Skip to main content

মাতৃত্বের ষষ্ঠী

#যশোদা#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#
            

#মাতৃত্বের_ষষ্ঠী#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

    গল্প (১)

                   "টুয়া শোন তোর এইসব, কি আর বলবো,বলতেও আমার লজ্জা করছে,পরকীয়া প্রেম আমার বাড়িতে চলবেনা।"
"মা শোন এই বাড়িটার একতলাটা বাবা আমাকে দিয়ে গেছে আর দোতলা দাদার। আর আমার বাড়িতে আমি যা খুশি তাই করতে পারি।"
          " আমার অত ভালো জামাইটা সে কি দোষ করলো যে তোকে বন্ধুত্বের নাম করে বিপ্লবের সাথে ঘুরে বেড়াতে হচ্ছে?"
         " ছিঃ মা তোমাকেও ও হাত করেছে শেষে?
একেই তো মেয়েটাকে বিগড়েছে দিনরাত খেলনা দিয়ে আর ক‍্যাডবেরি খাইয়ে। আমি বলে রাখলাম ও যেখানে যায় যাক আমি কিন্তু মেয়েকে ছাড়বোনা।"
          "তাহলে নিজেকে সামলে চল,মেয়েটাও তো বড় হচ্ছে একটু একটু করে।"
  " কেন ও তো বিপ্লবকে খুব ভালোবাসে।সেদিনই তো ওর সাথে বেড়াতে গিয়ে কত খুশি হয়ে ফিরলো  হাতে একটা এত বড় টেডি নিয়ে। সে কি আনন্দ!"
        " মা বাবার মধ‍্যে বন্ধন ভালো থাকলে বাচ্চারা ভালো মানুষ হয় এটা জানিসনা?"
    "বিপ্লবের সাথে আমার অনেকদিনের বন্ধুত্ব,আর এখন তো আমার বিজনেস পার্টনার, ও তো সবই জানে।"
     " এতই যখন বন্ধুত্ব বিয়েটা করেছিলি কেন শুনি? শুধু শুধু চারটে জীবন নষ্ট।"
     " তোমার মৃত বান্ধবীর ছেলে তোমাকে খুব ভালোবাসে, মণিমাসি বলে। তখন তো কতই ঘুরঘুর করেছে আমার পেছনে। তোমরা বলনি ওকে বিয়ে করতে?"
      " বলেছিলাম,এত ভালো ছেলেটা তাই ভেবেছিলাম তুই সুখে থাকবি। না করলেই পারতিস,তখন তো রাজী হয়ে গেলি বেশ। কি বলবো আর তখন তো  বিপ্লব বড়লোক  ছিলোনা,তাহলে ওকেই করে ফেলতিস তাইনা?"
         " মা তোমার মনে নেই বিপ্লবকে আসতে বারণ করেছিলাম বলে কিভাবে হাতটা কেটেছিলো,কতগুলো সেলাই আর রক্ত দিতে হলো। তখন তো সৃজিতও বলেছিলো আমায় দেখতে যেতে। একটা ছেলে আমার বন্ধু,বাড়িতে একটু আসা যাওয়া করে সেটাই সহ‍্য করতে পারোনা?"
           নমিতা বলতে পারেননা সারাদিন বাড়িতে থেকে এটাও তার নজরে যে বেশ কয়েকদিনই আপত্তিজনক অবস্থায় মেয়েকে দেখেছেন বিপ্লবের সাথে। আর মন্দারমণিতে সৃজিতকে ড্রিঙ্ক করিয়ে এখনও ভাবলে গাটা গুলিয়ে ওঠে কি করে যে মেয়েটা এমন হলো কে জানে। নিজের সাজপোশাক,পার্লার, ঘুরতে যাওয়া আর শপিং এইসব নিয়েই আছে। আর ছেলেটাও তেমন হয়েছে কোনদিকে মাথা ঘামায়না, আর তেমনি বৌমা। সংসারে মাসে পাঁচহাজার দিয়েই কর্তব‍্য শেষ। বাদবাকি সবটাই চলে নমিতার পেনশনে। বৌমা যদি হাতে করে কখনও ডিম বা আপেল আনে হিসেব করে ফ্রীজে রাখে।
