গিন্নী: হ্যাঁ গো তোমার কী তিরিশেই সব শখ ঝরে না না মরে গেলো?
কর্তা: কী বল আমার মাত্র তিরিশ? আহা সত্যিই যদি ফিরত তিরিশ।
গিন্নী: মরণ! জোয়ান হওয়ার কত শখ। কী বললাম আর কী বুঝলো!
কর্তা: হ্যাঁ বুঝেছি যে আমার সেই তিরিশ আর কখনই ফিরবে না। তা কী ঝরার না মরার কথা বলছ শুনি? ওহ্ মাথার চুল? তা হবে না...
( স্বামীকে কোন কথা না বলতে দিয়েই আবার শুরু করেন গিন্নী)
গিন্নী: ন্যাকামি যত? তিরিশ যেই বললুম সাথে সাথে সে একদম লাফ দিয়ে গেল তিরিশ বছর বয়েসে! বলি তোমার তিরিশ বছর তো আমিই দেখিনি। যখন বিয়ে করেছিলে বলেছিলে বত্রিশ,আমার তো মনে হয় তাতেও জল মেশানো ছিল। আর মাথার চুলের কথা কী বলছিলে শুনি?'
কর্তা: কী আর বলব? মন্দ তো চুল ছিল না মাথায়। বিয়ের ফটোতে তো দেখেছো টোপরের ফাঁক দিয়ে পুঁই ডগার মত উঁকিঝুঁকি করেছে কালো কুচকুচে চুলের গোছা। আহা যৌবনের সে কী শোভা!'
গিন্নী: ঐ পুঁই শাকের দু চারটে ডগা বাইরে বের করে,লোককে বোকা বানিয়েছো। মাথায় তো ছিল ফিনফিনে চার গাছি চুল। পুঁই শাক তো নয়,লিকপিকে হিঞ্চে শাক।'
কর্তা: এই সকালে আমার চুলের ইতিহাস ধরে টেনে এনে চুলোচুলি করবে না একদম..তুমি যেন কত কেশবতী ছিলে? আমার আর মুখ খুলিয়ো না। ফুলশয্যার পরদিনই দেখলাম বলের পেছনে সবটাই ছল।'
গিন্নী: ছিঃ ছিঃ তোমার মুখে কী কিছুই আটকায় না! বল মানে কী শুনি?'
কর্তা: কেন আটকাবে অ্যাঃ,তুমি যখন তখন আমার যা খুশি ঝরে গেছে মরে গেছে বলবে। আর আমি বললেই?
গিন্নী: কী বলতে চাও শুনি? আমাকে বলতেই হবে আজ বলের পেছনে ছলের মানে কী? না হলে তোমার চা,জলখাবার সব বন্ধ আজ থেকে।
কর্তা: আরে খামোকা রাগ কর কেন? আচ্ছা বলছি বলছি,ওটার মানে হচ্ছে ইয়ে বল খোঁপা। যখন দেখতে গেছি তখন তো একেবারে সাজানো বাগান তাতে আবার জুঁইয়ের চাষ হয়েছে। একেবারে জুঁইয়ের মালায় বেড়া দেওয়া বাগান। আহা সেই সুগন্ধে তো মজে গেলাম। পরে দেখি সবই ছল, শুধু ফুলের খেলা..'
গিন্নী: তোমার কাব্য করা থামাবে এবার? আমার কিন্তু রাগে মাথা জ্বলে যাচ্ছে,একেবারে আগুন বেরোচ্ছে ব্রক্ষ্মতালু থেকে।
কর্তা: তা জ্বলুক,আরও জ্বলুক। কেরোসিন আর গ্যাসের দাম বাড়লে আর ক্ষতি নেই। তোমার মাথার জ্বলন্ত উনুনে আমি দিব্যি অমলেট ভেজে খেতে পারব।
গিন্নী: এই বুড়ো ভালো হবে না বলছি। আমার মাথা আর চুল নিয়ে কথা বললে আমিও ছাড়বো না।
কর্তা: তাই নাকি আমি বুড়ো? তাহলে তুমিও বুড়ি।
গিন্নী: তুমি আমাকে বুড়ি বললে! শোন রিক্সাওয়ালারা তোমাকে কাকু আর আমাকে বৌদি বলে।
কর্তা: রিক্সাওয়ালা বললেন আর উনি গদগদ হয়ে বুড়ি থেকে ছুড়ি হয়ে গেলেন। তুমি আমার পুঁই ডগার মত কেশরাশিকে অপমান করেছো। তাই আমিও বলব,তোমার নকল সাজানো বাগান তো সেই কবেই গরুতে খেয়ে গেছে।'
গিন্নী: অসভ্য একটা! যা মুখে আসবে তাই বলবে নাকি হ্যাঁ? আমার বাগান যদি গরুতে খায় তো তোমার হিঞ্চে শাকের ডগা ছাগলে মুড়িয়েছে।
কর্তা: দেখো আমার মুখ তুমি খুলিয়েছো,সকালে কার মুখ দেখে উঠেছিলাম কে জানে? ছি ছি কী সব কথা! ঝরে গেলো..এতগুলো বসন্ত পার করার পর তো শুধুই পাতা ঝরার গল্পই থাকবে। কোন মন্ত্রে আবার নতুন করে গজাবে...'
