সাঁঝবেলার কনে দেখা আলোতে মিষ্টির পানপাতা ঢাকা মুখটা নাইবা খোলা হোক। অনুরাগের রঙের মিশেল আর ভালোবাসার গাঢ় রঙে মাঝরাতেও জোজোর মনে দাবানল জ্বালালো। একটা সময় অশান্তিতে হাল ছেড়ে দিয়েছিলো ভেবেছিলো বিয়েটাই বোধহয় হবেনা।খুব খারাপ লাগছে ফোনটার জন্য কত ছবি ছিলো ওখানে।
তবুও মিষ্টির হাতটা নিজের হাতে নিয়ে মনে হলো,অনেক যুদ্ধের পর আজ রাজকন্যাকেই তো নিজের করে পেলো আর হয়ত কিছুই চাইনা। দিদির পাশে থেকে আনন্দ করে মালাবদল আর শুভদৃষ্টি দেখতে দেখতে মণিমাকে জড়িয়ে ধরে দুষ্টু.. আমরা পেরেছি শেষে ওদেরকে মিলিয়ে দিতে তাইনা মণিমা। সত্যিই একটা সময় দুষ্টুর অবচেতন মনেই এসেছিলো ভাবনাটা একটা সময় জোজোদাকে না পাওয়ার দুঃখটা আজ কালো মেঘের অন্ধকারের মত ছাইবে না তো দিদির জীবনে।
বাইরে থেকে শাঁখ আর মন্ত্র পড়ার আওয়াজ অনু আর মধুমিতার কানে আসে বুঝতে পারে বিয়ে প্রায় শেষের পথে,পরের দিন বাসী বিয়ে আছে তাই রাতের বিয়ের অনুষ্ঠান একটু সংক্ষিপ্ত।দুই মায়ের মনের সব চিন্তা আর উৎকন্ঠা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।কোথায় যেন শুনেছিলো অনু মায়ের নজর সবচেয়ে আগে লাগে..আজ মিষ্টিকে দেখে প্রথমেই বোধহয় স্নেহের আর গর্বের নজর পড়ে গেছিলো।
ঘড়ির দিকে তাকায় রবীন নির্দিষ্ট সময়েই বিয়ে হয়ে গেছে তবে আজ আর বিশ্রাম হবেনা খুব একটা যদিও বাসী বিয়ের দায়িত্ব রাণু বেবি আর মিষ্টির শ্বশুর বাড়ির লোক নিয়েছে।কৃষ্ণর শরীরটাও একটু খারাপ হয়েছে ধকলে।কিন্তু রবীনকে যে আজ সময়ের সাথে ছুটতে হবে।
দুষ্টুর সঙ্গে যে খুব দরকার এখনি,একদম এখনি কথা বলতে হবে দুষ্টুর সাথে। আলাদা গাড়িতে থাকাতে কোন কথা হয়নি ওর সাথে। আবার হাতঘড়ির দিকে চোখ রাখে রবীন। পাশ থেকে শালাবৌ বলে.." জামাইবাবু, সব তো প্রায় হয়ে গেছে আর চিন্তা নেই। আপনি এবার বিশ্রাম নিন ওদেরকে বাসরে নিয়ে যাবো।"
রবীনের চোখ এদিক ওদিক দুষ্টুকে খোঁজে। কোথায় গেলো মেয়েটা? দীপ্তকেও তো দেখছেনা।এতক্ষণ তো এখানেই ছিলো। ওর যে এখনি দুষ্টুকে দরকার.......
বাসরঘরের সামনে অর্ক,জয় বেবির পুচকে টিনা আর মিষ্টি দুষ্টুর কিছু বন্ধু ভিড় করেছে। ওদের মধ্যে দুষ্টুকে খোঁজে রবীন একদম ঠিক এখানেই দুষ্টু রীতিমত ওদের পান্ডা হয়ে মাতব্বরি করছে..." শোন ওদেরকে একদম ঢুকতে দিবিনা টাকা না দিলে।"
কে বলবে কিছুক্ষণ আগে এই মেয়ে একা দাপিয়ে বেড়াচ্ছিলো হসপিটালে আর থানায়। কিন্তু দীপ্ত কোথায়? ছেলেটা খুব চুপচাপ হয়ে গেছিলো তাহলে কি কোন ঘরে?