                 মাঝে মাঝে নিজেকেই অযোগ‍্য মনে হয় নমিতার হয়ত কাউকেই প্রকৃত শিক্ষা দিয়ে মানুষ করতে পারেননি। যেমন মেয়ে তেমন ছেলে কার কাছেই বা থাকবেন? অথচ নাতনিদের সামলানোর দায় ওনার,ছেলের ঘরের আর মেয়ের ঘরের দুটোকেই। যতই জ্বালাক ওই পুচকে দুটোই ওনার জীবনে একমুঠো আলো।
ছেলে মেয়ে তো কখনও ভালো করে কথাই বলেনা, মা বলে ডাকেওনা দরকার না হলে। শুধু মাতৃত্ব তৃপ্ত হয় যখন জামাই সৃজিত মণিমা বলে ডাকে। সারাদিনে দেখা হলেই মণিমার শরীরের খবর বোধহয় ঐ ছেলেটাই রাখে।
            নমিতা সেদিন আর নিচে নামতে পারেননি যেদিন সৃজিত চলে গেলো বাড়ি ছেড়ে। কেন যেন মুখ দেখাতে ইচ্ছেই করেনি ছেলেটাকে,বড় আশা করে এনেছিলেন ছেলেটাকে এই বাড়িতে। ভেবেছিলেন আদর করে নিজের ছেলে করেই রেখে দেবেন সারাজীবন কিন্তু হলো কই? মেয়েটা শেষ পর্যন্ত কেন যে এমন একটা কাজ করলো কে জানে?
         "মণিমা আমি আসছি,আর থাকতে পারছিনা এখানে।শুধু মেয়েটার জন‍্য খুব মন খারাপ হবে। ওকে দেখতে আসবো কখনও।"
     চোখটা জলে ভেজা নমিতার,কে জানে কোথায় থাকবে কি খাবে? বাড়িতে তো কেউই নেই ওর।
          মাঝে কেটে গেছে কয়েকটা মাস,এর মধ‍্যে দুবার এসেছে ছেলেটা বড্ড চেহারাটা খারাপ হয়ে গেছে।
                   দুদিন আগে থেকেই খুব মনটা খারাপ নমিতার গতবছরও মেয়েকে টাকা দিয়েছেন সবার জামাকাপড় কিনতে। আর এই বছর জামাইষষ্ঠীর জন‍্য কোন কিছুই করতে ইচ্ছে হচ্ছেনা। শুধু নিয়মরক্ষা করে পুজো দিয়েই ছেড়ে
দেবেন আর বাচ্চদুটোকে দুটো জামা।
                   সকালে ফ্ল্যাটের বেলটা বেলটা বেজে ওঠে,শনিবার অফিস ছুটি তাই তখনও বিছানা ছাড়েনি সৃজিত। দরজাটা খুলে অবাক হয়ে যায়,"মণিমা!তুমি হঠাৎ! ফোন করলেই তো পারতে।"
            সৃজিতকে কথা বলতে না দিয়ে ভেতরে ঢুকে যায় নমিতা। হাতের ঝোলাটা রান্নাঘরে রেখে ওর হাতে হলুদ সুতোটা বেঁধে ছোট্ট পাখাটা দিয়ে বাতাস করে ষাট ষাট করতে থাকেন।
    " কিন্তু মণিমা,আমি তো আর ও বাড়ির জামাই নই,টুয়া জানলে রাগ করবে।"
        " ডিভোর্সটা তো এখনও হয়নি তোমাদের আর হলেই বা কি, আবার না হয় ফিরে যাবো পুরোনো সম্পর্ক মণিমাসিতে। নাই বা হলাম শাশুড়িমা মাসির দরদই বা কম কি? আজ ষষ্ঠীরদিন সন্তানের মঙ্গলে পুজো দেবোনা?"
                সৃজিতের অগোছালো রান্নাঘরে বহুদিন বাদে আজ মায়ের হাতের ছোঁয়া। নমিতা মন দিয়ে রাঁধছেন ভাপা ইলিশ,ছেলেটা খুব ভালোবাসে খেতে। খেয়ে যে কি প্রশংসা করত! আজ এক অন‍্য ষষ্ঠীর পার্বণ ওদের জীবনে যেখানে আছে শুধুই মাতৃত্বের তৃপ্তি।

