই হঠাৎই হয়ত কোনদিন এসে বলবে এই দ্যাখ আমার চুরি করা বৌ,আফ্রিকা থেকে আনলাম। এই যে এবার তোর পালা কবিতা বল।"শুরু করে বিপ্লব ওর উদাত্ত কন্ঠে ওর প্রিয় কবি শ্রদ্ধেয় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা 'ইচ্ছে'..
কাচের চুড়ি ভাঙার মতন মাঝে মাঝেই ইচ্ছে করে
দুটো চারটে নিয়মকানুন ভেঙে ফেলি
পায়ের তলায় আছড়ে ফেলি মাথার মুকুট
যাদের পায়ের তলায় আছি, তাদের মাথায় চড়ে বসি
কাচের চুড়ি ভাঙার মতই ইচ্ছে করে অবহেলায়
ধর্মতলায় দিন দুপুরে পথের মধ্যে হিসি করি।.....
সত্যি বিপ্লবের গলায় কবিতা আবৃত্তি মনে
দোলা দেয়, সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শুনছিলো। সত্যি আনন্দের মুহূর্তগুলো কি তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়। এভাবেই কলেজের বছরগুলোও একদিন বাই বাই টা টা করে চলে গেলো ওদের তবুও বিপ্লবের বলা হয়নি ডালিয়া তোকে আমি ভালোবাসি। মুখে যে সব ছেলেরা বেশি বক বক করে তারা হয়ত এমনি হয় অবশ্য আজকালকার ছেলে হলে মেসেঞ্জারে বা হোয়াটস আ্যপে চেষ্টা করত বিপ্লব। ছোটখাটো একটু চেষ্টা একবার দুবার হয়ত করেছে,ডালিয়া বোঝেনি। অথবা ইচ্ছে করেই বুঝতে চায়নি। মজা করেই সাম্য বলেছিলো," তোর নামটাই শুধু বিপ্লব,বিপ্লব করতে আর শিখলিনা। আর কি তোর পছন্দের ডালিয়া দিয়ে ঘর সাজাবে অন্য কেউ তুই তাকিয়ে দেখবি। মুখেই শুধু বড় বড় কথা।"..নিজের বাড়ির চেহারার সাথে ডালিয়ার বাড়িটাকে ওর বাবাকে মেলাতে চেষ্টা করে, না না অযথা ভালোলাগাটা নষ্ট করবেনা। তাই বলেছিলো," ডালিয়াকে দূর থেকে দেখতেই ভালো লাগে,কি সুন্দর এ ঝলক রোদ্দুর যেন।"
দেখতে দেখতেই কোথা দিয়ে কেটে গেলো খুনসুটি ভরা দিনগুলো। এরপর সবার ছিটকে যাবার পালা,ওরাও তেমন ছিটকে গেলো যে যার মত। কেউ উত্তরে,কেউবা দক্ষিণে অথবা পূবে পশ্চিমে আবার কেউ বা দেশের বাইরে। এমনি করে বিপ্লবটাও একদিন বেপাত্তা হয়ে গিয়েছিলো আর যোগাযোগ হয়নি তেমন ওদের কারো সাথে। শুনেছিলো বিপ্লবটা নাকি মিলিটারি তে জয়েন করেছে,ট্রেনিংয়ে আছে,তেমন বাড়িতে আসা হয়না। একটা সময় বিপ্লব মুছে গেলো,হয়ত বা মিশে গেলো জীবনযুদ্ধের লড়াইয়ে এক ঝাঁক যোদ্ধার সাথে। সময় এগিয়ে গেলো নিজের খেয়ালে,হঠাৎই ডালিয়ার মা মারা গেলেন। ডালিয়ার তখনো বিয়ে হয়নি ওর বাবা খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেন মায়ের মৃত্যুতে। একটা ঝড় উঠলো ওদের জীবনে,আসেপাশে যে বন্ধুরা ছিলো সবাই এগিয়ে এলো ওদের পাশে। একটু একটু করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলো। ডালিয়ার কাকা এসে ওদের নিয়ে গেলেন কালিম্পংয়ে।