রবীন দুষ্টুকে ডাকে," একটু এদিকে আয় তাড়াতাড়ি।"
" বাবা তুমি রেস্ট নাও আমার এখানে কাজ আছে।"
" তুই তাড়াতাড়ি আয় আমার তোর সাথে খুব দরকার আছে।"
বাবাকে কেমন যেন সিরিয়াস লাগে দুষ্টুর,আবার কি কোন সমস্যা হলো? তাড়াতাড়ি এগিয়ে আসে ও। রবীন বলে," দীপ্ত কোথায়?"
" দীপ্তদা একটু ঘরে রেস্ট নিচ্ছে খুব আপসেট হয়ে গেছিলো।কেন বাবা?"
রবীন দুষ্টুর হাত ধরে ঘরে নিয়ে আসে," দীপ্ত কোন ঘরে চল একটু কথা আছে এক্ষুণি।"
চোখ বুজলেও শান্তি পায়না দীপ্ত কেন যেন খুব লাগে নিজেকে ওর।কতবছর কালচিনিতে পা রাখেনি। এবার এত বছর পরে পা দিতেই এত বিপত্তি।
হঠাৎই ঘরে স্যার আর দুষ্টুকে ঢুকতে দেখে বিছানায় তাড়াতাড়ি উঠে বসে দীপ্ত। ঘরের দরজাটা বন্ধ করে দেয় রবীন।দুষ্টু অবাক হয়ে যায় "বাবা দরজা বন্ধ করলে কেন হঠাৎ? কি হয়েছে আমাকে বলো?"
হঠাৎই দুষ্টুর হাতটা ধরে রবীন," তখন ওখানে কি বলেছিস মনে আছে? মানে দীপ্ত বিবাহিত তোদের রেজেস্ট্রী হয়ে গেছে। আমি অবাক হয়ে গেছি শুনে দুষ্টু।তখন থেকে একটা কথাই মনের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে আমার। কিন্তু মিষ্টির বিয়েটা নিয়ে এত কিছু হলো যার জন্য তোকে কিছু বলতে পারিনি।
কবে? মানে কখন তোরা রেজেস্ট্রী করেছিস? আমাকে একবারও জানালি না? তুই পারলি এটা দুষ্টু!"
স্যারের কথা শুনে কেমন যেন আরো অস্থির লাগে দীপ্তর,ওর যেন মনে হয় স্যার কিছুতেই ওদের কোন সম্পর্ক হোক এটা মেনে নেবেন না।দুষ্টু না জানলেও স্যার তো জানেন ওর অতীত অনেকটাই।কিছুটা সত্যি কিছুটা রটনা তবে ওর জীবনের একটা বড় ঘটনা তো বটেই।
তাছাড়া যোগ্যতার মাপকাঠিতেও দুষ্টু অনেকটাই এগিয়ে সুতরাং ...জোজোদের বংশমর্যাদা আছে বাড়ি গাড়ি টাকাপয়সা সব আছে ওদের।ওর তো সেসবও নেই। নিজের বলতে মা,আত্মীয়স্বজন ওদের গা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পেরে বেঁচেছে। সত্যি দুষ্টুকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা ওর উচিত হয়নি,দুষ্টু চঞ্চল ওর তুলনায় হয়ত ছেলেমানুষও তাই ওর সাময়িক আবেগ আর ভালোলাগাকে সাথে নিয়ে এতটা এগিয়ে যাওয়া উচিত হয়নি কিছুতেই। গলার কাছটায় আবার ভেঙে যাওয়া স্বপ্নগুলো জমা হয়ে কান্না আনে,কেমন দমবন্ধ লাগে। আর কোনদিনই সবুজ চাবাগানে পলাশ ফুটবেনা। কাল ভোরে সবার অলক্ষ্যেই ও চলে যাবে এখান থেকে।
স্যারের কাছেও ক্ষমা চাইতে হবে ওকে।
****************
বাবার কথা শুনে অবাক হয়ে যায় দুষ্টু বাবা এটা বিশ্বাস করেছে! অবশ্য ও বিশ্বাস করার মতই জোর দিয়ে কথাটা বলেছিলো। ওখানে যারা ছিলো সবাই বিশ্বাস করেছে,আর ঐ মেয়েটাও দমে গিয়েছিল কথাটা শুনে তারপর চিকিৎসা বাবদ বেশ কিছু টাকা দাবী করে হাসপাতালেই বিয়ে করেছিলো ওর ঠিক করা হাতভাঙা বরকে,বরের মুখ থেকে তখনো মদের গন্ধ পাচ্ছিলো দুষ্টু। এরা কি মানুষ!
