Skip to main content
অসুস্থ অবস্থায় মা এলেন মালদা থেকে,তাকে নার্সিংহোমে দিলাম। তারপর টানা পাঁচদিনের ভুল চিকিৎসার মাসুল স্বরূপ তখন সারা শরীর ফুলে ঢোল। বন্ড সই করে বাড়ি আনলাম ঐ অবস্থায় কোথাও ভর্তি না করতে পেরে অগত‍্যা ক‍্যালকাটা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করলাম। যদিও ছেলের মত ছিল না তবুও নিরুপায় হয়ে সেখানেই দেওয়া। ও তখন ওখানে এম এস করছে। ছেলের পড়ার জায়গাতে এর আগে ভর্তির সময় একবার গেলেও মায়ের জন‍্য প্রতিদিনই এবেলা ওবেলা যেতে হত। স্কুল ফেরত অনেকটা সময় মায়ের কাছে কাটিয়ে বাড়ি ফিরতাম,বেশিরভাগ ছেলের সাথে দেখা হত না। একটা ফোন করে বেরিয়ে আসতাম,কখনও বা দেখা হত।
    সেই সময় দেখেছি সরকারী হসপিটালে ডাক্তারদের ওপরে কথা বলে আয়া মাসীরা আর যারা ট্রলি টানে বা মেল অ্যাটেন্ডেন্ট তারাও। আর সিকিউরিটিদের তো কথাই নেই। আমার চব্বিশ ঘন্টার কার্ড ইস‍্যু করা সত্ত্বেও অনেকভাবে হেনস্থা হতে হয়েছে। মাকে ইউএসজি করাতে অথবা অন‍্য কোন ডিপার্টমেন্টে নিয়ে যেতে হলে পাওয়া যায়নি কাউকেই।
       চারদিকে শুধু কাজের হিসেবে ফাঁকি আর রোগীদের সাথে তো বটেই এবং কখনও কখনও ডাক্তারদের সাথেও দেখেছি এদের খারাপ ব‍্যবহার করতে। দীর্ঘ সময় থাকার কারণে বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হলেও বাথরুমের অবস্থা দেখে যেতে পারিনি। নীচে গিয়ে দেখেছি সুলভ কমপ্লেক্সের অবস্থাও শোচনীয় তবুও অগত‍্যায় সেখানেই এক দুদিন যেতে হয়েছে।
    ছেলে একদিন নিয়ে গেল ওদের সার্জারী ডিপার্টমেন্টে। ওখানে গিয়ে কেন যেন একদলা কান্না বুকে আটকে গেছিলো সেখানকার অবস্থা দেখে। বারান্দা ভর্তি পেশেন্ট,সেখানেই স‍্যালাইন ঝুলছে। কেউ বা কাতরাচ্ছে, দুএকজন আমার ছেলেকে দেখে ডাক্তারবাবু একটু দেখুন না বলে আকুতি জানালো।
     করিডোর পেরিয়ে যে ঘরটায় এলাম তার গল্প অনেক শুনেছি ওর কাছে। কখনও ছত্রিশ,কখনও আটচল্লিশ ঘন্টা ডিউটির শেষে ওখান থেকে আধা ঘুমে জড়ানো ক্লান্ত গলায় বলেছে..না এখনও খাইনি মা অর্ডার করেছি আসবে। আবার কখনও রাতে বলেছে আজ বারোটায় একটা ওটিতে ঢুকবো,বেরোতে চারটে বাজবে। তারপর যদি সুযোগ পাই একটু শোবো।
         আমার সেই কল্পনার চোখে দেখা ঘরটাতে ঢুকে কেমন যেন দমবন্ধ লাগলো,বরং রোগীদের থাকার ঘর মানে মা যেখানে ছিলেন তা অনেক খোলামেলা। গায়ে গায়ে লাগানো হসপিটালের বেড,তাতে ঠাসাঠাসি করে ঘুমিয়ে আছে ছেলেগুলো ক্লান্ত দেহে। এরা নাকি দেশের ভবিষ্যত আর এরাই অসুখে ত্রাণকর্তা ডাক্তার।এটা তো রীতিমত অস্বাস্থ্যকর জায়গা।
   জিজ্ঞেস করেছিলাম মেয়েরা? বলেছিলো এখানেই থাকে..কখনও জায়গা না পেলে এক খাটেই ঠাসাঠাসি করে....
    মনে মনে ভেবেছিলাম মেয়েগুলোও এখানেই.. কোথায় চেঞ্জ করে ওরা? এই ঘরে তো কত লোকজন।
     বাথরুমে ঢুকে আঁতকে উঠেছিলাম,মনে হয়েছিল কেউ বোধহয় এটা সাফাই করে না কখনও। ইতস্ততঃ ছড়ানো নোংরা আর সিগারেটের টুকরো। এখানে টয়লেট করলে ইনফেকশন তো হবেই। আর মেয়েরাই বেশি ভোগে ইউরিন ইনফেকশনে
           ডাক্তার একটা বেশ গালভরা নাম,আমরা সেই ডাক্তার করার জন‍্য ছেলেমেয়েদের অনেক ভাবে তৈরী করি। তবুও এরা মানুষের মর্যাদাটুকু পায় না। আগে শুনতাম ডাক্তারের স্থান নাকি ভগবানের পরে। এখনকার সমাজে ডাক্তারের স্থান শয়তানেরও পরে। একটা খুন করা শয়তান সমাজের চোখে ধুলো দিয়ে দিব‍্যি ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু ডাক্তারের গায়ে সেখানে সহজেই হাত তোলা যায়। অবশ‍্য এই শিক্ষা আমাদের দিয়েছে আমাদের সমাজ আর প্রচার করেছে সংবাদমাধ্যম। কথায় কথায় যেমন মাস্টার পেটানো যায় তেমন পেটানো যায় ডাক্তার।
       সমাজশত্রু তো এরাই,আর কেউই সমাজের কোন ক্ষতি করে না তেমন। ঐ টুকটাক নয়ছয় করে, চুরি করে কখনও খুন করে সেটা আর এমন কী?
