Skip to main content

Posts

Showing posts from April, 2021
হঠাৎই ব‍্যাঙ্গালোরে চাকরি নিয়ে চলে আসা কৃষ্ণনগরের একটা যৌথ পরিবারের ছেলে রাণার। ঘরের ভাড়া বেশি হওয়াতে শেয়ার করে থেকে গেল একটা ফ্ল্যাটেই রুম শেয়ার করে অবশ‍্য রুম পার্টনার একটা মেয়ে ভালো নাম মৌবনী ডাক নাম মুনিয়া। মুনিয়া দাপুটে,সুন্দরী আর আধুনিকা এমন ভাব করে যেন ওকে এখানে থাকতে দিয়ে ধন‍্য করেছে। ও ঘরে থাকে, ডাইনিং রাণার। দুজনের দিন কাটছিল কাটাকুটি খেলাতে রাণার থাকার মেয়াদ ওখানে ছিল ছমাস। হঠাৎই একদিন সারপ্রাইজ ভিজিটে সাতসকালেই চলে এলেন রাণার বাবা একদম যাচ্ছেতাই ব‍্যাপার রাণার তো হাত পা ঠান্ডা হবার অবস্থা তবুও ব‍্যাপারটা বেশ সুন্দর করে ম‍্যানেজ করে নিল মুনিয়া। রাণার বাবাও অবাক হলেন না যেন আগেই বুঝতে পেরেছিলেন ব‍্যাপারটা। মুনিয়াকে দুর্গা পুজোতে যাবার নেমন্তন্ন করেও গেলেন যাবার আগে। গা জ্বলে গেল রাণার, কি দরকার ছিল মেয়েটাকে বলার! যদিও পুজোতে বাড়ি গিয়ে অনেক আনন্দের মধ‍্যে রাণা ভেবেছিল যাক ঐ মেয়ে আসবে না নিশ্চয়। কিন্তু নাহ্ দশমীর দিন বন্ধু পুতুলকে নিয়ে কলকাতা থেকে চলে এল মুনিয়া কৃষ্ণনগরে। মুনিয়ার সৌন্দর্য্য আর মিঠে ব‍্যবহার ওদের বাড়ির সবাইকে মুগ্ধ করল। দশমীর বিকেলে ধুনুচি নাচে রাণাদের সাথে মাতল...

অপরিচিতা

#অপরিচিতা# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# বেশ অনেকটা ধার দেনাতে গলা শুধু নয় মাথা ডুবিয়ে যখন নিম্ন মধ‍্যবিত্ত পাড়ায় এই ফ্ল্যাটটাতে এসেছিল রুমঝুম তখন এটাকেই স্বপ্নের ঝাড়বাতি জ্বালানো দালান বলে মনে হত। নিঃশ্বাস ফেলে ভেবেছিল যাক বাবা আর ভাড়া বাড়িতে থাকতে হবে না। খেয়ে না খেয়ে যা করেই হোক ধার টুকু শোধ করে দিলেই অন্ততঃ বলতে পারবে মাথার ছাদটুকু নিজের কেনা। হঠাৎই খেয়াল হল ওমা ছাদ কই আবার? সে ছাদের ওপরে তো আরেকজনের ঘর। তাহলে দেওয়ালটুকু হোক বরং আমার নিজের। হঠাৎই কানে আসে পাশের ফ্ল্যাটের খুটখাট শব্দ। ধুৎ বাবা দেওয়ালেও তো অন‍্য মানুষের অধিকার অপর প্রান্ত থেকে। সে যাই হোক অন্ততঃ ঠিকানাটা তো আমার, দরজাগুলো আমার,বারান্দায় সকালের সূর্যের লুকোচুরি দেখার আনন্দটুকু আমার। ফ্ল্যাট জুড়ে তখন খুটুর খাটুর। অনেকেই তখনও আসেনি। নিজের পরিজনদের নিয়ে আর ছোট ছানাদের নিয়ে সংসার পাতে রুমঝুম। কেমন ছিল সেই দিনগুলো? কে জানে তখন বোধহয় মনে হত চব্বিশ ঘন্টার বদলে যদি বাহাত্তর ঘন্টা হত দিনগুলো তাহলে বোধহয় ভালো হত। অসুস্থ দুই গুরুজন আর দুটো ছোট ছানা নিয়ে খুব খারাপ অবস্থা তখন। তবুও তার মাঝেই নিজের ছেলেমানুষ মনটাকে বাঁধতে পারে না রুমঝুম। ...

