বন্ধু মানে যার সাথে ভাগ করা যায় মনের দুখ,
বন্ধু সে যার চোখ ভরে যায় দেখে তোমার অসুখ।
যেখানে নেই রেষারেষি,পেছনে ফেলার খেলা,
যাদের সাথে আড্ডা দিয়ে হঠাৎ ফেরে ছেলেবেলা।
এমন বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করা সবারই উচিত...
যেখানে থাকবে শুধু ভালোবাসা,রইবে না হার জিত।
উৎসর্গ :- মা কে ( তোমার কাছেই পেয়েছি মনের জোর। তুমিই দেখিয়েছিলে স্বাবলম্বী হয়ে বাঁচার স্বপ্ন। আজও বিপদে পড়লে মনে পড়ে তোমার কথা সব ঠিক হয়ে যাবে এত ভাবিস না।)
লেখক পরিচিতি#
লেখিকা রুমাশ্রী সাহা চৌধুরীর জন্ম উত্তরবঙ্গের মালদা জেলায়। বাবা শ্রী শ্যামলেন্দু সাহা মা শ্রীমতী মীরা সাহা দুজনেই শিক্ষকতা করতেন। ছোট থেকে বড় হয়ে ওঠা এবং স্কুলের পড়াশোনা মালদা জেলার খোলা হাওয়া মাখা ছোট্ট গ্ৰাম ভালুকাবাজারে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজীতে স্নাতকোত্তর এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এড করে এখন ইংরেজীর শিক্ষিকা। পড়াশোনার বিষয় ইংরেজী হলেও প্রথম প্রেম মাতৃভাষা বাংলা। তাই সংসার ও শিক্ষকতার পেশা সামলে দুই সন্তানকে উপযুক্ত করে বড় করে আবার আগলে ধরেন প্রথম প্রেম মাতৃভাষাকে। লেখার মধ্যে খুঁজতে চান সামাজিক সমস্যার সমাধান,সম্পর্কের সহজ সমীকরণ আর নারীর স্বাধীনতা এবং স্বীকৃতি। রুমাশ্রী প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখেন সবাই ভালো থাক,সত্যি হোক সবার স্বপ্ন। অন্ততঃ ওঁর লেখা গল্পগুলো সবার জীবনে কিছু ভালো চিন্তা নিয়ে আসুক। বদল হোক মানুষের চিন্তাধারার,নবীকরণ হোক এই সমাজের প্রাচীন চিন্তার।
#ব্যাক কভারে থাকবে:-
দেশভাগের হিংসায় জ্বলে গেছে কত ঘরবাড়ি ভিটেমাটি হারিয়ে অন্য দেশে পা বাড়িয়েছিল নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে কত মানুষ। সেই সময় হিংসায় ঘরবাড়ি পুড়ে যাওয়ার সাথে সাথে শেষ হয়ে গেছে কত সম্পর্ক। বিচ্ছেদের পাঁচিল উঠেছে সুখী পরিপূর্ণ প্রেমের মধ্যেও। দাম্পত্যসুখ ধাক্কা খেয়েছে ধর্মান্ধতার কঠোর কুঠারে। আবার কখনও কুসংস্কার আর লালসার শিকার হয়েছে নারী। জন্ম নিয়েছে এ যুগেও এক যাজ্ঞসেনা কিন্তু অন্য রূপে। তবুও এত কিছুর পরেও এক টুকরো আশার আলো বাঁচিয়ে রাখে মানুষকে। আর সেই আলোর পথ বেয়েই অন্ধকার রাত শেষে ভোরের তাজা রোদে স্নান করেছে দুই পৃথক উপন্যাসের নারী চরিত্র রাঙা আর মেহেক। সত্যিই কী আমাদের স্বপ্নেরা কথা বলে?
#ফ্রন্ট কাভারে নীচে থাকবে:-
অনিরুদ্ধর রহস্যময়ী পরমা সুন্দরী কলকাতার রায়চৌধুরী বাড়ির বৌ রাঙা বৌঠানের ছবি প্যারিসে এল কী করে? তবে কী রাঙা বৌঠানের বিধবা গৃহবধূর পরিচয়ের তলায় আছে আরও কোন রহস্য? সত্যিই কী অবগুন্ঠন সরিয়ে বিধর্মী পরপুরুষের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন বৌঠান টাকা রোজগারের জন্য?