           সরকারী হাসপাতাল গুলো সঠিকভাবে চলছে এইসব পিজিটি বা জুনিয়র ডাক্তারের জন‍্য। কাজ শেখার জন‍্য আর পড়াশোনার খাতিরে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয় এদের দিনের পর দিন আর রাতের পর রাত। তারপরেও থাকে ফেল করিয়ে দেবার হুমকি। সুতরাং জান কবুল আর মান কবুল।
        ছেলে আমাকে এমারজেন্সীতে যেখানে শনিবার বসত দেখালো,বলল অসংখ্য রোগী দেখতে হয় সেদিন। খাওয়ার সময় আর হয় না। মনে মনে ঠাকুরকে ডাকা ওদের ভালো রেখো। আমার মত সব বাবা মায়েরাই হয়ত এক কথাই বলেন। তবুও ওরা ভালো থাকতে পারে না। মানে আমাদের সমাজ আর সমাজের বুকে ঘুরে বেড়ানো জানোয়াররা ওদের ভালো থাকতে দেয় না।
          কখনও খুন হয় ডাক্তার,কখনও বা মার খায়,কখনও চোখ উপড়ে নেওয়া হয়,কোথাও মাখিয়ে দেওয়া হয় পায়খানা আবার কোথাও রেপ করে মেরে ফেলা হয়।
              আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের মেয়েটা মাঝ রাতে খাবার খেয়েছে,কিন্তু ক্লান্ত শরীর একটু এলিয়ে দেওয়ার জায়গা কোথাও পায়নি। প্রিন্সিপাল তখন হয়ত ঘুমোচ্ছিলেন মানে ঘুমোন নিজের বিছানায় আরামে। সব শুনে চোখ কচলে বললেন, আরে মেয়েটারই তো দোষ এভাবে একলা ঘুরে বেড়াবে কেন?
       আমি রাস্তায় আসতে আসতে দুএকজনকে এক কথাই বলতে শুনলাম। নির্বোধ মানুষগুলো এটুকু বোঝে না ওটা ওদের কাজের জায়গা আর পড়াশোনার জায়গা। এটা কোন জঙ্গল নয় যে হাতে রিভলবার নিয়ে জিপে ঘুরবে জন্তুদের হাত থেকে বাঁচতে।
    এখানে আসেন অসুস্থ মানুষজন সুস্থ হতে আর ডাক্তাররাই তাদের ত্রাণকর্তা। তবে ত্রাণকর্তারা শুধু অকাতরে ত্রাণ করবেন নিজেরা একটু স্পেশ চাইলেই মুশকিল। আরে এদের আবার কিসের ছুটি? এদের দরকার নেই আলাদা ঘর বা বাথরুমের। দরকারে ব‍্যাগ থেকে প‍্যাড বের করেও চেঞ্জ করবে সবার সামনে। সুতরাং ওটা কোন ইস‍্যু নয়,বরং টাকা বিলাও অন‍্য খাতে আর ভিক্ষা দাও।
         নির্ভয়া মরেছে পথে নরকের কীটদের হামলায় অসম্ভব পাশবিক নির্যাতন, এই মেয়েটা মরল নিজের কলেজে যেখানে রাতের পর রাত তাকে ডিউটি দিতে হয় এই ওয়ার্ড থেকে সেই ওয়ার্ডে। যারা অপরাধ ঢাকতে বলছেন কেন একা ঘরে বিশ্রাম নিতে গেছিলো তাদের লজ্জা হওয়া উচিত। এই ধর্ষণ তো কোন রোগীর সাথেও হতে পারত। অনেক হসপিটালে রাতে মত্ত অবস্থায় বাইরের লোক ঢোকে। যেমন এখানেও হয়েছে। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট চাপা দিতে চাওয়া হয়েছিল,সেখানে ধরা পড়েছে ধর্ষণকারী একাধিক। আর একাধিক মানুষ না থাকলে মেয়েটার হাড়গোড় ভেঙে অসহনীয় অত‍্যাচার করা ঐ একজন মানুষ যাকে গ্ৰেপ্তার করে দেখানো হচ্ছে বারবারই তার পক্ষে সম্ভব ছিল না।
     ব্লুটুথের গল্প আর একজন অপরাধীকে বারবার দেখিয়ে কিছুতেই চাপা দেওয়া সম্ভব নয় এই ঘটনা। এই ঘটনার পেছনে যারা আছে তাদের সবাইকে চিরুনী তল্লাশী করে খুঁজে বের করা হোক। না হলে এমন ঘটনা ঘটবে বারবারই। আজ ডাক্তার মরেছে,কাল মরবে আরও কেউ হসপিটালের মধ‍্যেই এমন ঘটনায়।
  এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক দোষীদের যাতে ভবিষ্যতে আর এইভাবে না ঝরে যায় কোন তাজা প্রাণ অত‍্যাচার আর অপমান বুকে নিয়ে। খালি হয়ে যেন না যায় কোন বাবা মায়ের কোল যারা নিজেরাও এই ছেলেমেয়েদের সাথে অমানুষিক মানসিক চাপের মধ‍্যে দিন কাটায়। পুলিশ ইচ্ছা করলে সব পারে,তাই আমাদের মত সাধারণ মানুষের মাননীয়া মুখ‍্যমন্ত্রী এবং পুলিশের কাছে অনুরোধ খুঁজে বার করুন দোষীদের শুধু একজনকে দেখিয়ে আমাদের স্বান্তনা দেবেন না। ডাক্তারদের নিরাপত্তার ব‍্যবস্থা হোক অবিলম্বে,সমস্ত জায়গায় সচল সিসিটিভি ক‍্যামেরা লাগানো হোক। মহিলা ডাক্তারদের জন‍্য আলাদা ঘর,বাথরুমের ব‍্যবস্থা করা হোক। যাতে কাউকে একটু বিশ্রাম নিতে সেমিনার রুমে গিয়ে লাল তোষকে শুয়ে রক্তে মাখামাখি না হতে হয়।