চুপকথা

#চুপকথা# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# বাবার বিয়ের দিনটা আবছা মনে পড়ে রূপকথার, ওকে দুধটা খাইয়ে দিতে দিতে সুধামাসি বললো,"এই যে রূপি খেয়ে নাও দুধটা চুপটি করে একদম নক্কীসোনা হয়ে বুঝেছো তো।"            রূপকথা বলেছিলো," বাপি কোথায়?আমি দুধ খাবোনা..বাপির কাছে খাবো।"   "বাপি আজ ব‍্যস্ত আছে রে মা,তার এখন অনেক কাজ। আজ তার বে না?আমাদের রূপির নতুন মা আসতিছে কত মজা।"   গোল গোল চোখ করে মাসির দিকে তাকিয়ে ছিলো রূপকথা। "বে টা কি? মা আবার নতুন হয় নাকি?"          কোনরকমে দুধটা খাইয়ে একটা ঢাউস পুতুল দিয়ে ওকে বসিয়ে রেখে সুধামাসি কাজ সারছিলো। আর রূপকথা ওর মেমসোনাকে জড়িয়ে ধরে বলছিলো,"আচ্ছা বলতো মেম বে কি?"                         রূপকথার বাপি আর ও দুজনেই তো ভালো ছিলো,যদিও ও মাঝে মাঝেই বলত মায়ের কথা। বাপি বলত,"আসবে,আসলে তোর মা খুব রাগী।রাগ কমলেই আসবে।"         "আমি তো সোনা মেয়ে বাপি তাহলে মা রাগ করলো কেন?তুমি না হয় দুষ্টু। মাকে আসতে বলোনা বাপি।"         ...

শিব ঠাকুরের আজব দেশে

#শিব_ঠাকুরের_আজব_দেশে# #রুমাশ্রী_সাহা_চৌধুরী# গল্প১ "ফুল বেলপাতা সব হাতে নিন,হ‍্যাঁ নিয়েছেন তো এবার হাত জোড় করে মন্ত্র বলুন।"  পুরোহিত মশাই যতটা সম্ভব উঁচু গলায় বলে যাচ্ছেন শিব পুজোর মন্ত্র। সাথে গলা মিলিয়েছেন মহিলারা। সবারই পরনে সুন্দর পুজোর পোশাক। তাদের মাঝেই একটু আড়ষ্ট হয়ে জায়গা করে নিয়েছেন সুশোভন। দু একজন বাঁকা চোখে তাকিয়েছে,একজন তো বলেই ফেলেছে," এখানে সব মেয়েরা বসে তারমধ‍্যে আবার উনি,একটু সরে বসুন দেখি। বৌমা এদিকে একটু চেপে এসো।" সুশোভন বোঝেন সুন্দরী বৌমাকে পুরুষের ছোঁয়া থেকে বাঁচাতে তৎপর শাশুড়িমা।       ততক্ষণে ওদিক থেকে নির্দেশ আসে," হয়েছে এবার শিবের মাথায় ফুল বেলপাতা দিয়ে গঙ্গাজল ঢালুন। এক এক করে আসুন ভিড় করবেন না।"             মেয়েদের লাইনের শেষে অপেক্ষা করেন সুশোভন। তারপর ভক্তিভরে জল ঢেলে বাতি ধরিয়ে দেন। চরণামৃত আর প্রসাদটুকু নিয়ে মন্দির থেকে বাড়ির দিকে রওনা দিতে হঠাৎই মুখোমুখি হলেন অতীনবাবুর।     চিরকালের রসিক অতীনবাবুর মুখে হাসি ফুটে ওঠে," আরে মশাই পুত্রবতীদের ভিড়ে আজ নীলের দিনে আপনি কেন? নীলের পুজো তো মায়েরাই করে স...

মিঠিয়া

ছোট্ট কাঁচের আয়নায় স্বপ্নের বিন্দী আঁকছিল মেহেক। ততক্ষণে যত্নে আঁচড়ে বেঁধেছে ওর কোমর ছাপানো চুলকে। নিজেকে দেখে হারিয়ে যায়,ওর ডাগর দুই চোখে খেলে যায় কত মিঠে স্বপ্ন। হঠাৎই শুনতে পায় মা ডাকছে। -"মেহেক জলদি আ যা বিটিয়া।" -" আয়ি মাজী।"  লাল টুকটুকে শালোয়ার কামিজ পরে কোমরে ওড়না জড়িয়ে মায়ের কাছে এসে দাঁড়ায় মেহেক। অপরিচিত একজনকে দেখে অবাক হয়ে যায়। নাকে ভারী নথ পরা একজন মহিলা বসে আছেন মায়ের সাথে। একদমই অপরিচিত আগে তো কখনও দেখেনি। তবে মায়ের সাথে ওঁর কথা শুনে বুঝতে পারে মেহেককে দেখে খুব খুশি হয়েছেন। -" বহত খুবসুরত বিটিয়া তেরি। ইতনি বড়ি চটি! থোড়ি সি শামলী মগর উসমে ক‍্যায়া লেড়কা তো বহত সুন্দর। জোড়ি আচ্ছি বনেগী।"          মেহেক আর দাঁড়ায় না সেখানে দৌড়ে ঘরে চলে যায়। বুঝতে পারে ওর বিয়ের সম্বন্ধ এসেছে। কান্না পায় ওর এখনই ওর বিয়ে দিয়ে দিতে চাইছে কেন মা? সবে তো একটা পাশ দিয়ে এখন বারো ক্লাশে পড়ছে ও। দাদারা উঠতে বসতে বারবার বলে মেয়েদের বেশি পড়াশোনা করতে নেই তাহলে বিয়ে দেওয়া মুশকিল হবে।      মেহেকের বাবা নেই বেশ কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। এখন দাদারাই অভিভাবক। বড়দাকে...