Skip to main content

ফ্রেন্ডশিপ অ্যান্ড মোর শেষটা

অনেকদিন বাদে এমন একটা আনন্দের পুজো এলো অঙ্কিতের জীবনে। পুজোর প্রেম আর প্রেমে ভরা পুজো।মাঝে যে কাজগুলো করতে একদমই ভালো লাগতোনা অহনার সাথে মিলে সেই সমস্ত পাগলামি করলো চুটিয়ে,মানে শপিং, ঘোরাঘুরি, খাওয়াদাওয়া আর আড্ডা।
     বাতাসের পুজোর গন্ধের স্বাদ মনে মিশে গেলো একাকার হয়ে। ছাদের গাছ ভর্তি শিউলি ফুল ফুটেছে একমুঠো এনে মায়ের ছবির সামনে দিয়ে বলে.." মা তুমি একদম ভয় পেয়োনা তোমার অঙ্কু আর অঙ্কুর বাবা তোমার হাতে গুছোনো বাড়ি সব একই রকম আছে। মাম মামের মত মানুষরা বোধহয় অনেকটা উঁচুতে থাকে তাদের ছোঁয়া যায়না। মাম মাম কখনোই আসবেনা তোমার সংসার নিতে শুধুই আমরা ভয় পেয়ে রাগ করেছি।"
                    
             একটু বেলায় হৈ হৈ করে মাম মাম এলো..এসেই বাবার সাথে একদফা খুনশুটি হলো।বাবা খুব বকুনিও খেলো। মাম মাম বললো," এই আমার চাবিটা দে তো দেখি। উরিবাবা এ তো দেখি যত বুড়ো হচ্ছে তত মিচকে পাজি হচ্ছে। কিভাবে ঠিক ছেলেটাকে আমার পুজোর সময় পাঠিয়েছে! উঃ বুড়ো হচ্ছিনা নাকি? একটু হলে তো হার্টফেলই হয়ত করতাম।এই কদিন একদম সময় পাইনি রে না হলে তোকে মজা দেখাতাম আগেই।"

         বাবার মুখে এক আনন্দমাখা জয়ের হাসি তখন,শান্ত বাড়িতে রীতিমতো ঝড় তুলেছে মাম মাম। আমার হাতে ফটাফট টিফিন কৌটোগুলো ধরিয়ে দেয়.." অনেক ভোর থেকে রান্না করছি সব তোর জন‍্য। ঐ পাজিটাকে একটু দিস নাহলে আবার তোর পেট খারাপ হবে। আর এগুলো পুজোতে পরবি,অহনারটা আমি ওকে ডেকে দিয়ে দেবো। আর এই যে বুড়ো এটা তোর। বাগবাজারের ঠাকুর দেখতে যাবি তো? সেদিন এটা পরিস।"

       অঙ্কিত জানে ওর মায়ের এটা ছিলো, পুজোতে অষ্টমীর দিন বাগবাজারের মায়ের মুখ দেখবেই। সেই বাবাকে নিয়ে যেতে হত ভিড় ঠেলে।শুধু শেষ বারটা আর যেতে পারেনি।তার পরের বছর বাবাও যায়নি তবে তারপর আবার যায় হয়ত মাকে মনে করেই যায়।

    অঙ্কিত বলে," তুমি যাবেনা মাম মাম? আসলে বাবাকে তো এবার একা ছাড়া যাবেনা তাই আমি আর অহনাও যাবো বাবার সাথে।"

          অবাক হয়ে যায় রাধিকা অঙ্কিতকে দেখে কোথায় লুকিয়ে রেখেছিলো এই মনটা ওর? বড় বেশি ভালো যেন এই মনটা,পরতে পরতে মিঠে স্বাদের ‌ছড়াছড়ি।

           ওদের কথার মাঝেই বাবা ঘর থেকে জার্মানিতে কেনা প‍্যাকেটটা এনে মাম মামের হাতে দেয়," দেখিস পছন্দ হয় কিনা? আমি নিজে কিনেছি পছন্দ করে তোদের জন‍্য।"