" বাবা তুমি বিশ্বাস করো,তখন মেয়েটা আর বাড়ির লোকজন যেভাবে দীপ্তদাকে টার্গেট করেছিলো এছাড়া আমার কোন উপায় ছিলোনা। দীপ্তদাকে কেমন ভয়ে গুটিয়ে যেতে দেখোনি তুমি? যেন মনে হচ্ছিলো ওরা জোর করলে ও চলে যাবে? তাইনা?"
" দেখেছি আমি সবটুকু আমরা সবাই বোধহয় এমন অদ্ভুত নোংরা নাটক দেখে চুপ করে গেছিলাম। তবে তুই কিভাবে হঠাৎ বললি এ কথা যে তোদের রেজেস্ট্রী হয়ে গেছে? কত লোক ওখানে তোর নতুন চাকরি যদি এই নিয়ে,মানে এটা ঠিক কিনা এ ব্যাপারে কোন কথা হয়?"
" আমি সত্যিই অতটা ভেবে দেখিনি কখনো,হঠাৎই বলে ফেলেছি কথাটা। কি আবার হবে? সবাই ভুলে যাবে।"
" না কথাটা এভাবে বলা ঠিক হয়নি।"
নিজেকে কেন যেন আর ঠিক রাখতে পারেনা দীপ্ত,গত রাতের ঘটনাটা ঘুরে ফিরেই চোখের সামনে আসছে। তবুও ওর জন্য স্যার দুষ্টুকে ভুল বুঝছেন..." স্যার বিশ্বাস করুন,আমি দুষ্টুকে এমন কোন ভুল করতে দেবোনা কখনো। সত্যিই তো দুষ্টুর সাথে কোনখানেই আমার মেলেনা। এটা শুধুই কথার কথা ছিলো একভাগও সত্যি নেই এরমধ্যে।"
কথাগুলো বলতে বলতে শেষের দিকে গলাটা শুকিয়ে আসে দীপ্তর।কত সহজে কথাগুলো বলে দিতে পারলো শুধু দুষ্টুর ভালোর জন্যই। না ও আবার সরে যাবে অনেক দূরে।
দুষ্টুর মুখটা হঠাৎই যেন কেমন হয়ে গেলো,কিছুক্ষণের জন্য ভুলে গেলো ওদের মাঝে বাবা আছে...দীপ্তর কাছে এসে ওর হাত ধরে টানে দুষ্টু..." তুমি এত বোকা, আর এত ভীতু দীপ্তদা! আমাদের মধ্যের কথাগুলো, রাতের গল্প,গান,পুরুলিয়াতে বলে ফেলা কথা সবই কি নকল ছিলো? আসল কোন কিছুই নয়?"
দুষ্টুর শব্দরূপী বাণ দীপ্তর বুকে এসে লাগে। দুষ্টু বলে ওঠে," তবে আজ সব নকল আসল হোক একটা নতুন সম্পর্কের বাঁধনের গাঁটছড়ায়। বিয়ে করবে আমাকে? আমি জোর করবোনা তোমাকে তবুও আবার বলবো বিয়ে করবে আমাকে? আসল বিয়ে?"
অবাক হয়ে যায় রবীন,হয়ত এই কথাটাই দুষ্টুকে বলার ছিলো কিন্তু বলতে পারছিলোনা কিছুতেই। কিভাবে মেয়েটাকে জোর করবে? অথচ মিথ্যেটা সত্যি হওয়াই দরকার। আর তাই হয়ত বারবার চোখ রাখছিলো ঘড়িতে যাতে শুভ সময়টা থামানো যায়।
দীপ্ত রবীনের দিকে তাকায়..ওর চোখে এক অদ্ভুত ভয় আর অপরাধবোধ যেন একটা বড় অন্যায় করে ফেলেছে।ছোটবেলায় কোন ভুল করে যেমন করে তাকাতো.." আমি কি করে বলবো বুঝতে পারছিনা,আমার কি যোগ্যতা আছে দুষ্টুর পাশে দাঁড়ানোর?"
