Skip to main content

Posts

Showing posts from May, 2025

বেড়ানো

তাকদার ব্রিটিশ বাংলোতে ভূত আছে! ফেসবুকে একটা পোস্টে দেখে আমি তাজ্জব বনে গেছিলাম। আমি একবার,ছেলে দুবার থেকে এসেছে তাকদাতে। ওর কাছে শুনেই আমরা তাকদা যাই এবং বাংলোর শোভা দেখে মুগ্ধ হই। মেঘ কুয়াশার দেশে,মাথা উঁচু করে রয়েছে সে বিদেশীর বেশে। দার্জিলিং থেকে চব্বিশ কিমি দূরে প্রায় চারহাজার ফিট উচ্চতায় অবস্থিত তাকদা। এখান থেকে দিব‍্যি ঘুরে আসা যায় তিনচুলে,লেপচা জগত এবং দার্জিলিং।    তাকদা কথার অর্থ লেপচা ভাষায় কুয়াশা আর স্বার্থক এই নাম। মেঘ কুয়াশা আর রোদের লুকোচুরি খেলার প্রিয় জায়গা এই তাকদা। এখানে মজা করে লুকোচুরি খেলে মেঘ আর কুয়াশা রোদের সাথে। পাইনের জঙ্গল ঘেরা অপরূপা তাকদাকে আরও সুন্দর করে তুলেছে এই পুরোনো বাংলোগুলো। এক সময় দার্জিলিংয়ের সাথে সাথে এই তাকদাও মুগ্ধ করেছিল ব্রিটিশদের তাই শখ করেই নির্জনতাকে সঙ্গী করে এই মেঘের দেশে বানিয়েছিল তারা বাংলো একদম পাহাড়ের ওপরে। আমরা ছিলাম বাংলো নং বারোতে। পাহাড়ের পথ বেয়ে গাড়ি এসে গিয়েছিল একদম বাংলোর লনের কাছে। প্রথমেই মন কেড়ে নিয়েছিল এখানকার নির্জনতা আর ঘন পাইনের বন। তাছাড়া বাংলো সেই বা কম রূপসী নাকি?   সামনে সুন্দর বাগান ফুলে ফুলে সাজানো। ...
বাড়ি থেকে বেরিয়ে এয়ারপোর্টে আসা পর্যন্ত সময়ের মধ‍্যেই একটা ছোটখাটো কনটেন্টের ওপর শর্টস বানিয়ে নেবে ভেবেছে পিউলি। তারপর যখন এয়ারপোর্টে ওয়েট করবে তখন আরেকটা ছোট ভ্লগ বানাবে সাথে থাকবে প্লেনের টুকিটাকি গল্প। দেশে ফেরার আনন্দের সাথে অবশ‍্যই মাথায় আছে রেগুলার ভিডিও আপডেট দেওয়ার ব‍্যাপারটা। আর এই রেগুলারিটি মেনটেইন করছে বলেই তো কত ফলোয়ার্স হয়েছে এখন ওর। সত‍্যি কথা বলতে কী এটাই এখন ওর পরিবার হয়ে গেছে। সারাটা দিনই তো এই পরিবারের কী ভালো লাগবে সেই অনুযায়ী কনটেন্ট ক্রিয়েট করে চলেছে। এতদিনের অভিজ্ঞতায় মোটামুটি বুঝে গেছে যে খাওয়াদাওয়া,ঘরকন্নার খুঁটিনাটি,রূপচর্চা,বেড়ানো এইসব নিয়ে রীলস বেশ চলে। কনটেন্টে নতুনত্ব না থাকলে শুধু থোবড়া দেখিয়ে ফেমাস হওয়া যায় না। উহ কী খাটুনি! তবে অ্যাকাউন্টে যখন রোজগারের টাকা ঢোকে তখন তো দিল একদম গার্ডেন হয়ে যায় খুশিতে। নেট দুনিয়ায় এখন পিউলকে অনেকেই চেনে,তবে তাতে খুশি নয় সে। একেকজনের ভ্লগ দেখে তো রীতিমত আপসেট লাগে কত ফলোয়ার্স! মনে হয় প্রমোট করা প্রোফাইল। সে যাকগে নিজেকে সাকসেসফুল কনটেন্ট ক্রিয়েটার হিসেবে দেখতে চায় পিউল।         এখন সামার ভ‍্যাকেশন চলছে ...

