Skip to main content

মিস্ ইউ মেয়েবেলা

#মিস্_ইউ_মেয়েবেলা#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

"কি সাঙ্ঘাতিক মেয়ে দেখেছো! মাকে বলছে এতো কান্নাকাটি কোরোনা তো,কি আছে এতো কাঁদার? মন খারাপ হলেই চলে আসবো যখন ইচ্ছে হবে,আর তোমরাও চলে এসো। আরে যেমন হস্টেলে আমায় দেখতে আসতে তেমন। আরে হস্টেলে যাওয়া আর শ্বশুরবাড়ি আসা কি এক কথা! আমরা বাপু কেঁদে কুল পাইনি,এতোদিনের বাপের বাড়ি বাবা মা সবাইকে ছেড়ে যাওয়া।"....রিকিয়া শ্বশুরবাড়ি যাবে,সবাই এসে জমা হয়েছে,সারা বাড়িতে শোক শোক পরিবেশ,ওর বোন ডালিয়া তো কেঁদে ভাসাচ্ছে। দিদি চলে যাচ্ছে শ্বশুরবাড়ি,কে ওর হয়ে দাঁড়াবে এবার। মায়ের সাথে সাথে ডালিয়াকেও ধমকে দেয় একবার," শোন,আমার শ্বশুরবাড়ি কোন সাত সমুদ্র পারে নয় যে যেতে পারবিনা। দরকার হলেই চলে যাবি,আর সমস‍্যা হলেই ক্রিং ক্রিং, মানে টেলিফোন। আমি অন থাকবো চব্বিশঘন্টা,চাপ নিসনা। ছবি উঠছে,মেকআপ ঘেঁটে যাবে।"..তবুও ডালিয়া কাঁদে," দিদিয়ারে একা একা কি করে ঘুমোবো,আমাকে কে সাজিয়ে দেবে?"..কাঁদবেনা ভাবলেও বুকটা যেন কেমন করে ওঠে ওর। সত‍্যি তো হস্টেল থেকে আসার পর ডালিয়াটা ওর কাছেই শোয়,অনেকদিন রাত জেগে প্রেম করার জন‍্য ব্ল্যাকমেল করেছে পাজিটা,কোনরকমে ছাড়া পেয়েছে ঘুষ দিয়ে। রজতের সাথে ওর বাড়ি যাচ্ছে,রজত তো ওর চার বছরের চেনা। ধুসস্ এতো চিন্তা কি?
        যাক মেয়েটা যখন সামলে নিয়েছে তখন মনখারাপ করবে না ঠিক করে রণিতা। মোটামুটি শেষটা ঠিকঠাক ছিলো তবে ও চলে যাবার পর ওর ঘরে গিয়ে সত‍্যি হাউহাউ করে কেঁদে ফেললেন। একসময় মানে এই সেদিন পর্যন্তও ওর অগোছালো স্বভাবের জন‍্য কত বকা দিয়েছেন। রাগ করেছে মেয়ে,কখনো বা তর্কও করেছে। কিন্তু ঐ একটুখানি তারপরেই আবার সব ঠিকঠাক মায়ের কাছে গিয়ে মাকে জড়িয়ে ধরে ঠিক ভাব করে নিতো," আচ্ছা বলো কি করতে হবে,এক্ষুণি করে দিচ্ছি।"কাঁদে ডালিয়াটাও,ওর বাবাই তখন বোঝায়,"শোন দিদিয়ার তো এটাই বাড়ি,যখন খুশি চলে আসবে। আমি তো এই বাড়িতে প্রথমেই দুটো আলাদা ঘর করে রেখেছি আমার দুই মামনির জন‍্য।"
              শ্বশুরবাড়িতে এসে ওদের গাড়ি দাঁড়ায়,সারা রাস্তাই ননদ ননদাইয়ের সাথে গল্প করতে করতে এসেছে,রিকিয়া। ননদ কিছু না বললেও ননদাই বলেছে," বৌমণি গাড়িতে যত খুশি বকবক করে নাও। ও বাড়িতে গিয়ে কিন্তু নতুন বৌ তুমি তাই একটু বুঝে। আসলে শ্বশুরবাড়ি তো।"..আশ্চর্য হয় রিকিয়া এতদিন জানতো মেয়েদের চিন্তা থাকে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে,ও বাবা জামাইদেরও থাকে তাহলে। এর মাঝেই ডালিয়ার একবার ফোন হয়ে গেছে।
