"আমার দুর্গা আত্নরক্ষা শরীর পুড়বে, মন না।
আমার দুর্গা নারী গর্ভের রক্ত মাংস কন্যা।
আমার দুর্গা গোলগাল মেয়ে, আমার দুর্গা তন্বী।
আমার দূর্গা কখনও ঘরোয়া, কখনো আগুন বহ্নি।
আমার দূর্গা ত্রিশূল ধরেছে, স্বর্গে এবং মর্ত্যে।
আমার দুর্গা বাঁচতে শিখেছে নিজেই নিজের শর্তে।"
গান:- দুর্গা দুর্গে দুর্গতিনাশিনী
হিমালয় কন্যা উমা আমাদের ঘরের মেয়ের মতই তাই তাঁর আগমনে এই ধরিত্রী সাজে আনন্দে আর আমাদের মনে আসে খুশির জোয়ার। গিরিনন্দিনীর আগমনে দুঃখ,অভাব ভুলে আমরা মেতে উঠি বাঙালীদের শ্রেষ্ঠ উৎসব শারদোৎসবের আনন্দে। সন্তানদের নিয়ে মা আসেন পিতৃগৃহে,সেই আনন্দে ভাসি আমরা সবাই। বাঙালীর প্রতি ঘরে ঘরেই মা বাবা অপেক্ষায় থাকেন তাদের কন্যা ঘরের দুর্গার জন্য। এতক্ষণে হয়ত কৈলাশে তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। আমরা গুনছি অপেক্ষার প্রহর আর কান পেতে শুনছি মায়ের পদধ্বনি। আকাশের নীল মেঘের ভেলায় ভেসে ভেসে সুখবর আসে কাশের বনে ফিসফিসিয়ে মা আসছে। শিবঠাকুরের খেয়ালখুশি নাকি মায়ের হল শখ এবার আগমন আর গমনে দুইয়েই থাকবে ঘোটক। শুভ অশুভ জানি না মা,ভালোই যেন হয়। তোমার আশীষে এই পৃথিবীর সব হোক মঙ্গলময়..
অপূর্ণ সব স্বপ্নগুলো সত্যি করে দাও মা,
পাপীদের হোক শাস্তি,পাপের যেন হয় না ক্ষমা।
আলোয় ভরুক এই পৃথিবী, দূর করো সব কালো,
তোমার আশীষ মাথায় নিয়ে সকলে থাক ভালো।
গান:- অয়িগিরি নন্দিনী।
আমার মনভাবনার সৈনিকেরা যুদ্ধ করে মৃত...
তবুও কখনও দাঁড়িয়ে থাকি ঝাঁসীর রাণীর মত।
রীণাকে পাঁচটা ব্লাউজ আর মেখলা দিলাম সেলাই করতে।
শোনো শোনো বন্ধুগণ শোনো দিয়া মন
জয়ের বিয়ের আয়োজন প্রায় সমাপন
আইবুড়ো ভাত আগামীকাল একুশের দুপুরে..
সবাই এসো সেজেগুজে আর খেয়ো পেটপুরে,
বিকেলে যাবো গঙ্গা আমন্ত্রণে এয়োরা সাথে থেকো,
গায়ে হলুদ বাইশ তারিখে সবাই হলুদ মেখো...
হলুদের পরে একটু সবাই করবে তাড়াতাড়ি,
জলদি জলদি খেয়ে,সেজে যাবে কনের বাড়ি।
বিয়ে পর্ব মিটতে হয়ত হতে পারে রাত্রি..
কুছ পরোয়া নেই তাতে তোমরা তো বরযাত্রী।
বাসী বিয়েতে যারা যারা মুখ্য ভূমিকা নেবে..
তারা সেদিন ফিরবে না,কনের বাড়িতে থেকে যাবে।
আমাকে তো বাড়ি ফিরেই করতে হবে আয়োজন..