গিন্নী: তাই বলে তুমি আমার পার্লার থেকে বেঁধে আসা মাধবীলতা খোঁপার বাগানে গরু ঢুকেছে বলে অপমান করবে? মা মাগো..
কর্তা: বাবা বাবা গো..ও আমার তো আবার বাবা মা দুজনেই স্বর্গে গেছে। আচ্ছা তোমরা ওখানে বসেই এই তিরিশ বছর পেরিয়ে ঝরা বসন্তের মরা নাটক দেখো। স্বল্পভাষী, সুন্দরী কন্যে এনে কী অঘটন না বাধিয়েছো।
গিন্নী: এই কথায় কথায় ম্যা ম্যা কোর না। তোমাকে কেউ জোর করে বিয়ে দেয়নি। তখন কত প্রেমের বন্যে আর এখন আমি ঝগড়ুটে কন্যে তাই না? তোমার জন্য আমাকে মাকে ভুজুং ভাজুং দিয়ে সিনেমায় যেতে হত।
কর্তা:-হা হা হা ঐ একটা কাজই তো ভালো পারো ভুজুং আর ভাজুং। তাই ঐ ভাজুং দিয়ে আমাকেও ভাজা ভাজা করলে। সে যাক গে, আজ কেন ভাজা ভাজা শুরু করলে জানতে পারি কী?
গিন্নী: একটা কথা বলব বলে ভাবলাম,তো মহাভারত হয়ে গেল। ছেলে চাকরি নিয়ে বাইরে চলে যাবার পর তুমি কেমন যেন আরও ঝগড়ুটে হয়ে গেছো। কোন কথা মাটিতে পড়তে পারে না।
( ছেলের কথা উঠতেই চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ে করবীর। যতই ঝগড়াঝাটি হোক না কেন বৌয়ের চোখের জল দেখতে ভালো লাগে না ধুর্জটি বাবুর। তাই এবার নরম হন।)
কর্তা: আহা আহা আবার কান্নাকাটি কেন? আরে এই ঝগড়াঝাটি তো এলেবেলে পাতলা ঝোলো জীবনে কাঁচা আমের অম্বলের মত। একটু টক,ঝাল না হলে চলে নাকি? তুমি টক আর ঝাল চাও না ফুচকা খাবার সময়? ও আমার করু সোনা কী চাই বলো দেখি?
গিন্নী: আমাকে কাঁদিয়ে এখন কথায় ভোলানো? সারা জীবন তাই করে গেলে। বলছি সামনে মাসে আমাদের যে তিরিশ বছরের বিবাহ বার্ষিকী তা মনে আছে? পঁচিশে কিন্তু ছেলের পরীক্ষার দোহাই দিয়ে কিচ্ছুটি করোনি। তখন বলেছিলে তিরিশে হবে।
কর্তা: হ্যাঁ মনে আছে সোনা,আলবাত মনে আছে আমার কারাদিবসের কথা। তা কী চাই বলো? চলো দুজনে ঘুরে আসি কোথাও। নবদ্বীপ,মায়াপুর যাবে? নাকি কাশী,বৃন্দাবন বা হরিদ্বার?
গিন্নী: ঐ শুরু টাট্টু ঘোড়ার ঘুরতে যাওয়ার কথা। এর থেকে আমার গলায় ফাঁসী দেওয়া ভালো। সাধে কী আর বলি ঘোড়া? ঘরের তলে কতক্ষণ থাকো বল তো? সারাক্ষণ তো ছুটেই বেড়াচ্ছো।
কর্তা: কিছু বলব না ভাবলেও মুখ খোলাও,আমাকে তুমি কেন ঘোড়া বললে হ্যাঁ? ঘুরতে ভালোবাসি বলে?
ঘরের তলায় থাকবো কী করতে হ্যাঁ শুনি? ঘরে থাকলেই দুম দাম করে তাল পড়ছে মাথায়,কথার তাল বুঝলে।
গিন্নী: বেশ করেছি,যে সারাদিন ঘুরে মরে তাকে ঘোড়াই বলে। আর আমি কথার তাল তোমার মাথায় দিই? ছিঃ মুখ না অন্য কিছু? আমি এবার কোথ্থাও যাব না। সবাই এই দিনে কত অনুষ্ঠান করে,কেক কাটে, মালাবদল হয়...
