Skip to main content

বড়মা

#বড়_মা#

#রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী#

" সব শাড়িগুলো খুলতে হবেনা, একটু নামাও আমি দেখে নেবো।"

"সে কি ম‍্যাডাম এটা তো আমাদের কাজ, কোন সমস‍্যা নেই আপনি দেখুন।"

শাড়ি বাছতে বাছতে নিজের শাড়িগুলো নিয়েই একটু বেশি মাথাব‍্যাথা ছিলো রাণীর, হাজার হোক একমাত্র বৌদি বলে কথা। দেওরের বিয়েতে ওরই সমস্ত দায় দায়িত্ব মানে রজত চোখ বন্ধ করে সব বৌদির ঘাড়ে ফেলে দিয়েছে।

রজত চাকরিতে সবে বদলী হয়ে কলকাতার বাইরে যেতে বাধ‍্য হয়েছে। যদিও বাড়ি থেকেই যাতায়াত করে। কি যে হলো ছেলেটার বন্ধুর বিয়েতে বরযাত্রী গিয়ে এক গ্ৰামের মেয়েকে পছন্দ করে এসেছে।

ইশ্ এত শাড়ি বেছে আর কি হবে পরবে তো ঐ গাইয়া মেয়েটা। যদিও রাণী বলেছিলো দেওরকে, "আমাকে আর টানা কেন বাপু, ওকে একদিন আসতে বলো, তারপর একসাথে বাজার করে নাও।"

"ওদের বাড়ির লোকজন এখনো অতটা এগোতে পারেনি বৌদিভাই। বিয়ের আগে মেয়ে ড‍্যাং ড‍্যাং করে বরের সাথে কেনাকাটা করতে যাবে তা হবেনা।"...

"কেমন যে এরা জানিনা, আর ওখানেই তোমার মন বসে গেলো।"..রাণী এর আগে অনেকবার এই কথা বলেছে রজতকে, কিন্তু রজত হেসে উড়িয়ে দিয়েছে।

অভিমান করে দেখতেও যায়নি হবু জাকে। মনে মনে ভেবেছে যে বিয়ে করবে সে বুঝুক গিয়ে। তবে শাশুড়ি মায়ের এদিক নেই সেদিক আছে। এদিকে হাঁটতে পারেনা ভালো করে, অথচ তার মধ‍্যেই খোঁড়াতে খোঁড়াতে ঠিক ছোটবৌমাকে দেখে এসেছেন। একটা ছবিও নিয়ে এসেছেন, ইচ্ছে না থাকলেও দেখতে হয়েছে রাণীকে। মুখটাতে গ্ৰাম‍্য ছাপ একটা সাদামাটা শাড়ি পরা তবে চোখদুটো বড় আর ভাসা ভাসা। শাশুড়ি এসে তো প্রশংসায় পঞ্চমুখ..." বুঝলে বৌমা মেয়েটা মনে হয় ভালোই হবে। আমি তাই ভাবি রজত এত বোকা হবে?"

"তা তো বুঝতেই পেরেছি মা, আপনি গিয়ে রয়ে গেলেন সেখানে, ফিরলেন একদিন বাদে।"

"ও বৌমা আমি থাকতুমনা গো, ওরা এত জোর করলো, তারপর আমার যা পায়ে ব‍্যথা বেড়েছিলো বৌমা, মোটেই পা ফেলতে পারছিলাম না, তবে অমৃতা কিন্তু দারুণ মালিশ করতে পারে। রজত বলছিলো ফিজিওথেরাপি জানে।"

শাশুড়ির গদগদ ভাব দেখে গা জ্বলে যায় রাণীর। অবশ‍্য মানুষটা একদমই শাশুড়ি মার্কা নয়, বরং একটু বেশিই মা মা তাই হয়তো এতদিন বাচ্চা না হলেও কোনদিন কোন খারাপ কথা শুনতে হয়নি ওকে শাশুড়ির কাছ থেকে। এই সাত বছরে ওকে কেউই খোঁচা মারেনি এই বাড়িতে। দেওরও বেশ ভালো বৌদিকে সব ব‍্যাপারেই গুরুত্ব দেয়। কেউ বাচ্চার ব‍্যাপারে কোন কথা তুললে শাশুড়িমা বলেন.."বৌমা চাকরি করে এখন আর ঐ সময় নেই বাপু বিয়ের পরই বাচ্চার দরকার। হলে হবে না হলে না হবে। এখন আমোদ আহ্লাদে কাটাক বাপু বাচ্চা হলেই তো রাজ‍্যের হ‍্যাপা।"