ছেলে সাথে লক্ষ্মী আনবে,তাকে করতে হবে বরণ।
তেইশের সন্ধ্যেতে বৌ আসবে,সবাই থেকো সাথে..
শ্বশুরবাড়িতে রাখবে চরণ,পা ডুবিয়ে আলতাতে।
চব্বিশের দুপুরে রীতি মেনে ঘরোয়া বৌভাত..
বৌমার দেওয়া ঘি ভাতে সাজবে সবার পাত।
রাতের অনুষ্ঠানে থাকবে একটু নাচ আর গান,
খুশি থেকো সবাই,ভরিয়ো মন প্রাণ।
খাওয়া শেষে সবিই
গায়ে হলুদের পর্ব মেটার আগেই তাড়াহুড়ো শুরু হয়ে গেল কারণ গায়ে হলুদ নিয়ে আমার আপনজনেরা যারা যাবে তারা ফিরে এসে আবার বরযাত্রী যাবে। এই ব্যাপারে আমার দুই ননদাই,আর দেওর জাকে পাঠালাম। একজন মহিলা না গেলে ভালো দেখায় না তাই জাকে পাঠালাম একটু জোর করে দাবী খাটিয়েই। একটা কথা না বললে খুব অন্যায় হয় যে প্রত্যেকে এগিয়ে এসেছে যাকে যা বলেছি তা সুন্দর করে হাসিমুখে করেছে। মনে মনে কষ্ট হল এটা ভেবে যে জা কখন তৈরী হবে,ছেলেরা চটজলদি তৈরী হতে পারে কিন্তু ওর তো একটু সময় লাগবে। তবুও ও হাসিমুখেই রাজি হয়ে গেল। ননদরা জলখাবার খেয়ে বাড়ি চলে গেল,একটু সাজুগুজু করবে বলে। আমার বাড়ির ভদ্রলোকের টেনশনের জন্য আমি আর সেদিন খোঁপা বাঁধার মেয়ে আনতে পারিনি। তার কড়া হুকুম ছিল,সাজ হোক না হোক পাঁচটা পনেরোতে ছেলে বেরোবে তারপর সাড়ে পাঁচটায় আমরা। দেরী যে করবে তাকে ফেলে দিয়ে বাস চলে যাবে। জলখাবারে মন দিতে পারলাম না,তাড়াহুড়ো করে ছুটলাম একটু বেলা হতেই ভাত খেতে। কারণ স্বামীর চোখে দাগী আসামী আমিই,কিছু বললেই ক্ষেপে যাচ্ছে প্রচন্ড। আমার আবার অনেক দায়িত্ব,ছেলের সব গুছিয়ে দিতে হবে। মেয়ের জিনিস একজায়গায় বের করে দিতে হবে। বরেরটাও হাতের কাছে রাখতে হবে। যদিও ডেট লিখে সবার সব কিছু আগে থেকেই প্যাকেট করেছিলাম যাতে কোন অসুবিধা না হয়। কালিয়াগঞ্জ থেকে মাসিমা এসেছিলেন উনি বরযাত্রী না যাওয়াতে মনে হল মায়ের মত কারও কাছে সংসারের পুরো দায়িত্ব দিয়ে বেরোবো। ছেলের বিয়ের দুদিন আগে মা,মেয়ে চুলটা কুচিয়ে নিয়েছিলাম ঐ যাকে ক্রিম্পিং না কী যেন বলে। ঐ দিয়ে মোটামুটি ম্যানেজ করে নিলাম সাবেকি সাজে বিয়েবাড়ি। একগাদা ফুলের মালা আনিয়ে রেখেছিলাম আমার দেওরকে দিয়ে সবাইকে মালা সাপ্লাই করতে লাগলাম। আমার মেয়ে নিজের সাজের ফাঁকে সবাইকে সাজাতে লাগলো। মেয়েটাকে সত্যিই তখন আদর করতে ইচ্ছে করছিল। আমাকেও ঝাড়পোছ করে চটজলদি সুন্দরী করে দিল,বকাও খেলাম ছটফট করছি বলে।
