Skip to main content
দিদি ট্রেনে বসে যতই বকবক করতে থাকুক না কেন খুব একটা মন দিতে পারেনা ওর কথায় সুগত। কি যে সারাদিন বকবক করে দিদিটা কে জানে! কোথা থেকে যে এত এনার্জি পায়? ট্রেনের দুলুনি লোকজনের হইচই আর হকারের চিৎকারে সব কথায় ঠিকমত মন দিতে পারেনা। তাই চুপটি করে বসে থাকা ছাড়া কোন উপায় নেই।
   " শোন,তোর বয়েস হয়েছে। শুনেছি মেয়েটারও কিছুটা বয়েস হয়েছে। যাক দেখাই যাক গিয়ে কেমন লাগে। ভালো লাগলে ওদের আসতে বলবো আর তারপর কথা এগোবে। আর না লাগলে তো মিটেই গেলো।"
                খুব ইচ্ছে করছিলো সুগতর বলতে, দিদি একটু চুপ করে বোস তো। এত কথা বলিস কেন সবসময়? তারপর নিজেরই মনে হলো দিদি তো এমনই তাই বোধহয় সুকুমারদা ওকে কিছু সময়ের জন‍্য বলে একদম চিরতরে এখানে রেখে গেছে। মা রাগ করে কম বলেনি দিদিকে। মা বকলে বকবকানি থামিয়ে চুপ করে শুনতো আর হাসতো। শেষে একদিন বগলদাবা করে রওনা দিয়েছিলো দিদিকে নিয়ে সেই দিনাজপুরে ওর শ্বশুরবাড়িতে। ওর শাশুড়ি গালমন্দ করেছিলো," কি করতে নিয়ে এসেছেন এই মেয়েকে? সুকুমার বলেনি ওকে আর নেবেনা। তাছাড়া সুকুমার তো এখন কাজ নিয়ে কন্ট্রাকটারের সাথে দিল্লি না মুম্বাই চলে গেছে।"
       মা মুখটা কাচুমাচু করে বলেছিলো," দিদি ওর বাবা নেই জানেন তো,তারপর আমার ছেলেটাও এখনো দাঁড়ায়নি। তাছাড়া ওর দোষই বা কি? মেয়েটা আমার খুব সরল আর সাধাসিধে।"
       " আর কত ঢাকাচাপা দেবেন শুনি? সরল না পাগল? মানে পাগলী। সারাক্ষণ বকবক করছে কোন কাজ ঠিকমত করতে পারেনা। শুনুন আমাদের গ্ৰামের গৃহস্থ বাড়ি বাড়িতে অনেক কাজ এমন বৌ দিয়ে আমাদের হোমযজ্ঞ কিছুই হবেনা।"
         সুগতর দিদিকে ওর মা কোনমতেই ঘাড় থেকে নামাতে পারেনি আর শ্বশুরবাড়ির ঘাড়েও চাপাতে পারেনি। সুগত মাকে দেখে অবাক হত,আচ্ছা মেয়েরা মানে মায়েরাও এমন হয়? নাকি অভাবে মায়ের মাথাটাই খারাপ হয়ে গেছে?
                       সুগত তখন অনেক কিছু না বুঝলেও এটুকু বুঝেছিলো মানে শুনেছিলো দিদি পাগল এই অজুহাতে ওর শ্বশুরবাড়ির লোক ওষুধ খাইয়ে ওর

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...