কর্তা : তোমার শখের বলিহারি বাপু,আগের বারের মালাই গলায় বকলেশ হয়ে আটকে আছে। আবার মালা..আমি কিন্তু ঐসব পারব না বাপু। কচি খোকা হয়ে টেকো মাথায় টোপর পরে মালাবদল করতে।
গিন্নী: তুমি একটা যাচ্ছেতাই লোক,তোমাকে কিছু করতে হবে না। আমার শখের কোন দাম আছে নাকি তোমার কাছে?
কর্তা: সে কী কথা বলো গিন্নী? তোমার শখের দাম তো লাখ টাকা গো আমার কাছে। শুধু আমাকে জোকার সাজানো বাদ দিয়ে তোমার যা খুশি করো। আমার আর ঐ গাধার টুপি পরার সাধ নেই বাপু। তারপর ঐ মালাবদল,অগ্নিদৃষ্টি বদল।
গিন্নী: অগ্নিদৃষ্টি বদল আবার কী? যা খুশি তাই বলছ কিন্তু। আমার অগ্নিদৃষ্টি না তোমার? কখনও তাকাও আমার দিকে ভালো করে?'
কর্তা: না তাকানোই ভালো,নইলে এমনিতেই ওজন কমে যাচ্ছে। তারপর তো গলতে গলতে মোমবাতির মত নেই হয়ে যেতাম।'
গিন্নী: ওজন তো কমছে সুগারে আর দোষ আমার! সারাদিন বাইরে ঘুরছো আর লুকিয়ে লুকিয়ে মিষ্টি খাচ্ছো। এই তো সেদিন রামুর মা বললো,ও বৌদি দাদাকে দেখলাম মধুভান্ডারে দাঁড়িয়ে ইয়া বড় গরম লেডিকিনি খাচ্ছে।
কর্তা: ও রামুর মাকেও শেষে চামচে বানিয়েছো দেখছি! আসুক আমার কাছে টাকা চাইতে ঘন্টা দেব তখন বুঝবে কেমন? আরে ঐ তো সেদিন তোমার জন্যও তো নিয়ে এলুম দুটো। ওকেও একটা দিলুম কিনে যাতে বাড়িতে কিছু না বলে...লেডিকিনি হারামি করলে শেষে?
গিন্নী: ওমা এ কী তুমি গালাগালি দিচ্ছো!
কর্তা : এটা গালাগালি নয় গিন্নী ঐ যে নেমকহারামির মতই ঐ ইয়ে লেডিকিনি হারামি..'
গিন্নী: একদম চুপ কর,কোন কথা কে কোথায় নিয়ে এলে। আবার তো বাড়িতে এসে একটা লেডিকিনি খেলে! কেমন মানুষ তুমি?
কর্তা: বাহ রে তুমি তো দিলে। বললে একটা খাও,আমার সামনে। হাতে করে নিয়ে এলে। তোমাকে ফেলে আমি খেতে পারি? আমি না না করাতে আদর করে হাতে করে খাইয়ে দিলে।
গিন্নী: হ্যাঁ দিয়েছিলাম, তুমি যে আগেই খেয়ে এসেছো তা কী আর জানতাম?
কর্তা : ছাড়ো ঐসব কথা। অমন লুকিয়ে মাঝেমধ্যে পাপ করে ফেলি তাই তো আর ঐসব ঘটা করে অনুষ্ঠান করতে চাই না।
গিন্নী: কেন শুনি? তুমি চুরি করে মিষ্টি খেয়ে সুগার বাড়াবে তার সাথে অনুষ্ঠানের কী এসে যায়?
কর্তা: সবই যদি তুমি বুঝতে তো হয়েই যেত। শোনো অনুষ্ঠান মানেই তো তাতে ইয়ে ঐ আইসক্রীম,রাবড়ি, কালাকাঁদ,জলভরা আহা আহা জিভে জল ভরে এলো আমার। সেইসব তো থাকবেই তাই না?
গিন্নী: অত কিছু হয়ত থাকবে না। তবে আইসক্রীম আর দু পদের মিষ্টি তো থাকবেই।
কর্তা: অত কিছু থাকলেই বা কী? মানে ভালোই তো। তবে আড়ালে যা পাপ করি তাতে ভগবান দোষ না নিলেও একদম তোমার সামনে দাঁড়িয়ে পাপ করব সেটা কী ঠিক হবে?
গিন্নী: শুধু গাটে গাটে জিলিপির প্যাঁচ। একটা কথাও সাফ বলতে পারে না। কী আবার পাপ করবে?