বিধবা মেহেক হঠাৎ বমি করছে কেন? ডাক্তারী পরীক্ষায় জানা গেছে সে অন্তঃসত্ত্বা তবে কি মেহেকের চরিত্র খারাপ? নাকি কেউ তাকে ধর্ষণ করেছে? কিন্তু কে সে? অথচ মেহেক কিছুতেই মুখ খুলতে চাইছে না।
সবার সব প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আসছে স্বপ্নেরা কথা বলে।
একটা সময় আমাদের একান্নবর্তী পরিবার ছিল গ্ৰামের বাড়িতে সে এক স্বপ্নমাখা সময় যখন বাবার চাকরির জায়গা থেকে গ্ৰামের বাড়ি আসতাম আমাদের সদর গেটে যাকে বলা হত দেউড়ি সেখানে আমাদের আপ্যায়নের জন্য দাঁড়িয়ে থাকত মোটামুটি বাড়ির সবাই। বাড়ি ভর্তি তখন কত লোকজন ঘন্টা বাজিয়ে খাওয়াদাওয়া হত। এই সবই আমার বাবা চালু করেছিলেন,প্রথমে বাচ্চারা বসবে তারপর বাড়ির বড়রা খাবে। আমাদের ছোটদের ভাব,ভালোবাসা আর ঝগড়া মারামারি সবই হত। তার সাথে বসত সন্ধ্যেবেলা ঠাকুরদার ঘরে গল্পের আসর। সেই গল্প বলার ধারাটা বাবাও বজায় রেখেছিলেন। এখন আর সেই একান্নবর্তী পরিবার নেই,বাড়ির লোকসংখ্যা কমে গেছে। আমাদের ভাইবোনদের মধ্যেও বেড়েছে অকারণ দূরত্ব। একটা সময় খুব খারাপ লাগলেও এখন সেটাতেই অভ্যস্ত হয়ে গেছি। শুধু খারাপ লাগে এটাই ভেবে আমাদের সন্তান সন্ততিরা আর একটা সময় কেউ কাউকে চিনবে না। আমরাও চিনতে পারব না হয়ত ভাইপো ভাইঝিদের। সে যাই হোক মন খারাপের কথাগুলো বরং থাক। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে এক পরিবারের ক্ষয়ে যাওয়ায় মন যখন খারাপ তখন আমার আরেক পরিবার এই ফেসবুক। অনেকেই হয়ত শুনে হাসবেন ফেসবুক আবার পরিবার হয় নাকি? এখানে শুধুই লাইক আর কমেন্টে চেনা পাশে থাকা কি আর হয়? আমার কাছে এই টুকরো অনুভূতিটাই অনেকটা পাশে থাকা। সত্যি বলতে কী আমরা সকলেই যে কোন এক জায়গায় একা। হয় সেটা হসপিটালের বিছানায় হোক অথবা কর্মরত সন্তানদের বিচ্ছেদে বাড়িতেই হোক। সেভাবে কে আর কার পাশে থাকতে পারে। একই ছাদের তলায় আপনজনের সাথে বাস করেও মানুষ কখনও একা হয়ে যায় সুতরাং পথ চলতে যাদের ভালোবাসা মন ছুঁয়ে যায় তাদেরই স্বজন ভাবি। এমনি ভাবেই আলাপ হয়েছিল লেখালেখির সূত্র ধরে অজিতদার সাথে প্রথমে দাদা ডেকেছি তারপর দিদির সাথে আলাপ হওয়ার পর জামাইবাবু। এখন দিদির সাথেই ভাব বেশি হয়ত ফেসবুক উপলক্ষ্য এখানে যাদের, পেয়েছি তাঁদের সাথে পূর্ব জন্মের বন্ধন। প্রতিনিয়ত লেখালেখি করতে গিয়ে অসংখ্য মানুষের ভালোবাসা আমি পেয়েছি তার মধ্যে আমার দিদি স্থানীয়া,বোন আর বন্ধুও আছে অনেকে। তবে তাদের কেউ কেউ আমাকে বেশি প্রভাবিত করেছেন তাই তো কলকাতায় বসে পাই তাঁদের বানানো নাড়ু,পুলি,চকোলেট আর এত এত আদর ভরা মেসেজ। সত্যিই আমি আপ্লুত।