     " যাক শেষ পর্যন্ত কিছু দিলি এতদিনে।"

         মাম মামের হাসিতে দুষ্টুমির ছোঁয়া পায় অঙ্কিত। মেয়েরা বোধহয় সত‍্যিই দশভুজা আর বাড়ির লক্ষ্মী। মাম মাম এসে ঢুকতেই বাড়িটা কেমন যেন একটা আনন্দে ভরে গেছিলো। ওর মা যখন ছিলো তখনও ঠিক এমনি মনে হত,বেশ একটা জমজমাট বাড়ি। মাম মামের দেওয়া হারটা গলায় পরেছে অঙ্কিত। মাম মামই বলেছে ওকে ওটা গলায় পরতে এই কটা দিন। ইচ্ছে হলেই মাঝে মাঝে খুলে দেখে ওর মা অঙ্কনার মুখটা। অহনা বলেছে ঐ ছবিটা থেকে একটা বড় ছবি করে নিতে।

                  অহনা মেসেজ করে.." এই দেখ ম‍্যাম আমাকে দিয়েছে। কিন্তু শাড়ি পরে আমি চলতে পারবো? বলেছে একসাথে দুজনকে পরে উনার বাড়িতে যেতে অষ্টমীর অঞ্জলি দিয়ে।"

      হাসে অঙ্কিত.." মাম মাম আমাদের দুজনকে একসাথে দেখতে চায়। আসলে আমি তো একদম বাবার মত দেখতে তাইতো আমি বড় হবার পর ছুটে ছুটে আসতো আমাদের বাড়িতে।"

******************

    কলকাতার পুজো,ওদের পাড়ার আড্ডা বন্ধুদের সাথে খাওয়াদাওয়ার মাঝে অঙ্কিত বারবারই ফিদা হয়ে গেলো অহনাকে দেখে। শরতের মাধুরী যেন অহনাকে আরো সুন্দরী করেছে। বাবাকে যত্ন করে আগলে মায়ের সামনে আনলো অঙ্কিত.." দেখতে পাচ্ছো তো ঠিক করে মায়ের মুখটা? এবার খুশি?"
      বাবা বলে," খুব খুশি।"
বাবার মুখে এই পরিতৃপ্তির হাসি অনেকদিন দেখেনি অঙ্কিত। ঠিক মনে হলো ছোটবেলায় ফিরে গেছে ওরা। অঞ্জলি দিয়ে বাবা একদম ছেলেমানুষী করে বলে..." কিছু খাবোনা আমরা? তোর মা এলে ঐ যে ওখানে কচুরী খেতামই।"

         অঙ্কিত বলে.."খাবো বাবা,তবে এখানে নয় মাম মামের বাড়িতে। মাম মাম একটু আগেই টেক্সট করেছে। আর তোমাকে তো আগেই বলেছে মনে নেই।"

          শান্তনু রাধিকার বাড়িতে ঢুকেই একটা আওয়াজ দেয়..." কইরে রাধু,খাবার দে তাড়াতাড়ি।সুগারের রুগীকে না খাইয়ে আর কতক্ষণ রাখবি?"

      " আমি না খাইয়ে রেখেছি নাকি? তোর মা দুগ্গা তোকে না খাইয়ে রেখেছে। সব রেডি একদম। কইরে বাবু আর অহনা?"

         অঙ্কিত অহনার সাথে একটু পিছিয়ে পড়েছিলো ইচ্ছে করেই ভালোবাসার খুনশুটিতে আর সেল্ফিতে। দুজনেই হাসিমাখা মুখে এগিয়ে এসে দাঁড়ায়।