     আমরা ভুলে গিয়ে ভালো থাকতে শিখে গেছি অনেকদিন। গত আগস্টে একটা মৃত্যু হল,সেটা নিয়েও কয়েকদিনের কলরব তারপর আবার সময় নিয়ে মিটিয়ে দেওয়া আর ভুলিয়ে দেওয়া সবকিছুই। এখনও ছেলেটার নামটা মনে পড়ে হয়ত কিছুদিন বাদে আর নামটাও মনে পড়বে না। এবারেও সেই সময়ের স্রোতে ভাসতে ভাসতে আমরা আবার ভুলে যাবো,অপরাধের পর দ্রুতগতিতে সব চিহ্ন লোপাট হল।

    ধর্মের আর আপন কর্মের জন‍্য তো অনেক পথ হাঁটলাম আমরা সবাই। কখনও মাইলের পর মাইল হেঁটে কেদারনাথ,অমরনাথ,লোকনাথ বা তারকনাথ আবার কখনও লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে দেখলাম জয় জগন্নাথ,বদ্রীনাথ অথবা তিরুপতিনাথ।
   নিজেদের কর্মের জন‍্য হাঁটলাম কখনও শিয়ালদা থেকে ধর্মতলা অথবা বেহালা থেকে তারাতলা। কখনও হাঁটা বাজারের থলে হাতে,কখনও হাঁটা প্রেমিককে নিয়ে সাথে। কত রাত কেটে যায় ঘুমহীন হয়ে কখনও দুঃখে কখনও বা আনন্দে। এসেছে এক দুঃস্বপ্নের রাতের খবর যার লজ্জায় আর কষ্ট আবার এক গাঢ় কলঙ্কের ফোটা এঁকে দিয়েছে তিলোত্তমার কপালে। সারা দেশের মানুষ তাকিয়ে আমাদের দিকে।   যে গেছে সে গেছে বলে কেউই পেছনে হটে যায়নি সবাই প্রতিবাদে ফেটে পড়েছে।
      তাই আসুন এক সাথে হই সবাই যে যার নিজের অঞ্চলে ১৪ই আগস্টের রাতে। একসাথে সবাই হাতে হাত রেখে পা বাড়াই স্বাধীনতার ভোরের দিকে। যে স্বাধীনতা আজ থেকে দুশো বছর আগে এলেও আমাদের চিন্তা স্বাধীন হয়নি। যতদিন গেছে তত বিক্রি হয়েছে সামান‍্য বেঁচে থাকার স্বাধীনতা চড়া দামে আর হিংসা আর লালসার কারণে বলি হয়েছে কত শত প্রাণ। তবে ঘাতক এখন আর বিদেশী শাসক নয়। আমাদের আসেপাশেই তারা ঘুরে বেড়ায় ছদ্মবেশে তারপর কখনও দিনে কখনও রাতের অন্ধকারে বের হয় তাদের নখ আর দাঁত। 
             এক অন‍্য প্রতিবাদের ভাষায় এক হন সবাই। কী বলছেন ঘুমোবেন? একদিন নাইবা ঘুমোলেন। স্বাধীনতার আগের রাতে লেখা হোক এক অন‍্য স্বাধীনতার গল্প। শুধু মেয়েরা কেন? এ লড়াই সবারই,কারণ সুবিচার চাইছে সবাই। সুতরাং সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ এগিয়ে আসুন.... থাকব আমিও।