                 গাড়ি এসে গেটের সামনে দাঁড়ায়,ননদ মাথার ওড়নাটা ঠিকঠাক করে দেয়। তারপর আস্তে আস্তে নামতে বলে ওদের। এই প্রথম রিকিয়া বুঝলো আর দুমদাম করে হাঁটা,দৌড়ে সিঁড়ি চড়া করা যাবেনা। এখন থেকে সব আস্তে আস্তে মানে ননদাইয়ের কথায় একটু বুঝে। তাই শাড়ি সামলে গুটি গুটি পায়ে এসে দাঁড়ালো,বরণডালা নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে শাশুড়িমা,ও ঠিক করে নিয়েছে মামণি আর বাপি বলবে। মা,বাবা তো আছেই। বরণ শেষে চরণ রাখার পালা,শাশুড়ি মায়ের নির্দেশে পা রাখতে যায় দুধে আলতায় হঠাৎই বেজে ওঠে মোবাইলটা। বিরক্ত হয় শাশুড়িমা," ওহ্ নতুন বৌয়ের হাতে থাকবে গাছকৌটো,আর এখন হয়েছে এক ফোন। ওটা থাক পরে কথা বলবে,আগে নিয়মগুলো হোক ঠিকমত।"..মা আর বোনকে দেওয়া কথা রাখতে পারেনা প্রথমেই রিকিয়া,সারাদিন অন থাকবে বলেও ফোনটা আর ধরা হয়না,বাধ‍্য মেয়ের মত ফোনটা দেয় ননদের হাতে।
                ডালিয়াকে বলে আসা অনেক কথাই রাখতে পারলোনা রিকিয়া,বেশি ফোন বাজলেই একটু তির্যক দৃষ্টি দেখেছে মামণির যদিও মুখে কিছু বলেননি। একটু ফাঁকা হলেই বোনকে বলতো বোন এখানে অনেক নিয়ম বাড়ি ভর্তি অনেক লোকজন,আমি তোকে ফোন করবো কেমন যখন ফ্রী থাকবো। একটা দিনেই মনে হলো ওর অবসর সময়টা আর নেই,এটা শ্বশুরবাড়ি,যদিও কেউ তেমন কিছু বলছেনা তবুও একটার পর একটা লেগেই আছে। রজতটাও কেমন যেন বর বর হয়ে গেছে। উফফ্ সব গোছানো তোলা,আলমারিতে রাখা,কত দায়িত্ব। রাতে তো ননদের পাশে শুয়ে ভালো করে ঘুমই হলোনা। সকালে কিছুতেই উঠতে ইচ্ছে না করলেই মনে পড়ে গেলো এটা শ্বশুরবাড়ি ও বাড়ির বৌ এখানে মন মর্জিমত চলা যায়না। তাই সকাল সকাল উঠে পড়তেই হলো। যে মেয়েকে মা স্নান করতে যারে করে মাথাখারাপ করে হাল ছাড়তো সে আজ দিব‍্যি স্নান করে এসে সুন্দর পাটভাঙা জরির পাড়ের লাল হলুদ শাড়ি একমাথা সিঁদুর আর গয়নায় সাজলো। আজ যে ওর ভাতকাপড়,মা ফোন করে লক্ষ্মীমেয়ে হয়ে থাকতে বললো যাতে কেউ বদনাম না করে। মায়ের কাছে ও অনেকবার শুনেছে শ্বশুরবাড়িতে কিছু ভুল করলে বাবা মা কিছু শেখায়নি এই কথাটাই শুনতে হয়। যদিও মাকে অনেক জ্বালিয়েছে তাতে কি ওর মাকে ও জ্বালিয়েছে কিন্তু অন‍্য কেউ মা বাবাকে খারাপ বলবে তা হয়না।