           রাধিকার চোখদুটোতে অতীতের স্বপ্ন ছুঁয়ে যায় হঠাৎই, ওর মন ডুবে যায় কোন এক দুর্গাপুজোর সকালে। ওরাও ঠিক এমনভাবে কলেজস্কোয়ারের ঠাকুর দেখে ফিরেছিলো। অমিত আর অঙ্কিত... অঙ্কিত যেন অমিতেরই ছায়া।
            খাওয়া দাওয়াতে একটু বাদেই ব‍্যস্ত হয়ে যায় ওরা। অঙ্কিত জিজ্ঞেস করে," আচ্ছা মাম মাম বাবার সাথে এই ছবিটা কবে তুলেছিলে?" শান্তনু অবাক হয়ে যায় বাবা শুনে তারপর বুঝতে পারে ও অমিতের কথা বলছে।
        রাধিকা শান্তনুর দিকে তাকিয়ে হাসে..." কি রে বলবো? বলেই ফেলি,এখন তো ছেলে বড় হয়েছে বন্ধুর মত।

       তুই আর অহনা যেমন মাঝে মাঝে বেরোস তেমনি আমরা চারবন্ধুও একদিন পালিয়েছিলাম শহরে টুয়েলভের পর। আমি আর মায়া বাড়িতে মারও খেয়েছিলাম। তখনই তোলা হয়েছিলো স্টুডিওতে একটা চারজনের একসাথে, আর দুটো পেয়ারে।"

     অহনা অঙ্কিতের দিকে তাকিয়ে হাসে,প্রেমটা সত‍্যিই সর্বকালীন। তখনও ছিলো এক অমোঘ টান আর এখনো তাই প্রেমে পড়ে মানুষ বারে বারে।

        ওদের খাওয়ার পর শোবার ঘরে ডাকে রাধিকা। এই ঘরটাতে কবে শেষ ঢুকেছিলো অঙ্কিতের মনে পড়েনা বড় আবছা স্মৃতি। শান্তনু বলে," হঠাৎ এই ঘরে আনলি কেন আমাদের? তোর শোবার ঘরে তো কৃষ্ণ ছাড়া আর কাউকে অ্যালাউ করিসনা তুই।"
       রাধিকা হাসে।অঙ্কিত আর অহনা তাকিয়ে দেখে বেশ বড় ছত্রি দেওয়া পুরোনো পলিশ করা সেগুন কাঠের খাট।সেগুন কাঠের আলমারি সবেই আভিজাত‍্যের ছোঁয়া। খাটের মাথার দিকে অনেকটা বড় একটা কৃষ্ণঠাকুরের ছবি যাতে হয়তো সকালেই দেওয়া হয়েছে বড় একটা মালা সেই মালার সুবাসে আর ধুপের গন্ধে সারা ঘরে এক পবিত্রতার ছোঁয়া।
      রাধিকা হেসে বলে," সত‍্যিই আমার আর কৃষ্ণের ঘরে আমি খুব একটা কাউকে ঢুকতে দিইনা এমনকি অমিতকেও বাইরে রেখেছি। তবে আজ বাবুকে দরকার আমার তাই ডাকলাম তোদের ঘরে।"

অহনার কেমন যেন আশ্চর্য লাগে কলেজে দেখা রাশভারী ম‍্যামের মধ‍্যে কোথায় যেন লুকিয়ে এক মিষ্টি কিশোরী আর মমতাময়ী মাতৃত্ব।

      রাধিকা বলতে শুরু করে..." এই ঘরের সব জিনিস আমাদের গ্ৰামের বাড়ি থেকে আনা। শান্তনু তো জানিস একসময় আমাদের জমিদারি ছিলো তাই কিছু স্মৃতি আমি আগলে রেখেছি এখনো। এই ঘরে এলে ডুব দিই নিজের ফেলে আসা শৈশবে। বাবু এই আলমারিটা একটু খুলবি।"
        অঙ্কিতের কাছে একটা পেতলের চাবি দেয় রাধিকা। মাম মামের দিকে তাকিয়ে চাবিটা নিয়ে আলমারিতে হাত দিয়েই অঙ্কিত বুঝতে পারে অনেকদিন কেউ এই আলমারিতে হাত দেয়না।