    এসো পথে নামি স্বাধীনতার রাতে,
     সবাই নিয়ে এক অঙ্গীকার।
     দিনে রাতে নারী বাঁচবে নির্ভয়ে,
    ভালো থাকা আমাদের অধিকার।


একটা রাতে বাইরে বেরিয়ে কী হবে? আপনি কেমনভাবে ফিরবেন? আপনার দায়িত্ব কে নেবে? আমার কিছু হলে ফোন করলে আপনি কী আসবেন? সুতরাং বুঝে বাইরে বেরোন অযথা আবেগে কোন কাজ করবেন না কিছু লক্ষ্মী সোনা মেয়ে এইসব পোস্ট শেয়ার করছেন আজ তাদের টাইমলাইনে।
    কী জানি তারা হয়ত ভাবছেন হঠাৎ করে এক রাতে লক্ষ্মী থেকে কালী হয়ে উঠলে বা টাইমলাইনে প্রতিবাদী পোস্ট করলে যদি তাদের লক্ষ্মীর ঝাঁপি বন্ধ হয়ে যায় তবে কী হবে? সামনেই তো পুজো।
    আবার কেউ শেয়ার করছেন মেয়েটা ডাক্তার ছিল বলেই এত কলরব করছে সবাই সাধারণ মেয়ে হলে করত না। কত মেয়েই তো মরে বিষাক্ত কেউটেদের কবলে ঝোঁপে জঙ্গলে,তখন তো কেউ এত প্রতিবাদ করে না?
    ঠান্ডা মাথায় ভাবুন মেয়েটা মরেছে একটা শিক্ষাকেন্দ্রে যেটা আবার একটা নামকরা বহু পুরোনো মেডিক্যাল কলেজ। সেখানে সে ডিউটি করছিল মানে রোগীদের রোগমুক্তির চেষ্টা করছিল। পড়াশোনার জায়গা,কাজের জায়গায় অন ডিউটিতে থাকা কোন মেয়ের ওপর পাশবিক অত‍্যাচার করা তাকে মেরে ফেলা এই ঘটনা তো নির্ভয়া হত‍্যার চেয়েও ভয়াবহ।
    তার কোন বিচার হবে না? আপনারা লক্ষ্মী হয়ে ঝাঁপি নিয়ে বসে থাকুন ক্ষতি নেই,নেগেটিভ পোস্ট করে যারা প্রতিবাদ করতে চায় তাদের মনোবল নষ্ট করবেন না

    14 তারিখ রাতে যারা হাঁটবে পথে তাদের হাঁটতে দিন,আপনি বাড়িতে শুয়ে ঘুমোন টিভি দেখুন,ভিডিও দেখুন যা খুশি করুন। অযথা তাদের কী হবে? তারা কেমন করে ফিরবে? তাদের দায় কে নেবে সে সব ভেবে আপনার/আপনাদের অমূল‍্য সময় নষ্ট করবেন না। 
      সমস্ত জেলায় জেলায় মানুষেরা পথে থাকবেন আজ নিজেদের আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তার দাবীতে। সকলেই চাইছেন এর বিচার হোক এমন ঘটনা যেন আর কখনই না ঘটে।  কেন ঐ ডাক্তারটার জন‍্য বোকা মানুষগুলো এত কিছু করছে সেসব ভেবে যদি আপনার চুলকানি হয় তবে অ্যালার্জির ওষুধ খেয়ে শোবেন। ঘুম ভালো হবে।
 লক্ষ্মীমন্ত মা লক্ষ্মীরা আর প্রমাণ করবেন না এসব পোস্ট দিয়ে যে মেয়েরাই মেয়েদের আসল শত্রু।

   স্বাধীনতা পেতে আমাদের দুশো বছর গেছে। কতশত শহীদের রক্তের রঙ মাখা আমাদের এই স্বাধীনতা। যাঁরা প্রাণ দিয়েছিলেন নির্ভয়ে তাঁরা জানতেন স্বাধীনতা তাঁদের দেখা হল না। তবে এই দৃঢ়তা নিয়ে ফাঁসীর দড়িকে জড়িয়ে ছিলেন যে তাঁদের রক্তের বিনিময়ে একদিন নিশ্চয় আসবে স্বাধীনতা।
      সুতরাং বিশ্বাস রাখতেই হবে যে অপরাধীরা পিছু হটবে অবশ‍্যই তাদের নাশ হবে কারণ আমরা জাগছি। 
    একটা পোস্ট পড়লাম ভালো লাগলো। সেই লেখার ঋণ স্বীকার করেই বলছি সতীদাহ প্রথা একদিনে বন্ধ হয়নি,বিধবা বিবাহও একদিনে প্রচলন হয়নি। প্রচুর বাধা এসেছে কিন্তু জয় হয়েছে অবশেষে সত‍্যের। 

 আমাদের স্বাধীনতাও একদিনে আসেনি। জোটবদ্ধ হয়ে সাহস করে এগিয়ে এসেছিলেন কিছু মানুষ মেরুদন্ড সোজা করে,লড়াই করেছিলেন তার ফল ভোগ করছি আমরা।
 তবে এই পোস্টগুলো দেখে ভাবি বৃথাই রাজা রামমোহন রায় আর বিদ‍্যাসাগর মশাই চেষ্টা করেছিলেন আমাদের মেয়েদের অন্ধকার থেকে মুক্তি দিতে। আসলে এই যুগেও আমাদের মন অন্ধকারে আচ্ছন্ন।
   আজ কিছু হবে না,না হোক..কাল হবে। কাল না হলে,তার পরে হবে কিন্তু হবেই। এই মনের জোর নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে সবাইকে। 

