Skip to main content
সুবর্ণা যখন কপালে সিঁদুরের বেশ একটা বড় টিপ এঁকে জড়ির পাড় শাড়ি পরে ঠাকুর বরণ করত তখন সত‍্যি অনেকেই চোখ ফেরাতে পারত না। সুবর্ণার নাক চোখ একটু চাপা হলেও গায়ের রঙেই ভুলেছিলেন প্রদীপ্ত। মাঝে মাঝেই সাইকেল চালিয়ে চলে যেতেন আড্ডা দিতে কিছুটা দূরে পিসতুতো দাদার বাড়িতে। সুবর্ণা নিখিলদার ছোট শালী। প্রদীপ্তকে সাইকেল নিয়ে আসতে দেখেই লম্বা বিনুণী দুলিয়ে ছুটে আসত সুবর্ণা। সুবর্ণা বর্ধমানে থাকত। নিখিলদাও অনেকদিন ছিলেন বর্ধমানে কিছুদিন হল ট্রান্সফার হয়ে ওদের শহরে। বৌদির সাথে পরীক্ষার পর চলে এসেছিল নতুন শহর দেখতে সুবর্ণা। তবে নতুন শহরে এসে যে নতুন কাউকে দেখলেই পা দুটো এভাবে ছুটে আসতে চাইবে তা কখনও ভাবেনি।

              মাসখানেক আসানসোলে থেকে বর্ধমানে ফেরার সময় সুবর্ণা মনটা রেখে গিয়েছিল সেই আসানসোলেই। তবে ভাইয়ের মতিগতি দেখে আর বেশি দেরি করেনি নিখিল। নিজেই মোটামুটি ঘটকের ভূমিকা পালন করে খুব তাড়াতাড়ি ব‍্যবস্থা করেছিলেন ওদের চার হাত এক করে দেবার জন‍্য। প্রদীপ্ত বাড়ির ছোট ছেলে সবার আদরের ছোট বৌ হয়ে শ্বশুরবাড়িতে পা রেখেছিল সুবর্ণা। 
     লাবণ‍্য বলেছিলেন," লক্ষ্মী এল ঘরে। বিয়ের সাজে কি সুন্দর দেখাচ্ছে বৌমাকে।"
   যদিও ওর বড় জা বলেছিল," সুবর্ণা আমাদের নেপালী লক্ষ্মী তাই না মা?"
          অনেকে একটু হাসাহাসি করলেও লাবণ‍্য ধমকায়," বৌমা এমন বলতে নেই,মেয়েটার হয়ত একটু নাক মুখ চাপা কিন্তু কি সুন্দর গায়ের রঙ আর মাথার চুল।"
        মজা করতে গিয়ে অনেকগুলো কথা শুনে রাগ হল খুশির। গায়ের রঙ থাকলেই সুন্দরী। এত বছর এই বাড়িতে এসেছে অথচ ওর নাক চোখমুখ আর গালের টোল নিয়ে তেমন কেউই কোনদিন কোন কথা বলেনি। অথচ বিয়ের আগে কত শুনেছে ওর গালের টোল কুপোকাত করে দিতে পারে যে কোন ছেলেকে।
           অবশ‍্য ও আর কদিন থাকবে এখানে? বিয়ে বলেই এসেছে বিয়ে মিটে গেলেই চলে যাবে কলকাতায়। থাক শাশুড়ি আদরের ছোট বৌকে নিয়ে।

              মাঝে কেটে গেছে কয়েকটা বছর। সুবর্ণার সাথে ভাব হয়ে গেছে খুশিরও। সুবর্ণা যখন পান সেজে এনে বলত," দিদিভাই অনেকক্ষণ পান খাওনি। খাবে একটা? মিস্টি মশলা দিয়ে সেজে আনলাম।"

       সুবর্ণা এখনও স্নান করে এলোচুলে এসে দাঁড়ালে প্রদীপ্ত পাগল হয়ে যায় ওকে আদরে জড়িয়ে ধরে অফিস যাবার আগে," আজ মনে হচ্ছে আমার আর অফিসে


Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...