রাণীর বাকি কথাগুলো শুনতে ইচ্ছে না হলেও শোনে। পরেও শাশুড়িমা সবসময় বলেছেন, "ওসব কানে নিয়োনা বৌমা ,যদি কোনদিন চাও একটা বাচ্চা আসুক আজকাল অনেক উপায় আছে।"

তবুও এই বাড়িতে এতদিন সব ভালোমন্দ ও দেখে এসেছে, সবাই ওকে রাণীর মতই দেখে। সেখানে ওর সংসারে আরেকজন আসছে হয়ত কাজে অকাজে ওর সাথে তুলনাও হবে ভেবে মনে মনে কেমন যেন একটু হিংসে হয় রাণীর, হয়ত একটু চিন্তাও।

তাই শাশুড়িকে বলেই ফেলে, "বাহ্ তাহলে তো আপনার ভালোই হলো বাড়িতে বসেই ফিজিওথেরাপি করবেন। এক বৌমা অফিসে যায়, আরেক বৌমা ফিজিও করবে দারুণ ব‍্যাপার আপনার।"

শাশুড়ি সরল মনে বলতে থাকে, "অনেক তো কষ্ট করেছি জীবনে, তোমাদের শ্বশুর সেই কবে চলে গেছে আমার ঘাড়ে সব ফেলে। দুই ছেলেকে মানুষ করেছি বুকে করে। তবে ছেলেরা আমার খুব ভালো, আর তুমিও বৌমা একদম মেয়ের মত তাই আরেকটা বৌ ভালো আসুক বাড়িতে তাই চাই। আর তাইতো ছুটে গেলুম মা সে তোমার বোন হয়ে থাকতে পারবে কিনা দেখতে।"

মনে মনে হাসে রাণী, ভাইয়ে ভাইয়ে মিল হয়তো আছে, তবে জায়ে জায়ে মিল হবে কিনা তা একমাত্র সময়ই বলবে। তবে শাশুড়ির কাছে হবু জা অমৃতার প্রশংসা একটু হলেও বিঁধলো রাণীকে। মুখে হেসে বললো.."তা কি দেখলেন মা?"

"তুমি তো গেলেনা তবে আমার ছানিকাটা চোখ তো বললো ভালোই হবে। পুজো আচ্চা, রান্নাবান্না সবই তো জানে দেখলাম, তবে সবচেয়ে ভালো লাগলো মনটা, মুখে সবসময় হাসি আর চোখদুটো মায়ামাখা।"

******************

মেয়ে দেখতে না গেলেও বরযাত্রী যেতেই হলো, কারণ একমাত্র দেওরের বিয়ে। নতুন বৌকে দেখতে যেতেই অমৃতা, "দিদি এসেছো বলে জড়িয়ে ধরে রাণীকে..তুমি কি সুন্দর গো দিদি! ও সবসময় বলে বৌদি কি সুন্দর স্মার্ট। আমি কিন্তু সব শিখবো তোমার কাছে।"

রাণী একটা অন‍্যরকম মন নিয়ে গেছিলো ঠিক বাড়ির বড় জায়ের মত, কিন্তু অমৃতা দিদি বলে জড়িয়ে ধরলো রাণীকে। কেমন যেন লাগে রাণীর..মেয়েটা কি বোকা না বেশি চালাক?

*****************

তবে অমৃতা এ বাড়িতে পা দেওয়ার পর রাণী বুঝলো অমৃতা বোধহয় একটু বেশি সরল।

কিছুদিনের মধ‍্যেই বাড়িতে সবারই অমৃতাকেই দরকার, দেখলো রাণী। সব কাজেই অমৃতা, এমনকি ওর বরও আজকাল অমৃতাকে খোঁজে।

অমৃতা ছটফট করে ওপর নীচ করে বেড়ায়..কখনো আওয়াজ দেয় "আসছি দাদা, জামাটা ইস্ত্রি করে আনছি এখুনি।" আবার কখনো বলে, "দিদিভাই তোমার ব্লাউজটা রেডি দেখো ফিটিং হয়েছে কিনা?"

