#তিলোত্তমা#
#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#
কইরে রাক্ষসী..দে তো মা দেখি আজ আবার কারা আসছে মানে কোন পাপী তাপীরা,বলেই একটা হাঁক মারি চেম্বারে ঢুকেই।
রাক্ষসী আমার মহিলা আ্যটেনডেন্ট।আমার চিরকালই সেন্স অফ হিউমার একটু বেশি কবে একদিন মুখ থেকে মজা করে ঐ নামটা বেরিয়েছিলো তারপর থেকেই ওটাই ওর নাম হয়ে গেছে।আর আশ্চর্যভাবে ও ঐ নামেই সাড়া দেয় হেসে হেসে।কোনদিন যদি ওর আসল নামে ডেকে ফেলি মুখটা বেজার করে বলে,"ঐ নামটাই তো ভালো ডাক্তারবাবু। ধুর এটা যেন কেমন অচেনা লাগছে।"
হেসে ফেলি আমিও,কেউ কখনো শুনেছেন রাক্ষসী বলে ডাকলে লোকে খুশি হয়!
আমি চামড়ার ডাক্তার,ভদ্রভাষায় স্কিন স্পেশালিস্ট। মানুষের চামড়ার দাগছোপ ধুয়ে মুছে ঝাঁ চকচকে করাটাই আমার কাজ।
প্রত্যেকদিন কত নতুন মুখ দেখি,তা বেশ লাগে কিন্তু। নিজের মুখকে মুখোশের আড়ালে কেউ লুকোতে পারেনা আমার কাছে। মুখোমুখি বসতেই হয়,কথাও বলতে হয় একদম খুলে।রাক্ষসী মাঝে মাঝে খুব বিরক্ত হয়.."আচ্ছা ডাক্তারবাবু আপনি এত কথা বলেন কেন?সময় নষ্ট হয়না বুঝি?কে জানে বাপু,আমরা তো জানি ডাক্তারদের কথার আর সময়ের অনেক দাম।"
তেমন দামী ডাক্তার আর হতে পারলাম কই রে? তাই হয়ত নিজের একঘেয়েমি দূর করি একটু মজা করে আর কথা বলে। যাক্ এক দুই করে নাম ডেকে রোগী দেখতে শুরু করি।ব্রণ,ফুসকুড়ি, পোড়া, কাটা ছেঁড়া, মাথার চুল উঠে পাতলা হচ্ছে,শ্বেতী,লেপ্রসী এমন কি দাদ চুলকানি হাজা আর আ্যলার্জীর পেশেন্টও আসে আমার কাছে।
কখনো মজা করি আবার কখনো বকাঝকাও করি। এই সেদিনই তো একজন এলেন..মাথার চুল পেকেছে তাতে রঙ করেও শান্তি নেই দাড়ি গোঁফ কালো রাখতে সস্তার রঙ লাগিয়ে গালে ছোপছোপ দাগ করেছেন,এমনকি ঠৌঁটের ওপরেও। উফ্ বয়েস বাড়বে তবুও তাকে টেনে নীচে নামাবার শখ! মানুষ বড়ই বিচিত্র প্রাণী ছোটবেলায় ভাবে কবে বড় হবে।আর বড় হলে ছোট সাজতে ইচ্ছে করে।আরে সব বয়েসের একটা আলাদা ফ্লেভার আছে,যদি শরীরটা সুস্থ থাকে।সেদিকে খেয়াল না রেখে ঘষা মাজা নিয়ে বেশি ব্যস্ত মানুষ।উদুম গালাগাল দিলাম ভদ্রলোককে।শেষে মুখটা দেখে আমার হাসিও পেলো করুণার সাথে সাথে। খচখচ করে ওষুধ লিখলাম বেশ কয়েকটা।
আবার ডাকি,নেক্সট তিলোত্তমা সেন। মনে মনে ভাবি বাবা একদম সুন্দরী তিলোত্তমা..ডাকতেই এলেন একজন মহিলা। মজা করতে পারলাম না ওনার অবস্থা দেখে। আঁতকে উঠে বললাম একি! এমন করে মুখটা পুড়লো কি করে?গালের অবস্থা তো খুবই খারাপ জ্বালা করছে না? একটু দরজার দিকে তাকাই খুঁজতে চাই বাড়ির কাউকে। একপাশের গালে বেশ বড় বড় ফোসকা, গলাতেও গেছে কিছুটা। কিভাবে হলো এইসব?