প্রথমে হীরাদির সাথেও তেমন একটু একটু কথা হত তখন অজিতদা যোগসূত্র মিলিয়ে দিয়েছিলেন কুম্ভমেলায় হারিয়ে যাওয়া দুইবোনকে। এবার দিদিকে জড়িয়ে বলেছি পরের জন্মে যেন তোমার মত দিদিকেই পাই নাহলে কার কাছে আব্দার করব রাসমেলার খুরমা জিলিপি খাব অথবা আমার চান্দেরির ব্লাউজ চাই। ডাক্তার দেখানোর সূত্রে ওঁদের কলকাতায় আসা,প্রায় দুবছর বাদে আবার দেখা হল। তবে মনে হয়েছিল মাঝের দিনগুলো বোধহয় ছিলই না এমনি কাছাকাছি ছিলাম সবসময়। সারারাত জার্নি করে ডাক্তার দেখিয়ে আরও দুএকটা কাজ সেরে যখন আমাদের বাড়ি এলেন তখন দশটা বেজে গেছে। তারপর ব্যাগ থেকে বেরোতে শুরু করল একটার পর একটা চমক। নিছক কথার ছলে যা বলেছিলাম প্রথমে তা বেরোল মানে রাসমেলার বিখ্যাত জিলিপি তারপর খুরমা, কোচবিহারের বিখ্যাত দোকানের ক্ষীরকদম্ব,দিদির হাতে বানানো নারকেলের বরফি যার নাম আমি দিয়েছি মদনভোগ সন্দেশ,ঠেকুয়া। আর বাদাম আলুর পোটলা যা দেখে খুব মনে হল মা বাবার কথা ঠিক এভাবেই ব্যাগ থেকে বের হত তখন একটার পর একটা জিনিস। আমি ভেবে পেতাম না কোথায় রাখব কোনটা। অনেকদিন বাদে আবার সেভাবেই ব্যাগ খুলে সেই ভূতের রাজার বরের মত অনেক কিছু পেলাম। আজকাল অবশ্য এমন সারপ্রাইজ মাঝে মাঝেই কুরিয়ারে আমার কাছে আসে। কৌটোভর্তি আদরমাখা জিনিসপত্র, সত্যিই এ স্বাদের ভাগ হয় না। তখনই ভাবি ভগবান মানুষকে বোধহয় একেবারে নিঃস্ব করেন না কোথাও গিয়ে দুহাতে ভরিয়ে দেন।
এ তো গেল খাবারদাবারের কথা,তারপর আমার দিদি যে কত গুণী তার প্রমাণ তো আগে অনেকবার পেয়েছি তাই তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সবার হাত ভরে গেল উপহারে তার মধ্যে আমার পাওনার পাল্লাটাই বেশী ভারী। সুতরাং আর অপেক্ষা না করে সব কিছু পরে দেখে ফেললাম চট করে। অবাক হয়ে বললাম,' সত্যিই দিদি কি করে এমন সুন্দর বানাও তুমি! এত সুন্দর ফিটিংস কর কিভাবে?'
সত্যিই আমরা শয়ে শয়ে টাকা খরচ করেও এমন ফিটিংস পাই না দর্জির দোকানে। মাঝে মাত্র দুটো দিন যে কি খুশিতে কেটে গেলো বলতে পারবো না তার মাঝে মাঝেই ফ্রীজ খুলে জিলিপি মাইক্রোওভেনে গরম করে ডায়েটের মাথায় ডান্ডা মেরে একদম কুড়মুড় করে চিবিয়ে সোজা পেটে চালান করেছি। আহা আদর করে এনেছে এত দূর থেকে খাব না মানে? আসবে আসবে সেই বোধহয় ভালো ছিল। এলেই তো সব শেষ হয়ে গেল বড় তাড়াতাড়ি। এখন স্মৃতিটুকু মেখে নিয়ে যে যার বাড়িতে আবার নিত্যদিনের রোজ নামচায়। দিদিদের সাথে তোলা কিছু ছবি শুধু রয়ে গেল মুঠোফোনে আর আনন্দের রেশটুকু রয়ে যাবে অনেকদিন মনে ঝাপসা চোখে বলেছিলাম আবার এসো....
আমিও দিলাম❤️🧡
.
প্রশ্নোত্তরের খেলায়....
১. নাম?
উ. রুমাশ্রী সাহা চৌধুরী
২. পদবী?
উঃ সাহা চৌধুরী।
৩. ডাকনাম?
উঃ মানা
৪. চুলে রং করেছেন?
উঃ করি
৫. হাড় ভেঙ্গেছে কোনোদিন?
উঃ হ্যাঁ।
৬. একপাক্ষিক ভালোবেসেছেন কাউকে?
উঃ?হ্যাঁ..
৭. কাউকে মারা যেতে দেখেছেন?
উঃ দেখেছি।
৮. সব থেকে প্রিয় ফুল?