মাঝে কেটে গেছে অনেকগুলো বছর,শীতে প্রচন্ড ঠান্ডা সিকিমের এই দিকটায় তার ওপর বরফ পড়ছে। তবুও পর্যটকদের আনাগোণা তুঙ্গে। গরম কফির মগে চুমুক দিতে দিতে আনমনা হয়ে যায় বিপ্লব,মা মারা গেছেন দুবছর আগে। ভাইবোনরা সবাই মোটামুটি দাঁড়িয়ে গেছে এখন। বোনের বিয়েও হয়ে গেছে। বোনই মাঝে মাঝে বলে,'' দাদা বিয়ে কর,আর কবে করবি শুনি? তোকে দেখবে কে?"..." আরে বর্ডারে বর্ডারে ঘুরে বেড়াই,অনেক সময় ফোনে টাওয়ার থাকেনা। একলা আছি বেশ আছি,বৌ ফোন না পেলে চিন্তা করবে।".." কেন তোর কাছে এনে রাখবি।".." সব জায়গায় আনার মত পরিস্থিতি থাকেনা রে।"পাঁচ বছর আগেও যারা ওকে দেখেছে তারাও হয়ত চিনতে পারবেনা এখন ওকে দেখে। অদ্ভুত দৃঢ়তা এখন চোখে মুখে,বন্ধুদের মধ্যে হঠাৎই যোগাযোগ হয়েছে গতবছর সাম্যর সাথে। জানতে পেরেছে ওর প্রিয় ডালিয়া ফুল অনেকদিন আগে কার যেন একটা বাগানে শোভাবর্ধন করছে। মনটা খারাপ হয়না ওর,আরে এ তো হওয়ারই ছিলো। তবুও মাঝে মাঝে বিশ্রামের অবকাশে হঠাৎ হঠাৎই মনে পড়ে যায় ডালিয়ার গান আর ওকে।
হঠাৎই ফোন এসেছিলো বরফে ঢাকা পড়েছে রাস্তা,তুষারঝড়ে চারিদিক বিধ্বস্ত। আটকে পড়েছে অনেক গাড়ি,অসহায় যাত্রীরা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এগিয়ে যায় ওরা। চাঁদনি রাতের আবছা আলোয় খুব সাবধানে একে একে সবাইকে উদ্ধার করে পৌঁছে দিতে শুরু করে নিরাপদ ছাউনিতে। হঠাৎই শুনতে পায় একটা গাড়ি খুবই বিপজ্জনক অবস্থায় আছে,এগিয়ে যায় ওরা কয়েকজন। সত্যি তো এদিকটায় তো তেমন কেউ আসেনা,তাহলে এই গাড়িটা হঠাৎ এখানে। যাক ওদের কাজ ওরা শুরু করলো,সবাইকে মোটামুটি উদ্ধার করা গেলো শুধু একজনের শরীরটা বেশি খারাপ অগত্যা তাকে কাঁধে নিয়েই আসতে হলো। বেশিরভাগটাই বিপ্লবকেই করতে হলো কাজটা,অবশ্য অভ্যেস হয়ে গেছে এমন কাজ করার তবে বরফ পড়া চাঁদনীরাতে একজন মহিলাকে ঘাড়ে তোলার অভিজ্ঞতা নতুন। মাঝে মাঝেই হাতটা এলিয়ে পড়ছে,অনেকবারই ছুঁয়ে যাচ্ছে বিপ্লব নরম হাতটা ওর শক্ত বুলেট চালানো হাত দিয়ে। নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে ওদের কাজ শেষ।
পরদিন সকালে অনেকটা আবহাওয়া ভালো,অনেক গাড়িই রওনা দেবার জন্য তৈরি হচ্ছে। হঠাৎই পেছন থাকে ডাকে একজন," এক্সকিউজ মি,প্রায় আধঘন্টা ধরে আপনাকে খুঁজছি। কাল আপনি হঠাৎ চলে গেলেন। ভাগ্যিস নামটা জেনে নিয়েছিলাম। আমার বৌদিভাই একবার আপনার সাথে দেখা করতে চায়।"...প্রথমে আশ্চর্য হলে পরে বুঝতে পারে,সারাটা পথ ওর ঘাড়ে চেপে এসে মহিলা ধন্যবাদ দিতে চান। " সরি নো প্রবলেম,ওনাকে বলবেন এটা আমাদের ডিউটি। নো নিড টু থ্যাঙ্কস্।"..তবুও ছাড়া পায়না,মেয়েটা খুব নাছোড়বান্দা নিয়ে গিয়েই ছাড়ে," প্লিজ,জাষ্ট ফর ফাইভ মিনিটস্। আমরাও চলে যাবো একটু বাদেই।"