রবীন বলে ওঠে, হাতে সময় বেশি নেই," তোর ভয় থেকে মুক্তি আর আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে বোধহয় দুষ্টুকে পাশে দরকার।দরকার হলে আজকের মত দুষ্টুই তোর পাশে দাঁড়াবে।বেশি ভাবার আর বেশি সময় নেই হাতে সাড়ে চারটেয় লগ্ন শেষ।"
মনে থাকা কথা আজ হঠাৎই মুখে চলে এসেছে দুষ্টুর, তেমনভাবে বিয়ে করার ইচ্ছে কোনদিনই ছিলোনা কিন্তু আজ বাবাও যেন বলতে চাইলো মিথ্যেগুলো মুছে দিতে স্বপ্নের রঙ লাগুক সত্যিতে।
দীপ্তর সামনে আজ একটা বড় ট্রেন,হয়ত দৌড়েই উঠতে হবে সেখানে কিন্তু মনে হচ্ছে যেন দৌড়নোর শক্তি নেই আবার মিস্ করলেও আর পৌঁছতে পারবেনা গন্তব্যে কোনদিনই।
রবীন বাইরে বেরিয়ে গেছে,অনুকে বলা দরকার আরো সবাইকে বলা দরকার। ফোন করতে হবে দীপ্তর মাকেও। একমাত্র সন্তান তার,সুতরাং তার জানাটাও জরুরী।
*****************
জোজোর শরীরের ওপর দিয়ে অনেকটা ধকল গেছে তাই ছোটমাসি আর মামী খুব সংক্ষেপে বাসরের নিয়মগুলো সারতে চায়।কিন্তু জোজো বাধা দেয়.." আমি একদম ফিট,বিয়ের আগে খুব চাপে ছিলাম।সত্যিই মনে হচ্ছিলো কি যে হবে? এখন তোমরা যতখুশি নিয়ম করাও।"
মাটির সরার জলের মধ্যে পাশাপাশি বরকনের মুকুটের দুটো ছোট শোলা জড়াজড়ি করে ভাসে সুখে।সবাই হেসে ওঠে দারুণ মিল হবে।
মিষ্টি এদিক ওদিক তাকায়..বোনটা যে কোথায় গেছে কে জানে? তখন বললো একটু বাদেই আসছে বাবা ডাকছে। একসাথে ওরা বলে ওঠে দুষ্টু কোথায় গেলো বলতো?
" সত্যিই খেলা হয়ে যাচ্ছে ছবি তোলা হয়ে যাচ্ছে দুষ্টু কোথায়? একটা বিয়ে করলাম যেন ইতিহাস সৃষ্টি করলাম,তারমাঝে মিসিং শালী আর আমি মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে কাজ করে যাচ্ছি।"
রাণু এসে বেবির কানে কানে কি যেন বলে..মিষ্টি বলে," কি হয়েছে মণিমা?"
" না তোদেরটা কতদূর হলো সেটা জিজ্ঞেস করছিলাম। তাড়াতাড়ি শেষ করতে হবে তো।"
বন্ধ ঘরের মধ্যে মনকে কয়েক মিনিটের মধ্যে তৈরি করে নেয় দুষ্টু তাহলে কি করবে বিয়ে না রেজেস্ট্রী? অবশ্য রেজেস্ট্রীর কিছু নিয়ম আছে। সত্যিই আর ভাবতে পারছেনা। এক কথা দীপ্তও বলে আমি কিছু ভাবতে পারছিনা.." তোর তো কিছু স্বপ্ন ছিলো বিয়ে নিয়ে,আমার জন্য এভাবে সবটা মিথ্যে হয়ে যাবে? তোর অফিস কি বলবে?"