কর্তা: সত্যিই তোমার মাথাটা গেছে একদম। নাও প্যাঁচ ছাড়াই বলছি.. আমি তো তোমার সামনে দাঁড়িয়ে তোমার হাতেই আদর করে খাওয়ানো কেক,আইসক্রীম,সন্দেশ,জলভরা,রাবড়ি সব খাবো। তুমি কিন্তু পাপ নিয়ো না বুঝলে।
গিন্নী : কী নোলা বাপু এই বয়েসে হ্যাঁ! এই বললে যে অনুষ্ঠান করে কী হবে? আবার এদিকে মেনুও ঠিক করে ফেলেছো!
কর্তা : আমার একমাত্র বৌয়ের ইচ্ছে বলে কথা তা আমি কী তার অন্যথা করতে পারি। হবে গিন্নী হবে অনুষ্ঠান হবে। সানাই বাজবে,তোমার মাধবীলতা খোঁপা সাজবে আবার জুঁই ফুলে। শুধু মুকুটটা বাদ।
গিন্নী: (গদগদ হয়) সত্যিই তুমি পারো বটে।
কর্তা : কী পারি? ফুল ছড়াতে,না কাঁটা বিছোতে?
গিন্নী : যাও দিকি,বকবক করে আমার মাথা খেয়ো না। কত কাজ পড়ে আছে আমার।
কর্তা: আজ কাজ থাক না করু,চলো না একটা সিনেমা দেখে একেবারে করালীর দোকানের ব্রেস্ট কাটলেট আর কবিরাজী খেয়ে ফিরি।
গিন্নী : (গদগদ হয়ে) হঠাৎ ভীমরতি! তা কখন যাবে শুনি? নাইট শোয়ে?
কর্তা : না না এখনি,ভালোবাসার কড়া গরম থাকতে থাকতেই পকোড়া ভেজে খাওয়া ভালো। আহা কতদিন কবিরাজি খাই না।
গিন্নী: ওহ্ বুঝেছি এত কাব্য করার পেছনে আসল উদ্দেশ্য।
কর্তা: কী আসল উদ্দেশ্যে?
গিন্নী: ঐ যে হিজিবিজি খাওয়ার তাল।
কর্তা: ছাই বুঝেছো? আচ্ছা আজ কত তারিখ বল তো? দেখি তোমার মনে আছে কিনা?
গিন্নী :-দাঁড়াও মনে করি, হ্যাঁ সকালেই তো দেখলাম আজ বাইশ।
কর্তা: বাইশ কত?
গিন্নী: বাইশে অক্টোবর।
কর্তা: তবে,দিজ ইস দ্য মেমোরেবল ডে..
গিন্নী: তবে মানে মেমোরেবল ডে কী?
কর্তা: এই দিনে কী হয়েছিল বল দেখি?
গিন্নী: কী আবার হবে? আমার মুন্ডু হয়েছিল। এ তো দেখছি দিন দিন একটা আস্ত পাগল হয়ে উঠছে। যা খুশি করছে,যেমন খুশি চলছে।
কর্তা: বাহ্ বাহ্ একদম ঠিক বলেছো( কর্তা গান ধরেন মেজাজে)..'যখন কেউ আমাকে পাগল বলে তার প্রতিবাদ করি আমি। যখন তুমি আমায় পাগল বলো ধন্য যে হয় সে পাগলামি.. ধন্য আমি ধন্য হে। পাগল তোমার জন্য যে..'
গিন্নী: হে ভগবান একে নিয়ে আমি কী করি? কী যে বলছে ছাতার মাথা আবার গানও গাইছে। তবে গানটা বেশ গাইছো। আরেকটু করবে গো গানটা?
কর্তা: নিশ্চয় গাইব,আজ তো গান গাওয়ারই দিন। মনে পড়ে করু আজ তোমার বিয়ের বেনারসী কিনতে যাওয়া হয়েছিল। আর এই দিনের ঠিক একমাস বাদেই আমাদের বিয়ে হয়েছিল।
গিন্নী: (এতক্ষণ ঝগড়া করলেও করবীর গালটা রাগে নয় লজ্জায় লাল হয়ে ওঠে হঠাৎই। মনে পড়ে যায় বিয়ের বেনারসী গায়ে ফেলার পর মানুষটার চোখের মুগ্ধতা। ইশারায় বলেছিল এটাই সেরা।) বাবা তোমার এত কিছু মনে আছে? আমি তো ভেবেছিলাম তোমার আজকাল শুধু আমাকে দেখলেই গলা চুলকোয় ঝগড়া করার জন্য। সবটাতেই দোষ খুঁজে বার করো।'
কর্তা: আহা আহা করো কী? আবার কেন চোখ ছলছল? নাও দেখি এবার তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নাও। যদিও বা দেখতে দেখতে পার করলাম তিরিশ বছর,ঝগড়াঝাটি যতই করি রাখি তোমার মনের খবর। চলো ভরসাপূর্তির সেলিব্রেশন শুরু হোক আজ থেকেই।
Comments
Post a Comment