*************************

গল্প: ২

#সৌভাগ্যের_ষষ্ঠী#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

"এই শাড়িটা পরে আজ অফিসে যা তোর বাবা পছন্দ করে এনেছে আমার একটা আর তোর একটা।"
  " আচ্ছা মা,বাবা কেন এই রঙের শাড়িগুলো আনে বলতো? ওটা থাক চিনি এলে পরবে।"
" চিনির জন‍্যও তো এনেছি ও হোয়াটস আ্যপে দেখে বলেছে এটাই থাক নোনার জন‍্য। আর নোনা তো এই রঙটাই পছন্দ করে।"
            মনটা হঠাৎ হারিয়ে যায় নম্রতার সত‍্যিই তো এই চেরি লাল রঙটা ওর প্রিয় ছিলো। আর পিয়ালের পছন্দ সবসময় টকটকে লাল,নীল,সবুজ। কিন্তু সবটাই তো অতীত, এখন ওর হাল্কা সবুজ,হাল্কা গোলাপী,হাল্কা আকাশী এই রঙগুলোই অভ‍্যেস হয়ে গেছে। কখনও ভুলেও আর তাকাতে ইচ্ছে করেনা ঐ রঙগুলোর দিকে।
           চিরশ্রী ওর ননদ কাম বন্ধু,একসঙ্গে ইউনিভার্সিটি পড়তো ওরা। বোনকে মাঝে মাঝে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিত পিয়াল আর সেখানেই নম্রতাকে দেখে পছন্দ হয়ে আরও যাতায়াত বেড়ে যায়। প্রথমে প্রেম তবে বেশিদিন নয় খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে একদম ওর পরীক্ষার পরেই।
    বন্ধুত্বের সম্পর্ক গাঁটছড়া বাঁধলো ননদ বৌদিতে দুজনে দুজনকে ভালোবেসে ডাকতো নোনা আর চিনি। নম্রতা নোনা বৌদি আর চিরশ্রী চিনি ননদ।
বোন আর বৌ কাউকে ছাড়াই চলতোনা পিয়ালের।মজা করে বলতো নুন আর চিনি দুটোই আমি বেশি খাই। " মা তোমার ছেলেকে সামলাও দেখো খুব তাড়াতাড়ি হাইপ্রেসার আর সুগার হবে।" ওদের কান্ড দেখে হাসতেন মাধবী পিয়ালের মা।
      প্রেসার আর সুগার কিছুই হয়নি,হয়েছিলো শুধু জ্বর। জ্বরেও মানুষ মারা যায়! কেমন যেন থমকে গিয়েছিলো নম্রতা। চিনির মিষ্টি হাসিটাও আর শোনা যায়না।
            বাপের বাড়িতে নম্রতার আছে এখন শুধু দাদা বৌদি। পিয়ালের চলে যাওয়ার ধাক্বাটা বোধহয় ওর মা নিতে পারেনি। যদিও পিয়াল চলে যাওয়ার পর অনেকবারই ও বাড়ি থেকে ডাক এসেছিলো নম্রতা কেন যেন যেতে পারেনি এই বাড়িটা ছেড়ে। তিনটে বছরের কত স্মৃতি আর ভালোবাসার জলছবি এই বাড়িটা ঘিরে,এখনও সন্ধ‍্যেবেলা ছাদে অথবা বারান্দায় দাঁড়িয়ে মনে হয় একটু বাদেই হয়ত আসবে অফিস থেকে।
                পিয়াল চলে যাবার পর থেকেই বাড়িতে ষষ্ঠী হয়না। নম্রতার শাশুড়ি চাইলেও চিনি কিছুতেই রাজি হয়নি। ষষ্ঠী একটা সাদামাটা দিনের মতই কাটে ওদের,শুধু চিনি নোনা আর জামাইয়ের নামে ঠাকুরের পায়ে টাকা ছুঁইয়ে রেখে দেন মাধবী। বাড়িটা কেমন যেন বড় ফ‍্যাকাশে হয়ে গেছে তাই চিনিই বললো," মা নোনাকে বলো যদি কয়েকদিন ছুটি পায় আমরা একটু ঘুরে আসি কোথাও থেকে,তোমাদের জামাই বলছিলো।"
