Skip to main content

Posts

Showing posts from October, 2020

ইচ্ছেপূরণ

লক্ষ্মীপুজোর আগে থেকেই চারিদিকে নাড়ু নাড়ু গল্প আর গন্ধ। আলপনায়,ধানের ছড়ায় খই,মুড়কি,নারকোল নাড়ু আর মোয়াতে সাজানো চারদিক মাঝে মা লক্ষ্মীর শান্ত,মিষ্টি লক্ষ্মীমন্ত মুখের ছবি মন কেড়ে নেয়।মন ডুবে যায় এক অদ্ভুত নস্টালজিয়ায়।আমাদের দেশের বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত গোপাল গিরিধারীর মন্দির থাকায় লক্ষ্মীপুজো আলাদা করে হতো না তবে জেঠিমার ঘরে খুব সুন্দর করে লক্ষ্মীপুজো হত। উঠোনে পড়ত রূপসী পূর্ণিমার চাঁদের আলোর ছটা আর তার মধ‍্যেই আমরা বাচ্চারা মেতে উঠতাম আনন্দে লুচি আর নাড়ু মুড়কির গন্ধে। আসেপাশের গ্ৰাম থেকে কিছু দুঃস্থ মানুষ এসে দাঁড়াতো..." কোজাগরীয়া দেগে বলে।" বাড়ির মহিলারা যত্নে তুলে দিতো প্রসাদ তাদের হাতে। কখনো বাবা,জেঠামণি কাকুকেও দেখেছি এগিয়ে যেতে। সে ছিলো এক আনন্দের দিন,অনেক শাসন আর না পাওয়ার মধ‍্যেও সব পাওয়ার এক আনন্দ।ভাইবোনেরা মিলে কত আনন্দ করতাম,সে আনন্দ ছিলো মুখোমুখি কোন মলিনতা ছিলোনা তারমধ‍্যে। এখন ফেসবুকে হয়ত সবাই সবাইকে দেখি শুধু মুখোমুখি কথা বলার ইচ্ছেটাই হয়ত আর নেই। কোথাও যেন নাড়ুর সেই পাকটা আর আঁটো হয়না সবটাই আলগা।                      লক্ষ...

বন্ধন

#বন্ধন# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# অনেকদিন বাদে পর্দায় ঢাকা ভোরটাকে একটু অনুভব করার চেষ্টা করলো মানবী।আজকাল ভোরের দিকে বুকের মাঝে একটা শিরশিরে অনুভূতি হয়। মাঝে খুঁজতে চেয়েছিলো অনুভূতিটার মানে,একটা সময় মনে হয়েছিলো এটা বোধহয় আনন্দের মন ভালো করা একটা রিনরিনে আনন্দ। গত কয়েক মাসে একাকীত্ব আরো চারগুণ বেড়ে গিয়েছিলো মানবীর।আগে মাঝে মাঝেই ছেলে চলে আসতো সাথে বৌমা আর নাতি। দিনহাটাতে ওদের বাড়ির সামনে বাঁশের গেটে একটা আওয়াজ হত ক‍্যাঁচ করে আর মাধবীলতা গাছটা আনন্দে দুলে উঠতো তার সাথে দুলে উঠতো ওদের দুজনের মনটাও। আর মানবী সেবার শান্তিনিকেতন থেকে কিনে আনা পরদা সরিয়ে বলতেন," উঃ কতক্ষণ বারান্দায় দাঁড়িয়ে থেকে সবেই ঘরে ঢুকেছি আর তোরা এলি। ভাবলাম যাই,খাবার গুলো আবার একবার গরম করে রাখি।"          নাতির কলকলানিতে ভরে উঠতো মানবীর দুকামরার ছোট্ট বাড়ি শান্তিনীড়। নম্রতা এসে প্রণাম করে বলতো," মা তুমি এত ছটফট করো কেন বলতো? তোমার প্রেসারটা নাকি বেড়েছে শুনলাম। আমিই তো একটু গরম করে নিতে পারবো। নিশ্চয় আজও সেই ভোরের থেকে রান্না করেছো?"         এইটুকুতেই খুশি হয়ে যায় মানবীর মনটা ভা...

জীবন যখন যেমন(১৫)