রাণীর চেয়ে অনেকটাই ছোট অমৃতা, তাই শরীর মন সবেতেই অনেক বেশি চঞ্চল।

বাড়ি জমজমাট নিত‍্য নতুন রান্নায় আর আড্ডায়। হয়ত রাণীরও অনেকটা চাপও কমেছে অমৃতা আসায়। তবুও রাণীর মাঝে মাঝেই মনে হয় একটু একটু করে অমৃতা কেমন যেন ওকে ছাড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

রজত আদর করে ধরে বৌকে, "এই যে প্রজাপতি সারা বাড়িতে পাখা মেলে উড়ে বেড়াচ্ছো, আমার বাগানে বসবে কখন শুনি?"

অমৃতা দুষ্টু হেসে বলে, "মা ডাকছে অনেকক্ষণ থেকে। পা নাড়তে পারছেনা একটু দেখি।"

রজত হাসে, "দিব‍্যি পা নাড়ছে আমি দেখে এলাম এক্ষুণি। এবার আমাকে একটু দেখো।"

***************

বিয়ের দুবছর হওয়ার আগেই একদিন শোনা গেলো অমৃতা মা হতে চলেছে। ছটফটে অমৃতা কদিন বিছানা থেকে উঠতে পারেনা, শরীরটা ভালো নেই একদম। ডাক্তার বলেছে কদিন একটু বিশ্রামে থাকতে।

খবরটা শুনে অদ্ভুত পাল্টে গেলো রাণী, আজকাল যেন অমৃতাকে ওর সহ‍্য হয়না। যেদিন ওর বর অমৃতার জন‍্য মিষ্টি দই কিনে আনলো, ফেটে পড়লো রাণী, "তোমরা সবাই ওকে নিয়ে এতো পড়েছো কেন, এত আদিখ‍্যেতা সবার ও মা হচ্ছে তাই?"

রঞ্জিত বলে, "তুমিই তো বলেছো ও মিষ্টি দই খুব ভালোবাসে। তুমি কত আনতে বলেছো এর আগে। তাই আনলাম।"

অমৃতাকে কেউ ভালো বললে ভালো লাগেনা রাণীর। অমৃতার জন‍্য ইলিশ মাছ ভাজা রাখলে মনে হয় শাশুড়িমা পক্ষপাতিত্ব করছেন। অনেক সময় বলেও ফেলে সেই কথা।

দিদিভাইকে দিদির মতোই চেয়েছিলো অমৃতা। প্রথমে রাণী একটু দূরে দূরে থাকলেও একটা সময় আর পারেনি। দুই বৌমার ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন শাশুড়িমাও।

অনেক দিনই ওনার পায়ের ব‍্যায়াম করাতে করাতে বলতেন, "বড়বৌমা মানুষ ভালো, কিন্তু মনের মধ‍্যে হয়ত কোথাও একটা দুঃখ রয়েছে। ওকে আপন করে নিয়েছো সেটাই ভালো লাগে আমার।"

সেই দিদিভাই আজকাল ওর ঘরে ঢোকেনা, রজতের সাথেও ভালো করে কথা বলেনা। অনেকদিন সে কথা রজতকে বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলে অমৃতা।

দেখতে দেখতে সাতমাস হয়ে গেলো অমৃতার। রজতের ইচ্ছে থাকলেও ঠাকুরকে পুজো দিয়ে কোন রকমে নিয়ম সারলেন শাশুড়িমা বড়বৌমার কথা ভেবে।

অমৃতার মা বাবা এসেছিলেন সাধে। ওনারাই বললেন অমৃতা বাপের বাড়িতেই থাক এই কয়েকটা মাস। ওর জেঠতুতো দাদা বৌদি ডাক্তার তাই অসুবিধা হবেনা।

রজতের মনটা খারাপ হলেও অমৃতা একটু জেদই করলো বাপের বাড়ি যাবার জন‍্য। দিদিভাইয়ের সামনে আসতেও আজকাল যেন ওর কেমন লাগতো। রাণী ওকে দেখলেই মুখ শুকনো করে সরে যেতো।