       আলমারি খুলে অবাক হয়ে যায় অঙ্কিত,এত খেলনা! ছোটছোট জামাকাপড় সব পাটপাট করে গুছোনো আলমারিতে। তারমধ‍্যে দুটো তিনটে পুতুলের হাত খোলা একটা দুটো গাড়ি ভাঙা। অঙ্কিতকে কিছু বলে দিতে হয়না ও বুঝতে পারে ওর ফেলে আসা ছেলেবেলাকে আঁকড়ে ধরে বেঁচেছে মানুষটা ওকে এখানে দিয়ে যাবার পর। ঐ সুদূর চেন্নাই থেকে বয়ে নিয়ে এসেছে সব কিছু এখানে। হয়ত কোন মনখারাপের বিকেলে অথবা রাতে বাবুর কথা মনে করে মাম মাম উঁকি দিতো স্মৃতির চোরাকুঠুরি এই আলমারিতে।

         " বাবু নিচে একটা বাক্স আছে একটু বের করে দেনা কষ্ট করে কতদিন অপেক্ষায় আছি এই বাক্সটা খুলবো তোর সামনে সুযোগই হয়নি। মায়ের জন‍্য খুলতে পারিনি এই বাক্স। তোদের নিয়ে ফেরার আগে ওখান থেকে আমার হাতে এই বাক্সটা দিয়েছিলো বলেছিলো ঘরের কিছু জিনিস আছে এরমধ‍্যে। মা পাগলের মত হয়ে গিয়ে কিছুতেই আনতে চায়নি...বলেছিলো 'সব ফেলে পালিয়ে চল এখান থেকে।ছেলেই রইলোনা কিচ্ছু চাইনা আমার। ও বাক্সে তুই হাত দিবিনা রাধু।'
           মা চলে যাবার পর ভেবেছিলাম তোর সামনে খুলবো সে আর হয়নি তবে আজ সেই দিন এসেছে।"
            অঙ্কিতের বুকের ভেতরে কাঁপতে থাকে,এতটা অস্থির এর আগে লাগেনি।একবার ভাবে বলবে," ফেলে দাও এই বাক্সটা,এত বছরে যখন খোলা হয়নি তখন দরকার নেই।আমি দেখতে চাইনা।"
         পর মুহূর্তে মনে হয় খুলি একবার নাড়াচাড়া করি পুরোনো অতীতের দলিলপত্র। রাধিকা ওর কাঁধে হাত রাখে.." আমরা তো আছি ভয় কি? এখন আমরাই তো তোর আপনজন।"

            অঙ্কিত অনেক কষ্টে খোলে বাক্সটা,তালাটা জং ধরে গেছে। বাক্সে বেশ কিছু টাকা,ওর মায়ের গয়না আর একটা খুব সুন্দর দেখতে ছোট চন্দনকাঠের বাক্স তাতে ভর্তি খুচরো পয়সা আর টাকা। রাধিকা বলে.." মায়ের বাক্স,আমার খুব লোভ ছিলো বাক্সটার ওপর।মা বলতো শ্বশুরবাড়ির স্মৃতি।ঘরের লক্ষ্মী হয়ে আয় দেবো।"
             বাক্সের তলায় একটা মিনে করা বালা,পুরোনো বেনারসী শাড়ি আর একটা অ্যালবাম। অঙ্কিত অ্যালবামটা বুকে জড়িয়ে ধরে।

   শান্তনু বলে," একটা বালা কেন? দেখতো আরেকটা কোথায়? তাহলে কি ওরাই নিয়ে..."