"বাড়িতে অনেক লোকজন খাওয়ার কথা ছিলো,শাশুড়িমা তাড়া দিচ্ছিলেন সকাল থেকেই বসিয়েছিলাম রান্না তবুও তখনো হয়নি। পাবদা মাছ ভাজতে গিয়ে একদম ছিটকে এলো চোখেমুখে।"
বাহ্ খুব ভালো,মানে মাছগুলো একটু গরম তেল ছিটিয়ে আপনার সাথে খেলা করে গেছে আর কি?তা জ্বালা করেনি?কি দিয়েছিলেন?
"খুব জ্বালা ডাক্তারবাবু,কিন্তু যা বকা খেয়েছি সবার কাছে তখন ঐ অবস্থাতেই বোরোলীন লাগিয়ে বাকিটা শেষ করেছি।"
বলতে বলতে ভদ্রমহিলার চোখের কোণের জল গড়িয়ে গালে। তা বাড়ির লোক কোথায়?
ভদ্রমহিলাকে চুপ করে থাকতে দেখেই অনেকটা বুঝে যাই। ফোস্কা হলেও বেশ ভালো পুড়েছে,নরম চামড়া তাই দাগ উঠতে সময় লাগবে। আজ ওষুধ দিলাম অনেকটা যন্ত্রণা কমবে,ঘা গুলোও শুকোবে তাড়াতাড়ি। দেখলাম কৃতজ্ঞতায় ভদ্রমহিলার চোখে জল এলো।
" আচ্ছা ডাক্তারবাবু, আমার মুখের দাগগুলো মিলিয়ে যাবে তো?"
আরে মশাই আপনি কি ভাবেন বলুন তো আমাকে? আমি কি ভগবান? আরে সব ধুয়ে মুছে যাবে একদিন। আবার আসুন দেখবো কতটা কি ঠিক হলো বলেই একটা ডেট দিয়ে দিলাম।
পরের বার এলেন চামড়া উঠে তখন লালচে সাদা স্তর মুখে।বাহ্ অনেকটা কমেছে তো! হতাশার সুর গলায় ফুটে ওঠে," আচ্ছা ডাক্তারবাবু, এগুলো কি সাদাই থেকে যাবে? শাশুড়িমা কথায় কথায় বলে একেই তো ঐ কালো রঙ তারপর মুখ পুড়ে এখন সাদা সাদা দাগ,একেবারে গয়নায় সেজেছে মুখ।"
আমি হেসে বলি তা ভালোই তো গয়না পরে কত সুন্দরী হয়েছেন!
মাথা নিচু করে ভদ্রমহিলা বলেন," বরও সেদিন বলছিলো তোমাকে দেখে তো মনে হয় মুখে শ্বেতী হয়েছে। আসলে ও খুব দেখতে সুন্দর তো,ফর্সা আর আমি কালো তাই সবসময়ই কথা শুনি।তারপর এখন মুখে চামড়া উঠে এইরকম দাগ হয়ে গেছে সাদা সাদা..."