মাঝে একদিন দাদাভাই শাশুড়িমাকে বলেছেন, "মা আমি একটা ফ্ল্যাট দেখছি রাণীর খুব মানসিক সমস‍্যা হচ্ছে। এখানে হয়ত আমার থাকা হবেনা। তোমাকে আগে থেকেই বললাম।"

শাশুড়িমায়ের চোখের জল অমৃতার মনকে ছুঁয়ে যায়। নিজেকে অপরাধী লাগে তাই বাপের বাড়ি চলে যাওয়াই ভালো।

*******************

অমৃতা চলে যাওয়াতে রাণীর অনেকটা হাল্কা লাগে। কেন যেন ওর ভারী শরীর নিয়ে চলাফেরা করাটাও ও নিতে পারতোনা। এখন কয়েক মাসের জন‍্য নিশ্চিন্ত। আর ও ফেরার আগেই ওরা ফ্ল্যাটে চলে যাবে নিজের মত থাকতে পারবে।

অমৃতার দিন এগিয়ে আসছে, রজতও কদিন বাড়িতে নেই। শাশুড়িমা চুপচাপ, কেউ তেমন করে রাণীকে কিছু বলেনা এমনকি ওর বরও না। মাঝে দুদিন ওর বর সেই সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাতে ফিরলো, বলতেই বললো.."অফিসের কাজ ছিলো রাণী।"

মনে অবিশ্বাস জমলেও বরকে সেকথা বলতে পারেনা। এমনিতেই মনে হয় সব সময়, আর কেউ ওকে ভালোবাসেনা।

তবুও দুদিন বাদে জিজ্ঞেস করে, "ঠাকুরপো এখনো ফিরলোনা কেন? তোমাকে ফোন করেছিলো?"

"তুমিও তো একটা ফোন করতে পারো। অমৃতাকেও তো জিজ্ঞেস করতে পারো কেমন আছে? ভাবছি কাল একবার ওদের ওখানে যাবো। অমৃতাকে দেখে আসবো।"

রাণীর অপরাধ বোধটা খোঁচা মারে ওকে। ইচ্ছে করে বলতে..."আমিও যাবো তোমার সাথে, কিন্তু বলতে পারেনা।"

"তুমি যাবে আমার সাথে?" বলে রঞ্জিত।

রাণী আর না করতে পারেনা। রাণীকে নিয়ে নার্সিংহোমে যায় ওর বর। ও ভাবতেই পারেনি এখানেই ভর্তি আছে অমৃতা। শুনলো খুব সিরিয়াস হওয়াতে ওকে এখানে আনতে হয়েছে। রাণীকে দেখে রজত বলে.."সত‍্যিই ভগবান আছেন তাই বোধহয় তুমি এলে বৌদি। এই কদিন বারবার তোমাকে দেখতে চেয়েছে অমৃতা।"

একটু বাদেই অমৃতাকে ওটিতে নেবে, রাণী গিয়ে ওর পাশে দাঁড়িয়ে হাতটা ধরে।

চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ে অমৃতার, "দিদিভাই আমার পেটে দুটো সন্তান। আমি যদি না থাকি তুমি ওদের মা হয়ে মানুষ কোরো ওদের।"

নিজেকে আর সামলাতে পারেনা রাণী সব অপরাধবোধ ভেঙে যায়..."তোকে ফিরতেই হবে আমরা মা আর বড়মা হয়ে ওদের মানুষ করবো।"

******************

অনেকটা সময় ধরে লড়াই করছে অমৃতা, বাইরে বসে ঠাকুরকে ডাকে রাণী ,শাশুড়িমা বসে রয়েছেন বাড়িতে ঠাকুরঘরে। অমৃতা সবার প্রার্থনায় দুই ছেলে মেয়ে কোলে নিয়ে ফিরলো বাড়িতে।

রাণী অফিসে ছুটি নিয়ে বাড়িতে বসে..ছেলেটা এত পাজি যে ওর কাছেই থাকতে চায় সবসময়।

বড়মা হওয়ার যে এতো আনন্দ, তা বোধহয় বুঝতেই পারেনি রাণী।


সমাপ্ত:-

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...