               হরিদ্বারে গঙ্গারঘাটে আরতি দেখতে গিয়ে ওর শাশুড়িমায়ের গায়ে চাদরটা জড়িয়ে দেয় নোনা,বাবার মাফলারটা মাথা দিয়ে জড়িয়ে দেয়। " আপনার দুই মেয়ে না? তাই দেখছি বড় মেয়ে ভীষণ খেয়াল রাখে দেখছি আপনাদের। সত‍্যি কি ভালো ভাগ‍্য আপনার। আমার আর এমন কপাল কোথায়?"
                   কার কপাল ভালো আর মন্দ বলতে ইচ্ছে করলোনা সেই মুহূর্তে মাধবীর শুধু বললেন," সত‍্যি আমার মেয়েদের কোন তুলনা হয়না।"
                       গঙ্গার আরতির মঙ্গলশিখা আরেক বার্তা নিয়ে এলো নম্রতার জীবনে। ও বুঝতেই পারেনি কখন এমন হলো। এই কয়েকদিন শুধু বুঝিয়েছে ওকে চিনি আর মা বাবা। আর ওর মনে হয়েছে কেন এলো বেড়াতে এখানে,বাড়িতেই তো ওর এখন সবচেয়ে ভালো লাগে।
          প্রস্তাবটা উনিই দিয়েছিলেন, এই কদিন গঙ্গারঘাটে এলেই ঐ ভদ্রমহিলার সাথে দেখা হত। নম্রতার সবটা শোনার পরেও ওরা রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। "আমাদের ভালো লেগেছে ওকে,আপনারা কথা বলুন। ছেলেরও পছন্দ হয়েছে।"
            নম্রতা কেঁদে ফেললো," আমি তোমাদের এত বোঝা যে আমায় বিদায় করতে চাইছো? তোমাদের কে দেখবে? ও যে অনেক দায়িত্ব দিয়ে গেছে আমাদের ওপর।"
       " আমাদের কর্তব‍্য করতে দিবিনা? চোখ বোজার আগে একটু শান্তি পেতে চাই আমরা। এবার মেয়ে দিয়ে ছেলে আনবো ঘরে।"
               আবার সাজলো ওদের ফ‍্যাকাশে বাড়িটা ঝলমলে আলোয়। চিনি শুরু করলো কেনাকাটা নোনার জন‍্য কিনলো রূপোলি জড়ির পাড়ে চেরি লাল শাড়ি আর ফুলশয‍্যার তত্ত্বে গাঢ় নীল কাঞ্জিভরম শাড়িতে লাল পাড়। নম্রতার অগোছালো জীবনটা গুছিয়ে দিতে চাইলো ওরা  সবাই আবার নতুন করে।
       জীবনে হয়ত সব একসাথে খারাপ হয়না তাই শুভব্রতও নম্রতাকে আবার রাঙালো ভালোবাসার অনুরাগে। এই বাড়ির শ্বশুর শাশুড়ি নিজেরাই বলেন," অফিস ফেরত ঘুরে এসো ঐ বাড়িতে সময় পেলেই। তোমার জন‍্য মন কেমন করছে ওদের।"
              আজ জামাইষষ্ঠী অনেকদিন বাদে আবার ষষ্ঠীতে রান্না আর পুজো নিয়ে বড় ব‍্যস্ত দুই মেয়ের মা মাধবী। চিনি আগেই এসে গেছে নোনা আসবে সকালে। এতদিন চিনি এই বাড়িতে এলে নোনা সব গুছিয়ে রাখতো,আজ এ বাড়ির বড়মেয়ে আসছে বিয়ের পর প্রথম ষষ্ঠী করতে বাড়িতে।
               " উলু দে,আমার পাখাটা নিয়ে আয়।"
দুই জামাইয়ের হাতে হলুদ সুতো বেঁধে পাখার বাতাস দিয়ে কপালে ঠেকান মাধবী। আদরে কাছে টানেন দুই মেয়েকে। নম্রতা একদিন পা রেখেছিলো এই বাড়িতে বৌমা হয়ে আর আজ এলো শুধুই মা হয়ে। তাইতো মাধবীকে বকা দিয়ে সরিয়ে হলুদ লাল ডুরে শাড়ির আঁচলটা পেঁচিয়ে তেল হলুদে আঙুল রাঙিয়ে রান্নাঘরে রান্নায় ব‍্যস্ত হয়ে পড়লো। বেশি কিছুনা শুধু একচিলতে ভালোবাসাই বোধহয় ভালো করে দিতে পারে অনেক ষষ্ঠী এমনই ম‍্যাজিকটাচে।
          

সমাপ্ত:-

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...