আমি সমস্যাটা বুঝেও না বোঝার মত করে বলি..আপনারা মেয়েরা শুধুই ত্বক আর রঙ চুল নিয়েই গেলেন।কত টাকা যে খরচ করেন ঘষা মাজা করে। আর বেশি ঘষা মাজা করতে গিয়েই যে কত বিপত্তি হয়।
প্রেসক্রিপশন লেখার মাঝেই মুখটা কাচুমাচু করে বলে তিলোত্তমা,"আসলে আমার তো অত পয়সা নেই নিজের যে ঘষা মাজা করবো ডাক্তারবাবু।"
বুঝতে পারি তাই জিজ্ঞেস করিনা,ওনার অবস্থা বাড়িতে হয়ত কাজের লোকের থেকেও খারাপ।কারণ আমার বাড়ির ঝুমার মায়েরও অসুখ,দেশ,ছুটি ছাটা আছে উনার হয়ত তাও নেই। মানে ২৪ ×৩৬৫ র দৈহিক শ্রমের বিনিময়ে খাওয়া পরার চুক্তি। চামড়ার যত্ন নিতে নিতে কখন যে মুখের ভাষা,চোখের ভাষাগুলোও জানা হয়ে গেছে আমার বুঝতেই পারিনি।
তা কিছু একটা করলেই তো পারেন,আজকাল তো কত কি করছে লোকে। এই যে আমাদের রাক্ষসী সেও তো কিছু রোজগার করে মাস গেলে।
ডাক্তারবাবু একটু বেশিই কথা বলেন তবুও সব কথার উত্তর হয়না।চাদরের ভেতরেই পেটে হাত রাখে তিলোত্তমা।পর পর দুটো বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে। শরীরের চাহিদা গোকুলের বরাবরই বেশি। রূপের ঘাটতি দেহ দিয়ে মেটায় তিলোত্তমা। জানেনা আবার মা হতে পারবে কিনা! উঠতে বসতে কুরূপা,বন্ধ্যা সব বিশেষণই জুটে যায়।অথচ একদিন মোটা পণের বিনিময়েই ওর বাবা তুলে দিয়েছিলেন ওকে গোকুলের হাতে।মানে টাকার বিনিময়ে হাতবদল,একবার ফেল করে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দেবার পরই মেয়ে উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছে এই যোগ্যতায় বিয়ে দিয়ে দেন। ওর বাবার দেওয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে গোকুল দোকানে যায়,শুনেছে পণের টাকায় বিয়ের খরচ করে আর কিছু বাঁচেনি নাকি। তবে তিলোত্তমা জানে দোকানটা আগের থেকে বড় করেছে গোকুল ওর বিয়ের গয়নাগুলো বন্ধক দেবার নামে বিক্রি করে। বাড়িতে আরো দুটো বোনের পর পর বিয়ে দিয়ে বাবা মোটামুটি নিঃস্ব তাই মুখ বুজে কাজ করে যাওয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
মাঝে মাঝে হাসি পায় শাশুড়ি যখন নতুন বিয়ে হয়ে আসা দেওরের বৌয়ের সাথে ওর রূপের তুলনা করেন। সত্যিই কেনই যে ওর পিসি সিনেমা দেখে ওর তিলোত্তমা নামটা রেখেছিলো! ওর দেওরের প্রেমের বিয়ে,কিছুই পায়নি বিয়েতে। তবুও জায়ের ফর্সা রঙ,বিয়ের পর দুমাস যেতে না যেতেই মা হতে চলেছে সেটাই অনেক।
বেশ কিছুদিন তিলোত্তমা সেন আমার চিকিৎসায়। প্রতিবারই মুখটা করুণ করে চোখে জল এনে বলে,"ডাক্তারবাবু আমার দাগগুলো কি মুছবে না?"