উ: জুঁই
৯. অ্যাম্বুলেন্সে উঠেছেন?
উঃ তিন বার
১০. পোষা প্রাণী আছে ?
উ: না
১১. হাসপাতালে থেকেছেন?
উঃ হ্যাঁ,বেশ কয়েকবার
১২. ঘোড়ায় চড়েছেন?
উঃ চড়েছি
১৩. উটে চড়েছেন?
উঃ চড়েছি দুবার। খুবই কষ্টকর
১৪. হাতিতে চড়েছেন?
উঃ চড়েছি। তবে হাওদা ছাড়াতে বসা বেশ চাপের।
১৫. ভালবাসেন?
উঃ ভালোবাসতে আর ভালোবাসা পেতে দুটোই ভালোবাসি।
১৬. টিকিট ছাড়া ভ্রমন করেছেন?
উঃ করিনি,তবে রেলে বিনা পয়সায় যাতায়াত করি☺️ বরের সৌজন্যে।
১৭. প্রেমপত্র লিখেছেন?
উ: লিখেছি তবে বিয়ের পর বরকে ওতে তেমন থ্রীল ছিল না।
১৮. রাস্তায় নেচেছেন কখনো?
উঃ ইচ্ছে করে তবে নাচতে পারি না তাই সাহস হয় না।
১৯. জীবনে কয়টা প্রপোজ পেয়েছেন?
উঃ অনেক না বলাই ভালো☺️
২০. বাড়ি থেকে পালিয়েছেন?
অত সাহস নেই আমার তবে ইচ্ছে হয় এখনও
২১. চুরি করেছেন?
উঃ ফুল আর কুল চুরি করেছি। তাতেও বাবার কাছে মার খেয়েছি। মাস্টারমশাই ছিলেন মিথ্যে কথা আর চুরি দুটোই খুব অপছন্দ করতেন।
২২. ভূত দেখেছেন?
উঃ না দেখিনি তবে অনুভব করেছি।
২৩. বেস্টফ্রেন্ড আছে?
উঃ যাকেই বেস্ট ভেবে ভরসা করি ধাক্কা খাই তাই নিজে নিজের বন্ধু হয়ে থাকি।
২৪. আপনার জন্য কেউ অপেক্ষা করে?
উঃ মেয়ে করে,দেরি হলেই বারবার ফোন করে।
২৫. কাউকে ভালো লাগে?
উঃ অনেককেই ভালো লাগে,ভালোবাসি, ভালো চাই।
২৬. প্রিয় খাবার?
উঃ মাছের ঝোল ভাত আর নরম ছানার রসগোল্লা।
২৭. আপনি কেমন?
উঃ একটু চাপা স্বভাবের,প্রথমেই খোলামেলা মিশতে পারি না। বলতে পারি না সব তবে গুছিয়ে লিখে দিতে পারি।
২৮. প্রিয় জায়গা?
উঃ নর্থবেঙ্গল
২৯. বড় কোন ইচ্ছা আছে ?
উঃ দেশ বিদেশ ঘুরতে চাই যতদিন আছি।
৩০. প্রিয় রং?
উঃ লাল,হলুদ,নীল
৩১. প্রিয় পোশাক?
উঃ শাড়ি আর এথেনিক পোশাক
৩২.কখনো লুকিয়ে কেঁদেছেন?
উঃ প্রচুর কাঁদি লুকিয়ে আর সবার সামনেও।
৩৩. নিজেকে ১০ এ কত দিতে চান?
উঃ ০ ( আমি দেবার কে? যাচাই করতে অনেকেই বসে আছে সংখ্যা তারা বসাবে)
৩৪. রান্না করেছেন?
উঃ 😄🙄ভোর শুরু হয় রান্নাঘরকে সুপ্রভাত জানিয়ে। করতেই হয়।
৩৫.একাকীত্ব বোধ করেন?
উ . হ্যাঁ বোধ করি তখন নিজের পছন্দের কাজে ব্যস্ত থাকি।
৩৬.কবে বিয়ে করবেন?
উঃ আরে বিয়ে তো কবেই হয়ে গেছে। যত্তসব একবার করেই...আবার!