ভেজা চোখেও সব মেয়ের মতই স্বপ্ন সাজিয়ে পা রাখা শ্বশুরবাড়িতে একটা সময় চাবাগান কালচিনি ফিকে হয়ে গিয়েছিলো সামনে ছিলো দিগন্তবিস্তৃত পথ যে পথে এখন পথচলা শুরু এক নতুন মানুষের সাথে। বাবার মত হয়ত আর কেউ শাসন করবেনা,বাড়ি থেকে যাবার সময় হাতে মুঠো করে টাকা দিয়ে বলবেনা কেউ..রেখে দিস দরকারে খরচ করবি। ও হেসে আছে বাবা,দিয়োনা বললে বলতো হেসে রবীন.."জীবনে হিসেব করতে শেখাও জরুরী তবে এটা হিসেবের বাইরে রইলো, বাবা মা তো অদৃশ‍্য ব‍্যাঙ্ক যেখানে লাইন দিতে হয়না,কার্ড লাগেনা ছোটখাটো আব্দারের খরচের জন‍্য অদৃশ‍্য চেকবুকটা রেডি থাকে।"                  তবে গাড়িতে সারাটা পথ মণিমা,জেম্মা..অবশ‍্য এখন মামণি আগলে রেখেছে ওকে তার সাথে জোজোর উষ্ণতা ঘিরে রেখেছে। হয়ত এই একটু স্নেহ ভালোবাসার লোভেই মেয়েরা নিজেকে প্রমাণ করতে কাটিয়ে দেয় সারা জীবনটাই।       মধুমিতা একদম সোজা বলে দিয়েছে," আমি জানি মা বলতে তোর একটু বাধবে এতদিনের জেম্মা ডাক।আমিই তো শাশুড়িকে অনেক দেরিতে মা বলতে পেরেছি জিভটা অবাধ‍্য হয়ে যেতো।তুই বরং মামণি বলিস আর ওকে বাপি।" *****************     দুষ্ট...

জীবন যখন যেমন(১৪)

সাঁঝবেলার কনে দেখা আলোতে মিষ্টির পানপাতা ঢাকা মুখটা নাইবা খোলা হোক। অনুরাগের রঙের মিশেল আর ভালোবাসার গাঢ় রঙে মাঝরাতেও জোজোর মনে দাবানল জ্বালালো। একটা সময় অশান্তিতে হাল ছেড়ে দিয়েছিলো ভেবেছিলো বিয়েটাই বোধহয় হবেনা।খুব খারাপ লাগছে ফোনটার জন‍্য কত ছবি ছিলো ওখানে।         তবুও মিষ্টির হাতটা নিজের হাতে নিয়ে মনে হলো,অনেক যুদ্ধের পর আজ রাজকন‍্যাকেই তো নিজের করে পেলো আর হয়ত কিছুই চাইনা। দিদির পাশে থেকে আনন্দ করে মালাবদল আর শুভদৃষ্টি দেখতে দেখতে মণিমাকে জড়িয়ে ধরে দুষ্টু.. আমরা পেরেছি শেষে ওদেরকে মিলিয়ে দিতে তাইনা মণিমা। সত‍্যিই একটা সময় দুষ্টুর অবচেতন মনেই এসেছিলো ভাবনাটা একটা সময় জোজোদাকে না পাওয়ার দুঃখটা আজ কালো মেঘের অন্ধকারের মত ছাইবে না তো দিদির জীবনে।                বাইরে থেকে শাঁখ আর মন্ত্র পড়ার আওয়াজ অনু আর মধুমিতার কানে আসে বুঝতে পারে বিয়ে প্রায় শেষের পথে,পরের দিন বাসী বিয়ে আছে তাই রাতের বিয়ের অনুষ্ঠান একটু সংক্ষিপ্ত।দুই মায়ের মনের সব চিন্তা আর উৎকন্ঠা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।কোথায় যেন শুনেছিলো অনু মায়ের নজর সবচেয়ে আগে লাগে..আজ ম...

জীবন যখন যেমন13

মায়ের দায়িত্ব পুরোপুরি ফুলিয়া আর শিবুকে দিয়েছে এই কয়েকদিনের জন‍্য আর অফিসের কাজ বুঝিয়ে দিয়েছে রায়বাবুকে।যদিও ওনার কৌতূহলের শেষ নেই বারবার জিজ্ঞেস করছেন কোথায় যাচ্ছেন? অনুষ্ঠানটা কি? যারা এখানে এসেছিলো তাদেরই কারো বিয়ে নাকি?        অবাক হয়ে যায় দীপ্ত ভদ্রলোক মোটামুটি ফেলুদা বা ব‍্যোমকেশ হতে পারতেন মানে মগজাস্ত্রটা দারুণ চলে ওনার।না বলতেই অনেক কিছু বুঝে যান।                     যাক তবুও বিদেশে ভালোমন্দতে এই মানুষটার নির্ভরতায় অনেক কিছুই পার হয়ে গেছে দীপ্ত।তাই হয়ত একটু বেশিই প্রশ্রয় দেয় ওনাকে। ******************* নিজের কাজের কোন ফাঁক রাখতে চায়না দুষ্টু তাই মনপাখিকে খাঁচায় বন্দি করে ফাইলের সাথে সন্ধি করতে গিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ করছে দুষ্টু। যদি কিছু কাজ থাকে সেটা ভোরে উঠে শেষ করেই বেরোবে ভেবেছে। বাবা অবশ‍্য বারবার বলছে," আগে কাজ দেখ,তারপর আসবি এখানে সবাই আছে মামা মেসো চলে এসেছে সুতরাং অনেকটা নিশ্চিন্ত এখন।"        তবুও দিদিকে খুব দেখতে ই...