আমি স্বভাবজাত ভঙ্গীতেই রাগ করে কখনো মজা করেই বলেছি। কেন একটু দেরিতেই যদি মোছে ক্ষতি কি? উত্তর পেয়েছিলাম,"আসলে কেউ মুখের দিকে তাকাতে চায়না যে।" আবার মজা করেছিলাম কে তাকাতে চায়না?বর না শাশুড়ি? না তাকাক আপনি নিজের মুখটা ভালো করে আয়নায় দেখে খুব ভালোবেসে যত্ন করে এই ওষুধটা দিনে দুবার লাগাবেন। ভালোবাসাতে সব হয়,ঠিক দাগ উঠে যাবে। বর না তাকায় না তাকাক।
তারপরেও বেশ কয়েকবার ডাক্তারবাবুর কাছে গেছে তিলোত্তমা। একটু একটু করে মুখের ক্ষত আবছা হচ্ছে,কিন্তু ক্ষত কি শুধু মুখেই হয়?মনেও বোধহয় হয়। গোকুল কেমন যেন একটু করে দূরে সরে গেছে ওর থেকে। মাঝে মাঝে অসহ্য লাগে মনেহয় ছোটখাটো একটা কাজ যদি পায় করতো। কি জন্য সারাদিন সংসারে খাটে তাও বোঝেনা। তবে ডাক্তারবাবুর চেম্বারের রাক্ষসীকে দেখে মনে হত,যদি এই রকমও কোন কাজ পেত বিকেলে চার পাঁচ ঘন্টার জন্য তবুও হত।
শেষবার তিলোত্তমা সেনকে প্রেসক্রিপশন করার সময় বলে দিয়েছিলাম,শুনুন আপনার মুক্তি হলো। এবার যতটুকু আছে সেটা একটু একটু করে ওষুধ লাগাতে লাগাতে উঠবে।হয়ত একটু সময় লাগবে। মুখটা করুণ করে বলেছিলো," ডাক্তারবাবু একটা কাজ পাওয়া যায়না,মানে ঐ আপনার রাক্ষসীর মতো কোনো চেম্বারে।"
একটু ভেবে একটা ফোননম্বর দিয়েছিলাম,বলেছিলাম যোগাযোগ করতে। হয়ত কিছু একটা হয়ে যাবে। তারপর রোগী দেখার ভীড়ে অনেক মুখই হারিয়ে যায় তিলোত্তমাও হারিয়ে গিয়েছিলো একসময়।
আমিও ব্যস্ত হয়ে গিয়েছিলাম মুখকে সাজাতে কখনো বা ঢাকতে দাগছোপ আর ক্ষত।
নিত্য মজা আর বকাঝকাতে কাটিয়ে দিই নিজের একঘেয়েমি পরিচিত ছন্দে। কেটে গেছে মাঝে বেশ কয়েক বছর। আমার মাথার চুলেও লেগেছে সাদারঙের প্রলেপ তবে রঙ করিনি।
" ডাক্তারবাবু আসবো?"
অবাক হয়ে যাই,ডাকলাম পুরুষের নাম ধরে ভেতরে ঢুকে এসেছেন এক মহিলা। বিরক্ত হয়ে বলি আপনি কি?...."আমি আগে দেখাতাম ডাক্তারবাবু।"..তাতে কি রোগীকে নিয়ে আসুন।
" আসছি ডাক্তারবাবু, ঐ যে আমাকে আপনি মুখপুড়ি বলে ডাকতেন।"
হঠাৎই নামটা মনে এলো,হাসিও পেলো। তা আবার কি মনে করে?এখন তো আর মুখপুড়ি বলা যাবেনা,মুখ তো ঠিকঠাক। কি যেন নাম ছিলো..আমি মনে করার চেষ্টা করি।
" তিলোত্তমা সেন ডাক্তারবাবু।"
ততক্ষণে পেছনে মুখ বাড়িয়েছে আরেকজন। ও এই তাহলে রোগী যার নাম ধরে আমি ডেকেছি।
"ডাক্তারবাবু আপনার ওপর বিশ্বাসেই একে নিয়ে এসেছি আপনার কাছে যদি একটু দেখেন।"
দেখে আর বুঝতে বাকি থাকেনা। গম্ভীর গলায় বলি কতদিন হয়েছে। ওদিক থেকে উত্তর আসে,"মাসছয়েক হবে,প্রথমে কবিরাজি করেছিলাম। ভালো হয়নি। তারপর ওকে বলতেই ও বললো।"
আশ্চর্য লাগলো, কেমন বৌ রে বাবা বরের কুষ্ঠ মানে ভালো ভাষায় বলতে গেলে লেপ্রসী হয়েছে তার কোন মাথা ব্যথা নেই। যদিও আমার চিকিৎসা আর বিশ্বাস বলে সারবে কিন্তু সময় লাগবে।