বরফজমা ঠান্ডাতেও শরীরটা কেমন যেন আলগা উষ্ণতায় কেঁপে ওঠে বিপ্লবের,কাকে দেখছে ও..ডালিয়া। আরো যেন অনেক সুন্দরী আর ব্যক্তিত্বময়ী,আহ্লাদী পুতুলভাবটা আর যেন নেই খুব একটা। হঠাৎই ওর নরম হাতদুটোর ছোঁয়া আবার অনুভব করতে ইচ্ছে হলো।
..." ইশ্ একেবারে গোঁফ রেখে রঘু ডাকাতের মত হয়েছিস তো। নামটা জেনে রেখেছিলো রাই তাই নামটা শুনেই খুব ইচ্ছে হয়েছিলো দেখি তো এই কি সেই ছন্নছাড়া বিপ্লবটা?আসলে এমনভাবে কারো ঘাড়ে চেপে এলে তাকে ধন্যবাদ দিতেই হয়। তবে তোকে দেবোনা। কোথায় ছিলি এতদিন?ইশ্ এভাবে যে দেখা হবে ভাবতেই পারিনি।"..বকবকিয়া মাস্টার হয়েছে ডালিয়াটা,মুখে খই ফুটছে একেবারে। বিয়ের পর বোধহয় মেয়েদের এমনই হয়। তবে ওর বর কোথায়? এভাবে কেউ বৌকে ছাড়ে?
বিপ্লব তবে উল্টো এখন, কম কথা বলে,জানতে পারে ওর ননদ আর তার বান্ধবীদের সাথে বেড়াতে বেড়িয়েছিলো। আর পথেই এমন বিপদ। যাবার আগে কার্শিয়াংয়ে ওদের বাড়ির ঠিকানা দিয়ে বার বার যেতে বলে। তখন মোবাইল ছিলোনা তাই ল্যান্ডলাইন নম্বরটা দিয়ে যায়। বিপ্লবের সবসময় এক জায়গায় থাকা হয়না খুব ইচ্ছে করলেও মাত্র দুএকবার কথা বলেছিলো,আর বলা হয়নি। কি দরকার অন্যের বৌয়ের সাথে বেশি কথা বলার।
আবার হঠাৎই দেখা হয়ে গিয়েছিলো দুবছর বাদে একটা রিসেপশনে। ওর জুনিয়ার চ্যাটার্জীর রিসেপশনে দেরাদুনে," বিপ্লবদা,হেয়ার ইজ মাই বেটার হাফ এন্ড আওয়ার বিলাভেড বৌদিভাই।"..সত্যিই পৃথিবীটা গোল,রাই আর ডালিয়া দুজনেই তো ওর চেনা। আবার বিপ্লবের শরীরে একটা রোমাঞ্চ হয়। ডালিয়া ওর শ্বশুরমশাইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। বিপ্লব হেসে জিজ্ঞেস করে," তোর বেটার হাফ কোথায়?"..."বাইরে থাকেরে আসতে পারেনি।"
বিপ্লব জানতে না চাইলেও পরে জেনেছিলো বিয়ের পর ওরা ইউরোপ ট্রিপে যায়। ইটালী থেকে হঠাৎই নিখোঁজ হয়েছিলো পীযূষ। একবুক শূন্যতা নিয়ে ফিরে এসেছিলো ডালিয়া,চোখের জল শুকিয়ে গিয়েছিলো কেঁদে কেঁদে। তবে ওর শ্বশুরমশাই হয়ত ছেলেকে একটু বেশিই চিনতেন তাই বাবা মা হারা মেয়েটাকে নিজের মেয়ের মতই কাছে রেখেছিলেন। পাঁচবছর বাদে জানা গিয়েছিলো একটা মোটা খামের চিঠিতে যে ডালিয়াকে আর পীযূষের চাইনা,সে ওদেশেই পেয়েছে সুখের ঠিকানা। ডালিয়া চোখের জল ফেললেও ওর শ্বশুরমশাই ছেলেকে ভুলতে বলেছিলেন বাড়ির ঠিকানা। আর সেই থেকেই ডালিয়া এই বাড়িতে রাইয়ের মতই থাকে।
রাইয়ের রিসেপশনে এসে দিনদশেক থেকে গিয়েছিলো ওরা। ঐ দশদিনে বিপ্লবকে প্রায়ই জোর করে আনতো চ্যাটার্জী। গল্পে কফিতে জমত আড্ডা। অনেকদিন বাদে আবার ডালিয়ার গান শুনলো সবাই। হাসতে হাসতে ডালিয়াই বললো," তুই এখন আর আবৃত্তি করিসনা?".." কবেই ছেড়ে দিয়েছি",ইচ্ছে হলেও বলতে পারলোনা। শুরু করলো ওর প্রিয় কবির কবিতা..শ্রদ্ধেয় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কবিতা..