         ওর ভাতকাপড় হচ্ছে,মামণির শেখানো বুলি আওড়ালো রজত মানে আজ থেকে তোমার ভাত কাপড়ের সব দায়িত্ব আমি নিলাম। একবার বলতে গিয়েছিলো রিকিয়া,মেয়েরাই তো রান্নাবান্না করে ভাত এগিয়ে দেয়,আর কাপড়জামা কিনে কেটে আনে,মানে মাকে তেমনি দেখেছে। তারপর কাচা শুকোনো সবই তো মা করতো। এবার আবার মায়ের কথা ভেবে লক্ষ্মী মেয়ে হবার চেষ্টা করলো। মনে মনে ভাবলো ধ‍্যাৎ রজতটা শপিংয়ে গিয়ে অন‍্যদিকে তাকিয়ে থাকে তাই কাপড়জামা ও একাই কিনবে পছন্দ মত। সব ভালোভাবে মিটলো,তারপর সবাইকে ঘিভাত দিয়ে তবে খেতে বসতে পারলো,ইশ্ কেমন যেন সব নোনা নোনা ঝাল ঝাল। মায়ের রান্নার মত না,অথচ প্রতিদিনই মায়ের সাথে ঝামেলা হত সব্জি খাওয়া নিয়ে,আজ সত‍্যি খুব খিদে পেয়েছে তাই মুখ বুজে শুক্তো থেকে চচ্চড়ি সবই খেয়ে নিলো। আসলে এখানে তো আব্দার চলেনা,শ্বশুরবাড়ি ইক‍্যুয়াল টু নিয়েমের ঝুড়ি। মানে সবটাই চলবেনা চলবেনা ভাব।
              বৌভাতের দিন সেজেগুজে আলো করে বসে আছে রিকিয়া,উফফ্ বিয়ের কত ঠ‍্যালা। একটু ফাঁক পেয়ে মাকে ফোন করে," কোথায় তোমরা? রজত বেশ নিজের বাড়িতে সবার মাঝে আছে। আমি বোর হচ্ছি এখানে।"..ওদিক থেকে মা ধমকায়," এসব কি কথা,চুপ করে বোস। আসছি আমরা ঘন্টাখানেক বাদে।"..দেড়ঘন্টা বাদে মা বাবা আর বোনকে দেখে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো রিকিয়া। ডালিয়া অভিযোগ করলো," ও দিদিয়া,তুই এত পাল্টে গেলি জিজুকে পেয়ে। ফোনই ধরিসনা তো।"ছোট বোনকে বোঝাতে পারলোনা রিকিয়া,ও ভুল ভেবেছিলো আসলে মেয়েবেলাটা একদিনেই কেমন যেন ভ‍্যানিশ হয়ে যায় বিয়ের পর। এখন ও আর মায়ের আদুরে ঘ‍্যানঘেনে অগোছালো মেয়ে নয়। ওরা যখন চলে গেলো রিকিয়ার বড্ড মন খারাপ হলো না না কাঁদলোনা রিকিয়া ঐ তো মাকে বুঝিয়ে এসেছিলো। রজত কেন যেন বুঝতে পেরেছিলো ওর মুখটা দেখে,তাই বললো," দুদিন বাদেই তো যাবে মন খারাপ কোরোনা।"
            ননদাই মজা করে বললো," বৌমণি ফুলশয‍্যার পর ভুলে যাবে অনেক কিছুই,তখন পতি কর্ম পতি ধর্ম হবে। মাকে বলে আসবে থাকবোনা,ওর অসুবিধে হবে।"
                    ফুলের গন্ধে, গল্পে আর আদরে রাত্রি অনেক হয়ে গেলো। ঘুমিয়ে পড়েছিলো রিকিয়া ক্লান্ত হয়ে। ভোরবেলা রজতই ডেকে দিলো,সকালে কি সব নিয়ম কানুন আছে। তাছাড়া বেলা হলে সবাই হাসাহাসি করবে। গাটা জ্বলে যায় রিকিয়ার,রজতটা কোলবালিশ জড়িয়ে পাশ ফিরে শোয়। যত নিয়ম সব মেয়েদের,কেন যে এমন হয়? নিজের বাড়ি ছাড়তে হবে,মা বাবাকে ভুলতে হবে,দেরি করে উঠলে সবাই বিরক্ত হবে,বেশিক্ষণ ফোনে কথা বললে বাঁকা চাউনি দেখতে হবে। অপছন্দের খাবার খেতে হবে। এরমাঝেই শাশুড়িমা একখানা ঝাঁটা ধরিয়ে দেয়,ওদের ঘরটা ঝাড় দেবার জন‍্য। এটাই নাকি নিয়ম। তারপর স্নান করে নিতে বলেন। যাক্ সবই করতে হলো। ইশ্ কখন যে যাবে বাড়িতে!