দুশো বছরের শৃঙ্খল কেটে,
যে স্বাধীনতা পেয়েছিলে রক্ত ঝরিয়ে।
তাকে হতে দিয়ো না আর কলুষিত,
রেখো তাকে সম্মানে জড়িয়ে।
প্রতি মুহূর্তে চলছে চক্রান্ত,
 সমাজের গভীরে জটিল অসুখ।
যারা কেড়ে নিতে চায় বাঁচার স্বাধীনতা,
স্বাধীন দেশে বসবাসের সুখ।
জাতীয় পতাকাকে শ্রদ্ধা করে,
আমাদের সবার হোক শপথ।
এগিয়ে আমাদের চলতেই হবে,
যতই বন্ধুর হোক জীবনের পথ।

  তখন স্কটিশে বিএড পড়ি,সদ‍্য কলকাতায় এসেছি তেমন কিছু চিনি না। প্রথমদিন কলেজে গিয়ে এক দিদির সাথে আলাপ হয়,আমাদের ব‍্যাচ কিন্তু সিনিয়র। তার কাছেই শুনেছিলাম তার বাড়ি শ‍্যামবাজারে ঘোড়ার ল‍্যাজের দিকে। শুনে হেসে ফেলেছিলাম,দিদি বলেছিল হাসছিস কেন? তোর বাড়ি তো ঘোড়ার মুখের দিকে। এভাবেই আমরা রাস্তা মনে রেখেছিলাম উত্তরবঙ্গের এক জেলা শহর থেকে কলকাতায় এসে। তারপর অনেক হেঁটেছি এই পথে,হয়ত বা এই পথের প্রতিটা গাছপালাও আমার চেনা হয়ে গেছে। আর বড় চেনা ঐ হসপিটালটা যা এখন সংবাদের শিরোনামে। 
     কদিন ধরে সেই চেনা পথটা বড় অচেনা লাগে,গেটগুলো বন্ধ সামনে পুলিশের গাড়ি আর কিছু ছাত্রছাত্রীর আর্তি We want Justice. ভোরবেলা যখন ঐ পথ দিয়ে যাই তখন এক অদ্ভুত বিষণ্ণতা জড়িয়ে ধরে আমাকে। 
  সেদিন রাতে মেয়েদের রাতের শহরের পথ দখলে আমিও হাঁটলাম সবার সাথে অনেকদিন বাদে বাড়ি থেকে শ‍্যামবাজার। যতই এগিয়েছি হসপিটালের দিকে ততই কানে এসেছে জোরালো গলায় বিচারের দাবী। পথে এগিয়ে যেতে যেতে মহিলাদের সংখ‍্যার থেকে বেশি দেখলাম ইতস্ততঃ ছড়ানো কিছু পুরুষের দল যাদের অনেকেই নেশাগ্ৰস্ত। কেন যেন অস্বস্তি বাড়লো খুব। আমরা এগিয়ে গেলাম শ‍্যামবাজারের দিকে,পরের দিন পনেরোই আগস্ট দেখলাম অতন্দ্র প্রহরীর মত নেতাজী তাঁর ঘোড়াতে আসীন হয়ে বোধহয় মনে মনে বলছেন আর নারীদের অপমান করে তাদের রক্তে হাত রাঙিয়ে নিজেদের কলঙ্কের শেকলে বেঁধে পরাধীন করিস না। 
     শ‍্যামবাজার মোড় তখন ভিড়ে ঠাসা,এমন দৃশ‍্য সবারই অচেনা। যারা বক্তৃতা দিচ্ছেন তাদের ঘিরে রয়েছে বৃদ্ধ,বৃদ্ধা,নারী,পুরুষ,যুবক,যুবতী। অনেকেই ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের ঘাড়ে নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছেন বিচারের আশায়। 
   নারীরা পথের দখল নেবে কিন্তু বাড়িতে থাকা পুরুষ মানুষ মানে কারও স্বামী,কারও বাবা বা কারও দাদা তারা কেউই একা ছাড়তে পারেননি তাদের। কারণ তারাও জানে রাতের শহর কতটা নিরাপদ। তাই রাতের শহরে নারীদের পাশাপাশি পা মিলিয়েছেন পুরুষেরাও। আর এটাই তো সমাজের চিত্র হওয়া উচিত। পুরুষের পুরুষত্ব বজায় থাকুক সৃষ্টিতে,ধ্বংসে নয়। পুরুষ আর নারী পাশাপাশি থাক সহযোদ্ধা হয়ে।
                 একটা জায়গায় দাঁড়ালাম আমরা,আমাদের সঙ্গীরা একটু এগিয়ে ভিড়ের মধ‍্যে গেছেন তখন। আমরা কজন ফুটপাথের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে। মানুষের মনে আবেগ,চোখে জল। কিন্তু তারমধ‍্যেই কটু মদের গন্ধে আমার দম আটকে আসছিল। কিছু পুরুষ মানুষ নিছক জমায়েতে সামিল হয়েছেন এমন ভাব দেখিয়ে মহিলাদের গা ঘেঁষে এসে দাঁড়াচ্ছে,কেউ বা মহিলাদের পেছনে এসে দাঁড়াচ্ছে। কেউ বা গায়ে ধাক্কা দিয়ে সরি বলে চলে যাচ্ছে। তাদের হাতে গুটখার প‍্যাকেট মুখে নিঃশ্বাসে নেশার বিষ।
       আমি পেছনের দিকে তাকালাম দেখলাম একটা পুরো গ‍্যাং ইতস্ততঃ ছড়িয়ে আছে। মাঝেমধ্যে তাদের ফোন বাজছে,তারা বলছে আমি এখানে তুই কোথায়? ওদিকে কী হচ্ছে এই ধরনের কথাবার্তা চলছে।
     