গায়ে হলুদের তত্ত্ব দিয়ে আমাদের লোকজন ফিরলো,বেচারারা কোনরকমে একটু ঝোলভাত খেয়েই ছুটলো রেডি হতে। এদিকে মেয়ের বাড়ির দুজন এসেছে বর নিতে তার আগেই আমি রেডি হয়ে ছোটাছুটি করছি। সুব্রতদা আর বুজুকে বললাম তোমাদের ছেলেকে সাজাও। বন্ধুরা ছোটাছুটি মধ্যেই আমাকে ছিনতাই করে বললো,বোস একটা দুটো ছবি তুলি। আর ছবি তোলা ভয়ে কাচুমাচু মুখ করে বসলাম,এখনি হয়ত বকা খাবো বরের কাছে। তারপর একটা অদ্ভুত মনখারাপ গ্ৰাস করল আমাকে,কেন জানি না সেটা হয়ত শেয়ার করতে পারব না। ওরা ছেলে আশীর্বাদ করল,আমি ছেলেকে আদরে জড়িয়ে চুমু খেলাম বললাম খুব ভালো থাক বাবা।
গায়ে হলুদের পর্ব মেটার আগেই তাড়াহুড়ো শুরু হয়ে গেল কারণ গায়ে হলুদ নিয়ে আমার আপনজনেরা যারা যাবে তারা ফিরে এসে আবার বরযাত্রী যাবে। এই ব্যাপারে আমার দুই ননদাই,আর দেওর জাকে পাঠালাম। একজন মহিলা না গেলে ভালো দেখায় না তাই জাকে পাঠালাম একটু জোর করে দাবী খাটিয়েই। একটা কথা না বললে খুব অন্যায় হয় যে প্রত্যেকে এগিয়ে এসেছে যাকে যা বলেছি তা সুন্দর করে হাসিমুখে করেছে। মনে মনে কষ্ট হল এটা ভেবে যে জা কখন তৈরী হবে,ছেলেরা চটজলদি তৈরী হতে পারে কিন্তু ওর তো একটু সময় লাগবে। তবুও ও হাসিমুখেই রাজি হয়ে গেল। ননদরা জলখাবার খেয়ে বাড়ি চলে গেল,একটু সাজুগুজু করবে বলে। আমার বাড়ির ভদ্রলোকের টেনশনের জন্য আমি আর সেদিন খোঁপা বাঁধার মেয়ে আনতে পারিনি। তার কড়া হুকুম ছিল,সাজ হোক না হোক পাঁচটা পনেরোতে ছেলে বেরোবে তারপর সাড়ে পাঁচটায় আমরা। দেরী যে করবে তাকে ফেলে দিয়ে বাস চলে যাবে। জলখাবারে মন দিতে পারলাম না,তাড়াহুড়ো করে ছুটলাম একটু বেলা হতেই ভাত খেতে। কারণ স্বামীর চোখে দাগী আসামী আমিই,কিছু বললেই ক্ষেপে যাচ্ছে প্রচন্ড। আমার আবার অনেক দায়িত্ব,ছেলের সব গুছিয়ে দিতে হবে। মেয়ের জিনিস একজায়গায় বের করে দিতে হবে। বরেরটাও হাতের কাছে রাখতে হবে। যদিও ডেট লিখে সবার সব কিছু আগে থেকেই প্যাকেট করেছিলাম যাতে কোন অসুবিধা না হয়। কালিয়াগঞ্জ থেকে মাসিমা এসেছিলেন উনি বরযাত্রী না যাওয়াতে মনে হল মায়ের মত কারও কাছে সংসারের পুরো দায়িত্ব দিয়ে বেরোবো। ছেলের বিয়ের দুদিন