      রাধিকা ততক্ষণে আরেকটা আলমারির ডালা খুলে ঠিক তেমনি দেখতে আরেকটা বালা এনে অঙ্কিতের হাতে দেয়। অহনা অবাক হয়ে যায় যেন সিনেমা দেখছে এতক্ষণ।
     " আমি লন্ডনে যাবার আগে মা এই বালাটা হাতে পরিয়ে দিয়ে বলেছিলো বায়না করে রাখলাম ঘরের লক্ষ্মীকে জয়ী হয়ে ফিরে আয়। ফেরত দেবার সুযোগ আর হয়নি। শান্তনু আয় আজ আমরা আমাদের ঘরের লক্ষ্মীকে বরণ করবো মায়ের শেষ সম্বল ঐ মিনে করা বালা জোড়া দিয়ে।"
           রাধিকা বালা জোড়া অহনার হাতে পরিয়ে দেয় বুকটা কেমন যেন কেঁপে ওঠে অহনার।এ যে এক বড় দায়িত্ব ও পারবে তো অঙ্কিতকে আগলে রাখতে..ওর ভালোবাসার মানুষ গুলোকে দেখতে?
             রাধিকা হেসে বলে ভয় কি অহনা," আমরা তো আছি তোর মাথার ওপর। বাবু লক্ষ্মীর ঝাঁপিটা মানে চন্দনকাঠের বাক্সটা দে তো অহনার হাতে দেখি কেমন লাগছে তোর ঠাম্মার আশীর্বাদ হাতে আমাদের লক্ষ্মীকে।"

     অঙ্কিত বলে.." মাম মাম ঐ বাক্সটা তো তোমার খুব পছন্দ ছিলো।ওটা রেখে দাও তোমার কাছে।"

          " ফেলে আসা অনেক কিছুর মতই আজ এটাও যে অতীত অঙ্কু আমাকে আর বাঁধিসনা। আজ বড় শান্তি লাগছে তোকে সব বুঝিয়ে দিয়ে। তোর ছেলেবেলা,তোর ঠাম্মার স্মৃতি,না দেখা ছবির ঝাঁপি সব তোকে দিয়ে আজ আমি বড় হাল্কা।"
             কৃষ্ণের ছবির সামনে দাঁড়ায় রাধিকা। শান্তনু গিয়ে পেছনে দাঁড়ায়.." এতো তাড়াতাড়ি হাল্কা হলে হবে? ছেলের বৌ কে বরণ করবে শুনি?
               ঘরের চাপা ভাবটা এক নিমেষে হাল্কা হয়ে যায় জানলা দিয়ে ঢোকে টাটকা ফুলের সুবাস.." তোর ছেলেকে বল বৌকে এখানে রেখে যদি ওখানে থাকতে রাজি হয় তাহলে আর বিয়েটা হতে আপত্তি কোথায়? নাহলে একটু অপেক্ষা।"
           অহনা লজ্জা পেয়ে ঘর থেকে বাইরে চলে আসে শরতের আকাশে তখন পুজোর সানাই বাজছে।
                অঙ্কিত এসে পাশে দাঁড়ায় ওর.." এই দেখ মা বাবার বিয়ের ছবি। আমাকে কোলে নিয়ে মা।"
       অহনা হেসে বলে," তিনটে মায়ের আদর এমন ভাগ‍্য কজনের হয়?"
         অঙ্কিত বলে..." নো রং,চারটে মায়ের আদর।"
      অহনা বলে," মানে?"

    " আরে শাশুমাও তো মা নাকি?"অঙ্কিত বলে।

    " ইয়েস অ্যাবসোল‍্যুয়েটলি রাইট,একদম ঠিক। রাধু চল একদিন যেতেই হবে অহনাদের বাড়ি।"..শান্তনুর কথায় চমকে ওঠে ওরা।জিভ কাটে অহনা ইশ্ আঙ্কেল আর ম‍্যাম সব শুনে ফেলেছে।
                  অহনাকে জড়িয়ে ধরে রাধিকা পরম স্নেহে সত‍্যিই তো মায়ের সব কর্তব‍্য তো ওকেই করতে হবে। অহনা আর অঙ্কিতের ভালোবাসার মধ‍্যেই বেঁচে থাকবে ওদেরও বন্ধুত্ব যার রঙ কখনোই ফিকে হয়না শুধু যত্নে কৌটো করে রাখতে হয় ভালোবেসে।
সমাপ্ত:-

      

               

             

      

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...