          শ‍্যামবাজারে যারা জমায়েত করেছে তারা তখন আবেগে ভেসে বক্তৃতা দিচ্ছে। উত্তেজিত একটা লোক নিজের স্বরূপ দেখালো,বলতে শুনলাম কীরকম চিল্লাচ্ছে শা* মনে হচ্ছে দিই একেবারে। আরেকজন এসে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করল,চিল্লাচ্ছে তো তুই কী করবি? এখন কিছু করিস না।
    ততক্ষণে আরজিকর থেকে পদযাত্রা শ‍্যামবাজারে এসেছে। পদযাত্রা শান্তিপূর্ণভাবে আবার ফিরে যাচ্ছে।
       রাতের পরিবেশ বিষাক্ত হতে শুরু করেছিল। অনেকেই হয়ত তা বুঝতে পারেননি যারা সামনে দিকে ছিলেন। আমরা বাড়ি ফিরব বলে এগোলাম তবে অন‍্য সবার জন‍্য কিছুটা এগিয়ে অপেক্ষা করলাম যেখানে সেখানেও একই চিত্র,চারদিকে ছড়িয়ে এমন কিছু লোকজন যারা যেন ছুতোতে আছে একটু এদিক ওদিক হলেই দেখে নেবে। 
     রাস্তায় পুলিশ তেমন দেখিনি,তারা গাড়ি গলিগুলোতে রেখে দাঁড়িয়ে ফোনে মন দিয়েছিল।
      হসপিটালের ওখানে কিছু পুলিশ ছিল।
       আমাদের সাথীরা সবাই এলে আমরা এগোতে শুরু করলাম। কিন্তু এমারজেন্সী থেকে যখন প্রায় সাত আট পা দূরে তখন বিরাট জোরে একটা শব্দ পেলাম। বুঝলাম গন্ডগোল শুরু হয়েছে,কিন্তু কারা ভাঙচুর করছে কিছু বুঝতে পারলাম না।
      লোকেরা পিছু হটতে আর ছুটোছুটি শুরু করল। আমরা ফুটপাথের ধার ঘেঁষে রেলিং ধরে দাঁড়ালাম। আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লাম সাথীদের থেকে আমরা।
     বুঝতে পারলাম না কী করব? উল্টোদিকে তখন এক বামনেত্রী ভাষণ দিচ্ছে। 
    কোন রাজনৈতিক রঙ না থাকার কথা থাকলেও রাজনীতি ঠিক ঢুকে যায় সব পরিস্থিতিতে। পাঁচ মিনিট বাদেই দেখলাম আর তেমন কোন সাড়া নেই। আমরা তখন বক্তৃতা মঞ্চের দিক দিয়ে বেলগাছিয়া ব্রীজে এসে উঠলাম। দেখি সেখানে ঊর্মিমালা বসু দাঁড়িয়ে। কথা হল তাঁর সাথে,বুঝলাম প্রতিবাদে সামিল হতে তিনিও এসেছেন।
          বাড়িতে এলাম,টিভি খুলতেই দেখতে পেলাম সেই সিনেমা যার ট্রেলার দেখেই আমরা চলে এসেছি। বুঝলাম ঐ শব্দটা ছিল ময়লার ভ‍্যাট উল্টোনোর। আর ধর্ণা মঞ্চ ভাঙার।
      দুষ্কৃতীরা যখন হসপিটালের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালাচ্ছিলো আর বীরপুঙ্গব পুলিশবাহিনী যখন পলাতক আর হসপিটাল যখন ভেতরে কুরুক্ষেত্র বাইরে শান্ত তখন আমরা চলে এসেছি।
      পরে মনে হল ভাগ‍্যিস চলে এসেছিলাম, পুলিশ যেখানে ভয়ে পালিয়ে গেছে আমরা কী করতাম?
      যে সিনেমার শুটিং সামনাসামনি দেখা হয়নি তা রাতে বসে বসে লাইভে দেখলাম টিভিতে। মন্দ লাগল না যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা দেখতে টিভিতে নিশ্চিন্তে বসে।
                 সমস্ত রকম প্রতিবাদ যখন সমাজের সব স্তরে ছড়িয়ে গেছে। হসপিটাল প্রায় অচল হয়েছে এতদিন ধরে। সবাই ছিঃ ছিঃ করছে তখন অপরাধীদের বাঁচানোর এত চেষ্টা কেন? 
    ফেসবুকের পোস্টগুলো যদি সত‍্যি হয় তবে তো বলব গোয়েন্দাবিভাগে যে জঘন্য ঘটনার তদন্ত করতে এত সময় নিচ্ছে তা নেটিগোয়েন্দারা ধরে ফেলেছে অনেকদিন। ভেতরের মানুষজন তো আছেই,জানি না তারা এই সমাজে বাস করা কোন ছদ্মবেশী জানোয়ার? যদি অপরাধীরা হসপিটালের কেউ হয় তাহলে তাদের ইমিডিয়েট এমন চিকিৎসার দরকার যে বহুদিন সমাজ মনে রাখবে সেই কথা। 
    এইসব মনোরোগীদের সমাজে ছেড়ে রাখার কী কারণ? কেন এই তোষণ? এদের দ্বারা কী উপকার হচ্ছে বা লাভ হচ্ছে?
        আসলে এই বিশ্বাসঘাতকতা বহু পুরোনো ব‍্যাধি সমাজের। যার জন‍্য আমাদের এগিয়ে যেতে কেটে গেছে হাজার হাজার বছর। সবসময়ই অসৎ আর লোভীরা নিজেদের আর সমাজকে বিক্রী করেছে অর্থের লোভে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাধারণ মানুষে।
     এখন তো দেখছি সন্তানশোক ভোলাতেও মহৌষধ সেই অর্থ। আবার সাধারণ কিছু মানুষ লাইক শেয়ারের পাহাড়ে নিজের প্রাসাদ বানাতে মেয়েটার ছবি,প্রেসক্রিপশন,মৃতদেহের ছবি,হসপিটালের ছবি সবই বেচে ফেলেছেন। আমার এক পরিচিত আমাকে পাঠিয়েছিলেন দু তিনটে ছবি,সাথে সাথে ডিলিট করে ভেবেছিলাম এরা কেমন মানুষ? আমাদের বাড়িতে শ্রাদ্ধবাড়ির কার্ড এলে মা বলতেন ধারটা একটু ছিঁড়ে রাখ। কেন বলতেন কখনও জিজ্ঞেস করা হয়নি। আর এরা একটা মানুষের ভয়ানক অত‍্যাচিত কাটাছেঁড়া করা দেহের ছবি আনন্দে পোস্ট অথবা ফরোয়ার্ড করছে কিসের জন‍্য? জানি না হয়ত এতেও লুকিয়ে আছে কোনরকম মানসিক অসুস্থতা।
    কবে আমরা সুস্থ হব?
     এম ডি কমপ্লিট করার আগেই পাশে ডিগ্ৰী বসিয়ে সুন্দর প্রেসক্রিপশন বানানো হয়েছে। মেয়েটার হাতের লেখা কেমন ছিল,ও কী খেত,কী করত,কারা ওকে ঘুমোতে দেখেছে,অলিম্পিক দেখতে দেখেছে অনেক তো শুনলাম। সারা দেশে,বিদেশে যে আন্দোলন ছড়িয়েছে জাস্টিসের দাবীতে,সেই জাস্টিস সাধারণ মানুষ কবে পাবে?