৩৭. প্রিয় বই
সেই সময়
টিনের বাক্স
শৈলজা,অপূর্ব এবং শিবনারায়ণ বাল্যবন্ধু। তাঁদের আলাপ স্কুলের হস্টেলে তারপর ছাত্রাবস্থায় সেই বন্ধুত্ব আর গাঢ় হয়েছিল। অপূর্ব এবং শিবনারায়ণ দুজনেরই অবস্থা ভালো ছিল না। শৈলজা ছিলেন গ্ৰামের জমিদার বাড়ির ছেলে তাঁর বাড়িতে একসময় বন্ধুরা ছুটিতে গিয়ে থাকত। শৈলজার মা যত্নে তাঁদের তেল কই,হাঁসের মাংস,মোহন ভোগ ইত্যাদি রেঁধে খাওয়াতেন। কালের নিয়মে সবাই বার্ধক্যের সীমায়। তবে ছবি বদলেছে শিবনারায়ণ বড় ব্যবসায়ী,অপূর্ব মূর্তি বানান তবে শৈলজার আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ। বিষয় সম্পত্তি সব গেছে,প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ালেও নিজের শরীর ও স্ত্রীর শরীরের চিকিৎসা করতে ধার দেনায় ডুবে রয়েছেন।
শৈলজা তখন মৃত্যু শয্যায় তাঁর মেয়ে বাবার দুই বন্ধুকে চিঠি লেখে। অপূর্ব দেশের বাইরে ছিলেন তবে শিবনারায়ণ ছোট ছেলেকে সাথে নিয়ে আসেন। বন্ধুর শারিরীক অবস্থা এবং আসেপাশের আদায়কারীর উপদ্রব দেখে হঠাৎই বন্ধুর মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে দেন এবং শৈলজাও মারা যায়। আদায়কারীর কাছে বাড়ি দিয়ে কিছু টাকা এবং শৈলজার রাখা গয়না সমেত নতুন বৌ শৈলপুত্রীকে নিয়ে আসেন। শৈলপুত্রীর পেছনে অনেক স্মৃতি পড়ে রইল মেয়েটা ঘর ছাড়া হল,বাবাকে হারালো যতটুকু পারল সেটুকু টিনের বাক্সে ভরে নিয়ে এল।
টিনের বাক্স নামকরণ এইজন্য যে মেয়েদের বিয়ের আগে একটা বাড়ি থাকে, কত জিনিস থাকে যেগুলো জড়িয়ে সে বড় হয়। কিন্তু একদিন সব ছেড়ে হঠাৎই একটা বাক্সে কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে শ্বশুরবাড়ি যায়। অদ্ভুত এক জীবন শৈলপুত্রীর সে টিনের বাক্সে যত্নে নিয়ে এল মা বাবাকে,তার শৈশব এবং যৌবনের স্মৃতি এবং পুরোনো রঙের বাক্স। কিন্তু সুখ পেল না। হঠাৎই বিয়ে করে আনা গরীবের কালো মেয়েকে মেনে নিল না শাশুড়ি। অপমানিত হল সবার কাছে বরের বান্ধবী একটা টিনের মেকআপ বক্সে সস্তার সাজের জিনিস দিয়ে তাকে অপমান করল। তবে অবাক হল দেখে শৈলপুত্রীর গয়না।
গল্পের মাঝে শৈলপুত্রীর শ্বশুর হঠাৎ মারা যাওয়ার পর অত্যাচারে শ্বশুরবাড়ি ছাড়ল সে তবে সাথে নিয়ে গেল তার শুধু নিজের বলতে যা এনেছিল সেই টিনের বাক্সটা। গল্পে বার বার ঘুরে ফিরে এসেছে টিনের বাক্সের কথা যার ডালা খুলে বসে শৈলপুত্রী ফিরে গেছে অতীতে। একটা মেয়ের সব হারিয়ে শুধু একটা টিনের বাক্স সাথে নিয়ে অচেনা শহরে আসা আবার হঠাৎই একদিন হারিয়ে যাওয়ার গল্প টিনের বাক্স। কাকতালীয়ভাবে অপূর্ব আঙ্কেলের সাথে দেখা হল একদিন যোগসূত্র অবশ্য সাহাব যিনি অপূর্বর ভাগ্নে। কলকাতা ছেড়ে যাওয়া শৈলপুত্রীর আবার টিনের বাক্সে তার ছোট সংসার গুছিয়ে ফিরল কলকাতায়। একটু একটু করে নিজেকে যোগ্য করল আর সবশেষে টিনের বাক্স বয়ে এখান থেকে ওখানে ঘুরে বেড়ানো শৈলপুত্রী পেল স্বপ্নের ঘর। মিলন হল শৈলপুত্রীর সাথে নটরাজের, টিনের বাক্সে গুমরে মরা অতীতের স্মৃতির পাতায় লেখা হল ভালোবাসার এক নতুন অধ্যা।
Comments
Post a Comment