Skip to main content

জানলার পর্দা দিয়ে আলো আসায় ঘুমটা অনেক ভোরে ভেঙে গেলো,উঠে মোবাইলে সময় দেখলাম নাহ্ আরো একঘন্টা ঘুমোনো যাবে। এখনো হাল্কা শীতের আমেজ রয়েছে,এই যাহ্ দেখেছো কেমন ঢাকা চাপা খুলে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে তাই গায়ে ঢাকাটা দেবো ভাবতেই ঘুমটা ভেঙে গেলো ওর। অবশ‍্য রোজই ভাঙে আমার জন‍্য,ধারাবাহিকভাবে বছরের পর বছর দরজায় জল দিয়ে দরজাটা খুলে দেয় ঘরের লক্ষ্মীর জন‍্য। হয়ত বা প্রথমে চরম অগোছালো,অলক্ষ্মী,বেয়ারা,অসভ‍্য সব খেতাবই পেয়েছি সংসারে। কিন্তু কেন যেন লক্ষ্মী হয়ে ওর কপালেই টিকে গেলাম অনেকগুলো বছর। আমাদের ভ‍্যালেন্টাইনস ডে নেই,মানে কোনদিনই ছিলোনা। তবে আমার পরীক্ষার সময় হষ্টেলে যাতে মন খারাপ না হয় তাই প্রত‍্যেকদিন ওর পাঠানো একটা করে চিঠি ছিলো। মোবাইলে এস এম এস বা হোয়াপে ভালোবাসি টাসি বলা হয়নি কোনদিনই তেমনভাবে তবে বর্ষায় জুঁইফুলের মালা এনে যখন বলত এটা তোমার জন‍্য তাতেই মন ছুঁয়ে যেতো। এখনো জানি বিয়ের তারিখের আগের দিন দরজা খুলেই দেখবো একগোছা রজনীগন্ধা হাতে দাঁড়িয়ে ঘামটা মুছে বলবে আসতে দেরি হয়ে গেলো আজ। রাতে রজনীগন্ধার গন্ধ মনে করিয়ে দেয় অনেক সংঘাত আর সংগ্ৰামের কথা। একসময় যেগুলো মনে হত স্বপ্ন আজ সবই সত‍্যি জীবনে। হাতে হাত রেখে কখনও ফ্ল্যাটের ইএম আই,অথবা গাড়ির শোরুমে চক্কর কেটেছি কোথায় একটু কম পাবো দেখতে। আজও মাটিতে পা রেখে,মাটির স্পর্শ পেতে ভালোবাসি। একসাথে ভালোলাগে মুড়িমাখা খেতে, অথবা সবুজ দেখতে মন ভরে। কষ্ট পেলে সেই বিয়ের পর পর যতটা ভেউ ভেউ করে কাঁদতাম ততটা আর কাঁদিনা,যত্নে রাখি নিজেকে। আত্মপ্রত‍্যয়ী আর স্বাবলম্বী হতে শেখা অনেকটা তোমার কাছেই,একটা নরম মনের কাঁদামাটি মাখা মেয়ের মনের খবর একটু হলেও রেখেছিলে বলে সম্পর্কটা টিকে গেলো চকোলেট গোলাপফুল ছাড়াই আলুবেগুনের হিসেব করতে করতে আর রান্নাঘর,সংসারকে ভালোবেসে। দুজনেরই আজ মা বাবা কেউ নেই,তাই মজা করে
বলি তুমি পিতা মাতা বন্ধু সখা স্বামী প্রেমিক সবই।

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...