আগে মা,মেয়ে চুলটা কুচিয়ে নিয়েছিলাম ঐ যাকে ক্রিম্পিং না কী যেন বলে। ঐ দিয়ে মোটামুটি ম্যানেজ করে নিলাম সাবেকি সাজে বিয়েবাড়ি। একগাদা ফুলের মালা আনিয়ে রেখেছিলাম আমার দেওরকে দিয়ে সবাইকে মালা সাপ্লাই করতে লাগলাম। আমার মেয়ে নিজের সাজের ফাঁকে সবাইকে সাজাতে লাগলো। মেয়েটাকে সত্যিই তখন আদর করতে ইচ্ছে করছিল। আমাকেও ঝাড়পোছ করে চটজলদি সুন্দরী করে দিল,বকাও খেলাম ছটফট করছি বলে।
গায়ে হলুদের তত্ত্ব দিয়ে আমাদের লোকজন ফিরলো,বেচারারা কোনরকমে একটু ঝোলভাত খেয়েই ছুটলো রেডি হতে। এদিকে মেয়ের বাড়ির দুজন এসেছে বর নিতে তার আগেই আমি রেডি হয়ে ছোটাছুটি করছি। সুব্রতদা আর বুজুকে বললাম তোমাদের ছেলেকে সাজাও। বন্ধুরা ছোটাছুটি মধ্যেই আমাকে ছিনতাই করে বললো,বোস একটা দুটো ছবি তুলি। আর ছবি তোলা ভয়ে কাচুমাচু মুখ করে বসলাম,এখনি হয়ত বকা খাবো বরের কাছে। তারপর একটা অদ্ভুত মনখারাপ গ্ৰাস করল আমাকে,কেন জানি না সেটা হয়ত শেয়ার করতে পারব না। ওরা ছেলে আশীর্বাদ করল,আমি ছেলেকে আদরে জড়িয়ে চুমু খেলাম বললাম খুব ভালো থাক বাবা।
ছেলেকে নির্ধারিত সময়ে বের করলেও গাড়ি ছাড়তে ছাড়তে একটু দেরি হল। এগুলো তো বিয়েবাড়ির অঙ্গ,সেখানে কিছু উল্টোপাল্টা হবে না তা হয় নাকি? অবশেষে আমি সবাইকে নিয়ে বরযাত্রী বাসে। আমার বরকর্তা বর অন্য গাড়িতে চড়ে বসলেন। মোটামুটি সঠিক সময়ে পৌঁছে গেলাম সবাই কনের বাড়িতে। ছেলেকে বিয়েতে বসিয়ে ছেলের বাবার মাথা ঠান্ডা হল। ছেলের বিয়ে মাকে কেন দেখতে হয় না জানি না। জোর করে নিয়ম ভাঙতেই পারতাম। তবে একটা নিয়মের সাথে জড়িয়ে থাকে অনেকের মতামত হয়ত বা অকারণে ঘটা মঙ্গল আর অমঙ্গলও। সেই দায়ভার নেবার ইচ্ছে করল না জোর খাটিয়ে,তাই চিরাচরিত নিয়ম মেনে আমিও দেখলাম না বিয়ে।
ছেলের বিয়ে মিটিয়ে,ননদ ননদাইদের হোটেলে পৌঁছে দিয়ে আমরা রওনা দিলাম বাড়ির উদ্দেশ্যে। ওখানে তখন হাড়কাঁপানো ঠান্ডা। ননদরা বাসী বিয়ে দিয়ে আসবে,ওদের যাতে কষ্ট না হয় তাই ওদের আলাদা থাকার ব্যবস্থা করেছিলাম। ছেলের সঙ্গী হয়ে থেকে গেলো ওর তিন ভাই,সত্যিই ছেলেগুলো এই কয়েকদিন যা করেছে তার কোন উপমা হয় না। ওরা থাকাতে আমি নিশ্চিন্তে মাঝরাত পার করে বাড়ি ফিরলাম।
Comments
Post a Comment