খুবই বিরক্ত হয়ে বলি তা এতদিন কি করছিলেন?আমার কাছে শেষে কেন?পাতা ছাতা বেটে যেমন লাগাচ্ছিলেন লাগালেই তো পারতেন। রোগী কিছু না বললেও,তিলোত্তমা বলে উঠলো.."আমি তো জানতামই না। যখন শুনলাম তখন বললাম আপনার কথা। যদি কিছু করা যায় দেখুন।"
পুরোনো দাম্পত্য কি এমনই হয়! কেমন যেন গা ছাড়া ভাব মহিলার। ভদ্রলোকও কেমন যেন চুপ করে আছে।
যাক গে এই ভেবে ওষুধ লিখে বললাম বেশ কিছুদিন লাগবে সারতে।সেই মত ধরে চেকআপে আসতে হবে আর ওষুধগুলো বুঝে নিন এবার। বলেই তিলোত্তমার দিকে তাকাই।
" ওনাকে বুঝিয়ে দিন ভালো করে,ওকেই বুঝতে হবে সবটা। কারণ ওকেই তো লাগাতে হবে আর খেতে হবে।"
আশ্চর্য লাগলো ভেবে স্বার্থপর শুধু পুরুষই হয়না মেয়েরাও সমান স্বার্থপর হয়। বৌ সাথে এসেছে অথচ কিছু শুনবেনা। একটু গম্ভীর হয়ে বললাম তা জানিনা আমার বলা দরকার তাই বললাম।
" ওর অসুখের জন্য ওর বৌ ওকে ছেড়ে চলে গেছে। মা,ভাই কেউই দেখেনা। তাই বাধ্য হয়েই আমাকে আসতে হলো।"
মুখ ফসকে হঠাৎই বলে ফেলেছিলাম,আপনার আত্মীয়?
" হ্যাঁ আমার স্বামী ছিলেন এক সময়। তাই ঐ টুকু পরিচয়ের জন্যই যখন কেঁদে পড়লো ফেলে দিতে পারিনি। নিয়ে এলাম আপনার কাছে,মানে মন্দিরে এনে দিলাম যদি ভগবান কিছু করতে পারে।"
কথাগুলো বলতে বলতে মুখটা অদ্ভুত হয়ে গিয়েছিলো তিলোত্তমার।চোখেমুখে যেন ফুটে উঠেছে করুণার বদলে এক অদ্ভুত প্রতিশোধ। আমি ওরা চলে যাবার পর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভেবেছিলাম আমাদের পোড়া দেশের সত্যিই মুখপোড়া মেয়ে এরা যারা ছেড়ে দিয়েও ছাড়তে পারেনা হয়ত বা সম্পর্কের ছেঁড়া সুতোটাতে গিঁট বাঁধতে চায় যত্নে।
গোকুলকে রিক্সায় তুলে দিয়ে নিজের আস্তানার দিকে পা বাড়ায় তিলোত্তমা। নাহ্ আর ফিরে তাকাতে ইচ্ছা করেনা একবারও অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করা গোকুলের দিকে। ওর বাবার দেওয়া বাইকে করে সখীকে পেছনে বসিয়ে বাড়ি এনেছিলো।ওদের ঢলাঢলি দেখতে দেখতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলো তিলোত্তমার জীবন। প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রায় লাথি মেরে তিলোত্তমাকে বাইরে দূর করে দিয়েছিলো গোকুল। বলেছিলো,"মুখপোড়া বাঁজা মেয়েমানুষ তোর মুখ দেখাও পাপ। তার আবার এত চোপা।এখানে থাকলে ঢলাঢলি দেখেই থাকতে হবে।এখনো যে রাতে তোর কাছে শুই সেটাই তোর অনেক ভাগ্য।" মুখের ক্ষত দূর হলেও মনের ক্ষত হয়ত আজও সারেনি ওর তবুও নিজে যেটুকু সামান্য রোজগার করে তাতে দিনের শেষে নিজের সম্মানের ভাতটুকু বড়ই তৃপ্তিতে খেয়ে ছোট একফালি বিছানায় ঘুমোয়। গোকুলকে আজ বড় করুণা হয় তিলোত্তমার,কথায় বলেনা ভগবানের মার।
সমাপ্ত:-
Comments
Post a Comment