      রক্ষাবন্ধন এই শব্দটায় একটা অদ্ভুত শক্তি আছে। ভাইদের কাছে বোনেরা তাদের রক্ষার শপথ চেয়ে পাঠাতেন রাখী। ইতিহাস বলে এই রক্ষাবন্ধন অনেক সময়ই জাতিভেদের ঊর্ধ্বে উঠে পালিত হত। অনেক মুসলিম শক্তিশালী সম্রাটের কাছে আমাদের দেশের হিন্দু রমণীরা রাখী পাঠিয়ে তাদের সম্মানরক্ষার জন‍্য আবেদন জানাতেন। অদ্ভুতভাবে বোনের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন সেই ভাই অনেক সময়েই নিজের জীবন বিপন্ন করে। এভাবেই অনেক রমণী রক্ষা পেয়েছেন তাদের সম্মান হারানো থেকে,কেউ বা জহরব্রত করে সতীত্ব রক্ষার জন‍্য স্বেচ্ছায় মৃত‍্যুর হাত থেকে।
    একটা সরু সুতোর বন্ধন অনেক বেশী শক্তিশালী আর সম্মানের ছিল ভাইদের কাছে। যার জন‍্য সেই সুতোটুকু হাতে জড়িয়ে অনায়াসে বোনেদের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন ভাইরা। এরজন্য কখনই তাদের এক মায়ের সন্তান হতে হয়নি। একটুকরো সুতো আর ভাই বা দাদা বলে ডাকার সম্মানটুকু যথেষ্ট ছিল।
   রক্ষাবন্ধনের কথা আমরা পুরাণেও পাই যেখানে দানবীর রাজা বলিকে সাহায‍্য করতে যখন নারায়ণ এসে মর্ত‍্যে থেকে গেছিলেন বেশ কিছুদিন তখন স্বয়ং লক্ষ্মী বলিরাজের হাতে এমনি এক শ্রাবণী পূর্ণিমার দিনে রাখী পরিয়ে তাঁর স্বামীকে চেয়ে নেন।
    শোনা যায় কখনও যুদ্ধ করতে গিয়ে শ্রী কৃষ্ণের হাত কেটে গেলে দ্রৌপদী তাঁর হাত নিজের বস্ত্র ছিঁড়ছ বেঁধে দেন। আর এই ঘটনা শ্রী কৃষ্ণের মনে এতটাই নাড়া দেয় যে তিনি দ্রৌপদীকে ভগ্নীর মতই স্নেহ করতেন। সেই বোনকে অসম্মানিত হওয়ার থেকে বাঁচাতে তিনি এগিয়ে এসেছিলেন সুদর্শন চক্র হাতে।
          কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৫ এ  বঙ্গভঙ্গের সময় সবার হাতে রাখী পরিয়ে ভাঙনের বিরুদ্ধে সবাইকে এক করতে চেয়েছিলেন।
        আজ আরেকটা রাখীপূর্ণিমার দিন,এই দিনে যেমন আমাদের সুরক্ষার বন্ধনের দিন তেমনি দিন এক হওয়ার জন‍্য। আমরা সেই পুরাণ অথবা মহাভারতের যুগ ফেলে অনেক বছর এগিয়ে গেছি। সে যুগের দুঃশাসন এ যুগেও আছে আর তার সাথে আছে আরও অনেক অনেক অপরাধী যারা মেরুন্ডহীন,নীচ,কাপুরুষ। একজন নারীর কাছে তারা অত‍্যন্ত ভীরু আর হীন,তাকে পদানত করতে তাদের লেগেছে অনেক শক্তি। পাপে কলুষিত যে সমাজে আর আসেন না মা দুর্গা ত্রিশূল হাতে,শ্রীকৃষ্ণও ঘোরান না তাঁর সুদর্শন চক্র। সেখানে সাধারণ মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে পাপমুক্ত সমাজ গড়তে। পজেটিভিটি,সৎ সাহস আর আত্মবিশ্বাস মানুষকে নিয়ে যায় জয়ের পথে সুতরাং জয় হবেই। তার প্রমাণ দেখতেই পাচ্ছেন শীতঘুমে থাকা মানুষজনের ঘুম ভাঙছে জনগণের আক্রমণে। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে সর্বস্তরে,খেলা বন্ধ হচ্ছে,বিদেশেও এই ঘটনার নিন্দা হচ্ছে। 
   সুতরাং আসুন শপথ করি সবাই এই রাখী বন্ধনে
        