দুষ্টু ঘর থেকে বেরিয়ে বাবাকে খোঁজে দেখতে পায় মা আর বাবাকে। সত্যিই বাবা যে এভাবে বলবে,আর এমন একটা কিছু হবে ভাবতেই পারেনি।
হঠাৎই বাবার বুকে মাথা রাখে দুষ্টু," বাবা,মা তোমরা বলো আমি কি করবো বুঝতে পারছিনা।"
দুষ্টু দেখে মায়ের চোখে জল..." না না এভাবে একসাথে আমি দুই মেয়ের বিয়ে দিতে পারবোনা কিছুতেই। তারচেয়ে বরং দুষ্টুর কথাই সত্যি হোক যদি দীপ্তর মত থাকে তুমি রেজেস্ট্রীর ব্যবস্থাই করো,উনি তো আছেনই এখানে, যেতে পারেননি রাত হয়ে যাওয়াতে। কাগজপত্র তৈরী করে নিয়ে যাবেন আজ তারপর যা হয় হবে...."
সংসার চালিয়েছে অনু,রবীন বাইরেটা দেখেছে তবুও অনুর সাথে আলোচনা না করে কখনোই কিছু করেনি রবীন। তাই দুষ্টু রাজী হলেও অনুর কথাই মনে পড়েছে তখনি রবীনের। ওর সন্তান মেয়েরা মাতৃত্বের শ্রেষ্ঠ অধিকারে ওর মতের দাম সবচেয়ে আগে।
মায়ের কথাটা শুনে বুকের ভেতরের ভারটা হাল্কা হয়ে যায় দুষ্টুর।
" মা তুমি এত ভাবো? এত বুঝতে পারো?"
" হ্যাঁ মা,তোর এই সবে নতুন চাকরি। দিদির বিয়েতে এসে এভাবে হুট করে বিয়ে করে চলে গেলে লোকেই বা কি বলবে? তার থেকে তোর কথাটাই সত্যি হোক। আবার দীপ্তর সঙ্গে কথা বল ও যদি রাজি থাকে তাহলে রেজেস্ট্রীটার ব্যবস্থা হোক।"
দীপ্তর মনটা যেন একটু হাল্কা লাগে,ঘটনার আকস্মিকতায় কেমন যেন হয়ে গিয়েছিলো হঠাৎ।মায়ের কথাও মনে হচ্ছিলো খুব।মা তো কিছুই জানতে পারবেনা।
রাণু কখন এসে ঘরে দাঁড়িয়েছে বুঝতে পারেনি দুষ্টু, মনটা হাল্কা লাগে রাণুরও।মনে হলো দুঃস্বপ্নের রাতটা কেটে ভোর হোক। নতুন সকালে চাবাগানের সবুজকে সাক্ষী করে সাথে থাকার চুক্তিপত্রে সই করবে দুষ্টু আর দীপ্ত।
তাই না পেরে বলেই ওঠে," জামাইবাবু যে কি করেনা? আর দুষ্টুটাও হয়েছে তেমনি।সব কিছু কি পড়াশোনার মত।ভালোবাসাকে জমতে একটু সময় দিতে হয়। বিয়ে মানেই তো হয়ে গেলো এই যেমন আমাদের। তারপর আবার বিয়েবাড়ি আসবো কত আনন্দ করবো। মিষ্টিটার কথাও ভাব একবার।
চল তো দুজনেই ওদিকে মিষ্টি আর জোজো তখন থেকে খোঁজ করছে।"
রাণুর কথায় ভারী পরিবেশ নিমেষে হাল্কা হয়ে যায়।
দুষ্টু আর দীপ্তকে নিয়ে পা বাড়ায় রাণু বাসরের দিকে। দুষ্টুকে দেখে মিষ্টি অভিমান ভরা চোখদুটোতে অভিযোগ মিশিয়ে বলে," কোথায় ছিলি এতক্ষণ? দুজনকে দেখতেই পেলামনা ঠিক করে পাশাপাশি।"
সবাইকে পেয়ে আনন্দে মেতে ওঠে জোজো। বিশ্রাম নিতে বললেও শোনেনা.." কপাল কেটেছে আরে চুরি যায়নি তো? ঘুম তো আছে সবসময় আজ নো ঘুম। গান হবেনা তা হয় নাকি?"
দুষ্টু জানে আজ ওর ছাড় নেই গাইতে ওকে হবেই,ভাইবোনেরা এমনকি মাসি মামী সবাই জমিয়ে বসেছে।
বাসরঘর থেকে গান ভেসে আসছে..
এসো আমার ঘরে।
*******************
Comments
Post a Comment