                 রিকিয়ার মনে খুশির পাখনা,যাক্ বাড়ি যাবে আজ। কতদিন যেন মা বাবা আর বোনের  সাথে দেখা হয়নি। কিন্তু একি,বাড়িতে যেন ও ফালতু হয়ে গেছে। সবার নজর রজতের ওপর,ও কি খাবে কোথায় হাত ধোবে। কোথায় বসবে। রিকিয়ার যেন কোন মূল‍্যই নেই। চেনা নিজের বাড়িটা নিজের ঘরটা কেমন যেন পাল্টে গেছে। সব কিছু গোছানো,ওর অনেক জিনিস মা কোথাও উধাও করে দিয়েছে। ডালিয়াটা অভিযোগ করলো রাতে ওর কাছে শুলোনা বলে।
      তবে নিজের ঘরে পরার পোশাকটা পরে যেন বাঁচলো। মা বকুনি দিলো," একি এই লাট হওয়া ড্রেসটা পরলি ইশ্,লোকজন আসছে যাচ্ছে। সিঁদুরটা পর ভালো করে।"..ওর জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করলো আচ্ছা মা রজতেরও তো বিয়ে হয়েছে ও কিছু পরবেনা। এত নিয়ম শুধু মেয়েদেরই কেনো? হঠাৎই মনে পড়লো, মা বলেছিলো," রিকিয়া সাত তাড়াতাড়ি বিয়ে করিসনা। তোর যা স্বভাব উঠতে বসতে আমাদের গালাগাল দেবে। বিয়ের পর আর কেউ ছোট ভাববেনা। মেয়েবেলাটা উপভোগ কর।"
           অষ্টমঙ্গলা থেকে ফেরার সময় খুউব কান্না পেলো রিকিয়ার,চোখের জল সামলাতে পারলোনা ঝরঝর করে কেঁদে ফেললো। ফিকে হয়ে যাওয়া মেহেন্দীর রঙ আর শাখা সিঁদুরের ছোঁয়া রিকিয়াকে যে এই কয়দিনে বলে গেছে তোর মেয়েবেলাটা সারাজীবনের জন‍্য চলে গেছে। সামনে আছে শুধু মন জয় করার জন‍্য পরপর কঠিন থেকে কঠিন পরীক্ষা। ওর কলেজের মত ছয়মাস বা বছরে হয়না,পরীক্ষা থাকে প্রতিদিনই সফল হওয়ার। নতুন জীবনে পা রাখা রিকিয়া খুব মিস্ করলো এলোমেলো ঘরে ব‍্যাগটা ছুঁড়ে ফেলে, মা খেতে দাও খুব খিদে পেয়েছে। ধুৎ এই খাবার! আমি খাবোনা,সেই দিনগুলোর কথা।
              মায়েরা বোধহয় সব বোঝে তাই ওকে বুকে টেনে নিয়ে মুখে হাসি এনে বললো," হাসিমুখে নিজের বাড়ি যা মা। আমিও তো একদিন এসেছিলাম এমনি করেই এই বাড়িতে। এখন বাপের বাড়ি যাবার সময়ই হয়না নিজের সংসার ফেলে।"...দীর্ঘশ্বাস ফেলে রিকিয়া,আচ্ছা মেয়েদেরই কেন সব ছেড়ে নিজের বাড়ি খুঁজতে বেরোতে হয়?@ইচ্ছেখেয়ালে শ্রী
সমাপ্ত:-
                 
              
                     
                  

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...