 সবাই বন্ধনে থাকবো অটুট,
যতক্ষণ না হবে সঠিক বিচার।
এ দুঃসময় শুধু একজনের নয়,
এই সমাজের সবার।
         
   
          
   

Comments

Popular posts from this blog

কথা দিলাম

#কথা_দিলাম# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# "চৌধুরীদের বাড়ির ছোটমেয়ে না? কি চেহারা হয়েছে গো! এই তো গত পুজোর আগের পুজোতে ওদের দুগ্গাদালানে দেখেছিলাম চুল ছেড়ে ধুনুচি সাজাচ্ছিলো।কি সু...

চিত্রাণী (উপন‍্যাস ১)

 দক্ষিণের জানলাটা খুলে দিয়ে ওদের ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে রাঙা আজও সানাইয়ের মিঠে সুর টানে ওকে সেই কতবছর আগের ওর বিয়ের দিনের মতই। সেদিনের ছেলেমানুষী ভরা রাঙা আজ মাঝবয়েসে পা রেখেছে। পরনে লাল চেলীর বদলে শান্তিপুরের সরু পাড়ের আসমানী নীল শাড়ি। নিজের এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে একটা খোঁপা বেঁধে বারান্দায় একটু ঝুঁকে দেখে রাঙা। ওর জা মানে বড়দি অবশ‍্য দেখলেই বলত, " সত‍্যি রাঙা তোর স্বভাব আর গেল না। এক রকম রইয়‍্যা গেলি, মাঝবয়সী বিধবা মানুষ তার আবার অত কি শখ বিয়েবাড়িতে উঁকি মারার? যা একবার নিচে গিয়া রান্নাঘরে ঢুইক‍্যা দ‍্যাখ গিয়া সুলতা কি করত‍্যাছে।"      আজ অবশ‍্য সেই চিন্তা নেই,দিদি দাদার সঙ্গে দক্ষিণেশ্বর গেছেন সেই কোন সকালে। ফিরতে নাকি দুপুর গড়াবে একদম প্রসাদ পেয়ে আসবেন। বাবু ইউনিভার্সিটি গেছে ফিরবে সেই বিকেলে। মনে পড়ে যায় একসময় সবাই ওকে রাঙা বৌ বলে ডাকত।  ওর বর প্রথমদিনই বলেছিল," ইশ্ আমি প্রথম যখন শুনছিলাম রাঙা নামটা তখন এত হাসি পাইছিল কি কমু আর। রাঙা, এ আবার ক‍্যামন নাম? তবে মুখখানা দেইখ‍্যা বুঝলাম এমন লাল টুকটুকে সুন্দরীরে রাঙাই বলে বোধহয়। তুমি হইল‍্যা গিয়া আমার রাঙা ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...