'এই হাত ছুঁয়েছে নীরার মুখ
আমি কি এ হাতে কোনো পাপ করতে পারি ?
শেষ বিকেলের সেই ঝুল বারান্দায়
তার মুখে পড়েছিল দুর্দান্ত সাহসী এক আলো
যেন এক টেলিগ্রাম, মুহূর্তে উন্মুক্ত করে
নীরার সুষমা
চোখে ও ভুরুতে মেশা হাসি, নাকি অভ্রবিন্দু ?
তখন সে যুবতীকে খুকি বলে ডাকতে ইচ্ছে হয়–
আমি ডান হাত তুলি, পুরুষ পাঞ্জার দিকে
মনে মনে বলি,
যোগ্য হও, যোগ্য হয়ে ওঠো–
ছুঁয়ে দিই নীরার চিবুক
এই হাত ছুঁয়েছে নীরার মুখ
আমি কি এ হাতে আর কোনোদিন
পাপ করতে পারি ? '
নিস্তব্ধ ঘর,ডালিয়ার চোখটা চলে যায় দূরে রডোডেনড্রন গাছের সারির দিকে। মনে পড়ে যায় কলেজের ফেলে আসা সোনালী দিনগুলোর কথা। একঝলক দুষ্টুমির হাসি খেলে ওঠে চ্যাটার্জীর মুখে,কানে কানে রাইকে কি যেন বলে গালটা লাল হয়ে ওঠে ওর।
অনেকদিন বাদে কলেজের রি ইউনিয়নে সবাই আসছে এবার। সেরকমই কথা হয়েছে,বিপ্লবও ছুটি পেয়েছে। সাম্যই উদ্যোক্তা,ওই সবাইকে খবর দিয়েছে। উফ্ কতদিন বাদে আবার সবাই,মেয়েগুলো আসতে পারবে কি না কে জানে।" কি রে বিপ্লবটা তো এখনো এলোনা।"
"আরে ঐ তো বিপ্লব"..." সরি রে একটু দেরি হয়ে গেলো,চুরি করা জিনিস তো সামলে আনতে একটু সময় লাগলো। আরে মুখের হাঁ গুলো বন্ধ কর। চিনতে পারছিস না,সামনে এলেই পারবি। আরে সানগ্লাসটা খোল এবার।"
সবাই একসঙ্গে বলে ওঠে," ডালিয়া...তুইইইই!"
" হ্যাঁরে বৌ চুরি করার শখ অনেক দিনের ছিলো,তাই করেই ফেললাম পরের বৌ চুরি।"
লজ্জায় গালটা লাল হয়ে যায় ডালিয়ার। ওর গালটাকে বারবার ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে বিপ্লবের,একটা জয়ের দুষ্টু হাসি খেলে যায় চোখে মুখে। বন্ধুরা ততক্ষণে হৈ হৈ করে ওঠে," আমাদের ব্রেভ আর্মিম্যান আমাদের কিচ্ছু জানায়নি দেখেছিস,চলো ছুপারুস্তম লেটস্ সেলিব্রেট।"..রাই আর চ্যাটার্জীর জন্যই হয়ত সম্ভব হয়েছে ওদের কাছাকাছি আসাটা। হয়ত মাঝে ছিলো কিছুটা না পাওয়া আর তুষারঝড়ের শীতলতা তবুও যুদ্ধ বা কষ্ট করে পাওয়ার আনন্দ বোধহয় সবচেয়ে বেশি তাই আজ একদম মনের কাছে রাখতে ইচ্ছে করে ডালিয়াকে আরো বেশি নিজের করে।
সমাপ্ত:-
Comments
Post a Comment