বিপাশা কথা

জীবনের কোন সময় আপনি কেমনভাবে উপভোগ করছেন সেটাই বোধহয় সবচেয়ে বড় কথা। বাড়ির ডেক্সটপ কেনার পর ছেলের উদ‍্যোগে প্রথমে অরকুট আর তারপর ফেসবুকে এলেও আমার কাছে মোবাইল ফোন এবং ডিজিটাল ক‍্যামেরা কোন কিছু না থাকাতে ফটো তেমন দেওয়া হত না। তাছাড়া তখন সময় কোথায়? দুই ছেলেমেয়ে,চাকরি,সংসার নিয়ে দারুণ ব‍্যস্ততা চলছে। হয়ত বা সারাদিনে ঐ একবার স্কুল যাবার সময় আয়নাতে মুখ দেখে যেতাম। খাবার দাবার কোন কিছুতেই বাছাবাছি ছিল না। সব কাজ সেরে বাড়িতে যা রান্না হত খিদের পেটে তাই গপাগপ গিলতাম। বাচ্চা হবার আগে বা পরের যাত্রাপথ তো ছিল আরও শোচনীয়। আমার শাশুড়িমা ছিলেন না,সুতরাং বাচ্চা হবার আগের যত্ন করার মত তেমন কেউ ছিল না। মা দূরে থাকতেন তাছাড়া তিনিও চাকরিরতা। আমরা মা,মেয়ে দুজনেই যেহেতু চাকরি করতাম তাই কারোরই একটানা কারও কাছে এসে থাকা সম্ভব ছিল না। ছেলের সময় যখন নার্সিং হোমে ভর্তি হতে গেলাম আমার মনে আছে আমি রাত্রি প্রায় নটা নাগাদ বাড়ি থেকে না খেয়ে ভর্তি হলাম সেখানে। নার্সিংহোমে তখন খাবার প্রায় শেষ,তবুও পরের দিন আমার সিজার হবে তাই খাওয়া হবে না জেনে ওরা একটু ঠান্ডা ডাল ভাত এনে দেয় এবং কথাও শুনতে হয় তার জন‍্য। মা অনুরোধ করেও ...
ফোনটা খুলতেই একটা ছোট্ট নোট পায় রাজ,একটু অবাক হয় এত সকালে মা আবার কী মেসেজ করল? ঘুম থেকে উঠেই তো মাকে না দেখলে ওর দিনই শুরু হয় না। কখন কী খাবে? কোথায় ওর জিনিসপত্র সবই মা হাতের কাছে গুছিয়ে দেয় বরাবরই। সেখানে একটা ছোট্ট নোটস লেখা,' বাবু আজ একটু ম‍্যানেজ করে নে আমি একটু দরকারে বেরোলাম। চাবি আমার কাছে আছে।'   কী জানি কোথায় এমন দরকার পড়ল যে সাতসকালে মাকে বেরোতে হল। এখন কে ওকে সকালে গরম জলে লেবুর রস দেবে? তারপর আমন্ডের খোসা ছাড়িয়ে,ওয়ালনাট ভেজানো হাতের কাছে ধরবে?   মনটা একটু তেঁতো হয়ে গেলেও নিজেকে সামলায় রাজ। মায়ের কথা মনে পড়ল আবার..' বড়ো হবি না নাকি কখনও? আমি কী চিরকাল থাকব? সবসময় খালি মা আর মা। এত বড় ছেলেকে সব গুছিয়ে দিতে হয়। ওহ্ আর পারি না বাপু। তোর কাজ সারাদিন সারতে সারতে আমি হাঁপিয়ে উঠি। ঘরটার কী অবস্থা করে যাস খেয়াল আছে? আর কত জ্বালাবি আমাকে? ভুলে যাস বোধহয় আমিও একটা মানুষ।'    মায়ের রাগ হয়েছে বুঝতে পারে রাজ,অবশ‍্য এমন রাগ মাঝেমধ‍্যেই মায়ের হয়। তখন একপ্রস্থ চ‍্যাঁচামেচি করে বাড়ি মাথায় করে। ছোটবেলা থেকেই এমন দেখে এসেছে মাকে। তখন মা রাগ করে বকলে ওর কান্না পেত,চোখে জল আস...