Skip to main content

বৌয়ের সায়া ব্লাউজ কিনতে যাওয়া যেমন অলোকের কাছে অসম্মানের তেমন বাড়ির ঝাড়পোছ করা বা তরকারি কাটাও মেয়েদের কাজ বলেই পরিচিত। এই গুলোতে সাহায‍্য করতে তার পৌরুষে লাগে। বিয়ের রাতেই বেড়াল মারার প্রবাদ অনুযায়ী কি কি কাজ তার স্বভাববিরোধী তা সেদিন রাতেই বলে দিয়েছিলো মাধবীকে। মাধবী অবশ‍্য একটা কথাও ভোলেনি সেই থেকে চেষ্টা করেছে কোন কারণেই যেন অলোকের অপছন্দের কাজ তাকে না করতে হয়।
    তাই একা হাতেই সংসারের মেয়েদের জন‍্য নির্দিষ্ট কাজগুলো একাই করার চেষ্টা করে। এই যেমন রান্না করা,কাজের লোক না এলে ঘর ঝাড় দেওয়া,বাসন মাজা,কাপড় কাচা সবই। এমন কি ওয়াশিং মেসিনেও কাপড় কাচাটাও মাধবীর মানে মেয়েদেরই কাজ।এছাড়া ঘর গোছানো,কাপড় মেলা আর তোলা,আসবাবপত্র মোছা সবই। নিজের জিনিস যে ব‍্যবহার করে জায়গা মত রাখতে হয় তা ঠিক জানেনা তাই এই বাড়িতে মাধবীর ছেলেমেয়েরাও। অভিমান হয় খুব মাধবীর মাঝে মাঝে একদিন বলেছিলো অলোককে.." আচ্ছা সব কাজই তো শুনি মেয়েদের কাজ।ছেলেদের করণীয় কি কাজ আছে বলতে পারো?"
     " একদম বলতে পারি,বাজার থেকে ভালোমন্দ আনা।মানে গুছিয়ে বাজার করা,খাওয়া,অফিসের কাজ করা,দরকারে ব‍্যাঙ্কে যাওয়া।"
        আত্মসম্মান মাধবীরও আছে হয়ত এটুকু সবারই থাকা উচিত যদিও ওর বোন প্রীতি সবসময় বলে.." শোন দিদি সংসারটা সবার সবাই এখানে থাকে তাই সবাই মিলেমিশে কাজ করবে।এরমধ‍্যে ছেলেদের কাজ আর মেয়েদের কাজ বলে কি আছে শুনি? তুই কিছু বলিসনা বলে পেয়ে বসেছে। সারাদিন খেটে মর ওদের কিছুই যায় আসবেনা।"
          সত‍্যিই কি সব কথা ভাগ করে নেওয়া যায়?অনেক সময় মনই হয়ত লুকিয়ে রাখে মনের খবর বলে ভালো থাকতে হবে এভাবেই। তাই একদিন হঠাৎ বৃষ্টিতে মাধবীর ইনার তুলে অলোক যে ইঙ্গিত করেছিলো তা খারাপ লাগলেও প্রত‍্যেকদিন অলোকে ইনার শুকনো করে তুলে জায়গা মত রাখার কাজ যত্নে করে মাধবী। অলোক এখনো সামন্ততান্ত্রিক যুগে হয়ত বাস করে যারা মানতো বালক,ঢোলক এবং স্ত্রীলোককে মাঝে মধ‍্যে থাবড়াতে হয় নাহলে সব ঠিকঠাক চলেনা।

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...