"কু ঝিক ঝিক
কুউউউউ ঝিক ঝিক রেলগাড়ি যাবে কবে মামার বাড়ি?"
" ওরে টুয়া আয় সোনা,কালকের পরীক্ষাটা আগে দিয়েনে গুড গার্ল হয়ে তবে তো মামাবাড়ি যাবি।"
পরীক্ষা দেবার পর মাত্র একদিন বাদেই ওরা যাবে মামার বাড়ি।আসামে,কাজিরাঙার কাছেই একটা ছোট গ্ৰামে ওর মামার বাড়ি।এখন ঝিলিকের বাপের বাড়ি খুব কম যাওয়া হয় শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে।
এদিকে শ্বশুরমশাই,শাশুড়িমা, দেওর সবাইকে নিয়ে বেশ বড় সংসার তারপর টুয়াকে স্কুলে দেবার পর এই টেস্ট ঐ টেস্ট চলছেই সারা বছর ধরে। তাই স্বাভাবিক ভাবে বছরে একবারে ঠেকেছে বাপের বাড়িতে যাওয়া।তবে যখন যায় তখন প্রায় পনেরোদিন কুড়িদিন থেকেই আসে।
তবে তাতেও সমস্যা একসপ্তাহ বাদ থেকেই মেয়ের মুখ শুকোতে থাকে...
" ও মা বাপির জন্য মন খারাপ করছে,ঠাম্মা,দাদান,কাকাইকে মিস্ করছি" শুরু হয়।
" কি বাপসোহাগী মেয়ে বাপু,আমরা তোর কেউ নই?তোর মামু,আমি,তোর দাদু যে তোকে এত এত ভালোবাসি।মামু প্রজাপতি দেখায় কোলে করে নিয়ে গিয়ে,ঘুড়ি বানিয়ে দেয় সেইসব কিছুনা তাইনা?"
দিদা নাতনীর মধ্যে ঝিলিক ঢোকেনা। মুখ টিপে হাসে শোনার জন্য পাকা বুড়িটা কি বলে?
" তুমি মামু আর দাদু সবাই খুব ভালো আমি কখন খারাপ বললাম!কিন্তু বাপিকে কে হামি দেবে বলতো?আর ঠাম্মু বলছিলো কান্না করবে আমার জন্য। আর কাকাই বলছিলো ক্যাডবেরিগুলো কে খাবে?ওগুলো তো ফ্রীজেই জমবে। আর দাদুর হজমিগুলির শিশিটা মনে হলো তাইতো..."
" এই শোন,এরপরে যখন আসবি তখন ওকে বাপির কাছে রেখে চলে আসবি।আমি আমার মেয়েকে আদর করবো ওরা ওদের মেয়েকে রাখুক কাছে।"
ছুটে গিয়ে মায়ের জামাটা টেনে ধরেছিলো টুয়া.." আমি মায়ের কাছেই তো ঘুমোই গলা ধরে। তুমি দাদু আর মামুও থাকবে আমাদের বাড়িতে।"
ছোট মানুষ তাই ওর সরল মনে কত না মেলা অঙ্কের হিসাব করে দেয় খুব সহজেই। তবে দাদুর বাড়িতে কত প্রজাপতি আর পাখি আসে দেখে খুশিতে একদম ভরে ওঠে টুয়া। সকালে উঠে জানলার কাছে গেলেই দেখে উঠোনে কত পাখি।দিদান ওদের খাওয়ার দেয় নিশ্চিন্তে খায় ওরা।মামু আবার মাটির হাড়ি করে ওদের জন্য জল রেখেছে কি সুন্দর করে জল খায় আবার কখনো স্নানও করে নেই ঐ জলে আর তারপর একদম পালক ঝেড়ে চট করে গা শুকিয়ে উড়ে যায় জঙ্গলের দিকে। দাদু বলেছে ওদিকে ওদের বাসা তাই ফিরে যায় বাড়িতে।
" আমাকে একটা পাখি ধরে দাওনা মামু বাড়ি নিয়ে যাবো। আমার খুব ভালো লাগে ওকে পুষবো।"
" কিন্তু টুয়ারাণী তুমি যদি পাখিটা নিয়ে যাও তাহলে তো ওর মা আর বাপিও কাঁদবে তাইনা?"
" আমি ওকে ভালোবাসবো মামু,খাবার দেবো।"
" আচ্ছা বেশ তাহলে ওদের রাখবে কোথায়?"
" বাবাকে বলবো একটা খাঁচা কিনে দেবে।"
" ওরা বনের পাখি তো তাই খাঁচায় থাকতে পারেনা।"
মামুর কথাগুলো ঠিক বিশ্বাস হয়নি টুয়ার,মামু পাখি ধরতে পারবেনা তাই বলছে এই সব। কয়েকদিন পাখি দেখতে দেখতেই ওর সময় কেটে যেতো। কখনো বারান্দায় দুধের গ্লাস থেকে দুধ খাওয়াতে খাওয়াতে দিদুন বলতো.." ঐ দেখ দিদিভাই কত টিয়া পাখি বাড়িতে উড়ে যাচ্ছে।"
" ওদের মা বাবা,দাদু,দিদা,ঠাম্মা সবাই আছে?"
" আছে তো,সবাই মিলে উড়ে যাচ্ছে।"
ওহ্ বাপের বাড়ি এসে কয়েকদিনের মুক্তি,ওর বকবকানি সামলাক দাদু,দিদা আর মামু।
গতবছর কলকাতা ফিরেই কদিন পর থেকেই বায়না ধরেছিলো টুয়া তার পাখি চাই। ছোট ছোট পাখি চাই। নাহলে বারান্দায় পাখি আনো যেমন দিদার বাড়িতে আসতো।ও বসে বসে দেখতে দেখতে দুধ খাবে।
" ও কাকান,ও বাপি সবুজ লাল নীল পাখি এনে দাও আমাকে।আমি পুষবো,ওদের দেখবো।"
নাতনির আব্দারে দাদু ঠাম্মিও জেরবার তাই শেষে পাখির
Comments
Post a Comment